চাকরীটা হয়ে গেলো শুভর। ঠিক সে মুহূর্তে খুব সম্ভবত পৃথিবীতে ওর চেয়ে বেশী দরকার আর কারওই ছিলনা চাকরীটার। পাঁচ বছরের কন্ট্রাক্ট। ঠিক এক সপ্তাহের মাঝে জয়েন করতে হবে। হ্যা, ওরা প্রচুর টাকা দিবে। তবে
বুদ্ধিটা একটু পক্ক হতেই মনের মাঝে এক ঝাক না হলেও গুটিকয় স্বপ্ন এসে ঘর বেঁধেছিল। সময় গড়াবার সঙ্গে সঙ্গে রঙ এবং ধরনও পালটাচ্ছিলো তাদের। স্বপ্নগুলোর ধাঁচ খানিকটা অন্যধারার। না, বাগান সমেত বাংলো বাড়ী, ঝকঝকে ফেরারী, নিতম্ব কিবা বক্ষ প্রধানা নারী; এমন সাধারন স্বপ্নে কখনই বিভোর ছিলাম না। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়র, মাস্টার এমনকি রোদ্দুর হতেও মন চায়নি কখনো।
দেশ থেকে বাইরে কাটিয়ে দিলাম দীর্ঘ সাড়ে চার বছর। মাঝে দেশে গেছি বার-দুয়েক। দেশেও উন্নতি হচ্ছে, বড় বড় বিল্ডিং হচ্ছে, চাকরি হচ্ছে রাস্তাঘাট হচ্ছে - দিনে দিনে দিন-বদলের ছোঁয়া দেখা যায়। ধানক্ষেত জায়গা ছেড়ে দিচ্ছে হাউসিং ডেভেলপমেন্ট জোনের জন্য। কিছু পরিবর্তন আমেরিকাতেও হচ্ছে। মন্দার পরবর্তী রাস্তাঘাট মেরামতের কাজ এখন কমে আসছে, যত মন্দা কাটছে ততই বোঝা যাচ্ছে মন্দার পরবর্তী রিকভারি হয়ত তত চাকরি আনবে না বাজারে। হাউসিং বাবল বার্স্ট করার পরে দাম আবার বাড়া শুরু হয়েছে বটে কিন্তু বাবলের সময়ের দামের কাছাকাছি পর্যায়ে যেতেও এখনও অন্তত বছর পাঁচেক বাকি। তাও তফাৎ চোখে পড়ে। প্রথম বিশ্ব আর তৃতীয় বিশ্ব নামগুলো ঠিক কে কিভাবে দিয়েছিল জানি না, দেশে গেলেই দুই বিশ্বের তফাতের কথা ভালভাবে বোঝা যায়। একটা বছর তিনেকের শিশু দুয়েক দিনেই হয়ত বুঝে যায় পার্থক্যটা।
বৈশ্বিক খাদ্যনিরাপত্তা প্রচারাভিযান 'গ্রো'-এর বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের জন্যে আমরা 'ত্রিমুর্তি' মিলে একটা গান বেঁধেছি, যাকে আমরা বলছি গ্রো বাংলাদেশ থিম সং। আমরা ত্রিমুর্তি মানে ফিডব্যাকের দলনেতা, বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় একজন সঙ্গীত পরিচালক ফোয়াদ নাসের বাবু; আমার বন্ধু, বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গিটারবাদক ও প্রতিভাবান সঙ্গীত পরিচালক রুবায়েত চৌধুরী; আর ত্রিমুর্তির সর্বশেষ জন এই আপনাদের রাতঃস্মরণীয়।
পচে যাওয়ার জন্য মরে যাওয়া কোন প্রয়োজন নেই। পচে যাওয়ার জন্য কেবল জন্মানো প্রয়োজন। জন্মের পর থেকেই আপনি প্রতি মুহূর্তে পচে যাচ্ছেন। কীভাবে পচে যাচ্ছেন সেটি বোঝার আগে কীভাবে বেঁচে আছেন সেটি মোটাদাগে বুঝে নেয়া যেতে পারে। একটি কোষের বেঁচে থাকার বর্ণনা দিলেই একটি প্রাণির বেঁচে থাকার নিয়ম বুঝতে পারা যায়।
কোষ একটা আপাত স্বয়ংসম্পূর্ণ জৈবিক সত্ত্বা। অনেকগুলো প্রোিটন মিলে খানিকটা তেল জাতিয় পদার্থ আর শর্করার সঙ্গে একটা থলি বানিয়েছে। সেই থলির ভেতরে বেশিরভাগটাই পানির মধ্যে ডুবে আছে আরো এটাসেটা প্রোটিন, শর্করা, চর্বি, ছোট ছোট যৌগ এসব। আর আছে নানারকমের জটিল কলকব্জা। কলকব্জা তৈরি হয়েছে ওই প্রোটিন-চর্বি-শর্করা মিলিয়েই। এইসব কলকব্জা প্রতিমুহূর্তে ঘটঘট করে কাজ করছে। বেঁচে থাকতে তাদের বিরতি নেই, কেবল খাটনি আর খাটনি। তেল মশলায় চুবানো কলকব্জা ভর্তি প্রোটিন-শর্করার এই থলি হচ্ছে একটা কোষ।