ছেলের বয়স আসছে জুনে ১২ হবে। গিয়েছিলো একঝাঁক উচ্ছল সমবয়সীদের সাথে স্কুল ক্যাম্পিং-এ। তিনদিনে ওরা শিখেছে কিভাবে চেনা গণ্ডীর আরাম-আয়েশ ছেড়ে জীবনেকে জানতে হয়। যে বাসে করে ওদের ক্যাম্পিং-এ নিয়ে যাওয়া হয় সে পর্যন্ত গিয়েছিলাম ওকে এগিয়ে দিতে, ছেলেমেয়েরা লাইন ধরে যারযার বাক্স-পেট্রা, বিছানা-বালিশ লাগেজ স্টোরেজে দিয়ে মা-বাবাকে জড়িয়ে ধরে আদর করে বাসে নিজের সিটে গিয়ে বসল, ব্যস!
এক।
যদি ব্যাংকারই বোঝে ডাক্তারি, আর
ডাক্তার সব খেলা।
যদি হো মো এরশাদ নিজেকেই ভাবে
নেলসন ম্যান্ডেলা।
যদি মনোবিদ বোঝে অর্থের নীতি
ইন্টারনেট ঘেঁটে।
কাল যতিহীন, তবুও।
নিজের একটা কুকুর থাকবে
কোলে বসে চাটবে টাটবে
লেজ নাড়বে-
লাথি দিলেও ছুটে আসবে
হাসবে টাসবে, কৃতজ্ঞতায় সারাটাদিন
চোখে রাখবে-
যা বলবো তাই শুনবে
সহস্রবার বল ছুড়লে লুফে আনবে
মাংস ছাড়া হাড্ডি দিলেও
প্রভূ মানবে-
গন্ধ চিনবে, অনেক দূরে গেলেও
কাছে খুঁজে আনবে, মান ভাঙবে;
মোদ্দা কথা আমি ছাড়া আর সব সে
বৃথা জানবে-
মিনু, টিনু কিংবা তুমি
একটা নামে আয় বললেই ঝাঁপিয়ে ডাকবে,
১৭
কুলাউড়া-সিলেট রেলযাত্রায় অলৌকিক এক ঘটনার মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা পাই সাগোতোর ডায়েরিতে। ১৯২০ সালের জানুয়ারির এক শীতের রাত্রে সিলেট থেকে কুলাউড়া ফেরার পথে কোন এক স্টেশনে রেল থামে যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে। ব্যাখ্যাতীত কোন কারণে তিনি নেমে আসেন নির্জন স্টেশনে।
[আইজাক আসিমভের "সিলি অ্যাসেস" গল্পের অনুবাদ]
অনুবাদ: সামিনা কায়সার
দীর্ঘ আয়ুর রিগেলিয়ান জাতির নারন তার বংশের চতুর্থ লোক, যার কাঁধে ছায়াপথীয় ইতিহাস টোকার দায়িত্ব এসে পড়েছে।
বিউটি তুমি ধানক্ষেতে শুয়ে থাকা লাশ থেকে ধোঁয়া হয়ে বেড়ে ওঠো
নতুন পিশাচী হয়ে।
পদ্মা সেতুর এক একটি স্প্যানে তুমি পা দুলিয়ে বসে থেকো দিনমান,
ঢাকা থেকে কালকিনি রাজৈর বা আলফাডাঙার
বাসে যারা ঘুমঘুম বসে থাকে, তাদের বুকপকেটে
তোমার মেছো গা থেকে এক একটি শল্ক খুলে দিও স্মরণিকা
উন্নয়নের এই সৌধে সারাটি দিন কোরো পায়চারি।
যে যুবক মোটর সাইকেলে এই স্বপ্নের সেতু দেবে পাড়ি,
ঠিক কোন ক্লাসে মনে নেই, কিন্তু স্কুলে থাকতে বাংলা বইয়ে পড়েছিলাম -" আমারই চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ, চুনি উঠল রাঙা হয়ে"। রবীন্দ্রনাথের লেখা, সে বয়সে এসব মারফতি কথা বার্তা তেমন বুঝতাম না। এখনো যে খুব বুঝি,তা নয় কিন্তু হালকা পাতলা বুঝতে শিখেছি। বয়স পঁয়ত্রিশ পেরিয়ে গেছে, জুলফিতে পাকা চুল উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে (কবির ভাষায় জুলফি উঠল সাদা হয়ে)- কিছুটা মারফতি এখন ধাতে সয়, মাঝেসাঝে করতেও ইচ্ছে করে।
কি অসাধারণ নীল আকাশ! এর মধ্যেই একগুচ্ছ শুভ্র মেঘ ভেসে আছে। দেখতে অবিকল তিন্নির মতন। মুখের কোণে হাসি ফুটে উঠল সাজ্জাদের। মেঘতো আসলে বহুরুপী। যে যা ভেবে নেবে ঠিক তাই দেখতে হবে মেঘ। তিন্নি যেমন।
আকাশটা আরো এগিয়ে এল। তার ভেতর দিয়ে এক ঝাঁক পাখি উড়ে গেল। একটানা বর্ষায় নতুন পানি এসেছে। স্বচ্ছ। টলটলে। সবকিছু পরিষ্কার দেখা যায়। আয়নার মতো।
তিন্নি বলেছিল সে নাকি সাজ্জাদকে আয়নার মতো পড়তে পারে। আসলেই পারে। সাজ্জাদকে মুখ ফুটে কিছু বলতে হত না। তিন্নি বুঝে নিত।
আকাশটা আরেকটু এগিয়ে এল। এত পরিষ্কার ঝকঝকে আকাশ কি কোন কালে দেখেছে সে? সাজ্জাদ মনে করতে পারে না। তিন্নিকে ভালবেসে ফেলার পর আর আকাশ দেখার সুযোগ হয়নি তার। দিনরাত সর্বক্ষণ শুধু একজনকে নিয়ে ভেবে কাটিয়ে দিলে আকাশ দেখার ফুরসত থাকে না।
ভূমিকাতেই লেখক জানিয়ে দিয়েছেন, এই বইটি মুখ নয়, মুখোশও নয়, বরং একটা ‘কথামুখ’ এর আদল তৈরি করা হয়েছে কেবল।
শেষ পৃষ্ঠার নম্বর ৪৫ হলেও, সব মিলিয়ে আট ন’হাজারের বেশি হবে না শব্দ সংখ্যা। না গল্প, না উপন্যাস, একটা বড় গল্প বরং বলা যেতে পারে এটিকে। তাই বইটির এই ক্ষীণ আকৃতির কারণেই যে লেখকের এই ভূমিকা, তা বলাই বাহুল্য।
তবু এর মাঝেই একাধারে সব করকম মুনশিয়ানা দেখালেন হাসান আজিজুল হক। কী দুর্দান্ত সূচনা। আবারও মনে হলো, গল্পের শুরুটা যদি পাঠককে অপেক্ষায় রাখতে পারে শেষটুকুর জন্যে, তাহলেই কেবল সেটা সার্থক গল্প হয়ে উঠতে পারে।