আমার বাবা বেশ ছোট-খাট মানুষ।
একহারা গড়ন।
মৃদুভাষী।
মাথায় একটি বেশ বিস্তৃত,মসৃন টাক রয়েছে।
আমার বাবাকে খুব হাসি-খুশি টাইপের লোক বলা যাবে না। কিছুটা গম্ভীর---ভালো বাংলায় যাকে 'রাশভারী' লোক বলে। সে কারণে ছোটবেলায় বাবার সাথে তেমন একটা খাতির ছিল না। মায়ের সাথেই বেশি জমত।
বাবা কে তাঁর রাশভারী মূর্ত্তি থেকে কখনো-সখনো বেরুতে দেখা যেত। তখন সেটা আমাদের বাসায় একটা মোটামুটি উৎসবের ঘটনা।...
চারপাশে যা চলতেসে
দেইখ্যা আমার গা রাগে আজ জ্বলতেসে।
আমারই ভাই ভাইয়ের খুনীর
জয়তে সেলিব্রেট করে
ফেসবুকেতে আস্ত স্ট্যাটাস
উসকো ডেডিকেট করে।
কইলে বলে- "তোর তো হৃদয় রুদ্ধ রে ?!
খেলার সাথে ক্যান যে মেশাস যুদ্ধরে!
আজকে দে তো ফাউল এসব চিন্তা বাদ
রগ ফুলিয়ে বল পাকিস্তান জিন্দাবাদ! "
উর্দুতে দেয় জয়ধ্বনি সব বারই
দেখলে এসব সালাম, রফিক, জব্বারই
করতো তাদের নিজেরই ভোজ কাঙালি
একদিন ছবির হাটে এট্টা সবুজ বাঘ ঘুরবার নাগছিল
এট্টা ছবির সামনে অনেকক্ষণ খাড়ায়া চাইয়া থাহার পরে
হে হেইডা খুইলা নিয়া হাডা দিল
দূর থে আমি দেহা ‘কর কি কর কি’ কইয়া কাছে আইলেই কইল
- সর সর এই ঘাডে আমি আগে আইছি!
আমি কইলাম
- বাঘাদা ঘাট কই পাইলা! সীন কি?
হে কইল
- দেহছ না ছবির মইদ্দে পানি টলটল করে, কি সুন্দর পানি..
আমি আগে আইসি,
ওই পানি আমি খাম
আর আমি আবারো বুঝলাম..
দুনিয়াজুড়া খালি ভ্রান্ত ধারমা..
আ...
বাবার সাথে আমার সম্পর্কটাকে বলা যায় 'love hate relationship'...এই সব ঠিকঠাক, পরক্ষণেই কোনও কিছু নিয়ে ভীষণ ঝগড়া...
ভূমিকা শেষ, এবারে ফ্ল্যাশব্যাক...
ছোটবেলায় আমার নানার জমিদারী রাগ আমার মা ছাড়া কেউ সামলাতে পারতোনা বলে নানী মারা যাবার পর থেকে আমার ৭/৮ বছর বয়েস পর্যন্ত আমরা নানাবাড়ী ছিলাম। সেখানে আমি ছাড়াও আমার অনেক খালাতো বা মামাতো ভাইবোনের ভীড় লেগেই থাকত...আমার সারাজীবনের সবচেয়ে বড় দুঃখ তখন ছিল য...
৩। পুতুলদের বাগানের লাউমাচায় বাসা করেছে এক ঘুঘু-মা। বেশী উঁচুতে না, একদম কাছে। লাউপাতার ছায়ায় বেশ অন্ধকার অন্ধকারমতন সেখানে যদিও। তুলি আর পুতুলের আগ্রহী চোখ সেই বাসায়, ভারী অস্বস্তির সঙ্গে বাসায় বসে ওদের দেখছে ঘুঘু, বাসা ছেড়ে একটুও যায় না, না-ফোটা ডিমগুলো রয়েছে তো! যাবে কিকরে?
