বহুদিন নিস্তব্ধতায় কেটেছে তার নিয়নের রাতগুলি, মেঘের সকাল সমূহ। নিটোল পুকুরের কালো কৈ মাছের ডাঙ্গায় ভ্রমণের ছটফটানিতে তার সারা গোধূলী অস্থির হয়েছে অসংখ্যবার। এই সব অস্থিরতার আড়ালে বেঁচে থাকার আকুলতা কখনো কখনো ফিরে এসেছে, কখনো জীবন্মৃত্যুর জটিলতার ড্রয়ারে তালাবদ্ধ রাখতে হয়েছে সূর্যালোকের প্রেমপ্রার্থী অবান্তর ইচ্ছেগুলোকে। অন্ধকারে একটি উজ্জ্বল ঘরের জন্ম হয়েছে গোপনে গোপনে। কিছু কৌতুহলী ফুল ও তাদের সব
নাচুঁনে বুড়ি আমি আগেই ছিলাম। বহু কষ্টে নিজেকে গৃহবন্দী করে রেখেছিলাম গত ৪টা বছর। কিন্তু তারেক অণু-র ঢোলের বাড়িতে আর সাম্লাতে পারলাম না নিজেকে। তাই তেহজীব যখন বলল যে বলেন কই যাবেন, সব খরচ আমার তখন আর না করতে পারলাম না। অনেক বার ঠিক করার পরেও বিরিশিরি যাওয়া হয়ে উঠেনি এর আগে। তাই গত ১ ডিসেম্বর ২০১১ সকাল বেলা রওনা হয়ে গেলাম ক্যামেরা হাতে। এটি সেই এলোমেলো ভ্রমণেরই গল্প।
০১.
পড়ছিলাম ঋতুপর্ণঘোষের সাক্ষাৎকার। কবেকার জানি না। অনেক আগের হয়তো। কথা বলছিলেন তার বিজ্ঞাপন ও ছবি বানানোর নানা অনুষঙ্গ নিয়ে। ছবিতে রং-এর ব্যবহার নিয়েও বললেন অল্প-স্বল্প। একজায়গায় জানালেন নিজের ছবিকে “ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবি” বলে বিজ্ঞাপিত করার অনাগ্রহের কথা। বললেন, বায়ান্ন জনের ছবি কখনো ঋতুপর্ণের একার ছবি হতে পারে না। আর এক জায়গায় ক্যামেরার সামনে কখনো কাজ করবেন কী না প্রশ্নের উত্তরে স্ট্রেইট এবং খুব কনফিডেন্টলি বললেন, “না”।
সামান্য একটা বোতামের কাছে হেরে গিয়েছিল আবুল হোসেন।
গত অর্ধশতকে তার এরকম ঘটনা ঘটেনি। ঘটনাটা একবার ঘটলে দুর্ঘটনা বলা যেতো। কিন্তু পরপর তিনবার ঘটার পর মনে হলো এটা দুর্ঘটনা নয়, নিশ্চিত ষড়যন্ত্র।
রেড ড্রাগন
আমাদের ছোটবেলায় খুব বেশি রেস্টুরেন্ট-টেন্ট ছিল না, আর মানুষের মাঝে বাইরে খেতে যাবার মানে যাকে বলে eating বা dining out এই প্রবণতাটা ছিল দুর্লভ। এখন যেমন অনেকেই রুচি বদল করতে বা ছোটখাটো উদযাপনে রেস্তোরাঁয় যান মাঝেমাঝেই, পনের-কুড়ি বছর আগে সেরকম চিন্তাভাবনা মধ্যবিত্তের মাঝে বেশ কম দেখা যেত। একটা কারণ মনে হয় সে সময়ে সাধ্যের মাঝে ভালো ভালো খাবার জায়গা ছিল কম, স্কয়ার ফিট মাপা অ্যাপার্টমেন্ট বাড়িও ছিল কম, কাজেই বাড়িতে দাওয়াত দিলে অতিথিদের স্থান সঙ্কুলানের সমস্যা হবে এমনটা কেউ ভাবতে পারতো না। ছোটখাটো অনুষ্ঠান তো বটেই, বিশালাকার বৈবাহিক যজ্ঞও সকলে নিজের বাড়িতেই সুসম্পন্ন করতেন।
একঃ
- আমি কি তবে বলদ?
- ধুর ব্যাটা, তাই কইলাম নাকি?
- তবে কি আমি পাঁঠা?
- উহু
- তাইলে আমারে মুড়ি খেতে বলেন কেন?
- জীবন মানেই মুড়ি খাওয়া রে মূর্খ। ভাগ্যবানে ইয়ে করে মুড়ি খায় আর অভাগা এমনে এমনেই খায়।
বদরুল ভাই মতিনকে জীবনের মানে বোঝানোর চেষ্টা করেন।
- আমি কি তবে বলদ?
- ধুর ব্যাটা, তাই কইলাম নাকি?
- তবে কি আমি পাঁঠা?
- উহু
অনেক্ষণ ধরে বসে আছি এই হাসপাতালে, একাকি। নাহ, আরো অনেক মানুষই আছে। কিন্তু আমি যোগাযোগহীন। হয়ত ভাষার জন্য, হয়তবা বয়স বা বর্ণ, অথবা আমি নিজেই। পাখি গুলো কথা বলতে থাকে। খুব সুন্দর চড়ুই এর মত দেখতে অনেক গুলো পাখি। আটকে আছে দুটো দেয়ালের মাঝখানে। এখানে আসা বৃদ্ধ রোগিদের বিনোদনের জন্য। আমিও এসেছি এক বৃদ্ধকে নিয়ে। আমার বাসার কাছেই থাকেন তিনি। আমেরিকার এই ছোট গ্রামে অল্প কয়টি বাঙালির আমরা এই দুই জন।