একুশ আমার রক্তস্নাত বর্ণমালা
দু:সময়ে দু:সাহসী যোদ্ধা বানায়।
একুশ আসে সমর সাজে
ঘুণে ধরা সমাজটাকে বিদায় জানায়।
একুশ প্রাণে আশার আলো
অত্যাচারের প্রতিবাদে কঠিন ভাষা।
দেশের লাগি ভাষার লাগি
বজ্র কঠিন শপথ নিয়ে সর্বনাশা।
একুশ ফাগুন রাঙা হয়ে
জনগণের অধিকারে আস্থা জানায়।
একুশ জরা জীর্ণতাকে ছুড়ে ফেলে
তরুন প্রাণে দিন বদলের বার্তা শোনায়।
একুশ শেখায় বাঁচতে হলে
বাঁচার মতই বাঁচতে হবে।
খবরটা পেলাম দুপুরের দিকে, ফেসবুকে। কসাই কাদেরের যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছে। প্রথমে ভাবলাম হয় আমি ভুল দেখছি না হয় যে শেয়ার করেছে সে ভুল করেছে। সাথে সাথে বিডি নিউজে চেক করে দেখলাম কাহিনী আসলেই এইরকম; বিকেলে বা সন্ধ্যার দিকে কসাই হারামজাদার ভি সাইন ওয়ালা ছবি দেখে আরো মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। তখনো শাহবাগের খবর পাইনি আমি। সেদিনই বই মেলায় যাওয়ার কথা ছিলো।
আটটার দিকে সি,এন,জি নিয়ে রওনা দিলাম। বার্ডেম পর্যন্ত এসে দেখি রাস্তা বন্ধ। শ'খানেক মানুষ রাস্তা বন্ধ করে মোমবাতি জ্বালিয়ে বসে আছে। একজন ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করলাম, সে বললো কসাই কাদেরের রায়ের প্রতিবাদ চলছে। কি মনে করে আমিও বসে পড়লাম উনাদের সাথে। এখান থেকেই আমার শাহবাগ সংগ্রামের শুরু। তবে এদিন বেশিক্ষণ থাকতে পারলাম না। মা সাড়ে দশটার দিকে ফোন দিয়ে দিয়ে বাসায় ফিরিয়ে আনল। তখনও আমি জানতাম না পরবর্তী ৭২ ঘন্টা হবে আমার জীবনের সবচেয়ে উত্তাল সময়।
এই তো সেদিন ছেলেটা পিচ্চি একটা বাবু ছিল; ধেই ধেই করে বড় হতে হতে আজ কত্ত বড় হয়ে গেছে চোখের সামনে, তবুও আমার কাছে সে বাবুই হয়ে আছে। যেন এক টুকরো সবুজ স্বপ্ন বড় এক পর্বতের শুভ্র শৃঙ্খ হতে চলেছে। আজকাল ছেলেটা কোথায় কখন কী করে, ভবিষ্যতে কী করবে- এইসব স্বপ্ন আর দুঃস্বপ্নের মাঝ দিয়েই ভোর-রাত পার করি। যদি দুই ভাই-বোনের জন্য সুস্থ সুন্দর একটা ভবিষ্যত্ না রেখে যেতে পারি, যদি এরা কষ্ট আর মলিন জীবন-যা
আপনি যদি ভাবেন, এই দাবী আদায়ের জন্য এভাবে ১৪ দিন রাজপথ আকড়ে না পড়ে থাকার দরকার ছিল না, তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন । জামাত শীবিরের রক্তচক্ষু, বহির্বিশ্বের চাপ এবং রাজনৈতিক ফায়দা লাভের অভিসন্ধিতে ভেস্তে যেত আমাদের এই প্রানের দাবী । এই আন্দোলনের মাধ্যমে দেশ, জাতি, রাজনৈতিক দল, সারা বিশ্বকে জোর গলায় জানিয়ে দেয়ার দরকার ছিল এটা সমগ্র জাতির দাবী এবং এই ব্যাপারে কোন আপোষ আমরা মেনে নেব না। আইন পদ্ধতিতেই আমরা এই নরপশুদের ফাসি চাই এবং দিব। ধৈর্যহারা হয়ে অযৌক্তিক ভাবে "দ্রুত ফাসি চাই, এক্ষনি ফাসি চাই " বললে আমাদের নায্য দাবীও সবার কাছে মনে হবে বেআইনী, ক্ষতিগ্রস্থ হবে দেশের আইন ব্যবস্থার সুনাম এবং সর্বোপরি আইনের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা। আইনের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আছে বলেই, উত্তাল শাহবাগের দোড়গোড়ায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল থেকেও গোলাম আজমের গায়ে একটা ফুলও ( পড়ুন জুতা ) কেউ মারে না। আইনী প্রক্রিয়াতেই আমরা এই ঘাতক দালালদের বিচার করে ঝামা ঘষে দিব ডেভিড বার্গম্যানের মত সুযোগ সন্ধানীদের মুখে যারা " মব জাস্টিস " বলে উড়িয়ে দিতে চায় জনতার এই দাবীকে । তাই বলে কি রাজপথ ছেড়ে দিব ? কখনোই না। প্রশ্নই আসে না। আবার আসুন পেছনে ফিরে তাকাই । ৫২ তে ভাষা, ৭১ এ স্বাধীনতা , ৯০ এ গনতন্ত্র কিছুই কি এত দ্রুত পেয়েছি ? খুব কি সুখকর ছিল সেই দিন গুলো। ? তাহলে এত অল্পতেই কেন আমাদের এই হতাশা ? এত অল্পতেই কেন আমরা ক্লান্ত ?? আরো যে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। বিজয় আসবেই ।
এবং তোমার দ্বন্দ্ব মানে নিজের সাথেই প্রবল লড়াই- ঘর জুড়ে তাই ঘুণ ধরেছে,
তোমার দ্বিধা মানে চলতে গেলে হোঁচট খেয়ে যাও দাঁড়িয়ে আর হাঁটো-না --
সব প্রহরেই শুনতে থাকো দিন ফুরিয়ে রাত আসে তাই ভোর হবে-না --
তোমার নিয়ম ভাঙার সকল শপথ শিকল পড়ার ছল মেনেছে,
তুমিও এখন কান পেতে তাই চিরচেনা প্রতারকের মিহিন কোন মন্ত্রণাতে আঁতকে উঠো,
নিয়ম করে ঠিক প্রতিবার ভুল যোগে তাই বিয়োগ মেনে পিছু হটো...