ওরা চলে আসে, কিন্তু বারান্দা থেকে লক্ষ রাখে যদি একটু যায় মা ঘুঘুটা...
আজ রবিবার, আগে ভাগে ঘুম থেকে উঠার প্রশ্নই উঠে না, কিন্তু শুয়ে থাকা গেল না, হঠাৎ করেই কে যেন কান ধরে টানতে টানতে বলল, “বাবির কাআআআআন”, আমি পাশ ফিরে শুয়ে আবার ঘুমানোর চেষ্টা করি, কিন্তু, আবার সেই একই ঘটনা, এবারে নাকে আঙ্গুলের প্রবেশ, পিছনে আবার সুর করে, “বাবির নাআআআআআআক”, আমি মনে মনে প্রমাদ গুনি, এর পরের বার তো আঙ্গুল মুখের ভেতর, আর না হলে ছিদ্র তো আর খুব বেশী বাকি নেই … … …
যাক, ঘুম যখন ভে...
ক.
নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, মিটিং, মিছিল, শ্লোগান, টিয়ার গ্যাস, বুটের লাথি আমাকে এক লাফে কৈশোর ছাড়া করেছিলো। কৈশোরের স্বাদ পেতে পেতেই তরুণ হয়ে গেলাম। একটা মস্ত আন্দোলন বাড়িয়ে দিলো বয়স।
আর সেই হুট করে পাওয়া তারুণ্যে পেলাম রুদ্রকে। রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ। প্রিয়তম কবিকে।
আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই,
আজো আমি মাটিতে ম...
মণিপুরীদের নববর্ষ উৎসব আয়োজনের পাশাপাশি মণিপুরী থিয়েটার একটা নাট্যোৎসব করতো। সেবার অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে প্রধান অতিথি করা হয়েছিল। আলোচনা-টনা হয়ে যাবার পর দর্শকদের সাথে অতিথিদের একটা কথোপকথন পর্ব ছিল। অনেক কথাই হলো, এক পর্যায়ে ১০-১২ বছরের একটা বাচ্চা মেয়ে উঠে দাঁড়ালো অধ্যাপক আনিসুজ্জামান-কে একটা প্রশ্ন করতে। মেয়েটি নিজেকে সম্ভবত ক্লাস ফাইভ বা সিক্সের ছাত্রী বলে পরিচয় দি...
স্বপ্রণোদিত বায়োগ্যাসে উর্ধ্বমুখী বেলেহাজ ফানুশে
অসাড় আসমানে আত্মরতিতে বিস্রস্ত তোমরা যারা
মাটিকে ভালোবাসা আমাদের ত্যক্ত করছ অবিরাম
পুঁজ, মুত্র আর থুথুর প্রস্রবনে
শুনে রাখো কান পেতে
তোমাদের টেনে মাটিতে নামাতে
আমাদের বাউয়া হাতের গুলতিই যথেষ্ট
বদখত দাসখতের উলঙ্গ নাকখতে
বুগিউগি নৃত্যের উদ্বাহু ডিগবাজিতে
আমাদের ঘোল খাওয়ানোর অলীক
আত্মম্ভরী খোয়াবের বিভ্রমে মত্ত যারা
ম...
গত শীতে জমিয়ে রাখা কিছু তুষার
এই গরমে উল্টে-পাল্টে দেখতে গিয়ে
শিরাওঠা লাল চোখে উড়ে এলো ধোঁয়া
উড়ে এলো সকালের একগ্লাস দুধ
উড়ে এলো নবারুণ-শিশু।
এয়াব্বড় চোখ মেলে শিশুপার্ক-নিউমার্কেট
জলরঙে জ্বলজ্বল ব্যাট-বল-ফুটবল
একুশের ময়দান থেকে বুকে চেপে একগাদা বই
এরই মাঝে উঁচু হয়ে মহীরুহ কোন
বিষন্ন সব রাস্তায় ছায়া দিয়ে যায়।
জনমানুষের ভীড়ে ইদানীং দূরাগত এইসব ধোঁয়া,
পুরানো বইয়ের পৃষ্ঠা আর...