শিক্ষা যখন শুধুই অলংকার

আনু-আল হক এর ছবি
লিখেছেন আনু-আল হক [অতিথি] (তারিখ: রবি, ২৮/০৬/২০১৫ - ৭:০৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শিক্ষিত হতে হবে নাক উঁচু করার জন্য, মুখ রক্ষার জন্য, চাকুরি পাবার জন্য, আর ডিগ্রির বোঝার আড়ালে মিথ্যার বেসাতির সুবিধার জন্য।

ঘটনার সূত্রপাত, আম্রিকায় সমকামীদের বিয়ে করার অধিকার বৈধ হবার অাইন পাস হবার পর। যাঁরা এ-ঘটনায় সমকামীদের মানবাধিকার রক্ষিত হয়েছে বলে মনে করেছেন, এবং সমকামীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম হয়েছেন, তাঁরাও রংধনুরঙের প্রতীকী ছবি ব্যবহার করে তাঁদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। ব্যস, শুরু হয়ে গেলো এর নিন্দা করা। যদিও এর সঙ্গে নিজে সমকামী হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই (হলেও দোষের কিছু নয়), তবু নিন্দুকদের কথা সমকামী না হলে সেটার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করা কেন! আচ্ছা, পশু অধিকার রক্ষার কথা বলার জন্য কি নিজেকে পশু হতে হবে, সংখালঘুদের অধিকার নিয়ে কথা বলার জন্য কি নিজেকেও সংখ্যালঘু হতে হবে, নারীবাদ নিয়ে কথা বলার জন্য নিজেকে নারী হতে হবে? এসব প্রশ্নের সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

ধর্ম বিষয়ে ভালো ভালো গোলগাল কথা বলেন, আপনার ধর্মজ্ঞান নিয়ে কেউ প্রশ্ন করবে না, কিন্তু যখনই সামান্য সমালোচনা করবেন, তখনই ধর্ম-ভাষা-প্রত্যয়-বিভক্তি ইত্যাদি নিয়ে কথা উঠবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার জ্ঞান তাদের অন্ধবিশ্বাসকে সমর্থন করবে, ততক্ষণ জ্ঞান আশীর্বাদ, আর যখনই আপনার জ্ঞান সেটাকে আঘাত করবে, তখনই জ্ঞান অভিশাপ, নাইলে জ্ঞানে ঘাটতি আছে, নাইলে ভাষাজ্ঞানে কমতি আছে, নাইলে আপনি বোলগার! মোদ্দাকথা হচ্ছে, এমন জ্ঞানের দরকার নাই।

মেয়ে কেমন চাই? সুন্দরী, স্বাস্থ্যবতী, উঁচা-লম্বা ইত্যাদি। আর শিক্ষা? ও হ্যাঁ, শিক্ষিত হইতে হবে। কতটা শিক্ষিত? এইবার শুরু হবে ত্যানা প্যাঁচানো। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া বাকিরা সবাই (উচ্চ)শিক্ষিত রমণী চান, তবে এতোটা শিক্ষিত না যে নারী অধিকার নিয়ে কথা বলবে, বিশ্বরাজনীতি নিয়ে সরব থাকবে, চাকুরী করবে। মূলত সবাই একটি উচ্চশিক্ষিত কাজের বুয়া চান, যাতে সমাজের কাছে মুখ রক্ষা হয়, আর ঘরের ভেতরে নিজের পশ্চাদ্দেশ রক্ষা হয়। অনেকটা পিএইচডি শিক্ষার্থী হিসাবে রিসার্চ অ্যাসিস্টেন্ট-এর মতো: চার-আনা পয়সা দিয়ে ষোলো-আনা কাজ উদ্ধার হয়।

একই কথা ছেলেদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ছেলে উচ্চশিক্ষিত হোক, সেটা সবাই চায়, কিন্তু এতোটা উচ্চশিক্ষিত না যে ধর্মের জংধরা কলটা নাড়ায়া দিবে, আজাইরা প্যাঁচাল শুনলে মুরব্বীদের মুখে মুখেও তর্ক করবে। অর্থাৎ উচ্চশিক্ষিত কেরানী চান, কিংবা উচ্চশিক্ষিত রাজাকার, কিংবা উচ্চশিক্ষিত মিথ্যুক, উচ্চশিক্ষিত অগাধমূর্খ কাঠমোল্লা।

