বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সম্ভাব্য পাকিস্তান সফর নিয়ে দেশে-বিদেশে, বিশেষত বাঙালী ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে, সবিশেষ আগ্রহ গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই লক্ষ্যণীয়। এখানে স্পষ্ট করে বলা ভালো যে, ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যেই এ-নিয়ে প্রবল বিতর্ক; সচেতন ক্রিকেটপ্রেমীরা (অর্থাৎ যাঁরা একইসঙ্গে দেশপ্রেমীও) নিষ্ঠার সঙ্গে এ-সফর বাতিল করার পক্ষপাতী, বিপরীতে ছাগু ক্রিকেটপ্রেমী (এরাও একইসঙ্গে দেশপ্রেমী; ফাঁরাক হচ্ছে, এদের দেশ পাকিস্তান; এরা বাংলাদেশ-প্রবাসী পাকিস্তানী) নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এ-সফরকে সফল করার জন্য। দ্বিতীয়পক্ষের সিংহভাগ (সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের প্রতীক বাঘের সঙ্গে তূলনীয় নয়!) রাজনৈতিকভাবে বর্তমান সরকার তথা আওয়ামী লীগ বিরোধী হলেও, এবার এরা দেখি পুরোমাত্রায় আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষে! বিষয়টা বস্তুতই রাজনৈতিক!
ওই যে বলা হলো, সচেতন আর ছাগু ক্রিকেটপ্রেমী, এখানেই একজন ‘গায়ক’ (প্রমিত বাংলায় যাদেরকে ‘গাতক’ বলা হয়) আর একজন ‘শিল্পী’র মধ্যে ফাঁরাক। একজন খাঁটি দেশদ্রোহী/রাজাকারও সংগীতের সাধারণ ব্যকরণ (সারেগামাপা ইত্যাদি) রপ্ত করতে পারলে যেকোনো গান কণ্ঠে তুলতে পারবেন; অতএব আমাদের জাতীয় সংগীতও। আরো পরঙ্গম হলে, এর সঙ্গে আরো বিস্তর বাদ্যযন্ত্র সহযোগে গানটিকে প্রচলধারার গানের চাইতে শ্রুতিমধুর এবং/অথবা প্রযুক্তিগতভাবে অগ্রসর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়াও তাদের পক্ষে কিছুমাত্র অসম্ভব নয়। এই ব্যক্তিটি যখন আমাদের জাতীয় সংগীত গাইবেন, তখন কেবলই একটি গান হিসেবেই গাইবেন, যেখানে আবেগ কিংবা চেতনা অথবা প্রেরণার লেশমাত্র নাই। বিপরীতে একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক সংগীতের কণামাত্র না শিখেও যখন গেয়ে ওঠেন, “আমার সোনার বাংলা...” (তারেক মাসুদের ‘মুক্তির গান’, জহির রায়হানের ‘জীবন থেকে নেয়া’ ইত্যাদি দ্রষ্টব্য), তখন যে অশরীরী-অপার্থিব স্পন্দন ছুঁয়ে যায় এই শরীরের প্রতিটি অণু-পরমাণু, সেটিই সুস্পষ্টভাবে আলাদা করে সংগীতকে শিল্প থেকে, দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ভেদরেখা টানে গায়ক আর শিল্পীর মধ্যে।
অতএব ক্রিকেটপ্রেমই বড় কথা নয়, দেশপ্রেমের লক্ষণ আছে কি-না ভেবে দেখা জরুরি। দেশপ্রেম থাকলেও চেখে দেখুন, দেশ বলতে কে কোন ‘দেশ’ বোঝায়। কারণ সবার জানা। পাকিস্তান আগাগোড়া সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র; ওখানে ভোরের সূর্য ওঠে সহোদরের রক্তে লাল হয়ে। এই মৃত্যুপূরীতে আমাদের বিশ্বসেরা ক্রিকেটারদের আমরা পাঠাতে চাই না। পৃথিবীর কোনো একটি দেশ যেখানে যেতে চায় না, আমরা কেন সেখানে যাই? এমনকি, অন্য কোনো দেশ গেলেও, কেবলমাত্র ওই কারণেও আমরা যেতে চাই না। এখানেই বোঝা যায়, ক্রিকেটপ্রেমীদের দুই দলের কার কী লক্ষ্য!
