[জীবন থেকে নেওয়া কামরাঙ্গা গল্প]
আমরা যারা অবিবাহীত বাঙালী যুবক, তাদের অনেকেই বয়ঃসন্ধিকাল থেকেই খুজছি সেই নারীকে যার চোখের দিকে চাইলে মনে হয় যেন হারিয়ে যাই, ঠোঁট দেখলে যেন মনে হয় চুমু খেয়ে আজন্ম তৃষ্ণা মেটাই আর হাত দুটো ধরলে যেন মনে হয় আর কোন বাধা নাই। কিন্তু স্বপ্নের সাথে জীবনের বাস্তবতার খাপ খাওয়াতে গিয়ে কখনও আমরা দুঃখ পেয়েছি অনেক, কখনও দুঃখ দিয়েছিও অনকে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ কেউ অন্তত জীবনের এই একটি ক্ষেত্রে লাগামটা স্বপ্নের হাতেই সঁপে রেখেছি। সবসময়ই মনে হয়েছে ঠিক যেদিন থেকে লাগামটা স্বপ্নের হাত থেকে শরীরের হাতে চলে যাবে, যেদিন মনের আবেগ শরীরের বেগের কাছে হেরে যাবে, সেদিন থেকে আমি আর তরূণ নই। যাদের সাথে ঘনিষ্ট হয়েছি, সবার সাথেই সেই আশাটুকু, সেই স্বপ্নটুকু যেন ছিলই।
কিন্তু হতবাক হয়ে দেখি আশেপাশে কত না স্বপ্নবিহীন সংসর্গ, মন খারাপ হয়ে যায়, যখন দেখি এই স্বপ্নবিহীনদেরই দখল, কদর আজও সর্বত্র।
ভদ্রলোক পেশায় প্রকৌশলী, বুয়েট থেকে পাশ করা, ভাল ছাত্র। বয়সে মোটামুটি তরুন ও স্মার্টলুকিং এই প্রকৌশলীর সাথে পরিচয় হয় তারই এক তরুন সহকর্মির মাধ্যমে। তারা উভয়েই এক বড় কর্পোরেটের এক্সিকিউটিভ যারা ছিল আমার ক্লায়েন্ট। প্রায়ই আমাদের দুরান্তে সাইট ভিজিটে যেতে হতো। তরুন সহকর্মিটি ছিল বিয়ারের খুব ভক্ত। যেভাবেই হোক বিয়ারের কিছু বোতল আথবা ক্যান সে যোগাড় করে ফেলত। সারাদিন কাজের পর আড্ডাটা জমত ভালই। একটু ঘনিষ্টতার পরই বেশ আন্তরিক হয়ে গেলেন মিষ্টভাষী ভদ্রলোক। জানালেন পাশ করার পরই দুবছর কাটিয়েছেন দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার একটি দেশে। বিয়ে করার পরপরই ফিরে এসেছেন ঢাকায়। থাকেন রাজারবাগে সাথে স্ত্রী এবং একটি মেয়ে বছর পাঁচেকের। গল্প করতে করতে বিয়ারের আবেশে ঘুমিয়ে গেলে তরুন সহকর্মিটি বললেন:
আর বলেননা মারুফ (ছ:না:) ভাইয়ের কথা
কেন? কি হয়েছে?
আরে ভালমানুষ ভাবীটারে ফেলে সে যায় অন্য মেয়েমানুষের কাছে
বোকার মত বলি, আ্যফেয়ার আছে? ভাবী সুন্দরী না? পছন্দ করেনা?
আরে কি যে বলেন, ঐসব কিছু না, অন্য নেশা
মানে?
মেয়ে স্কুলে নেওয়ার ডিউটি তার তিনদিন সপ্তাহে, বাচ্চা স্কুলে রেখে সে ফার্মগেট বা মগবাজার মেরে আসে
বিয়ারের নেশা ছুটে যায় আমার, খুব অবাক হই।
পরদিন সর্বক্ষণ মনে ঘোরে বাচ্চা স্কুল ফার্মগেট মগবাজার, কিন্তু মারুফ ভাইকে দেখে কিছুতই মেলাতে পারিনা।
পরবর্তি ট্যুরে ঠিক হয় মারুফ ভাইকে আমরা তার বাসা থেকে উঠিয়ে নেব। আমরা সেখানে গেলে চায়ের আমন্ত্রণ জানান মারুফ ভাই। চা মুখে তোলার সাথে সাথেই ফুটফুটে বাচ্চাটি সহ ঘরে ঢোকেন মাঝারী গড়নের এক চমত্কার সুন্দরী। মারুফ ভাই পরিচয় করিয়ে দেন তার স্ত্রী কন্যার সাথে। আমার মাথায় ঘুরতে থাকে ফার্মগেট মগবাজার।
চলেযাই একেবারে সন্দ্বিপ। সবাই ক্লান্ত থাকায় ঐ রাতে আর আলাপ জমে না। পরের রাতে একটু আগে আগেই শুরু হয় আড্ডা। সদ্যবিবাহীত তরুন সহকর্মিটিকে নানারকম গোপন দাম্পত্যক্রিড়া সংক্রান্ত প্রশ্নে জর্জরিত করতে থাকেন মারুফ ভাই। তরুন সহকর্মিটি কিছুটা যেন আত্মরক্ষার্থেই বলে ওঠে:
কি ব্যাপার, যান নাই বোধ হয় অনেক দিন
আর বোলনা, যে ঝামেলা যাচ্ছে, যাব সোমবার
আছেন মজাতেই
তুমিও চলনা, মজা পাবা
আরে কি যে বলেন
আমি বলি, মারুফ ভাই একটা কথা জিজ্ঞাসা করব?