আমি এমন একজনকে জানি, যিনি অসম্ভব চৌকস, বুদ্ধিদীপ্ত, প্রখর। খুবই দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসে বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম বিদ্যাপিঠে পড়েছেন, এবং সর্বার্থেই তিনি বিদ্বান। তাঁর বাবা-মা আক্ষরিক অর্থেই আর-দশটা সাধারণ বাবা-মা’র মতো, রক্ষণশীল, ধার্মিক। উনার বাবা-মা ঠিক করে জানেনও না তিনি কতোটা উচ্চমাপের বিদ্যাপিঠে পড়েছেন, এবং তাঁর জ্ঞানের বিচ্ছুরণ ঠিক কতোটা। তো তাঁর মা তাঁকে ধর্ম মেনে চলার অনুরোধ করলে তিনি মৃদু হেসে অপারগতা প্রকাশ করলেন, এবং ধর্মের প্রতি তাঁর অবিশ্বাসের আভাস দিলেন। এভাবে দীর্ঘদিন পর তাঁর মা অনেকটা কান্নামুখেই বললেন, আমরা চেয়েছিলাম আমাদের ছেলে অনেক বড় হবে, শিক্ষিত হবে… তখন তিনি বললেন, তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে তোমার আফসোস রয়ে গেছে! কেন তোমার ছেলে কি শিক্ষিত হয়নি? উত্তরে মা বললেন, হ্যাঁ শিক্ষিত তো হয়েছে, কিন্তু এতোটা শিক্ষিত চাইনি যে স্রষ্টাকে অস্বীকার করবে! আমার পোড়া কপাল!

শুনেছি ব্রিটিশ আমলে তাদের কলোনি থেকে শিক্ষিত কেরানি বানানো হতো, ঠিক ততোটা শিক্ষিত যাতে তারা ব্রিটিশ প্রভুদের কথা (আদেশ) বুঝতে পারে, এবং সেই মোতাবেক কাজ করতে পারে। তাতে দোভাষীর কাজও চলে; রাজস্ব আদায়ের জন্য হতদরিদ্র কৃষকদের সঙ্গে কথা বলার মতো লোকবলও তো থাকা চাই। আবার অতোটা শিক্ষিতও নয় যে, আপনি মৌলিক কোনো অাবিষ্কার করে আপনার প্রভুদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দেখাবেন (অন্ততঃ তাদের উদ্দেশ সেটা ছিলো না, তবু কিছু ব্যতিক্রমী মানুষ তো সব বাধা ডিঙিয়ে ঠিকেই বেরিয়ে আসেন!)। একালেও অবস্থা ঠিক আগের মতোই। আমাদের শিক্ষিত লোক চাই, যাতে বলতে পারি দেখো ডাক্তার হয়েও কেমন ধর্মের গুণের কথা বলছেন (উদা. ডাক্তর জোকার নায়েক), জেনেটিক্সে পিএইচডি করেও কেমন সমকামিতাকে ‘চয়েস’ এবং ধর্মমতে হারাম বলে সাফাই গাইছেন, দেশসেরা বিতার্কিক হয়েও রাজাকারদের অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছেন, কিংবা অধ্যাপক হয়েও তিনি রাজাকার ছিলেন (অর্থাৎ বোঝাতে চাওয়া, আম্নে কি অধ্যাপকের চাইতেও বেশি বুজেন?)!

তেমনি, আপনি শিক্ষিত হবেন যাতে ইংরাজিতে অনর্গল কথা বলতে পারেন, দু’চারটা রেফারেন্স দিতে পারেন, তিন/চারটা বাঁশেরকেল্লা কি রেডিওমুন্নার যুক্তি দেখাতে পারেন। এই পর্যন্ত হলে সবাই বলবে, দেখেছো শিক্ষার কী স্ফূরণ! কি সুন্দর তার কথা, যুক্তি! কিন্তু যখনই আপনি রাজাকারদের উলংগ করে দেবেন, ধর্মীয় গোঁড়ামি বা কুসংস্কারের যৌক্তিক সমালোচনা করবেন, তখনই আপনার শিক্ষা অভিশাপ হিসাবে বিবেচনা করা হবে: ইহুদীদের শিক্ষায় শিক্ষিত হলে তো এরকম হবেই।

