গতবছর তিউনিসিয়া থেকে বাহরাইন পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়া আরব সমাজে রাজনৈতিক অস্থিরতাকে ভালোবেসে আরব বসন্ত নাম দিয়েছে পশ্চিমা মিডিয়া। ঋতু বসন্তের চেয়ে রোগ বসন্তের সাথেই এর সাদৃশ্য বেশি। তিউনিসিয়ায় এক ক্ষুব্ধ অপমানিত ফলবিক্রেতা নিজের গায়ে তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করেন, আর সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে সুদূর বাহরাইন পর্যন্ত। সুদীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আরব সমাজ গর্জে উঠেছে তিউনিসিয়া,
“...কেউ বলছে কিছু বলছে কেউ বলব বলব করছে
কেউ বলতে না পারা যন্ত্রনা নিয়ে গুমড়ে গুমড়ে মরছে...।“
ডেস্কটপের স্ক্রিনে নানান রঙের ঢেউ ভেসে বেড়াতে থাকে মিডিয়া প্লেয়ারের জানালায়, আর শ্রীকান্ত গাইতেই থাকেন, অবিরাম। কী-বোর্ডে হাত দিয়ে বসে থাকি কেবল- লেখার খোলা পাতা সাদাই থাকে, মাঝে মাঝে একটা দুটো শব্দ উঁকি দেয় আবার কিসের পিছুটানে ফিরে যায়, হয়ত সঙ্গী শব্দদের খুঁজে আনবে বলে।
মাসখানিক আগে ছোটভাইয়ের কল্যানে একটা কিন্ডল হাতে আসায় পড়ার নেশাটা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গত কয়েকদিন ধরে তাই অবসর সময়ে নিউক্লিয়ার অস্ত্র দিয়ে শহরজনপদ ধ্বংস করার আর ওয়াশিংটন ডিসিতে বায়োলজিকাল হামলার কাজ মুলতবি রেখে শুধুই পড়ছি। সিরিয়াস কিছু না, কমফোর্ট রিডিং যাকে বলে। পুরোনো সব সাইন্স ফিকশান আর ভূতের গপ্পো। তো এই গল্পটা পড়তে পড়তে মনে হলো এইটাকে কনটেমপরারি সময়ে ঢাকার পটভূমিতে এনে ফেলতে পারলে
সময়গুলো উড়ে যাচ্ছে। পেছনে ফেলে স্মৃতির পালক। বছরের শেষদিনে অস্তগামী সূর্যটার দিকে তাকাতেই মন কেমন যেন করে ওঠে! ওই সূর্যটার সাথে সাথে যেন বছরের সব হাসি-কান্না-আনন্দ-বেদনা ডুব দিচ্ছে। মনে হয়, হারিয়ে যাচ্ছে, ফুরিয়ে যাচ্ছে সব। এভাবেই তো যায়...। সুখ যায়...। দুঃখ যায়...। হারায় কতকিছু। আবার পাওয়া হয় নতুন কিছু। প্রাপ্তির কথা তেমনভাবে গেঁথে থাকে না মনে, যেমন ভাবে গেঁথে থাকে অপ্রাপ্তির বেদনা।
সঙ্গত কারণেই আমার মনে হয়, জগত সংসারের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দ্বিপদ প্রানীটির নাম “শাশুড়ী”! শব্দটির ভেতরেই বাই-ডিফল্ট গেঁথে আছে জন্ম জন্মান্তরের কলিজাকাঁপান ত্রাস! হাঁটুকাঁপান আতঙ্ক! দাঁতকপাটিলাগা বিভিষীকা! একটি নারী যখন শাশুড়ী হবার প্রমোশন পান - নিচুতা, শঠতা, স্বার্থপরতা, কুটিলতা, জটিলতা, ধূর্তামি, টাউটামি ইত্যাদি যাবতীয় কর্পোরেট বৈশিষ্ট্য তখন তার আগাপাশতলা দিয়ে তেড়েফুঁড়ে বেরিয়ে আসে!
এখনকার কাচ্চা বাচ্চাগুলি ঘুমায় কখন বুঝিনা। চব্বিশ ঘন্টা কার্টুন দেখার সুযোগ থাকলে আমি দিনে কয় ঘন্টা ঘুমিয়ে নষ্ট করতাম বলা মুশকিল!
গত পরশু থিসিস এর কাজে উইকিপিডিয়ায় ঢুকে একটু থমকে গেলাম। উইকিপিডিয়ার হেডারে কালো রঙের ব্যানারে বড় বড় করে লেখা "In less than 18 hours wikipedia will be blacked out globally in protest of SOPA and PIPA"
১. গোলামের রাজত্বঃ
আমি হতভাগা প্রজন্মের প্রতিনিধি। আমার জন্ম ১৯৮০-র দশকের শুরুতে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে আমার জন্মের ১১ বছর আগেই। এমন তাৎপর্যবহ যুদ্ধ শত বছরেও একবার আসে না। সেই যুদ্ধ দেখতে না পাওয়ার চেয়েও দুর্ভাগ্য আমাদের প্রজন্মের। আমি ও আমার প্রজন্ম হতভাগা, কারণ আমাদের যুগে এসে যুদ্ধের শিক্ষা হারিয়ে গেছে বাংলাদেশ থেকে।
সেটা ‘আর্লি নাইন্টিজ’, কলকাতার ভিআইপি রোডের তখন কিশোর বয়স, আর বয়সোচিত মাখনের মত ত্বক। বরিশালে আমাদের দ্যাশের বাড়ি থেকে এক কাকা এলো বেড়াতে, বাবা তাকে স্কুটারে করে ওই রাস্তায় একপাক ঘুরিয়ে আনার পর মন্তব্য এসেছিল, “Zhaকুনি লাগে!”
কুলদা রায়
এমএমআর জালাল
নদী, আপন বেগে—বদলের সুর