এক বিকেলে আমাদের দূরপাল্লার ট্রেনটা হঠাৎ থেমে গেছিলো এক অচেনা স্টেশনে। প্লাটফর্ম মাটির সমতলে, একটুখানি দূরেই সবুজ জমি, তারপরে একটা টিলা। জমির মাঝখানে রাজার মতন দাঁড়িয়ে এক বিরাট অশ্বত্থ। এইরকম জায়গায় এসে ট্রেন দাঁড়িয়ে গেলেই কেবল কল্পনা করতে ইচ্ছে করে নেমে পড়তে। নেমে পড়ে টিলার দিকে চলতে চলতে ঠিক একটা বিন্দুতে এসে ছিঁড়ে যাবে পরিচিত পৃথিবীর সুতো। তার পরেই দেখা দেবে সেই যাদুদরজাটা।
কোন কোন রাতে ঘুম ভেঙে যায়; কোন কোন রাতে ঘুম ভাঙে - কোন কোন রাতে কেউ কেউ আর ঘুমোয়না, নিশুতি রাতের মত জেগে থাকে আপন ঘোরের এক প্রজাপতি মুহূর্তে - সেখানে ভিড় করে আসে তার সোনারঙ দিন শেষে অবলা ঘুমের কথা অথবা কোন এক ঘুম ভাঙা ঘুমের কথা যেখানে সে দেখেছিলো তীব্র মায়ের হাত পৃথিবীর সব ওজন নিয়েও নরম শিমুল তুলোর মত ছুঁয়ে আছে তার এ জীবন।
আমাদের দেশে জীবন শুরু হয় খুব ছোটবেলায়। হয়তো কেউ ছোটবেলায় নিজের পরিচয় হারায়, কেউ হারায় তার বাবা-মাকে,আবার কেউ জানে না তার জন্ম কোথায়। কেউ কেউ খুব ছোটবেলা থেকেই নিজের পরিচয়ের পরিবর্তন দেখে।কেউ ছোটবেলায় বিয়ের পিড়িতে বসে, কেউ তার আপনজনদের হাতে হারায় সম্ভ্রম। আবার কেউবা এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা থেকে রেহাই পেলেও আশেপাশের কলুষিত জীবন দেখে কষ্ট পায়।
একটি ধারালো চাকু নিয়ত আমায় কাঁটে,
স্মৃতির নরম শিরা ছোপ ছোপ লাল।
কী এক অন্ধ দ্যুতির দেখা পাই নরম ব্যাথায়।
সে এক মজার অসুখ.......................
ঢেউ হয়ে জ্বলে আর নিভে
মাতাল রাত্রির ফুল লুটে নেবে- নিতে পার ভোরে।
মৃত্যুর মতো কিছু টুকটাক আলো,
তোমার দুটি চোখ মেলে যদি ধরো
সেখানে বরফ দেশ বেদনা পাথর হয়ে যায়।
হৃদয় অভয়মুদ্রা রহস্যরাত্তির পায়ে পায়ে
নদী ও জ্যোস্না পাশাপাশি;
স্মৃতিগুলো ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। কিছু কিছু ঘটনা আংশিক ব্ল্যাকআউটের কবলে পড়ে গেছে। কিছুতেই সেই অংশগুলো আর মনে করতে পারি না এখন। ভাবলাম স্থায়ীভাবে মস্তিষ্কের ব্যাড সেক্টরে পড়ে যাওয়ার আগেই কয়েকটা ঘটনাকে ডিজিটাল ডায়েরীতে টুকে রাখি ডিজিটাল বাংলাদেশের অ্যানালগ নাগরিক এই আমি! এটা তারই উদ্যোগ...
শূন্যপ্রতীক্ষায়… কোন এক ফাগুনের বিকেল বেলা হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্তশ্বাসে মনের তৃপ্তি মেটাতে পাতা গাছের ছায়ার নিচে মাধুর্যহীন গোলাপ ফুল তার পাশে রেখে মৃদু কন্ঠে নিজের দুই লাইন কবিতা পাঠ করলাম, ‘রাত্রি গভীর হলে ঘুরে আসে যে মুখ,/ সে কি তুমি?/’ সে বিরক্তি সুরে বলে উঠল চারপাশে এত কিছু ভাললাগা বস্তু ফেলে আমি কেন কবিতা লিখি?... গান তখনও যে আরো বেশি প্রিয়ছিল তা বলে নি!
শূন্য একোরিয়ামের মধ্যে একটা আলো- ঘরের মধ্যে আর কোন আলো জ্বলে না। চল্লিশ পাওয়ারের টাংস্টেন বাল্বের হলুদ আলো একোরিয়ামটার স্বচ্ছ কাঁচের দেয়ালের মধ্যে দই এর মত জঁমাট বেঁধে আছে। কিছুদিন আগেও ওখানে একজোড়া গোল্ডফিশ লেজ নেড়ে সাতরে বেড়াতো। যতেœর অভাবে দুটোই মরে গিয়েছে। প্রথমে একটা। নিঃসঙ্গতার যন্ত্রনায় অন্যটা। শূন্য একোরিয়ামটার দিকে তাকাই- নিঃসঙ্গ গোল্ডফিশটার শেষদিনগুলো ওখানে ভেসে বেড়াচ্ছে। একস
আবদুলের নামটি তাহার পিতামহ যথার্থই রাখিয়াছিলেন। তাহার নিয়তিতে যে বেদুইনের দেশে দাসত্বই প্রকটাক্ষরে লিখিত ছিল, তাহা মুরুব্বিগণ পাঠ করিতে না পারিলে কে পারিবে?