অর্থাৎ, আপনি ততদূর শিক্ষিত হবেন যেটা দিয়ে #SaveGaza হ্যাশট্যাগ দেয়া যায়, কিন্তু #GenocideBangladesh হ্যাশট্যাগ দেয়া যায় না; ততোটাই শিক্ষিত যা দিয়ে আপনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে ভিয়েতনাম যুদ্ধের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে ওয়াকিবহাল থাকতে পারবেন, কিন্তু বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে আপনি চূড়ান্ত নীরবতা পালন করতে পারবেন; ততোটাই শিক্ষিত যেটা দিয়ে বলতে পারবেন আপনি অসাম্প্রদায়িক (যদি দরকার হয়), কিন্তু ব্লগার হত্যার সময় আপনি বলতে পারবেন, মৌলবাদী আর ব্লগার উভয়েই সমান গোঁড়া; ততোটাই শিক্ষিত যা দিয়ে আপনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন নিয়ে কথা বলতে পারবেন, কিন্তু আইসিস যখন এমনকি মুসলিমদেরও হত্যা করে তখন আপনি ফুল-পাখি-লতা-পাতার খবর দিতে পারবেন; ততোটাই শিক্ষিত যা দিয়ে আপনি বলতে পারবেন, অমুসলিমপ্রধান দেশেও মুসলিম নারীদের জন্য হিজাব পরার অধিকার সমুন্নত রাখতে হবে, কিন্তু মুসলিমপ্রধান দেশে অমুসলিমদের নিজেদের মতো করে থাকার স্বাধীনতা নিয়ে আপনি টুঁ-শব্দটিও করবেন না; আপনি ঠিক ততোটাই শিক্ষিত হবেন, যা দিয়ে আপনি পুরুষদের বহুগামিতার পক্ষে যুক্তি (!) দেখাবেন, কিন্তু অনেকটাই জিন-নিয়ন্ত্রিত সমকামিতার (তাও অমুসলিমপ্রধান দেশে) তীব্র সমালোচনা করতে পারবেন।

জ্ঞানের সূতিকাগার হচ্ছে প্রশ্ন করা: ভৃত্যের মতো প্রশ্নহীন আনুগত্য নয়। অথচ, আমরা এমন এক শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছি, যা চিন্তার কোনো নতুন দ্বার উন্মোচনের জন্য নয়, জ্ঞানের অপার সম্ভাবনাময় অজস্র জানলাগুলো খুলে দেয়ার জন্যও নয়, নিদেনপক্ষে নিজের জানার সীমাবদ্ধতাগুলো উতরে দৃষ্টিভঙ্গী নবায়নের জন্যও নয়, এ-শিক্ষা চোখ-কান বন্ধ রেখে পুরানো কুৎসিত বর্জ্যপদার্থগুলোর পক্ষে সীমাহীন নির্লজ্জতা নিয়ে মিথ্যাসাফাই গাওয়ার মতো দক্ষ হয়ে ওঠার শিক্ষা। শিক্ষিত সেই ভৃত্যদের জন্য করুণাই থাক বরাদ্দ।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রমথ চৌধুরী বলে গেছেন, "এদেশে বিদ্যে গেলানো হয়।"
সাদা মেঘদল

আনু-আল হক এর ছবি

চলুক

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

মরুদ্যান এর ছবি

চলুক

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অতিথি লেখক এর ছবি

শিক্ষিত হতে হবে নাক উঁচু করার জন্য, মুখ রক্ষার জন্য, চাকুরি পাবার জন্য, আর ডিগ্রির বোঝার আড়ালে মিথ্যার বেসাতির সুবিধার জন্য।

এই শিক্ষিত চৌধুরীদের নিয়ে একটা লেখা দেবার ইচ্ছা আছে।

জ্ঞানের সূতিকাগার হচ্ছে প্রশ্ন করা: ভৃত্যের মতো প্রশ্নহীন আনুগত্য নয়।

চলুক চলুক চলুক

আমি তোমাদের কেউ নই

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- শিক্ষিত চৌদ্রিদের নিয়ে লেখার অপেক্ষায় পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

এক লহমা এর ছবি

ভালো লেগেছে। ৫ তারা।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এরা যতো বেশি পড়ে, ততো বেশি জানে, ততো কম মানে
এতো শিক্ষার দরকার কী?

