আগের কথা
(.........................আমাদের শেখানো হচ্ছে কী করে বেঁচে থাকতে হয়। আপাতত শিখছি সংগ্রহ এবং বিনিময়, তারপর শিখবো উৎপাদন।
দু ধরনের নারকেল গাছ রয়েছে সমুদ্র তীরে, সবুজ আর লাল। যেকোনো নারকেল গাছে চড়তে পারি আমি, কেবল একটাই শর্ত। নিজে যে রঙেরটা সংগ্রহ করবো সে রঙেরটা রাখতে পারবো না। অন্য কারও নারকেলের সাথে বদলে নিতে হবে। নারকেল বিনিময়ের জন্য আলটপকায় একটা নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে, পূবের পাহাড় থেকে অনেকটা পথ দৌড়ে যেতে হয় সেখানে। আমরা সারাদিন দৌড়াই। ঘুম থেকে উঠে দৌড়ে যাই নারকেল বনে, নারকেল হাতে দৌড়ে যাই বিনিময়ের জায়গায়, সেই নারকেল কুঁড়েতে রেখে আবার নারকেল বনে, আবার বিনিময়, আবার কুঁড়ে……এই চলে দুপুর অবধি। ব্যাপারটা সহজ নয় মোটেই। হয়তো আমি পেড়েছি সবুজ নারকেল, আমার তাই প্রয়োজন লাল। কিন্তু বিনিময় কেন্দ্রে পৌছুতে পৌছুতে সব লাল শেষ। হাতের সবুজ নারকেল তখন জমা হয়ে যায় আলটপকায়। আমার মাথায় একদিন একটা বুদ্ধি এলো।)
নারকেল হাতে এতোটা পথ দৌড়ে যাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়, বিশেষ করে বেলা যখন বাড়তে থাকে। পূবের পাহাড় থেকে আরও খানিকটা পূবে একটা ছোট্ট ঝর্ণামতো রয়েছে, তারই ধারে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নেই আমরা। সেদিন দুহাতে দুটি দুটি চারটি লাল নারকেল নিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে ঝর্ণার ধারে পৌঁছুতেই দেখি ভীষণ শোরগোল। একজনকে জিগ্যেস করে জানতে পারলাম নারকেল নামিয়ে রেখে ঝর্ণায় নেমেছিলো শান্তনু। ফিরে এসে দেখে সব উধাও। বেশিক্ষণ খুঁজতে হয়নি, মাথার উপরে কিচকিচ শব্দ শুনে তাকাতেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে গেলো। কোত্থেকে একদল বানর এসে জুটেছে এখানে, নারকেলগুলো ওদেরই কব্জায়।
মনে করেন বিকালবেলা চা আর মুড়ি নিয়া বসে আছেন। আরামে পড়ছেন সচলায়তন। এমন সময় কুথা থেকে এক জ্বীনের বাদশা এসে কইল ওরে সুনা। আছিস কেমন? কী কচ্ছিস? আপনি কইবেন এই তো বাদশা সায়েব। পপি গাইড পড়ছি। মোগল হওয়ার বাসনা। আপনি কেমন?
জ্বীনের বাদশা তখন খলখল করে হেসে ধরেন কইবে, দুত্তোর পপি গাইড। এই সব বাদ দে। মোগল হতে চাস? আকবর করে দিতে পারি, হতে চাস আকবর?
আপনি তো খুশিতে উত্তেজনায় লুঙ্গিতে পিশাব করে দিয়ে বলবেন, আকবর? ও আল্লা আকবর? অবশ্যই হতে চাই।
আবার খলখল করে বিশ্রী হেসে জ্বীনের বাদশা তখন কইবে, যা তবে হয়ে যা - মুহম্মদ আকবর। ফুঃ!!
মুহম্মদ আকবর?