সম্প্রতি, প্রথম আলোতে একটা গল্পে দেখা গেলো, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলবাহী বিমানের পাইলট অন্য কোনো এক জায়গায় অবতরণ করে, এবং পাকিস্তানে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। গল্পটা বেশ আশা জাগানিয়া; আমার বেশ লেগেছে। কিন্তু আমি নিজে ওই পর্যন্ত ঝূঁকি নেবার মোটেও পক্ষপাতী নই। কেননা, পাইলট ঠিক এর উল্টো কাজটিও করতে পারে। দেখো গেলো, আকাশে উড়বার পর পাইলট এবং তার সহকর্মীরা বললো যে, আমরা ল্যান্ড করবো না যতক্ষণ না বিমানের পুরো জ্বালানী শেষ হয়ে এটি বিধ্বস্ত হয়। আমরা নিজেরা স্যুইসাইড স্কয়ারের সদস্য, মরতে আমাদের কিচ্ছুটি এসে যায় না। তোমাদের (খেয়াল কইরেন) সরকারকে বলো যুদ্ধাপরাধীদের এই মুহূর্তে ছেড়ে দিতে। অথবা তারা পাকিস্তানের আপাত-সুরক্ষিত বিমানবন্দরে না গিয়ে তালিবান-বান্ধব কোনো বিমানবন্দরে গিয়ে ল্যান্ড করলো, এবং একইরকম দাবি করে বসলো। বিশ্বমানের ক্রিকেটারদের কথা ভেবে, এবং বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের ক্রিকেটপ্রেমের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে গেলে, সরকারকে কেমন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে, তা আমরা আগে থেকেই অনুমান করতে পারি। প্রশ্ন হলো, এরকম ফালতু ভবিষ্যদ্বানী কেন করা হচ্ছে? উত্তর খুব সোজা। সম্প্রতি তুরস্কের ১৪-সদস্যের একটি ‘প্রতিনিধি’ আমাদের আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল ঘুরে গেলো, বাঘাবাঘা সব উপদেষ্টা ইত্যাদির সঙ্গে আলোচনা করে গেলো, অথচ আমরা পরে জানতে পারলাম এরা ইসলামিক ব্রাদারহুডের সদস্য। আমাদের দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলা কোন পর্যায়ের ভোদাই হলে এটা সম্ভব! এরা ঢাকায় চারদিন ছিলো, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছে, এমনকি আইনমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্ঠার সঙ্গে বৈঠক করেছে (লিংক), অথচ আমরা জানলামই না এরা কে? ওরা চলে যাবার পর প্রশ্ন উঠছে, ট্রাইব্যুনালের প্রধান ফটক দিয়ে এরা কীভাবে ঢুকলো ইত্যাদি। এসব কীভাবে সম্ভব! ধারণা করি, গোয়েন্দা সংস্থা থেকে শুরু করে ট্রাইব্যুনালের অনেক স্তরেই জামাতের লোক আছে। আরো কত কী যে ঘটতেছে কে জানে! যাই হোক, এতো কথা বলার কারণ এই, এতো সুচারুরূপে যদি জামাত কাজ করতে পারে, তাহলে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলবাহী বিমানের পাইলট এবং ক্রুদের হাত করা জামাতের জন্য খুব একটা শক্ত কাজ বলে মনে হয় না।
