মনে করেন মোগল আমল। ঝিরিঝিরি বাতাস। বড় চাচা দূর কাবুল থেকে সফর শেষ করে এসে মাথায় হাত বুলায় কইলেন এই নাও বাছা মিষ্টি খাও। আখরোট খাও। কতদিন পরে দেখা। পড়াশোনা কেমন চলছে? বড় হয়ে কি হবে ঠিক কি করেছ?
আপনি কি বলবেন... ডাক্তার হতে চাই? আশিব্বাদ করেন চাচাজান যেন সফটওয়্যার ডেভেলপার হতে পারি? ধুর না। আপনি কইবেন বড় মানুষ হইতে চাই। নামজাদা ব্যক্তি। চার মহলা দালান। শুক্রবারে খাসির বিরিয়ানি। পায়ের উপর পা তুলে সুখে বসবাস। অতএব আপনি বলবেন মনসবদার হতে চাই। জায়গিরদার হতে চাই চাচা দোয়া রাইখেন।
চলেন পাঠক আজ তাহলে মনসবদারি জায়গিরদারি ফানাফানা করে দেখি। তারা কি সত্যই চার মহলা দালানে থাকত এবং শুক্রবারে খাসির বিরিয়ানি খেত? তাদের জমা-হাসিল গরমিল কি কারণে? জাট এবং সওয়ার কি বস্তু? মাশরুত খায় না মাথায় দেয়? চৌধুরী আর কানুনগো কে?
মাথায় কত প্রশ্ন আসে দিচ্ছে না কেউ জবাব তার। বিষম চিন্তা।
দেশ ও বৈদেশের হালহকিকত দেখি আর মনে খালি ‘বুরিদানের গাধা’র ছবি ভাসে। রকমারি ঘটনায় ঠাসা ইতিহাসের পাতায় ফরাসি যুগচিন্তক বুরিদান সাহেবের গাধাটিও নিজের জায়গা করে নিয়েছে। সে যাকগে, গাধার সঙ্গে ফরাসি সাহেবের সংযুক্তি কেমন করে ঘটলো সে প্রসঙ্গে যাবার আগে ছোট করে মূল গল্পটি বলে ফেলা যাক। গাধা নিয়ে গল্পগাছার অভাব নেই মানবসংসারে। গাধা-কাহিনীর বড়ো অংশ হাস্যরসের যোগান দেয়। নিজের গাধাটিকে নিয়ে তুরস্ক দেশের মোল্লা নাসিরউদ্দিনের সরস গল্পগাছা এখনো লোকের চিত্তবিনোদন ঘটায়। তামাশাভরা মানবজীবন নিয়ে এই স্বভাব-দার্শনিকের রঙ্গ ও সেটি উদযাপনের ভঙ্গি সেকালের মতো একালেও সমানে প্রাসঙ্গিক। মহামতি শেকসপিয়ার বলে গেছেন জীবনের নাট্যমঞ্চে মানুষ হলো অভিনেতা। মোল্লা নাসিরউদ্দিনের বোকামিঠাসা বুদ্ধিরসের ছটা সেইসঙ্গে মনে করিয়ে দেয় দুঃখ-সুখে ভরা অভিনয়মঞ্চে মানুষ আসলে নিজেকে নিয়ে হাসে ও অন্যকে হাসিয়ে মারে। বুরিদান সাহেবের গাধার গল্পটি সেদিক থেকে গুরুতর হলেও কৌতুকরস সেখানেও ঠিকরে পড়ে, যদিও সাহেবকে সেটা কৌতুকরসে না ভাসিয়ে গুরুতর এক দার্শনিক কূটপ্রশ্নের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। দার্শনিকরা ভাবনা ও কথার কারবারি এবং লোকের তাতে থোড়াই কেয়ার। জগতের আমজনতার কাছে গাধা হচ্ছে চিরকালের কিংবদন্তি যার কাঁধে জীবনের কঠিন বোঝা অক্লেশে চাপানো যায় এবং গাধা সেই ভার বহনে দ্বিধা করে না।
১.
চিরুনি অর্থ কী, এ জিজ্ঞাসার মোকাবেলা বালক জগদীশচন্দ্র বসু করেছিলেন "ফাড়ুনি" দিয়ে। দেখা বা শোনা নয়, পড়া কথা। জগদীশচন্দ্রের এই বাল্যকালীন প্রত্যুৎপন্নমতিত্বে বাংলা শব্দের মহাদ্রুমের বীজ খুঁজে পাওয়া যাবে। কিন্তু তার আগে জিজ্ঞাস্য, চিরুনি কি আদপেই ফাড়ুনি? চিরুনিকে ফাড়ুনি বললে কি লোকে চিনবে? যদি শব্দের কাজ হয় ভাবসেতু নির্মাণ, তাহলে ফাড়ুনিতে গিয়ে কি ভাবজট তৈরি হবে না? কিন্তু ফাড়ুনিতে কী নেই, যা চিরুনিতে আছে?
