গত সহস্রাব্দের কথা।
আমি আমি ছিলাম। তুমি ছিলে তুমি। আর সে ছিল সে।
এরপর সে এলো।
আমি আমি রইলাম না আর। তুমিও রইলে না তুমি।
এভাবে কেটে গেল অনেকটা সময়।
যখন চলে গেল সে,
আমি আবার আমি হয়ে গেলাম। সে হয়ে গেল সে।
কিন্তু তুমি আর তুমি হতে পারলে না।
তার মানে সবাই বালছাল বানাইলে আমাকেও বালছাল বানাইতে হবে?
এগজ্যাক্টলি তাই। সৌরভদা তার বিচ্ছিরি শরীর দুলিয়ে একটা হাসি দেন।
এই তো তুমি লাইনে আসছো। ধরো, তুমি এক জায়গায় ডিমের ব্যবসা করতে আসছো। ঐখানে আরো চার-পাঁচজন দোকানী ডিম বেঁচে। এখন তোমার ডিম যদি ওদের চেয়ে বড় আর সুস্বাদু হয়, আবার দামেও কম হয়---তোমার কি মনে হয়---ওরা তোমারে ঐখানে ব্যবসা করতে দিব?
আমি ডানে-বাঁয়ে হালকা মাথা নাড়াই।
অনেক বছরের সম্পর্ক অনিবার্য কারণে ভেঙ্গে যাবার পর কেবল ভাল বন্ধু থাকার প্রতিশ্রুতি নিয়ে যখন বিদায় দেবার জন্য দরজায় দাড়িয়ে ওর চোখের দিকে তাকালাম,
সে কেবল অস্ফুট স্বরে বলল- আশা করি জীবনে তোমার মতই আর কারো সাথে আমার দেখা হবে।
অতিসাধারণ এক তরুণ থেকে সেই মুহূর্তেই পরিণত হলাম বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম এক্স-বয়ফ্রেন্ডে!
[justify]
আমরা যারা বেয়ারিং চাকা চালিয়ে
পাহাড়ের নৈঃশব্দ্য গ্রামে ছুটে যেতাম,
চুড়া থেকে আঁধার নিচে নামার আগেই
পাহাড়দের চুপচাপ ঘুম পাড়িয়ে ফিরতাম
ভেজা-ভেজা রোমাঞ্চ আর হাওয়াই মিঠাই নিয়ে,
অতঃপর যুগযুগ ধরে নীরব কোলাহলের সাথে
মৃত্তিকার পাঁজর উপচে পড়ত সেই রোমাঞ্চ,
জিহ্বা গাঢ় গোলাপি না হওয়ার আগ পর্যন্ত
চলত হাওয়াই মিঠাই উৎসব।
সে-ই আমরাই নিমন্ত্রিত ছিলাম না
মেঘরাজদের রাজকীয় সভায়।
[যাঁরা অকবিতার প্রশ্রয় দেন তাঁদের জন্য।]
…
ইদানিং মনে হচ্ছে যেন চারিদিকে আত্মহননের মচ্ছব লেগেছে। বেশ কদিন ধরেই পত্র-পত্রিকায় দেখছি, এখানে সেখানে আত্মহত্যার খবর। একি সুখে থাকতে ভুতের কিল, নাকি ভুতের কিল অসহনীয় হওয়ায় এই পন্থা অবলম্বন !
ঋক ছিল একটা আধা আচ্ছন্নতার ভিতরে। কড়া সিডেটিভ দেওয়া হয়েছিল ওকে। তাই এখনও চোখ মেললে চারিদিক কুয়াশাকুয়াশা। একবার মাত্র চোখ মেলে আবার বুজে ফেলেছিল ঋক। এলিয়ে পড়ে থাকতেই ভালো লাগছে ওর।
হাতে আজো রক্ত লেগে আছে
এই হাতে, আঙুলের সমষ্টিতে
আমি তাকে শ্বাস রোধ করে মেরেছি যৌবনে
বেহালা বেচেছি - বোনের কলেজে ভর্তি
বউয়ের বালা বেচেছি - বাসা ভাড়া তিন মাস বাকি
থিয়েটার স্কুলে আর যাইনি - চাকরিটাই দরকারি ছিলো বেশি
এক মধ্যরাতে
চারফর্মার লিটল ম্যাগাজিনটাকেও
গলাটিপে হত্যা করলাম - ‘জলছবি’ তার নাম ছিলো
এসব মৃত্যুর মিছিলের ছায়ায় পেয়েছি পূনর্জন্ম এক
এ জীবন আসন পেতেছে সূর্যশিখরে