এবার আসি, কামাল-পাপনদের যুগপদ নোংরামি প্রসঙ্গে। লোটা(স) কামাল যে আইসিসি’র পদ পাবার জন্যেই আমাদের টাইগারদের পাঠাতে রাজি হয়েছে সেটা এখন সবার জানা। সরাসরি, দালিলিকভাবে, জানা গেলো সম্প্রতি (সূত্র:)। আর পাপন সাহেবও সাধারণ যুক্তিবোধ বাদ দিয়ে, লোটার প্রতিশ্রতি রাখতে এতো বড়ো একটা ঝুঁকি নিচ্ছেন। এবং এর পক্ষে অযৌক্তিক প্রচারণা এবং মিথ্যাচারও করছেন। তিনি সম্প্রতি বলেছেন, “বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম পাকিস্তান যাবে, ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) সভার কার্যবিবরণীতে তা লিপিবদ্ধ করা আছে।” তিনি আরো বলেন, “আমি মনে করি যাওয়া উচিত। কারণ আইসিসির মিনিটস অমান্য করে ক্রিকেট বিশ্বের উদীয়মান তারকা বাংলাদেশ এই মুহূর্তে কোন দুর্নামের ভাগীদার হোক এটি নিশ্চয়ই আমাদের কারও কাম্য হতে পারে না।”(সূত্র:)
এটা খুবই কার্যকরী একটা যুক্তি হতে পারতো; যদিও এটা কখনোই চূড়ান্ত হতে পারে না। প্রাণনাশের ঝুঁকি নিয়ে আইসিসির আদেশ/পরামর্শ আমরা কেন মেনে নেব! আমি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আইসিসি’র ওয়েবসাইট ঘাঁটতে শুরু করলাম। এক পর্যায়ে, তাদের ২০১১ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সম্ভাব্য ট্যুরের তালিকা ডাউনলোড করলাম (লিংক:)। খুব মনোযোগ দিয়ে দু’বার অন্তত দেখলাম, ২য় পৃষ্ঠার মাঝামাঝিতে নভেম্বর-ডিসেম্বর/২০১২ এবং জানুয়ারি/২০১৩ বরাবর বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের সম্ভাব্য খেলার তালিকার ঘরে (যথাক্রমে, সর্বডানের কলাম, এবং বাম দিক থেকে ষষ্ঠ কলামে) কোথাও বাংলাদেশ-পাকিস্তান খেলার কথা লেখা নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাংলাদেশ সফর (নভেম্বর-ডিসেম্বর/২০১২), পাকিস্তানের ভারত এবং জিম্বাবুয়ে সফর (ডিসেম্বর/’১২--জানুয়ারি/’১৩) সবই আছে, কিন্তু বাংলাদেশের পাকিস্তান সফরের কোনো আলামত নেই। পাপন সাহেবের ভাষ্যমতে আইসিসি’র মাইন্যুট্স-এ যদি এ-সফরের কথা লেখা হয়ে থাকে, তাহলে এটি অবশ্যই আইসিসি’র সম্ভাব্য সফরসূচীতে থাকার কথা। মাইন্যুট্স সম্পর্কে আরেকটু বলা ভালো, মাইন্যুটস মানেই সেটা কখনোই চূড়ান্ত নয়; সভায় আলোচিত গুরুত্বপূর্ণ সবই মাইন্যুটস-এ থাকে, বাস্তবায়ন করতে গেলে সেটা পরবর্তীকালে অনুমোদিত হতে হয়। অতএব, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমরা ধারণা করতে পারি, বিষয়টা আইসিসি’র ‘অনুমোদিত’ মাইন্যুটস-এ নাই, থাকলে সেটা তাদের সফরসূচীতে আসার কথা ছিলো। ইংরেজিতে একটা কথা বললেই যে বাকিরা কেউ সেটা বুঝবে না, ২০১২ সালে এমনটা ভাবার কি কোনো সুযোগ আছে?
এরপরও আমার শংকা কাটেনি। ভাবলাম, আইসিসি কি কোনোরকম চাপ তৈরি করতে পারে কি না! তাই ওদের সাইট থেকে অনুসন্ধান বিভাগের ইমেইল সংগ্রহ করে তাদেরকে একটা মেইল করলাম। এরকম একটা সময়ে ফেইসবুকের “বাংলাদেশ ক্রিকেট দল পাকিস্তানে যাবে না” (লিংক:) নামের একটা পেইজে দেখলাম, এক বন্ধু পোস্ট করেছে, আইসিসি’র সঙ্গে তাদের আলাপে আইসিসি কী বলেছে সেটা। সেখানে স্পষ্টত লেখা: “Hello
Thanks for your email.