শ্রোতার অভ্যস্ততা।
সমস্যা বুঝতে তো সমস্যা হইতেই পারে; আমার একটু বেশি হয়। আমি হা কইরা থাকি…
খাওয়ার টেবিলের একটা চেয়ার ঘুরাইয়া ঠ্যাং মেলাইয়া দোস্ত মুখ খোলে- আমি তোরে মাত্র দুইটা অপশন দিতে পারি। এক তুই এখনই যাবি আর দুই; কাইল সকালে যাবি তুই…
আগের পর্বের লিংক
চাকতি জগতঃ জাদুর রঙ
চক্রাধামঃ জাদুর রঙ -পর্ব২
চক্রধামঃ মায়ারাগ - পর্ব ৩
চক্রধামাঃ মায়ারাগ (চলছে...) পর্ব-৪
এই ঘটনার কিছুদিন আগে কোন এক ভোরে আখ নদী বেয়ে একটা জাহাজ এসে মরপর্ক বন্দরের ঘোরপ্যাচওয়ালা অসংখ্য ঘাটের কোন একটায় নোঙর ফেলে। জাহাজের খোলে করে এসেছিলো গোলাপী মুক্তো, দুধবাদাম, ঝামা, এর নগরপিতার জন্য কিছু দাপ্তরিক চিঠিপত্র আঁখ এবং একজন মানুষ। এই মানুষটিই কানা হারুন এর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল।
রাজিব মাহমুদ
সৌম্য ঘুম থেকে ওঠে অনেক বেলা করে। বাইরে একেবারে ডাঁ ডাঁ রোদ। রাতে ভাষাপোকার সাথে কথোপকথনের ব্যাপারটা মনে পড়ায় নিজে নিজে হেসে নেয় কিছুক্ষণ। নিজেই বলে যে এই ক্রমাগত রাত জাগা ওর মগজে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে; ওর ভালো ঘুম দরকার না হলে এরকম আরও কত অদ্ভুতুড়ে ব্যাপার মাথায় চেপে বসবে কে জানে! আজ শনিবার। অফিস ছুটি।
একজন বালক আর তার শিক্ষক বন্ধু হলে সেই বন্ধুত্বটা কেমন হবে?
প্রোলগ
শেষ বিকেলের সূর্য দিগন্তের দিকে ঝাঁপ দিচ্ছে মাত্র। ঝাঁকের সামনের পাখিটা বাতাসের ঝাপটায় কিছুটা কাবু হয়ে আসে, তাকে স্বস্তি দিতে পিছন থেকে এগিয়ে আসে অন্য একটা পাখি। জায়গাবদল সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই উত্তরের আকাশ থেকে ভেসে আসে এক পশলা আগুনের ঝড়। ভি-শেইপের ঝাঁকটা থেকে টুপটুপ করে ঝলসানো পাখি পড়তে থাকে নীচে। মাটি স্পর্শ করার আগেই তাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য এগিয়ে আসে একটা বিশাল জিভ।
ড্রগনের পায়ের দুইটা বিশাল আঁশের খাঁজে হাত রেখে কোনমতে ঝুলে আছে খালিসি, পাখি পুড়ানো আগুন পুরোটাই বয়ে যায় তার উপর দিয়ে। ড্রাগনব্লাড বলে তার শরীর অক্ষত থেকে গেলেও সোনালি চুল আর ভ্রু কিছুটা কালচে হয়ে আসে। ক্লান্ত, ক্ষুব্ধ খালেসি অনুনয়ের চোখে উপরের দিকে তাকান, তার দৃষ্টি মিলে ড্রগনের পিঠে বসা হাইস্প্যারোর চোখে। ড্রাগনের আগুনে পুড়ে খালেসির পোশাকের কিছুটা পুড়ে গেছে, আর তা দেখে চমকে উঠে "শেইম, শেইম" বিড়বিড় করতে করতে সুদূর দক্ষিণে চোখ সরিয়ে নেয় হাই স্প্যারো।
জীবনের কোনো এক পর্যায়ে আপনার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৪০%। তারমানে পরিসংখ্যানের হিসেবে, কোনো পরিবারে ৫ জন মানুষ থাকলে তাদের মধ্যে ২ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত হবেন। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রতিবছর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যায় যে প্রকারের ক্যান্সারে মেয়েরা আক্রান্ত হয়, সেটি হচ্ছে জরায়ু মুখের ক্যান্সার। প্রায় সকল (৯৯ ভাগ) জরায়ু মুখের ক্যান্সারের সঙ্গে একটি ভাইরাসের সংক্রমণ জড়িত। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV)।