ছোটবেলায় প্রথম পূজো দেখার স্মৃতি আব্বার হাত ধরে, রাজশাহী শহর থেকে আধা ঘণ্টার দূরত্বে, পুঠিয়ায়। দুর্গাপূজোর ছুটিতে বাসে চড়ে পুঠিয়ার রাজবাড়ি দেখতে গিয়ে পুজামণ্ডপও ঘুরে দেখা হয়েছিলো, সেটা মনে হয় ক্লাস থ্রি বা ফোরে। তার আগে ঢাকায় থাকতে এ সুযোগ হয়নি। এরপরে শহরের অলিতে গলিতে ঢাক-বাদ্য আর মণ্ডপের আলোকচ্ছটা দেখেছি বহুবার।
প্রায় এক দশকের বেশি সময় ঘুরে ঘুরে পূজো দেখা হয়নি। ২০১১-তে ঠিক করে রেখেছিলাম প্রতিমা তৈরি দেখতে হবে। ঘুরতে ঘুরতে হাজির হয়ে গেলাম গণকপাড়ার বৈষ্ণব সভার দোরে, ভেতরে কারিগরেরা তখন মহাব্যস্ত।
একটা মেগাসিটিতে থাকি আরেকটাতে অর্ধেক জীবন কাটায়ে আসছি, উঁচু বিল্ডিং মনুমেন্ট দেখছি। ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের তিরিশ তলা উঁচু বিল্ডিং দেখেছি, টরন্টোর স্কাই ক্র্যাপার, এমন কি এক সময়ের মানুষের তৈরী উঁচুতম দালান সিএন টাওয়ারও দেখা হয়েছে, হচ্ছে। সেইসব উঁচু বিল্ডিং সব জুড়ে দিলেও এই পর্বতের সমান হবে না। এরকম কিছু আমি বাস্তবে কেন, স্বপ্নেও দেখি নাই। অনুভূতির কোথাও লুকিয়ে থাকলেও থাকতে পারে। দৈর্ঘ্যে প্রস্থে উচ্চতা, গভীরতায়, অপ্রতিসমতায় কোনভাবেই কিছুর সাথে তুলনা আমি এই পর্বতের তুলনা করতে পারছিলাম না। ফেরার পথে অবশ্য এই পর্বতকেই রীতিমত টিলার মত লাগছিল!!!
স্মৃতিকাতর হলেও খুব যে অসুখী আমি এমন নয়,
যে শহরের গন্ধ বিশ বছর গায়ে মেখেছি,
যে বড় নদীটাকে ক্রমশঃ সরু হয়ে যেতে দেখেছি
যে ভোরগুলো হাজার শব্দ নিয়ে জেগে উঠে
অলিগলিগলিসন্ধির ভেতর হারিয়ে গিয়ে দুপুর বিকেল রাত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ত
যে বন্ধুদের ডাক হৃদয়ের গোপন দরজার চাবির মত কাজ করত
আজকাল তাদের আর আশেপাশে দেখিনা বলে খুব যে অসুখ করে আমার এমন নয়,
যে শহরের আকাশে শুধু কাক আর চিল ওড়ে সেখানে থাকি না বলে
হিমালয় ভাই আমার বড় ভাইয়ের মত। কিংবা এক অর্থে বড় ভাই-ই। এরকম ঘনিষ্ঠ একজনের গ্রন্থ নিয়ে রিভিউ লিখতে কিছুটা হিম্মতের দরকার হয়। পছন্দের মানুষ---কাজেই রিভিউ লিখতে গিয়ে একটা বায়াস চলে আসতেই পারে। সেই বায়াস থেকে নিজেকে শত হাত দূরে রাখতে সচেতন প্রয়াসের দরকার আছে বৈকি।
কিশোর আলো, সংক্ষেপে ‘কিআ’র অক্টোবর সংখ্যা হাতে পেলাম বাড়ি এসে। এর আগে সাক্ষী সত্যানন্দের এক মন্তব্যে এটার খবর পাই। তখন থেকেই কৌতূহল ছিলো। হাতে পেয়েই উল্টে পাল্টে অলংকরণগুলো দেখলাম। চমৎকার কাজ। আকান্তিস গ্রুপের পরিচিত অনেকের অবদান চোখে পড়লো। অবশ্য কদিন আগেই এবারের পূজার আনন্দমেলা উল্টে পাল্টে দেখার সুযোগ হয়েছিলো। অলংকরণ দেখলে মাথাখারাপ হয়ে যায়। ঐ লেভেলে যেতে এখনো কিছুটা সময় লাগবে।
আমি মেধাবী সেটা আগেই জানতাম কিন্তু বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পাবার পর সেটা বাকিরাও জানল। আম্মা এসে জড়ায়ে ধরে বলল, মানিক তুই বংশের মুখ উজ্জ্বল করলি। চাচা বললেন, গুড জব। এই বংশের ছেলেরা ডিপ্লোমা বিআইটি ইত্যাদি হাবিজাবিতে চান্স পাইলেও বুয়েটে এই প্রথম। পাড়া প্রতিবেশী সবাই হৈহল্লা করে দেখতে আসল পাড়ার মেধাবী ছেলেকে। কেউ গায়ে হাত বুলায়, কেউ মৃদু চিমটি কাটে, কেউবা ফিসফিস করে বলে, কি মেধাবী গো।
অক্টোবরের কিছু আগে থেকেই, ইউএসএর লোকজনের মাঝে হ্যালোইনের আছড় পড়া শুরু করে। এর জন্য অবশ্য দোকানওয়ালাদেরই কৃতিত্ব(!) বেশি। এরা সব উৎসবের একটু বেশি অনেক আগে থেকেই এমনভাবে সবকিছু বাড়াবাড়ি রকম প্রোমোট করা শুরু করে যেন, মনে হয় আর দিন কয়েক বাকি আছে, এক্ষুণি কেনা-কাটা শুরু করা দরকার।
ক্রুজ-এর স্বপ্ন তথা শুরুর শুরু
কতবার যে দুজনে গল্প করেছি একবার জাহাজে চেপে ঘুরতে যেতে হবে। কোথায় যাবো জানিনা, কিন্তু যেতে হবে। গিন্নী বলে চার রাত-এর ট্রিপ নিলেই যথেষ্ট। আমি বলি পাঁচ রাতের কমে যাওয়া নেই। আন্তর্জাল-এ রকমারী ক্রুজ-লাইন-এর বিজ্ঞাপন, কত যে ‘ডিল’ আসে-যায়। কিছুতেই আর কোন ‘ডিল’ ধরা হয়ে ওঠে না। হঠাৎ করেই হয়ে গেল সেই স্বপ্নপূরণ। ঘুরে এলাম নরওয়েজিয়ান পার্ল-এ চেপে। সাত রাত-এর লম্বা সফর।
বাড়ীর ছাদ থেকে শুধু নারকেল গাছ নজরে আসে। আচক্রবাল শুধু ছাড়া ছাড়া ভাবে বাতাসে দুলতে থাকা দৃঢ় নারকেল গাছ, তাদের বিথি বলা চলে না হয়ত, কিন্তু এমন ঘনত্বে সেটা বললেও এমন ভুল কিছু নয় না, যেন সমুদ্র তীরবর্তী কোন নোনা জলবাতাসের জনপদ। যদিও জনপদটির নাম রাজশাহী, সমুদ্র থেকে অনেক অনেক দূরে, পদ্মা নদীর তীরে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত। সেদিন ক্যামেরার চোখে বাড়ীর আশেপাশের খানিকটা বার্ড আই ভিউ নেবার ইচ্ছে থেকেই এক ছ