নরম ফুরফুরে পালকের মতন উড়ে যায় না-পাঠানো চিঠিরা, অথবা টুকরো টুকরো হাল্কা মেঘের মতন। স্পর্শের মায়াটুকু শুধু রয়ে যায়, অকারণ বিষাদের মতন।
কত চিঠিই তো লেখা হয়েও পাঠানো হয় নি, কত চিঠি লেখাই হয় নি । শুধু স্বপ্নের ভিতরের শ্বেতপাথরের টেবিলের উপরে ভাঁজ ভাঁজ করে সাজিয়ে রাখা ওরা। সব না লেখা চিঠি, কবিতা, গল্প, না গাওয়া গানের কলি, না ফোটা ফুলেরা ---
তোকে ছেড়ে যাইনি কখনও
সবসময়েই কাছে কাছে থাকি,
আমাদের পাশের পাড়ার নাম সাগরপাড়া, সেই পাড়ার নামে রাজশাহীর মানুষ যত না চিনত, তার চেয়ে ঢের বেশি চিনত সাগরপাড়ার বটতলার কথা বললে। বিশাল ঝাঁকড়া এক বটগাছ ছিল রাস্তার মোড়ে, ছোট থেকেই দেখেছি তাঁর নিচে চায়ের স্টল, রিকশার স্ট্যান্ড, মানুষের ভিড়। সরু সরু রাস্তা তখন জালের মত বিছিয়ে ছিলে শহরময়, সাথে খোলা কুৎসিত ড্রেন। রিকশার টুংটাং-এ মুখরিত থাকত রাজশাহী, অটো রিকশার গো গো হর্ন তখনো আসে নি। একদিন সেইসব অলিগলির
উত্তরবঙ্গে ছিলাম মাত্র তিনটি বছর, প্রায় ছয় দশকের এই জীবনের তুলনায় কতটুকু আর তা! অথচ সেই দিনগুলির কত যে ছবি স্তরে স্তরে রাখা আছে স্মৃতির কোষে কোষে! কোষগুলি ধূসর নিশ্চয়ই, আমার সে স্মৃতিগুলি আজো ধূসর নয়, ক্যালিডোস্কোপের নড়াচড়ায় দিব্যি উজ্জ্বল হয়ে ফুটে উঠে।
মাঠে মাঠে ঘোরা আমার ছেলেবেলার অভ্যাস। আমাদের একটা বাগান ছিল। একপাশে বাঁশবন আরেক পাশে দেশি আমের সারি। ঠিক দুপুরের বাগানে বসে আপন মনে খেলতে ভালবাসি। ঠিক খেলা নয়, ছেলেমানুষী। বুনো লতা পাতার গায়ে হাত বোলানো, কোন গাছে কটা ফল ধরেছে তা গুণে দেখা, শুভ্রপালক শাহ বুলবুল পাখির পেছনে বাগানময় ঘোরা--ছেলে মানুষী ছাড়া কী! নিরিবিলি খেলতে ভালবাসতাম, তেমনি ভয়ও পেতাম খুব। বেঁশেভূতের ভয়। মধ্যদুপুরেই তাদের যত বাহাদুরি।
পেশাগত কারনে গত সপ্তাহে ময়মনসিংহে যাই। সেখানে এক পূর্ব পরিচিত এক অডিও ব্যবসায়ীর সাথে দেখা হলো। দেখি তাঁর দুই যুগেরও অধিক পুরাতন অডিও ক্যাসেট--সিডির দোকান ফ্যানের দোকানে পরিণত হয়েছে। বললাম, “ভাই একি অবস্থা”!
অম্বর নদীর তীরে সুলতান মহব্বত জং এর তাঁবু। মধ্য দুপুর।
তাঁবুর বাইরে দাঁড়িয়ে পত্রবাহক ফরহাদজান ফতেপুরী জামার খুঁটে কপালের ঘাম মুছে নিল একটু। খবর ভালো নয়। একেবারেই ভালো নয়। খবর শুনে সুলতান রেগেমেগে তার কল্লা নামিয়ে দেবার সমূহ সম্ভাবনা।
খুব সামান্য সংক্রমণ আর সাধারণ রোগেও এখন মানুষ মরে যাবে। যেমন হতো ৫০ বছর আগে। যেসব সাধারণ রোগকে আমরা পাত্তা দিতে শিখিনি, খুব অবাক হয়ে এখন আবিষ্কার করব সেইসব রোগেই আমাদের প্রিয়জনেরা মরে যাচ্ছে!
তোমার হাসির রুপালি বিদ্যুৎ,
যেন কোনো বৃক্ষকে তড়িৎ-স্পৃষ্ট করে আধাআধি ভাগ করে দেয়,
যেন এক রিনরিনে সূক্ষ্ম তরবারি, আকাশ থেকে নেমে
ভেদ করে বৃক্ষের আমূল হৃদয়।
এ হাসি শুধু জন্মাতে পারে বনভূমি,
আর তুষারঝরা পাহাড়ের দারুণ উচ্চতায়, বাতাসের
অনাবিল আনন্দ যেখানে পত্পৎ ওড়ে। এ হাসি
পর পর দুটো সপ্তাহ চলে গেলো অথচ তড়িৎ কাগজে আঙুল ছোঁয়ানো হয় নি। এক গেলাস সুরা আর আর ছোট পিঠা নিয়ে বসলাম, খেতে খেতে লিখবো কিন্তু কতটা আত্মনিয়ন্ত্রিত লেখা হবে তা বুঝতে পারছি না।
[justify]
আগের পর্বে আমরা লিন্ডসে সাহেবের গল্প শুনেছিলাম। এবারো লিন্ডসে সাহেব থাকবেন কিছুটা তবে শুরু হবে তারো আগে থেকে। এই অঞ্চলে সিমেন্টের অপর নাম বিলাতি মাটি। বিলাতি মাটি উৎপাদন শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত চুনাপাথর ছিলো গৃহ নির্মানের অত্যাবশ্যকীয় উপকরন এবং বৃটিশপূর্ব যুগে সমগ্র পূর্বভারতে এই অত্যাবশ্যকীয় উপকরনটি সরবরাহ হতো সিলেট থেকে- আরো সুনির্দিষ্টভাবে ছাতক থেকে। জৈন্তিয়ারাজ্য সীমানাবর্তী হলেও ছাতক সিলেটের অন্তর্ভুক্ত ছিলো। বর্তমান ছাতক উপজেলা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নিয়ে সেসময়ের ছাতক।
১৭৬০ খ্রীষ্টাব্দের ২৭ সেপ্টেম্বর নবাব মীর কাশেম ও ইস্ট ইন্ডীয়া কোম্পানীর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির একটা শর্ত ছিলো –
'কোম্পানীর গোমস্তাগনকে তিনবৎসরের জন্য সিলেটে প্রস্তুত চুণের অর্ধেক অংশ সরকার অথবা দেশীয় লোকদের নিকট হইতে এলাকার বাজার দর হিসাবে ক্রয় করতে হবে। জিলার প্রজা সাধারনকে কোন নির্যাতন করা যাবেনা’
।