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আনু-আল হক এর ছবি

আসলেই,

এরা যতো বেশি পড়ে, ততো বেশি জানে, ততো কম মানে

চলুক

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

মরুদ্যান এর ছবি

লেখা উমদা হয়েছে।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

এইজন্যই কই, এত পড়াশুনার দরকার নাই। কেউ শুনেনা! মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
এগিলারে নিয়া কিত্তাম চিন্তিত

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

হিমু এর ছবি

সিলেবাসের বাইরের জিনিস সামলানোর কায়দাই শিক্ষা।

এখন শোনেন এক বিরাট শিক্ষাগুরুর বক্তব্য:

“...পাকিস্তান আমলের শেষ কিছু বছরে পূর্ব ও পাকিস্তানের মধ্যে সৌহার্দ্য বাড়ানোর লক্ষ্যে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানি যুবক-যুবতীদের মধ্যে বিবাহপ্রবণতাকে উৎসাহিত করা হয়েছিল। নিয়ম করা হয়েছিল: কোনো পূর্ব পাকিস্তানি ও পশ্চিম পাকিস্তানি বিয়ে করলে তাদের দুজনের প্রত্যেককে আড়াইশ করে টাকা দেওয়া হবে। পদক্ষেপটার কথা শুনে পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তানের সেই রেষারেষির দিনগুলোতেও আমি খুশি হয়ে উঠেছিলাম। এই খুশি পাকিস্তানের স্থায়িত্বের জন্যে নয়, (পাকিস্তান ভেঙে যাবার ভাবনাটা তখনো মানুষের মনে অতটা বদ্ধমূল হয়নি।) খুশি হয়েছিলাম এ-কথা ভেবে যে, ব্যাপারটা কিছুকাল চললে আমাদের এই স্বাস্থ্য-উদ্যমহীন নির্জীব নিরানন্দ দেশে অচিরেই এমন কিছু তাগড়া চেহারার যুবক-যুবতী দেখে দেবে যারা দেশের সামনে আশার প্রতীক হয়ে দাঁড়াবে।”

শেহাব এর ছবি

কে ইনি?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এই নিন। আলোর ফেরিওয়ালা দ্বারা আলোকিত হন।

http://www.goodreads.com/quotes/7143241


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

এক লহমা এর ছবি

চমৎকার! আহারে, "মানুষ তার স্বপ্নের সমান!"-এর বক্তার এত বড় স্বপ্ন সার্থক হল না!

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

আনু-আল হক এর ছবি

রেগে টং

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

মিজান, পিষে ফ্যালো

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

আনু-আল হক এর ছবি

সিলেবাসের বাইরের জিনিস সামলানোর কায়দাই শিক্ষা।

চলুক

হোদ্যফা! কে এই মহান শিক্ষাগুরু! ওইভাবে তো তাগড়া চেহারার মারখোর উৎপন্ন হইতো, এবং কিছুটা হইছেও। সেইগুলার বংশবিস্তারের কারণেই তো দেশের এই হাল! তাগড়া চেহারার ‍যুবক-যুবতী কীভাবে দেশের আশার প্রতীক হয়? বাল, এই শিক্ষা এবং শিক্ষাগুরু লইয়া আম্রা কী করিবো?

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

এক লহমা এর ছবি

সে কি! ২০০৪-এ ম্যাগসাসে, ২০০৫-এ একুশে, ২০১২-তে বাংলা একাডেমী!
আপনি কি আলোকিত মানুষ হতে চান না! তিনি যে আপনাদের জন্য বিশ্বসাহিত্য_কেন্দ্র গড়লেন!

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

ওডিন এর ছবি

শুনেছি ব্রিটিশ আমলে তাদের কলোনি থেকে শিক্ষিত কেরানি বানানো হতো, ঠিক ততোটা শিক্ষিত যাতে তারা ব্রিটিশ প্রভুদের কথা (আদেশ) বুঝতে পারে, এবং সেই মোতাবেক কাজ করতে পারে। তাতে দোভাষীর কাজও চলে; রাজস্ব আদায়ের জন্য হতদরিদ্র কৃষকদের সঙ্গে কথা বলার মতো লোকবলও তো থাকা চাই।

মোক্ষম উপমা দিয়েছেন। হাসি

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

শেহাব এর ছবি

খুব ভাল লেগেছে।

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমরা ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-জজ-ব্যারিস্টার-আমলা-পুলিশ-আর্মি হই এবং সন্তানদেরকে ঐসবই হতে বলি। আমরা নিজেরা কখনো মানুষ-জ্ঞানী-উদার-মহৎ-সংবেদনশীল-পরোপকারী-স্বাধীন হবার চেষ্টা করি না এবং সন্তানদেরকে এইসব অপ্রয়োজনীয় গুণ অর্জনে উৎসাহিত করি না। কী লাভ এসব করে! এরচেয়ে মন দিয়ে গাইড বই আর নোটস্‌ পড়, ভালো সিজিপিএ পাও, ভালো চাকুরি করো, সুযোগ পেলে বিদেশে স্থায়ী হয়ে যাও, বিয়ে করো, বাচ্চা পয়দা করো, বাড়ি বানাও, ব্যাংক ব্যালেন্স বাড়াও, একটু বয়স হলে ধর্মকর্ম করো, আর আমি মরলে বছর বছর ঘটা করে মৃত্যুবার্ষিকী পালন করো।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

