[ /জাতীয় পতাকাকে অসম্মানিত করার ছবিটি মুছে দিয়েছি/]
পাখির গানের কোনো, জানামতে, স্বরলিপি নাই
তবু কোনোদিন সেইসব গান বেসুরো লাগেনি
সুরেই লেগেছে কিনা ভ্রুক্ষেপ করেনি কোনো পাখি
শুনেছে কেবল আহা বলেছে যা আকুল হৃদয়
দোয়েল পাখির শিসে থামে নাই কোকিলের কুহু
বকের সাধনা তবু ভাঙে নাই শালিখের সুরে
ফুলেরা মানেনি রীতি “কী উপায়ে ফুল হ’তে হয়”
কারো কোনো কথা মেনে হয় নাই পদ্ম সুনীল
ঘাসফুল মানে নাই বীজগণিতের কোনো ধারা
সংকোচে ফুলেদের ভালোবাসা বকেয়া থাকেনি
মার্চ মাস এলেই টিভিতে মুক্তিযোদ্ধা কিংবা শহীদ পরিবারের স্বজনদেরকে ডেকে ডেকে ১৯৭১ এর স্মৃতি বলতে বলা হয়। ঘুরে ফিরে কিছু মানুষের কাহিনীই আমরা বারে বারে শুনি। কিন্তু শুধু তারাই কেন শোনাবেন? একাত্তরে এদেশে মারা গেছে ৩০ লক্ষ মানুষ, আমাদের তো ৩০ লক্ষ গল্প থাকার কথা। অন্তত ৩০ লক্ষ সাহসিকতার গল্প। সে সময় বাঙালি ছিলো সাড়ে সাত কোটি, তত কোটি গল্প কি আমরা শুনেছি?
১
“এই যে! এই যে! বললাম না? প্রতিদিনই যায়!”
মাথার উপরে আওয়াজ পেয়ে মুখ তুলে দেখি তিনতলা বাসার দোতলার দুই ফ্ল্যাটের দুই ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে এক, দুই, তিন – তিনজন বছর ৩-৮এর খুকী। ডানের ব্যলকনিতে দাঁড়ানো পিচ্চি সাথীদেরকে নিজের পূর্বোক্ত কোন কথার হাতেনাতে প্রমাণ দিতে পেরে মহা ভাব নিয়ে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে। আর বামের বারান্দায় দাঁড়ানো অপর দুই পিচ্চি চোখ গোল গোল করে আমাকে দেখছে।
১।
সন্ধ্যের দিকে প্রচণ্ড ক্লান্তি অনুভব করেন কামরুল হাসান। সকালে থেকে চলছে এই কবিতা পাঠের আসর। ফয়েজ আহমেদ তার দিকে তাকিয়ে একটু হাসেন। বুঝতে পারেন পটুয়া মহা ক্লান্ত। একটি কাজেই পটুয়ার কখনো ক্লান্তি আসে না, আঁকা আঁকি। আশেপাশে যা কাগজ পাচ্ছেন পটুয়া সকাল থেকে সেখানে নানা আঁকিবুঁকি করে যাচ্ছেন। এখন কবি রবীন্দ্র গোপের ডায়েরীতে চলছে পটুয়ার আঁকা আঁকি। কিছুক্ষণ আঁকিবুঁকি করে হঠাৎ মনে হল পটুয়া কিছু একটাতে মন বসিয়েছেন। পটুয়ার মাঝে কেমন যেন একটা ঘোর লাগা ভাব। সারাদিন ধরে এত কবিতা শুনলেন কিন্তু এখন আর মনে করতে পারছেন না কি কবিতা শুনলেন। মাথার মধ্যে শুধু মোহাম্মদ রফিকের চারটি লাইন ঘুরপাক খাচ্ছে -
সব শালাকবি হবে, পিপীলিকা গোঁ ধরেছে উড়বেই, বন থেকে দাঁতাল শুওর, রাজ আসনে বসবেই।