প্রথম বারের মত কোন একটি দেশে এলে দিন যাপনের সাথে সাথে নানান বিচিত্র অভিজ্ঞতা হয়। লম্বা সময় থাকলে সেই বিচিত্র ব্যাপার গুলো আর আলাদা করে তেমন বিশেষ কিছু মনে হয় না। দেশটির প্রতিটি ব্যাপার তখন উদয়স্তের সূর্যের মত স্বাভাবিক মনে হয়। বোস্টনে এসেছি প্রায় দু´মাস হয়ে গেল। ধীরে ধীরে এখানকার অনেক কিছুই চেনাজানা স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে; তবুও প্রতিনিয়ত নতুন কিছু আবিস্কারের নেশায় পর্যটকের মত ঘার বাঁকিয়ে এদিক সেদিক তাকাতে তাকাতে পথ চলি। শহরের বাইরের খোলসটা দেখা হয়ে গেলে, তারপর ঢুকবো এর রন্ধ্রে।
বরফ
----------------
এইযে টায়ারের ভীড় ঠেলে তোমার এগিয়ে যাওয়া
হোন্ডায় সদ্য ভরা অয়েলের ঘ্রানে পোড়ে পড়ন্ত দুপুর; হেলমেটের
কার্নিশ ঠেলে বের হয়ে থাকা অবাধ্য চুল
উড়ছিল বুঝি? চুল ? স্বপ্ন ? অথবা তোমার এই চলে যাওয়া
পথের বাঁকে কোন নার্সারীর ফুল?
অবশ্য ভাবনার এসব স্টপেজে তোমার বিরতি কই?
আমিতো কস্মিনকালে ভাবি নাই, আমাদের উল্টানো পথে
বিকেলের রঙ ভিন্ন হবে।
মিঃ গোয়েব্লারের বয়স চল্লিশের মত। জার্মান জাতীর মধ্যে যেহেতু গোসল করার স্বভাবজাত প্রবণতা কম তাই উনার চর্বি জমে যাওয়া বিশ্রী ঘাড়ের ভাঁজে জমে থাকা ময়লাকে আগ্রহে নিলাম না। চল্লিশ বছরের শরীরে ইতিমধ্যেই বিয়ার বাউ( বিয়ার পান করলে ভুড়ি হয়। এটার আঞ্চলিক নাম বিয়ার বাউ) হয়েছে। ভুড়ির ভারে উনি হাঁসফাঁস করছেন। আমুদে লোক মনে হলো। উনি এসে বিছানায় বসতেই ক্যাচ করে শব্দ হলো। সিঙ্গেল বিছানা আমার। অনেকটাই পুরাতন। বিয়া
ক্লাসের সবচেয়ে উচ্ছল, মেধা তালিকায় প্রথম সারির, নাচ-গান-বক্তৃতায় মঞ্চ কাঁপানো, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় দুই হাতে ট্রফি বয়ে নিয়ে যাওয়া সহপাঠিনীর বিয়েতে বেশ আনন্দ হয়েছিল। জামাই ভাল চাকুরে, আলিশান বাড়ী-গাড়ীর মালিক। অনেকেই অবশ্য হৃদয়ে আঘাত পেয়েছিল বেচারির এমন অসময়চিত পারিবারিক সিদ্ধান্তের বিয়েতে।
কাছের বন্ধু হওয়ায় বিয়ের ছয় মাসের মধ্যে জানতে পারলাম সে অন্তঃসত্ত্বা।