সচলায়তনে টাইমলাইন নামক একটি ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। শাহবাগ আন্দোলন, জামাতী কদর্য্য ইতিহাস ইত্যাদি ঐতিহাসিক ঘটনাবলী একটা সময়রেখায় ধরে রাখা যাবে এই ফিচারটি ব্যবহার করে। এরকম এইট সময়রেখা তৈরী করতে চাইলে আমাদের সাথে এই পোস্টে অথবা contact এট সচলায়তন.কম বরাবর ইমেইল করে জানালে আমরা আপনাকে সহায়তা করবো।
প্রাচীনকালে নাকি আঙ্গুলে ব্যাথা হলে গোটা হাতই কেটে ফেলা হতো। আর এই সেদিনও একটা দুষ্টু লিঙ্কের জন্য গোটা ফেসবুক ব্লক করা হতো। সম্প্রতি ইউটিউবের জন্যে একই ধরণের চিকিতসা নেওয়া হয়েছে। তবে আজকে একটা খবর পড়ে একটু আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। সরকার এখন গোটা হাত না কেটে গ্যাংগ্রীন আক্রান্ত আঙ্গুল্টাই কাটতে পারছে। এই অবাধ তথ্যপ্রবাহের যুগে এটা করাই সমিচীন। ইন্টারনেট অতি সামান্য কিছু মানুষের কাছে দুষ্টুমির উপকরণ হলেও এর ব্যবহার গোটা বিশ্বের কাছে যোগাযোগের এবং তথ্যপ্রবাহের দিগন্ত উন্মুক্ত করে দিয়েছে। অকল্যাণকর বা দুষ্টুমিতে এর এক ট্রিলিয়ন ভাগের এক ভাগও বোধকরি ব্যবহার হয়না।
রাজীবের গলা চিরে ভেবেছিস হবে রোধ
জনতার জাগরণ? তোরা বড় নির্বোধ!
সহযোদ্ধারা তার জেগে রাত কাটাবেই
"ফাঁসি চাই" চিৎকারে কন্ঠটা ফাটাবেই।
আবদুল গাফফার চৌধুরীর লেখা অপূর্ব গানটিকে প্রতি বছর কত মধুর করে গাই আমরা, খালি পায়ে প্রভাত ফেরীতে পুষ্পমাল্য নিয়ে শহীদ মিনারে যাই, সারা পৃথিবীতে এক একটা অঙ্গনে রাতারাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়ায় আমাদের প্রতীক শহীদ মিনার, কিন্তু আমাদেরই দেশে আমাদেরই ভাইদের মুখের ভাষা ক্রমশ যেন পায়ের নিচে মাটি হারায়।
আমরা একুশে ফেব্রুয়ারির সন্তান, আমরা কি তা হতে দিতে পারি?
সবার আগে যেটি প্রয়োজন সেটি হচ্ছে মানুষকে সতর্ক করা। আমি যেহেতু দেশে থাকিনা, তাই আমার স্পষ্ট জানা নেই আমাদের দেশের মানুষ এই ভাইরাসটির সংক্রমণ বিষয়ে কতটা সচেতন। পর্যাপ্ত সচেতন নয় বলেই জেনেছি। সেরকম হলে, সচেতন করা প্রয়োজন। দূর্ভাগ্যবশত এই লেখাটি গ্রামের সেইসব মানুষের কাছে পৌঁছবে না যাঁরা সরাসরি নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমনের ঝুঁকিতে রয়েছেন। কিন্তু আমি জানি, আপনারা যাঁরাই এই লেখাটি পড়ছেন সবাই কোন না কোনভাবে গ্রামের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন। আমি নিজে যা করেছি, সেটি আপনাদেরকেও অনুরোধ করি। গ্রামে স্বজনরা যাঁরা রয়েছেন তাঁদেরকে আজকেই একটি ফোন করে সতর্ক করুন। তাদেরকে বুঝিয়ে বলুন নিপাহ ভাইরাস কী এবং এটা কীভাবে ছড়ায়। তাঁদেরকে জানিয়ে দিন কীভাবে সতর্ক থাকতে হবে। স্বজনদের প্রতি এটুকু দায়বদ্ধতা বোধহয় আমাদের থাকা উচিত।