'এক্সপোর্ট কোয়ালিটি' বেশ বড় করেই মোড়কের গায়ে লেখা। যেভাবে বসে আছি তাতে কীসের মোড়ক সেটা ঠিক ঠাহর করা গেল না। মোড়কের গায়ে বাকি লেখাগুলো ছোট ছোট, পড়া যাচ্ছে না চেয়ারে বসে। মাথাও নাড়াতে পারছি না ইচ্ছামত, কারণ আমার মাথা এখন আর পুরোপুরি আমার নিয়ন্ত্রণে নেই, আরেকজনের সুবিধামতো মাথার অবস্থান ঠিক রাখতে হচ্ছে। চুল কাটাচ্ছি।
"দরজা খোল অনি!" জেদ চেপে যায় বনি'র, কাঁপতে থাকে অল্প অল্প।
"না। দরজা খোলা যাবে না।" অনির শান্ত জবাব।
হঠাৎ হুটোপুটি শুরু হয়ে যায় দুজনের মাঝে। একই চেহারার দুই কিশোর। বনি গরাদের ফাঁক দিয়ে দুই হাতে অনির টুঁটি টিপে ধরে। গাঁক গাঁক করতে করতে একসময় ছাড়িয়ে নেয় অনি, আর এগিয়ে এসে প্রবল শক্তিতে ধাক্কা দেয় বনির বুকে। ছিটকে পড়ে বনি। তাকিয়ে দেখতে দেখতে ধপ করে বসে পড়ে অনি। হাঁপাতে থাকে দুইজন।
ঠিক আগের মাসে স্কুটি কিনেছিলাম। বেশ বড় অংকের খরচ গেছে তাতে। ইউরোপভ্রমণের সম্ভাবনা ঘুণাক্ষরেও জানা থাকলে এই খরচটা করা হতো না। ভ্রমণের পরিকল্পনার পাশাপাশি খরচের ভাবনাটাও তাই বেশ জেঁকে বসল। সেই সাথে রয়েছে ছুটির দুশ্চিন্তা। অফিসে জনবল কম। চাইলেও ছুটি পাওয়া যায় না প্রায়ই। তার উপর প্রায় কাছাকাছি সময়ে আমার বসও যাচ্ছেন ইউরোপে। পরিস্থিতি দেখে তিনি আমাকে আগে ছুটির দরখাস্ত করতে বললেন। উনার ছুটির গ্যাঁড়াকলে য
আমি যখন থাকি না তখন আমার ঘর কেমন থাকে?
প্রতিবার ঘরে ফেরার সময় রাজশাহী -ঢাকা বাস টার্মিনালের মোড়ে নামার পরপরই বাকী রাস্তাটা মনে হয় ঘরটার কী অবস্থা? খাটের সাথেই প্রায় লাগোয়া যে ৯ ফুটে উঁচু বইয়ের সেলফে দুই সারিতে হাজার হাজার বই আছে সেগুলো কি আরও ধুলি ধূসরিত হয়ে উঠেছে আসন্ন যত্নের আশায়? কোন কোনটা কি স্থানচ্যুত হয়ে পড়ে গেছে আলগোছে?
