১.
সারাবছর যে বন্ধুর সাথে কাটাই তাকে বিশেষ কোন দিবসে আলাদা করে শুভেচ্ছা দিতে কেমন বিব্রত লাগে। সৌজন্য বস্তুটা বন্ধুতার সাথে সম্পূর্ণ বেমানান। বন্ধুর কোন কাজ করে দিলে যদি ধন্যবাদ পেতে হয়, সেই কাজটা ছোট হয়ে যায়। ঠাট্টা বাদে সিরিয়াস শুভেচ্ছা বা ধন্যবাদ কখনো দেইনি বন্ধুকে। যেমন দেইনি বিশেষ দিবসের কোন রঙিন কার্ড। তার চেয়ে ক্যামেরায় একটা ক্লিক করে ছবিটা বন্ধুর কাছে পাঠাই। নইলে সাদা খাতায় আঙুল বুলিয়ে কিছু আঁকিবুকি। আমার তেমনি ভালো লাগে। খুব সাদামাটা কিছু। অথবা ছোট্ট কোন রেস্তোঁরায় বসে ধোঁয়া ওঠা চায়ের সাথে মুচমুচে পিয়াজু সালাদ। সাথে খানিকটা বৃষ্টি হলেও হতে পারে, না হলে কিছু মেঘের দল ভাসতে ভাসতে দক্ষিণ সমুদ্র থেকে উত্তর হিমালয়ের পথে চলে যেতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে অনেক কথা বলা হয়ে গেছে, ইতোমধ্যেই। সচলে একটা লেখা এসেছে, তবুও বলি। কারণটা হলোঃ আমি দুটো প্রশ্ন সবখানে দেখেছি, শুনেছি।
(ক) কিছু তো একটা দিয়েছে, এতে ক্ষতি কি? লাভ না হোক, ক্ষতি কি?
(খ) তুমি কি করেছো সারাজীবনে? কি দিয়েছো? এখন কেউ কিছু করলেই জ্বলে?
আমি প্রথমটার উত্তর দেব। তবে সোজা বাংলায়, ক্ষতি নাই, কোন ক্ষতি নাই। তবে দুইখান কথা (আসলে দুখান না, লেজুড়-ওয়ালা একগাদা কথা) আছে, সেই কথাগুলোই বলবো আর কি। এই মতামত একান্ত ব্যক্তিগত, শিরোনামেই বলেছি, কেউ দাগা নিবেন না মনে।
আর দ্বিতীয়টা নিয়ে কিছু বলার নাই, মাফ করে দিয়েন। কিছু করি নাই, কিন্তু নীতিকথার ঝাণ্ডা উড়াই। কিন্তু ওইযে এক ব্যাটা ছিলো, সৈয়দ মুজতবা আলি, সেও অনেক ঘ্যানর-ঘ্যানর করতো, সেও জীবনে কিছু করে নাই, খালি নীতিকথার বুলি কপচাইসে। কিন্তু দেখেন এই যে ইউনুস সাহেব, খালি মুখে না, কাজেও দেখিয়েছেন। আমি পেরথম দলের লোক, কাজ-টাজ করি না, খালি বক বক এবং সেই জন্যেই ক্ষমাপ্রার্থী।
কোথায় যাব সেটা বড় কথা ছিল না।
বড় কথা ছিল যেতে হবে। বেরিয়ে পড়তে হবে। দূরে নয়, কাছে। দূরে ঘুরে আসার সময় নেই। সময় বড়ই জ্বালাতুনে। কিছুতেই তাকে বাগে পাওয়া যায় না। আবার সময় মধুরও বটে। কতকাল বাদে সময় পেয়েছে মেয়ে, মা-বাবার সাথে বেড়াতে যাওয়ার। হোক না দু-দিনের। দু দিন কি কম দিন! কিন্তু সেই পুরান প্রশ্ন ঘুরে ঘুরে আসে, যাই কোথায়?
ভালোবেসেছি তোমায় বহুবার, দেখার আগেই,
মনে পড়েনি তবু একবারও, চিনিনি তো চাহনি তোমার,
কে বা খোঁজে নীলকণ্ঠ ফুল ঝাঁ ঝাঁ দুপুরের রোদে?
গমের সুগন্ধের মত অধরা প্রেম ছিলে তাই।
অথবা আবছায়া ছিলে যেন জুনের ভরা জোছনায়
সুদূর আঙ্গলে, ধরে ছিলে পানপাত্র ঠোঁটের কোনায়,
[justify]ঝুমুর বয়েসে বড় ছিলো আমাদের, তাই নামের শেষে দাদা যোগ করে সে আমাদের বন্ধু হয়ে গেলো। ঝুমুরদা। মূলত এটা একটা নামই শেষ পর্যন্ত। ওসব দাদাগীরি কি আর চলতো! দীর্ঘ বছর আমরা আড্ডা দিয়েছি। উদ্দাম তারুণ্য বলতে যে সময়টা থাকে, ঠিক সেই সময়ের বন্ধুদের একজন ঝুমুর।
আমার এই অতিক্ষুদ্র জীবনের সবচেয়ে বড় ট্রাজেডির ঘটনাটা ঘটে উনিশশো সাতানব্বই সালে। আমরা তখন পাঁচ বছর বরিশাল থেকে ঢাকায় শিফট করছি, হাজার খানিক কার্টন ট্রাঙ্ক স্যুটকেস এর মধ্যে আমার বইভর্তি চারটা কার্টন ছিলো। সেইটার একটাতে আক্ষরিক অর্থেই টিফিন না খেয়ে জমানো টাকায় বরিশাল এর তরুণ লাইব্রেরি থেকে কেনা ততদিন পর্যন্ত বের হওয়া সব তিন গোয়েন্দা, পঞ্চাশটার মতন সেবা অনুবাদ, তখন পর্যন্ত বের হওয়া কিশোর পত্রিকা আ