Any tour is a matter for the two teams concerned. ICC does not order a country to tour or not. ICC are only involved in the provision of match officials.
Regards
ICC Enquiry”
প্রায় একইসময়, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সাংবাদিক ফজলুল বারী ভাইয়ের পোস্ট থেকেও একই ইমেইলের রেফারেন্স পেলাম। মনটা আনন্দে ভরে গেলো। আইসিসি তাহলে কোনোরকমের চাপ তৈরি করছে না, করে না। এটা নিতান্তই দুই-দেশের দ্বিপাক্ষিক সিদ্ধান্তের বিষয়। কিন্তু বাগড়া বাধলো অন্যখানে। এই দুই জায়গাতেই, আইসিসি’র ইমেইল হিসেবে দেখা যাচ্ছে । কিন্তু আইসিসি’র মূল ওয়েবসাইটে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের ইমেইল দেয়া আছে । হঠাৎই আমার চোখে পড়লো, এবং আমি দুটো সূত্রকেই বিষয়টা অবহিত করি, এবং আমার মেইলের উত্তরের জন্য অপেক্ষা করি। খানিক বাদেই আমার মেইলে আইসিসি’র প্রত্যুত্তর আসে। সৌভাগ্যবশতঃ আমার মেইলের উত্তরও এসেছে থেকে। বুঝলাম, ইমেইল গ্রহণ আর প্রত্যুত্তরের জন্য ওরা আলাদা আলাদা ইমেইল ব্যবহার করে। যাহোক বোঝা গেলো, আইসিসি’র তরফ থেকে কোনোরকম চাপ নেই। চাপ যা আছে সেটা কেবল লোটা’র চাপ; কলেরা-আক্রান্ত ব্যক্তির পক্ষে এই চাপ সামলানো সত্যিই দায়!
কারো কলেরার সমস্যা থাকলে তিনি তো কলেরা হাসপাতালে যেতেই পারেন; সুস্থ সবল টাইগারদেরকে কেন মৃত্যুপূরীতে পাঠানো?
ধানাইপানাই আলাপে বিভ্রান্ত না-হয়ে যেকোনো মূল্যে এ-সফর ঠেকানো আমাদের সবার পবিত্র দায়িত্ব। পাপন সাহেবও লোটার মতো অন্য কোনো পদ-দখল (একসঙ্গে পড়লে কেমন পদ্ম পদ্ম শোনায় না, কেমন লোটাস লোটাস না?) করার পাঁয়তারা করতেসেন কি-না, অনুসন্ধান করা দরকার।
-------
আনু-আল হক
মন্তব্য
বিবিসির এক সাক্ষাৎকারে বর্তমান বিসিবি সভাপতি পাপনের বক্তব্য শুনলাম। তিনি পূর্বসূরী লোটা কামালের "প্রতিশ্রুতি" রক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন, সেইসাথে আইসিসির কোর্টে বল ঠেলার চেষ্টা করেছেন।
এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে, পিসিবিকে দেওয়া লোটা কামালের প্রতিশ্রুতির গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু? সেই প্রতিশ্রুতি কি বোর্ডের সঙ্গে আলাপ করে দেওয়া হয়েছিলো? যতদূর জানি, তা করা হয়নি। লোটা কামাল আইসিসির সহ-সভাপতি হওয়ার জন্য পাকিস্তানের কাছ থেকে বিনা প্রতিশ্রুতিতেই প্রাপ্য সহযোগিতা, অর্থাৎ কি না যা মাগনাই পাওয়ার কথা ছিলো, তার জন্য একটা মূল্য ধরে দিতে রাজি হয়েছিলো। সেই মূল্য হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের জীবনের মূল্য।
যে প্রতিশ্রুতি লোটা কামাল বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা না করেই দিয়েছে, সে প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য বোর্ড কেন বেয়াকুল?
