রাত্রি দ্বিপ্রহর। সুবাদার শাহবাজ খাঁর খাস তাঁবুর বাইরে দাঁড়ানো ছয়ফুটি তাগড়া পেয়াদাকে ফৌজদার আলী নকভী বললেন, সরে দাঁড়াও। হুজুরের সাথে আমার বিশেষ প্রয়োজন। মাথা নেড়ে পেয়াদা বলল, হুজুর ব্যস্ত। সকালে আসুন।
স্থির চোখে পেয়াদার দিকে তাকিয়ে ফৌজদার বললেন, আমার এখনই প্রয়োজন। চিটঠি এসেছে। হুজুরকে বল গিয়ে যাও।
তাঁবুর ভেতরে যাবার হুকুম মিলল। ভেতরে ঢিলে জামা পরা শাহবাজ ফৌজদারকে বললেন, রাতে আমার মাথা ভাল কাজ করেনা তুমি ভাল করেই জানো। হয়েছে কি?
বিক্রম বাজিতপুরে আমাদের হয়ে বিষ মেশানোর সাথে অন্য ধান্দা করছে হুজুর। সে তার গাঁ থেকে ধরে আনা আরো কয়টা দাসের সাথে পালানোর মতলব করছে।
শাহবাজের মুখ হাসি হাসিই থাকল, কেবল চোখ দুটি কঠিন হয়ে গেল।
কোনো এক অরোরায়,
আলোল-বিলোল উর্মিল সায়রের কাছে
যখন অবাঙমুখ এক অন্তরীপের মতন
ক্রমশ নিমগ্ন হতে থাকি,
কিংবা নিতল ঘুমের রাজ্য ছেড়ে
শ্রবণা আর কৃত্তিকাদের ভিড়ে
আকাশগাঙ্গের ফিসফাসে কান পাতি,
নয়তো জলজ মেঘফুল ছুঁইতে
কোনো গহন শাঁওল শাওনি রাতে,
তপ্ত করতল মেলে রাখি,
ঠিক তখন অফুরান এক ফল্গুধারার মতন
কবিতা, শাশ্বত প্রণয়ী আমার
নিরল অভিসারে আসে কাছে!
সে এলেই দখিনপানের সুরবাহারে
১.
তখন অনেক ছোট। স্কুলে পড়ি কিংবা পড়ি না। থাকতাম মফস্বল এলাকায়,পাশাপাশি অনেকগুলো বাসা,টিনের ঘর। কলেজের টিচাররা সবাই একসাথে একটা মহল্লার মত(আমার বাবা ছিলেন কলেজের সহকারী অধ্যাপক।) সামনেই খেলার মাঠ।
এক সাথে আমরা অনেকজন ছিলাম একই বয়সি।বিকেল হলেই খোলা মাঠে দৌড় ঝাপ। কানামাছি,কাঠকাঠুরে ভাই,গোল্লাছুট আরও কত রকম খেলা...
ইদানিং ঢাকা থেকে ফোন আসলে না ধরে থাকার চেষ্টা করি।
একটা করে ফোন আসে, কেউ একজন চলে যায়, সময়টাই এখন এমন।
বয়স হয়ে গেছে, পাকা চুল ঢাকতে নাপিত রঙ মাখে ।
আয়নায় যে মানুষটাকে দেখা যায়, তাকে আজ আর খুব সহজে তরুন বলা যায় না।
জন্মদিন এলে তাই কেমন একটা অসস্তি নিয়ে দিনটা কাটে, খানিকটা হয়তো ভয়ও করে ।
গুনে গুনে পাঁচটা বছর চলে গেল।
মনের মধ্যেও শেষে ধূলো জমে যায়।
সাম্প্রতিক টিভি কমার্শিয়ালগুলো দেখেছেন নিশ্চয়ই সবাই? টিভি ছাড়লেই তো হরেক রকমের মোবাইল ফোনের রকমারী অফারের বিজ্ঞাপনে মূল অনুষ্ঠান দেখাই দায় হয়ে দাঁড়ায়, এক টক-শো বাদে! তা বাঙালী কথা বলে বটে! কিন্তু এই কথা বলার হাজারো তরিকার মাঝে চিপাচুপা দিয়ে যে মেসেজগুলো পাচ্ছি, তা দিয়ে শিখছি অনেককিছুই, হিন্দি সিরিয়ালের মতো করে নাচনাগানা, যেখানে খুশি সেখানেই ইন্টারনেট ব্যবহার, ইত্যাদি কত্তকিছু!
তবে সবথেকে ভালো লাগে যখন মাঝেমাঝেই গ্রামীণফোন অগ্রদূত হয়ে এসে শিখিয়ে যায় কেমন করে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে হবে সেই তরিকা থেকে শুরু করে পড়ালেখা না করেই শিক্ষকের পিছে পিছে ঘুরে, তার কন্যার (ক্ষেত্রবিশেষে পুত্রও হতেই পারে!) পতন রক্ষা করে কীভাবে পরীক্ষার নম্বর বাড়িয়ে নিতে হবে সেই তরিকা!
জীবের বিলুপ্তি সিরিজের লেখাটা শেষ করেছিলাম। এখানে একটু ফলোআপ।
১।
সাময়িক জর্মন প্রবাসী হয়রানাবীরের বিবাহ হল সেই গত বছর। স্বামীপ্রবর তো গবেষণা নিয়েই ব্যাস্ত, ওইদিকে তার বৌয়ের ‘নাই কাজ তো খই ভাজ’ অবস্থা। এখন সে রাত-বিরাতে বিবাহানুষ্ঠানের এটেন্ডেন্স খাতা নিয়ে রোলকলে ব্যাস্ত। কালকে রাত সাড়ে তিনটায় হঠাত আমারে জিজ্ঞাসা করে আমি তাদের বিয়াতে গেছি কিনা। আমার নাকি ফোটুক পাওয়া যাচ্ছে না। বললাম- ৯ মাস আগের কথা তো আমারই মনে নেই। কাহিনি এইখানে শেষ হইলে সমস্যা ছিলনা- কিন্তু, ‘৯ মাস’ কথাটা মনের মধ্যে আটকায় গেল। শাহবাগী নাস্তিক ব্লগার তো, ৯ মাস শুনলেই আগে খালি মুক্তিযুদ্ধ মনে পড়ে। ৩০ শুনলে মাসের আগে লাখের হিসাব মাথায় আসে। ৭ শুনলে ভাগ্যের আগে মার্চের কথা মাথায় আসে। ১৪ কিংবা ২৫ শুনলে... নাহ, থাক- মাথা গরম হয়ে যাবে।
[justify]জীবন চলার পথে নিজ জীবন, নিজ দেশ কিংবা ভিনদেশে হওয়া কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়েই এই সিরিজ- তিন প্যারায় তিনটি করে ছোট ছোট গল্প নিয়ে লেখা "তিন তিরিকে নয়"।
#১
আমার নিজ এলাকা নোয়াখালী। সেখানে শতশত যুক্তিবাদী। একজন আছেন, হাতের কাছে যে-কোনো ঔষধ পেলেই খেয়ে ফেলেন।