মন্তব্যে চলুক চলুক চলুক । অল্প কথায় শিক্ষিত বাঙালি মধ্যবিত্তের সারা জীবনের আকাংখা, সাধনা আর অর্জনের যে চিত্রটা তুলে ধরলেন তা এক কথায় অনবদ্য।

আমি তোমাদের কেউ নই -> আতোকেন

আনু-আল হক এর ছবি

পাণ্ডবদা, পুরোপুরি সহমত। দু-একটি পরিবারের অভিভাবকরা কিছুটা সেরকম চাইলেও পরিবারের অন্যান্যদের কাছে, এবং সামাজিক চাপে পড়ে আবার ওই গতানুগতিক ধারায় ফিরে যায়। সেটার পরিবর্তন হয়তো খুব ধীরগতিতে হচ্ছে, যাদ হয় আর কি! আশা তো করতেই পারি হাসি

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

নীড় সন্ধানী এর ছবি

সিরিয়াসলি! শিক্ষা তো শুধু অলংকারই। মেয়েরা যেমন বিয়ের অলংকার পরে না, আলমারীতে বন্দী করে রাখে। শিক্ষিত লোকেরা সার্টিফিকেট ধুয়ে খায় না, তাও আলমারীতেই বন্দী। জিপিএ ফাইভের যুগে তো আরো বেশী বেশী অলংকার। ইয়ে, মানে...

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

আনু-আল হক এর ছবি

জিপিএ তো এমন অলংকার যে বাজারে বিক্রিও তেমন হইতেসে না; ঢাবি’র ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএফাইভ বহু ছাত্র ন্যূনতম পাস মার্কও পায় নাই খাইছে

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

দারুণ লেখা হাততালি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

নিটোল এর ছবি

ঠিকাছে। চলুক হাততালি

_________________
[খোমাখাতা]

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

অতিথি লেখক এর ছবি

এভাবে দীর্ঘদিন পর তাঁর মা অনেকটা কান্নামুখেই বললেন, আমরা চেয়েছিলাম আমাদের ছেলে অনেক বড় হবে, শিক্ষিত হবে… তখন তিনি বললেন, তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে তোমার আফসোস রয়ে গেছে! কেন তোমার ছেলে কি শিক্ষিত হয়নি? উত্তরে মা বললেন, হ্যাঁ শিক্ষিত তো হয়েছে, কিন্তু এতোটা শিক্ষিত চাইনি যে স্রষ্টাকে অস্বীকার করবে! আমার পোড়া কপাল!

চলুক

হুঁকোমুখো হ্যাংলা

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

পারফেক্ট।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

অতিথি লেখক এর ছবি

বৃটিশ আমলে কেরানী শিক্ষার কথা উল্লেখ করেছেন, এখনও সেই শিক্ষা থেকে আমরা খুব বেশীদুর অগ্রসর হতে পেরেছি কি? অাজও আমরা উচ্চশিক্ষিত নামে পুঁজিবাদীদের কাজ করে দেয়ার মতো কেরানীই তৈরি করি
Jaraahzabin

আনু-আল হক এর ছবি

ঠিকই বলেছেন, আমরা এখনো পারিনি। সেটাই বলার চেষ্টা করেছি। ইতিহাস তুলে ধরার জন্য রেফারেন্স হিসাবে বৃটিশদের ঘটনা উল্লেখ করেছি; এখনো সেটাই বলবৎ আছে।

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

রানা মেহের এর ছবি

লেখা খুব ভালো লাগলো।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

ফারাবী  এর ছবি

দারুণ লেখা। শিক্ষার কথা আর কি বলব, বাংলাদেশে এখন ত তা পণ্য হিসেবেই বৈধতা পেয়ে গেছে।

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

লেখা বিপ্লব হয়েছে জনাব !

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- জনাব লইজ্জা লাগে

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক চলুক

দেবদ্যুতি

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।