দ্বিতীয়ত, পাকিস্তান হচ্ছে এমন একটা দেশ, যেটি ১৯৪৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ভূখণ্ডের মানুষের কাছে দেওয়া কোনো প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। না পাকিস্তান ফ্রেমওয়ার্কে, না আন্তর্জাতিক অ্যারেনায়। সব স্কুলের ক্লাসেই যেমন একটা অকৃতজ্ঞ গাণ্ডু ছাত্র থাকে, পাকিস্তান হচ্ছে পৃথিবীর মহল্লায় সেই গাণ্ডুরাষ্ট্র। এই গাণ্ডুরা নিজেরা বোমাবাজি করে নিজেদের বদনাম করেছে, সেই বদনাম, তাদের ললাটে সেই বিষ্ঠা তিলক আমাদের মুছে দিয়ে আসতে হবে কেন?
পাকিস্তানের রয়েছে বাংলাদেশী ক্রিকেটার হত্যার রেকর্ড। এখনও আমাদের শ্রেষ্ঠ স্টেডিয়ামের দুইটি অঙ্গনের নাম তাদের হাতে নিহত শহীদ ক্রিকেটারদের নামে। সেই পাকিস্তানের পশ্চাদ্দেশ বাঁচাতে আমাদের বলিকাঠে চড়তে হবে কেন?
বাংলাদেশের ক্রিকেট বিষয়ে পাকিস্তান কী বালটা কনট্রিবিউট করেছে? বরং আমাদের দেশে এসে খেলে দুইটা পয়সার মুখ দেখে খেয়ে পরে বাঁচতে পারছে তারা। পাকিস্তানের সাথে যদি ক্রিকেটাঙ্গনে সম্পর্কের অবনতি হয়, বাংলাদেশ ক্রিকেটের বালটাও বাঁকা হবে না।
পাকিস্তান প্রসঙ্গে বিসিবিকে আরো শক্ত অবস্থানে দেখতে চাই। পিসিবির রক্ষিতার মত আচরণ করতে দেখতে চাই না। রক্ষিতাগিরি করতে চান, ঢাকা ছেড়ে লাহোর যান।
---------------------
আমার ফ্লিকার
এই মন্তব্যের উপর আর কোন কথা নাই।
সংশোধনী:
----------
আইসিসি’র ইমেইলের নিচের প্যারাটি থেকে কিছু অংশ বাদ পড়ে গেছে; কীভাবে উধাও হলো এখনো বুঝতে পারছি না!!!
সংশোধিত রূপ:
-------------
প্রায় একইসময়, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সাংবাদিক ফজলুল বারী ভাইয়ের পোস্ট থেকেও একই ইমেইলের রেফারেন্স পেলাম। মনটা আনন্দে ভরে গেলো। আইসিসি তাহলে কোনোরকমের চাপ তৈরি করছে না, করে না। এটা নিতান্তই দুই-দেশের দ্বিপাক্ষিক সিদ্ধান্তের বিষয়। কিন্তু বাগড়া বাধলো অন্যখানে। এই দুই জায়গাতেই, আইসিসি’র ইমেইল হিসেবে দেখা যাচ্ছে এই ইমেইল কিন্তু আইসিসি’র মূল ওয়েবসাইটে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের ইমেইল দেয়া আছে এটি। হঠাৎই আমার চোখে পড়লো, এবং আমি দুটো সূত্রকেই বিষয়টা অবহিত করি, এবং আমার মেইলের উত্তরের জন্য অপেক্ষা করি। খানিক বাদেই আমার মেইলে আইসিসি’র প্রত্যুত্তর আসে। সৌভাগ্যবশতঃ আমার মেইলের উত্তরও এসেছে এই ইমেইল থেকে। বুঝলাম, ইমেইল গ্রহণ আর প্রত্যুত্তরের জন্য ওরা আলাদা আলাদা ইমেইল ব্যবহার করে। যাহোক বোঝা গেলো, আইসিসি’র তরফ থেকে কোনোরকম চাপ নেই। চাপ যা আছে সেটা কেবল লোটা’র চাপ; কলেরা-আক্রান্ত ব্যক্তির পক্ষে এই চাপ সামলানো সত্যিই দায়!
