সত্তর বছর বয়সে কি আমি নিজেকে হিমালয়ের কোন দুর্গম গুম্ফায় আবিস্কার করব? নাকি আদিপুরুষের ভিটে আফ্রিকার সাভানার কোন লালমাটির গোলাঘরে? নাকি ফিনল্যান্ডের বরফাচ্ছন্ন লাল কাঠের উষ্ণ কুড়েতে? পলিনেশিয়ার প্রবাল দ্বীপে? নাকি প্রিয় ভুখন্ড পেরুর কোন নাম না জানা গ্রামে? পদ্মাপারের রাজশাহীতে? জানি না। তাতে আদৌ কিছু যায় আসেও না হয়ত।
আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
[justify]
পৃথিবীর পাঠশালাঃ
"ক্যান উই গো টু ডিজনিল্যান্ড ফর মাই বার্থডে?"
"নারে মা...হাতে টাকা নেই একদম..."
"আব্বু ক্যান আই গেট অ্যান আইপ্যাড?"
"নাহ...ওই টাকার সমস্যা..."
"হাও অ্যাবাউট অ্যান আইপড টাচ?"
"টাকা বড় ইয়ে..." মিনমিন করে আমাকে জানাতেই হয়।
বাকাট্টা বাকাট্টা হৈহৈ হৈহৈ। প্রবল চিৎকার চ্যাঁচামেচির মাঝে একটা সপ্নের পতন। সাকরাইন। পুরান ঢাকার পৌষ সঙ্ক্রান্তির উৎসব। ঘুড়ির উৎসব। যখন সাকরাইনের কথা মনে পরে যায় মনে হয় আগের জন্মের কোন মধুর সপ্ন দেখে এই মুহূর্তে জেগে উঠলাম। পৌষের শেষদিন জানুয়ারির মাঝামাঝি ১৪ বা ১৫ তারিখ। চারদিকে শুধু ঘুড়ি,ঘুড়ি আর ঘুড়ি। সাদা, হলুদ, লাল,নীল, বেগুনি গোলাপি সবুজ কোন রঙ নেই তাই খুজে দেখার মত।
যান্ত্রিক সীমাবদ্ধতায় এই পর্বটি একাধিক খন্ডে দিতে
হয়েছে। এটি আগের অংশের সরাসরি ক্রমধারা।
(এখানে ক্লিক করে আগের অংশটুকু পড়তে পারবেন।)
গল্পের সুত্রপাতের গল্প-
তিনি মাঝে মাঝে গল্প লেখেন। সবগুলো ঠিক গল্প হয়ে উঠতে পারে না। তবু একজন স্থায়ী পাঠকের মনোযোগ পেয়ে তিনি লেখালেখি জারি রেখেছেন। এই পাঠক তাঁর লেখার ঠিক ভক্ত নয়। যদিও তাঁর সব গল্প মনোযোগ দিয়ে পড়ে। গল্পের রেটিং করে, সমালোচনা করে, মাঝে মাঝে উৎসাহও দেয়। লেখক সেদিন একটা নতুন সিদ্ধান্ত নিলেন। পাঠকের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহনে একটা গল্প হোক। কিন্তু এত রাতে কোথায় খুঁজবে পাঠককে। তাছাড়া ভৌগলিক দূরত্বও কম নয়। হোক দূর, হোক রাত, এখন ইন্টারনেট যুগ, এই যুগে পৃথিবীতে কিছুই দূর নয়, কোন সময়ই অসময় নয়। কিছু মানুষ আছে যাদের গরু খোঁজা করে বাস্তবে কোথাও পাওয়া না গেলেও ইন্টারনেটে বা ফেসবুকে ২৪ ঘন্টাই খুঁজে পাওয়া সম্ভব। তিনিও যথারীতি খুঁজে পেয়ে গেলেন পাঠককে। দূরবর্তী পাঠক তখন ঘুম থেকে উঠে নাশতা করতে বসেছে মাত্র। প্রস্তাব পেয়ে প্রথমে দোনোমোনো করলেও অবশেষে সে রাজি হয়েছে গল্প সৃষ্টির অংশীদার হতে। লেখক এখনো জানেন না কি গল্প হবে। গল্পের কাহিনী না জানলেও তার একটা চটকদার নাম ঠিক করা হয়েছে- "অপ্রত্যাশিত বিদ্যুতের চমক"।
ভুমিকাঃ
কিছু জিনিস থাকে প্রিয় থেকেও বেশি প্রিয়। আমার প্রিয় গাছের তালিকাটা বেশ লম্বা। কিন্তু অতিপ্রিয় গাছের কথা বললে সবার আগে আসবে পেটারির নাম। কবে কোথায় গাছটা প্রথম দেখি, সে স্মৃতি নিউরণের অতল সমুদ্রে গা ঢাকা দিয়েছে। তবে প্রথম মুগ্ধতার কথা এখনও স্পষ্ট। সে প্রায় বছর পচিশেক আগের কথা। ৮৯-এর বর্ষণমূখর এক দিনে গিয়েছিলাম এক ফুপুর বাড়ি। গ্রামটা ভারি সুন্দর। ঝোপ-জঙ্গল, নদী, মাঠ, শস্য, ঘাসফুলে আচ্ছাদিত এক আদর্শ বাঙালী গ্রাম। বর্ষার বিশুদ্ধ পানিতে গা ধুয়ে গোটা গ্রামটাই যেন পবিত্র চেহারা পেয়েছে। বৃষ্টিস্নাত গাছপালায় সবুজের অভিযান। সবুজ-সতেজ গাছপালা যেমন আমার শিশুহৃদয়ে দাগ কাটছিল, তেমনি বাহারি ফুলের নানা রঙে স্মৃতির ক্যানভাসে অঙ্কিত হচ্ছিল অমোচনীয় সব ছবি। সেই বর্ষার সেরা ছবি হয়ে আজও আমার মানসপটে গেঁথে আছে মামুলি এক মেঠো ফুল। এরপর পল্লীবাংলার কত গাঁয়ে, কত মাঠে কত অজস্রবার একে দেখেছি তার ইয়ত্তা নেই। প্রতিবারই গাছটা আমার বুকে অন্যরকম এক অনুভূতির জন্ম দিয়েছে, বুনেছে অন্যরকম ভালবাসার জাল। আর স্মৃতির পর্দায় ডানা মেলেছে শৈশবের সেই ছবি।
এক.
[justify]আমাদের পড়াকালীন সময় সুইডেনের লিনশপিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিসিনের মাস্টার্স প্রোগ্রামটিতে একটি মজার অ্যাসাইনমেন্ট ছিল। ২০০৮-২০১০ বর্ষে যারা পড়েছে তাদের সবাইকেই এই অ্যাসাইনমেন্টটি করতে হয়েছে। এখনো হয়তো করতে হয়।
জায়গাটিতে জাদু দেখানো হয় না।
কিন্তু সবকিছুই যেন তৈরী হয়েছে কোন আশ্চর্য জাদুকরের ছোঁয়ায়। সেখানে আছে এক মায়াপর্বত, কিছু মায়াহ্রদ আর এক বিশাল মায়াপ্রাসাদ। সেখানে বছরের বারো মাসেই উৎসব, প্রতিদিন। প্রতিরাতেই প্রাসাদে জমে ওঠে আলো ঝলমলে রঙের মেলা, রূপকথার সব চরিত্র স্বপ্নের অস্পষ্ট দেয়াল ভেঙে জ্যান্ত হয়ে ওঠে চোখের সামনে।