পর্দা করা ফাতেমার ধাঁতে নেই। নদীতে অর্ধউলঙ্গ হয়ে গোসল করে। ঘাটেই কাপড় পাল্টায়। পরপুরুষ হলে কী হবে, বাপের বাড়ির লোক বলে কথা। কেউ বেগানা নয়। কিন্তু এখন থেকে ওসব আর চলবে না।
অবশেষে মৌলভি রাজি হয়। বাদ-যোহর পড়াবে। তবে সম্মানীটা একটু বেশি দিতে হবে। জনপ্রতি মাসিক দুশো টাকা। মেয়েছেলেরা রাজি হয়। এ যুগে দুশো টাকা খুব বেশি নয়।
পরদিন থেকেই মৌলভির ক্লাস বসে। ফাতেমার ঘরের দাওয়ায় চাটাই পেতে। মৌলভি সুর করে, ‘পড়ে আলিফ জবর আ, বে জবর বা...’। পড়াশেষে আধঘন্টা দীন ইসলামের বয়ান। ফাউ। শ্বশুর-শাশুড়ি, স্বামী, বাবা-মার সাথে কী আচরণ করতে হবে তার তালিম দেয় মৌলভি। স্বামীর পায়ের নীচে স্ত্রীর বেহেস্ত--এ কথাটা বার বার মনে করিয়ে দেয়।
হোটেল থেকে বের হতেই হেমন্তের নীল আকাশের প্রখর রোদ এসে চোখ ঝলসে দিল। আলো সয়ে আসতেই দেখলাম দূরে কালো পাথুরে পর্বতের সারি। কোথাও কোন গাছ নেই। ঘাস নেই। আছে শুধু অফুরান্ত মরুভূমি। জানি সৌন্দর্যের সংজ্ঞা আপেক্ষিক। কিন্তু এখানে তিনশ ষাট ডিগ্রী জুড়ে ছড়িয়ে আছে সার্বজনীন সৌন্দর্যের সুতীব্র বহিঃপ্রকাশ। মানব দেহের ইন্দ্রীয় যন্ত্রের গ্রহণ ক্ষমতা এত সীমত যে সে সৌন্দর্য মুহূর্তের ভেতর ভোতা করে দেয় সমস্ত অনুভূতি। অথর্বের মত হা করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছু করার থাকে না। পৃথিবীর কোন ক্যামেরার পক্ষে সম্ভব নয় ফুটিয়ে তোলে ব্যাখ্যাতীত সে সৌন্দর্য। মিনিট পাঁচেক ওভাবেই দূরের দিকে তাকিয়ে থেকে এক সময় আমাদের সম্বিত ফিরে এল। আমরা গাড়িতে চড়ে বসলাম।
(এই পর্বে থাকছে স্লাম বিডিং, প্রথম পর্ব এখানে)
আপনার এবং পার্টনারের হাতে মেলা পয়েন্ট জমে গেছে, আসল কিংবা সাইড অফ ধরে। খেলা শেষে দেখা যাবে আপনারা বারো বা তেরো ট্রিক পেয়ে গেছেন। অর্থাৎ স্লাম হবার সমস্ত উপকরণই আপনাদের হাতে ছিলো। এটা খেলা শুরুর আগেই বুঝবেন কিভাবে?
নিউটনের ‘অলৌকিক বছর’
আজকের সকালটাই কেমন যেন অন্যরকম। আযম সাহেব আইফোনের ক্যামেরায় সেলফি মোডে নিজের চেহারা দেখে আঁতকে উঠেন। প্রতিদিন বাইশ পদ দিয়ে খাওয়ার পরেও একি হাল হয়েছে চেহারার!মাত্র কিছুদিন আগে নব্বই অতিক্রম করলেন। এত অল্প বয়সেই মুখ থেকে লাবণ্য হারানো শুরু হয়েছে।আচারটা কি একটু কম খাওয়া হচ্ছে আজকাল? দই আর আচার এই দুই জিনিশ চেহারার লাবণ্য ধরে রাখে। ডিম আর দুধ যোগায় শক্তি, দই আর আচার সৌন্দর্য। এর সবকয়টাই তো খাচ্ছেন প্রতিদিন। নাহ, কাল থেকে পরিমাণ আরেকটু বাড়িয়ে দিতে হবে। মাথা থেকে ঝাঁকিয়ে দুশ্চিন্তা দূর করার চেষ্টা করেন। উঠে হাসপাতালের খাট থেকে নামতে গিয়ে মাথাটা একটু ঘুরে যায়। খাটের কোনা ধরে টাল সামলিয়ে বসে পড়েন। লক্ষণ খারাপ, লক্ষণ খারাপ বলে বিড়বিড় করেন। দিন কি তবে শেষ হয়ে আসছে?