মৌমি আমার সহপাঠি ছিল। মৌমি আমার বন্ধু ছিল। মৌমি আমার বোন ছিল। মৌমির সাথে একদিন দেখা না হলে সেই দিনটা আমার অসমাপ্ত মনে হতো। দিনের মধ্যে অন্তত একটাবার আমি মৌমির কাছে যেতাম। অথবা মৌমি আমার কাছে আসতো। আমরা একসাথে কোথাও বসতাম। আমাদের ছাদে চেয়ার পেতে। কিংবা মৌমির বারান্দায়। আমি হয়তো বলতাম, “মৌমি, আজকে আমার মনটা খুব খারাপ। বাসায় যাবোনা।” মৌমি বড় বাটিভর্তি মুড়িমাখা নিয়ে আসতো। আমরা একটু একটু করে খেতাম আর মৌমির পায়রাগুলোকে খাওয়াতাম। আমাদের সামনে রেখে একসময় সূর্য অস্ত যেতো। পায়রাগুলোর ডানা নানা রঙে রঙিন হয়ে যেতো।
সচলায়তনের জন্য একটি নতুন লোগো নকশা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। সচলের বর্তমান লোগোটি ওয়েবসাইটে ব্যবহারের জন্য অ্যাডহক ভিত্তিতে নির্মাণ করা হয়েছিলো। সে সময়ে লোগোশিল্পীদের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাইনি আমরা। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় সচলে এখন শিল্পীর সংখ্যা অনেক। দু'টি নতুন নকশা আমরা চূড়ান্ত করেছি। সচলের সদস্য ও অতিথিদের কাছ থেকে তাই নকশাগুলোর ব্যাপারে মত সংগ্রহ করার জন্যেই এই পোলের অবতারণা।
অনেকদিন পর গ্রামে ফিরল রতন। সেই বাবার মৃত্যুর পর এক পুতুল নাচিয়ে হয়ে এক যাত্রাদলের সাথে ভিড়েছিল তারপর অনেক গ্রাম ঘুরলেও নিজের গ্রামে আর ফেরা হয়নি।আর রতনের খোঁজ করবার মত গ্রামে কোন আত্মীয়স্বজনও ছিলনা। এবার অনেকদিন পর বর্ষার বিরতিতে কোন অজানা টানেই গ্রামে ফেরত আসলো। গ্রামে ঢোকার একটু পরেই একটি দোতালা বাড়ি দেখে রতনের কৌতুহল হলো। তার যতটুকু স্মৃতি তাতে দোতালা কেন পাকা বাড়ি করারই কোন সামর্থ্য কোন গ্রামবাসীর ছিলো না। ভাবতে ভাবতেই বাড়িটার উঠোনে চলে আসে রতন। আরে সামনের বারান্দায় বসা ওটা মইত্যা রাজাকার না?
তর্ক করা যেতে পারে 'বাধ্যতামূলক স্বেচ্ছাসেবা' বলে কিছু থাকতে পারে কিনা। আক্ষরিক অর্থে হয়ত পারে না, কারণ শব্দ দুটো পরস্পরবিরোধী। বাধ্যতামূলকই যদি হবে তাহলে স্বেচ্ছাসেবা হল কীভাবে? মানলাম। মেনে নিয়ে নতুন একটা নাম দিলাম 'বাধ্যসেবা'। এরপরেও কথা থেকে যায়, এই বাধ্যসেবা কে কাকে দিবে, কেনই বা দিবে, কখন-কীভাবে দিবে, আবার কখন দেওয়া উচিত হবে না। অনেক কিছুই জানার আছে এই বিষয়ে। একটা একটা করে তাহলে জানা শুরু করি।
সুন্দরবনের শীত ভোরে গলায়-পিঠে ক্যামেরা ঝুলিয়ে কাদা ভেঙে হাঁটছে ফটোগ্রাফার দলটি। কারো পায়ে বুট- কারো স্যান্ডেল। সবাই হাঁটছে জুতায়-পায়ে কাদাঠাণ্ডার উহুআহা অনুভূতি নিয়ে। দলের সামনে নির্লিপ্ত বনপ্রহরী রতন আর পেছনে তার তরুণ সহকর্মী মাজেদ। বেতনের বাইরে ভাতা আর বখশিশের আকর্ষণ ছাড়া এই বন তাদের কাছে পুরোটাই বিরক্তিকর। তারা হাঁটছে সুন্দরবনের যে কেনো গার্ডের মতো বারবার বনের বেশি গভীরে না যাবার সতর্কতা জানিয়ে