বলেন
ভাবিকে তো দেখলাম, দারুণ সুন্দরী
তা ঠিক
তারপরেও কেন যান? ঠিকমত হয় না?
হয়
তো
আপনি পোলাও কোর্মা খান? ভাল্লাগে?
হ্যাঁ
কিন্তু রোজ রোজ কি পোলাও কোর্মা খাওয়া যায়?
না
মাঝে মাঝে পান্তাভাত খেতে খুব স্বাদ লাগে, তাই না?
কন্ট্রাক্ট শেষ হয়ে গেছে ঐ কোম্পানীর সাথে, ঐ তরুন সহকর্মিটির সাথে এখনও কথা হয় মাঝে মাঝে। শুনেছি ম্যনেজার হয়ে অনেক টাকা পয়সা করেছে মারুফ ভাই, সপরিবারে মাইগ্রেট করেছে আমেরিকাতে। এতে নাকি ভাবীরই উত্সাহ ছিল বেশী।
মন্তব্য
এর পরে যদি একই ঘটনা যদি ভাবীর ক্ষেত্রে ঘটতো, আর তখন ভাবীই যদি পোলাও আর পান্তাভাতের উপমা দিতেন, তাহলে মারুফ ভাইয়ের কেমন লাগতো ভাবছি!
হয়তো মনে মনে খুশিই হতো, অপরাধবোধটুকু চিরবিদায় নিত!
- ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল
সন্দেহ আছে। নিজের ক্ষেত্রে এগুলো সাধারণত মানুষ জাস্টিফাই করার চেষ্টা করে পোলাও আর পান্তা ভাতের উপমা দিয়ে, পরিচিত পুরুষ হলে বাহবা দেয় বা রসালো আলাপ করে, পরিচিত নারী হলে ধিক্কার দেয় বা কটু কথা বলে, আর নিজের বউ হলে লঙ্কা কাণ্ড! অথচ সবগুলো কিন্তু একই ঘটনা, পাত্র বা পাত্রী ভিন্ন।
লেখা ভালৈছে।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
- ধন্যবাদ।
+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল
পার্টনার চিট করেছে এটা জানার মত কষ্টের আর কিছু হতে পারেনা একটা মেয়ের জন্য।
ভাল লিখেছেন
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
- ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল
হুম।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
আচ্ছা।
+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল
ভালো হয়েছে
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
-ধন্যবাদ
+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল
+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল
যতোই আমরা খারাপ বলি না কেন, যতোই আমরা ওই ভাবীদের জন্য দুঃখপ্রকাশ করি না কেন, এই ধরণের 'মারুফ'-রা সবসময়ই আমাদের মাঝে ছিল, আছে এবং থাকবে! এর জন্য দায়ী কে? এই প্রশ্নের জবাব বোধহয় কারোরই জানা নেই!
_______________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?
দায়ী কে মানে? এরকম কু-কাজের জন্য অবশ্যই দায়ী 'মারুফ'-রা নিজেই। এটা আবার অজানা হয় কিভাবে?
একটা কথা কি জানেন, ছেলেরা নিজেদের অনেক বুদ্ধিমান মনেকরে, কিন্তু মেয়েরা ঠিকই ধরতে পারে তাদের পার্টনার যখন চিট করে। অনেক সময় লজ্জায় বা সামাজিক কারনে বা বাচ্চাদের জন্য বা অন্য কারনে মেয়েরা এই কষ্ট চেপে রেখে ভান করে জানেনা। ছেলেদের ক্যারেকটার বোঝা মেয়েদের একরকম সিক্সথ সেন্স বলতে পারেন।
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
কিন্তু সমস্যা হলো 'সিক্সথ সেন্স' টা সাধারণতঃ কবুল বলার পরে এক্টিভেট হয়, প্রথম দেখায় ওটা এক্টিভেট কতই না ভাল হতো!
+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল
+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল
সেদিন বেশি দূর নয়- ভাবিরা যখন রুচি বদলের প্রশ্নে আপস করবেন না। কারণ মিয়াভাইরাই কিন্তু স্বাদ বদলের পথ চেনাচ্ছেন।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
খুব ভাল লাগল। কামনা করি যেন মারুফ ভাইদের রমরমা দিন তড়াতাড়ি শেষ হয়
ধন্যবাদ, আপনার কামনা যেন শীঘ্র সফল হয়!
+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল
+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল
প্রথমে অপ্রিয় কথাটা বলে নেই- আমরা যারা অবিবাহীত বাঙালী যুবক, তাদের অনেকেই বয়ঃসন্ধিকাল থেকেই খুজছি সেই নারীকে যার- লাইনটা পড়ামাত্রই মনে পড়ে গেলো শহীদুলে জহিরের গল্প বলার ভঙ্হিটা। আবার আপনার গল্পের শুরুর প্যারার কথনশৈলীর সঙ্গে পরবর্তী অংশের কথনশৈলীর মিল নেই।
এবারে ভালো কথাটুকু- প্রথম প্যারা ছাড়া বাকি গল্পের পুরোটাতেই নিজস্ব ভাষায় অত্যন্ত কম কথায় পুরোটা বলেছেন আপনি। আপনাকে অভিনন্দ ন ও শুভেচ্ছা।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
ধন্যবাদ, সমালোচনা ও শুভেচ্ছার জন্য।
+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল
+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল
নতুন মন্তব্য করুন