ফারাসাত
ভেবেছিলাম পাপনের বুদ্ধিসুদ্ধি ভালো। বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্যই কাজ করবে। এখন দেখি সে লোটাস কামালের জন্য কাজ করছে। এইলোকগুলা একটা সাধারণ জিনিস কেন বুঝে না, পাকিস্থান যতই নিরাপত্তা দিতে চাক, ওদের সেই ক্ষমতাই তো নাই। শুধু ইচ্ছা থাকলেই কি হবে, সক্ষমতা থাকতে হবে না?
পাপনের এই মিথ্যাচারের কথা জানা ছিলনা।
-রু
আমারও সেরকমটাই মনে হতো; ভেবেছিলাম অন্তত পাপন সাহেব অতোটা গাড়ল নন। এখনো তাই ধারণা করি। কোনো অদৃশ্যচাপের মুখে তিনি এরকম সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না তো?
"নতুন বিয়ে না করলে সাকিব ও যেত।"
বাকি টাইগাররাও (অন্তত যারা এখনও বিয়ে করেন নাই) কি তাইলে সাকিবের পথ ধরতে পারে???
কিন্তু দুইটা অপশনের কোনোটাই তো অন্যটার চাইতে কম স্যুইসাইডাল না!!!
আচ্ছা আমরা সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে কোন রিট আবেদন করতে পারি না এই অবিবেচক সিধান্তের বিরুদ্ধে ?? যাতে এই আত্মঘাতী সিধান্ত থেকে সরে আসে
এটা কিন্তু একটা ভালো এবং কার্যকরী উপায় হতে পারে! কিন্তু ‘রিট’ আবেদনের উপায় আমি ঠিক জানি ন। সচলে নিশ্চয়ই আইনজীবী বা আইন-বিষয়ে সম্যক জ্ঞান আছে এরকম বন্ধু আছেন। তাঁদের কেউ কি সবার পক্ষ থেকে রিট আবেদন করবেন বা উপায় বাতলে দেবেন? অন্তত একটা স্টে অর্ডার জাতীয় কিছু পেলেও ট্যুরটা আপাতত স্থগিত হোক (গেল বছরের মতো)।
আবার ভাবছি, এটা দীর্ঘমেয়াদী কোনো সমাধান নয়। রিট-আবেদনে এমনটা কি ‘প্রত্যাশা’ করা যেতে পারে যে, অন্য কোনো টেস্ট-খেলুড়ে দলের নিরাপদ সফর (এবং নিরাপদ প্রত্যাবর্তন) এবং পাকিস্তানের ওই সময়ের নিরাপত্তা পর্যাপ্ত হলেই কেবলমাত্র আমাদের ক্রিকেটারদের পাকিস্তান পাঠানোর কথা ভাবা যেতে পারে। রিটে স্পষ্ট বলা উচিত, আমাদের টাইগাররা জনগণের, বিসিবি কিংবা কোনো ব্যক্তিবিশেষের নয়; আরো স্পষ্টত, বিসিবি এবং ওইসব ব্যক্তিবিশেষও জনগণের। অতএব জনগণের প্রত্যাশার মূল্য দেয়া উচিত। ক্রিকেটের প্রতিটা ম্যাচের ফলাফলে জনগণের প্রত্যাশা হয়তো পূরণ সম্ভব নয়, কিন্তু এ-জাতীয় স্যুইসাইডাল সিদ্ধান্ত প্রতিহতের ক্ষেত্রে আমরা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারি। [উল্লেখ্য, এখানে জনগণ বলতে বাংলাদেশ-প্রবাসী-পাকিস্তানীদের কথা বাদ দিয়ে বলা হচ্ছে।]
জনগণ বিসিবি’র কর্মকাণ্ডে কখনোই নাক গলায় না; এ-সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা হচ্ছে শুধুমাত্র দেশের কথা ভেবে।
খুব জরুরি একটা লেখা! সব রসুনের এক **কি!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
স্বপ্নহারা, অনেক ধন্যবাদ।
যা বলসেন গুরু, মনে হয় লোটা’র অপ্রকাশিত সংলাপ থেকে উদ্ধৃত!!!
আরো কোনা গোপন অফার লিক হইয়া গেলে জানাইয়েন পিলিজ।
অনেক জরুরি একটা লেখা। অনেক ধন্যবাদ আনু ভাই।
নতুন মন্তব্য করুন