৬-১২-১২ তারিখে কিঞ্চিৎ ছবি তুলিবার বাসনা লইয়া শাহবাগ এলাকায় গিয়াছিলুম। কিন্তু গিয়া পুরাই টাসকি…. হায় হায় ইহা আমি কোথায় আসিলুম !! এক বৎসর পূর্বেও তো এইখানকার অবস্থা এইরূপ ছিলো না। আমি কাহাদের ছবি তুলিব ?
‘সে আমাকে কথা দিয়েছে যে আমি যদি তাকে লাল গোলাপ দেই তবে সে আমার সাথে নাচবে’- কান্না ধরা কণ্ঠে কথাগুলো ভেসে আসছিল একজন তরুন ছাত্রের কণ্ঠ থেকে; ‘কিন্তু কোথায়- আমার বাগানে তো কোন লাল গোলাপ নেই’।
পাশেই একটি ওক গাছের উপরের বাসা থেকে নাইটিংগেল পাখি ছেলেটির এই কান্না ভেজা আকুতির কথা শুনছিল এবং গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে বাইরে তাকিয়ে সে বিস্মিত হল।
গত লেখাটি যারা পড়েছেন, পড়তে পড়তে একেবারে শেষে এসে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নিজেকে মনে করেছেন বিচ্যুত একজন মানুষ, এবং সবশেষে ‘একটি জাগ্রত বাংলাদেশ বুকে নিয়ে আমাদের মৃত্যু হোক’ পড়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ভেবেছেন ‘আহা, তাই যদি হতো!’ -- নিশ্চিত থাকুন এরমাঝে আপনার সর্বাঙ্গীণ চেতনার মৃত্যু ঘটেছে। মানুষের নিজের লড়াই নিজের সাথে আগে, এই লড়াইয়
“হ্যাঁ, হ্যাঁ, স্যার, আজকের মধ্যেই ফার্নিচারগুলো আপনার বাড়ি পৌঁছে যাবে। ‘বেঘুন ফার্নিচারের’ জেনারেল ম্যানেজার জানিয়েছে, আপনার জন্য কিছু এক্সপোর্ট কোয়ালিটি ফার্নিচার আলাদা করে সরিয়ে রেখেছে তারা। আমরা হচ্ছি ওদের সবচেয়ে বড় ফান্ডিং পার্টনার, আপনি নিঃসন্দেহ থাকতে পারেন স্যার, ওদের সেরা জিনিসটাই দেবে আমাদের। আপনাকে তো ইন ফ্যাক্ট উপহারই দিতে চেয়েছিল ওরা, কিন্তু আপনি রাজী না হওয়াতেই স্পেশাল ডিসকাউন্টে....
সে এক ভীষন দুঃসময় এসেছিল আমাদের মাঝে
সে এক ভীষন সুসময় এসেছিল আমাদের মাঝে---
দুঃসময় এইজন্যে --আমরা হারিয়েছি আমাদের লক্ষ লক্ষ আপনজন। এই ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের ভেতরে একটি পরিবারও খুঁজে পাওয়া যাবে না যারা শহিদের রক্তে স্নাত হয় নি। রক্তের দামে নাকি কিনে আনতে হয় স্বাধীনতা! মাত্র ন'মাসের পরিব্যপ্তীতে আমরা আমাদের পাঁজর খুলে বইয়ে দিয়েছিলাম রক্তের নহর।
কোন কোন মর্তবায় এরকম হয় যে পুরাতন কাদিম দোস্তের ফির মোলাকাত হাসিল করতে অনেক পাহাড়, অনেক টিলা পার হতে হয়, অনেক কাঠ ও অনেক খড়কে পুড়তে হয় দুঃসহ প্রতীক্ষার অনলে। ৭১ এর ১৫ ই ডিসেম্বরে স্বাধীনতার চৌকাঠে খাড়া বাংলাদেশের দারুল হুকুমত, বাংলার রাজধানী ঢাকায়, টাইগার নিয়াজি, শের-এ-পাকিস্তান, যখন তার জোয়ানির জানি দোস্ত জেনারেল স্যাম মানেকশ’র কাছে আত্মসমর্পণের, তার আঁতকা কুশকাস্তির বাতচিত করছিলেন
(২০০১ থেকে আমি দেশান্তরি। আমার প্রবাসকালে অনেক প্রিয় মানুষ চলে গেছেন আকাশের ঠিকানায়। সেইসব মানুষকে নিয়ে আমার স্মৃতিগদ্যের বই ‘নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে রয়েছ নয়নে নয়নে’ প্রকাশিত হচ্ছে একুশের বইমেলায়। সচলায়তনকে কথা দিয়েছিলাম প্রভুকে নিয়ে একটা স্মৃতিকথা লিখবো। প্রভুর মৃত্যুর পর তাৎক্ষণিক বিহবলতা কাটিয়ে লিখতেও বসেছিলাম। কিন্তু লেখাটা শেষ করতে পারিনি। আজ শেষ করলাম।)
প্রভুর প্রস্থান
[justify]
[justify]"পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে জ্বলন্ত
ঘোষণার ধ্বনি প্রতিধ্বনি তুলে
নতুন নিশান উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক,
এই বাংলায় তোমাকে আসতেই হবে, হে স্বাধীনতা।"---- শামসুর রাহমান
বিজয় দিবস এলে আমার খুব জানতে ইচ্ছে হয় ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর, সবাই কি করেছিলেন এই দিনে। দীর্ঘ ৯ মাসের অত্যাচার, অনাচার, অবিচার, সীমাহীন কষ্ট, সম্মুখ সমরে আজন্ম শত্রু পাকিদের সাথে সাথে পিছন থেকে হামলা করা দেশীয় কেউটেগুলোর ছোবল থেকে প্রতিমুহূর্তে লড়াই করে বেঁচে থাকা, যখন তখন নেমে আসা মৃত্যুভয় শেষে যেদিন সত্যিকার অর্থে বিজয় আসল, সবার মনের অবস্থা কি হয়েছিল। সবাই যুদ্ধের ভয়াবহ আঘাতে বিহবলিত, আতঙ্কিত। সব ছাপিয়ে বিজয় এসেছিল। কেমন ছিল সেই অনুভূতি?