কারণে-অকারণে কতো যে ক্লাস ছুটি পেয়েছি, তা' ঠাওর করে বলা অসম্ভব। আন্তঃস্কুল প্রতিযোগীতায় ফুটবল টিম পাশের নাম-সর্বস্ব স্কুলকে হারানোর ফলে যে আনন্দ পেয়েছি, ইহা উদযাপন করতে স্কুলের প্রধান ছুটি দিয়েছিলেন। ভারী বৃষ্টি বা নদীতে জোয়ারের ফলে রাস্তাঘট ডুবে যাওয়াতে আমাদের স্কুলে যেতে বিড়ম্বনা পোহাতে হবে ভেবে, প্রধান শিক্ষক স্কুল ছুটি দিয়েছেন। আমরাও যাতায়াতের বিড়ম্বনার কথা ভেবে পানিতে থৈ থৈ করা মাঠের মধ
মনে করেন পরকালের বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। স্নিগ্ধ সালসাবিল ঝর্ণার তীরে গাছের ছায়ায় মাদুর পেতে দাদু-নাতি বাবুর আকবর বসে। কাছেই শুয়ে টাল বাদশা হুমায়ুন। পোড়া ভুট্টা খেতে খেতে ধীরকণ্ঠে পিতামহ বাবুর বলছেন, নাতিরে, বহোৎখুব। তিমুরিদ বংশের নাম উজ্জ্বল করেছিস রে বেটা। এমনকি ঘাড়ত্যাড়া রাজপুতগুলোকেও বশ করতে পেরেছিলি শুনলাম। উত্তম, অতি উত্তম। আকবর তখন বলবেন, হাঁ দাদুভাই। গুজরাতের বন্দর দরকারি জিনিস তাই রাজপুতানা কব্জা করে নিলাম। কেবল সিসোদিয়ার বাচ্চা প্রতাপ বড় যন্ত্রণা দিয়েছে।
খবরের কাগজের আড়ালে গোয়েন্দা বিভাগের দারোগা কিংকর্তব্যবিমূঢ় চৌধারি ফিসফিস করে বললেন, "স্যার, এটা কোন দেশের খবরের কাগজ?"
কিছুদিন আগে হাতে পেলাম বইটা। বিজয়গুপ্ত রচিত পদ্মপুরাণ বা মনসামঙ্গল। এতদিন নাম শুনেছি শুধু। আর স্কুলে একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা পাঠক্রমে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস পড়ার সময় এই কবির বিষয়ে বিস্তারিত পড়তে হয়েছিল।
এক মরুর দেশে পঞ্চাশ বছর পর বৃষ্টি হবে।
বুড়োদের কাছে , ছেলেরা জিজ্ঞেস করে, দাদু, বৃষ্টি জিনিসটা কি? খাওয়ার না পান করার?
খবরের কাগজে, ডাকসু নির্বাচনের খবর দেখে, ঢাবি থেকে পাশ করা, প্রৌঢ়দের কাছে আমার জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছে হয়, ডাকসুটা কি জিনিস, খায় না পান করে?
(বছর তিনেক আগে লিখেছিলাম ক্ষুদ্র এই নাটিকাটি। একটি অনুষ্ঠানে মৌটুসীর সাথে কথোপকথন বা শ্রুতি নাটক হিসেবের পাঠের জন্য প্রস্তুত করা। এর আগে প্রকাশ করা হয়নি অন্য কোথাও। আজ সচলায়তনে দিলাম। দুষ্ট লোকেরা বলে এটা নাকি আমাদের প্রেম কাহিনী। তাদের কথায় একদম কান দেবেন না।)
১
মদ্র দেশের নিঃসন্তান রাজা-রানী, অশ্বপতি এবং মালবী সন্তানের আশায় সূর্যের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সাবিত্রীর নামে পুজো দিয়ে এক কন্যা সন্তান লাভ করেন। দেবীর প্রতি সম্মান জানিয়ে মেয়ের নামকরণ হয় 'সাবিত্রী'। কালক্রমে সেই মেয়ে নিজের সতীত্বের বিশাল ব্যাপক নজির রাখেন। যেকারণে হিন্দু পুরাণে তিনি 'সতী সাবিত্রী' হিসেবে খ্যাত। হাসান আজিজুল হকের দ্বিতীয় উপন্যাস "সাবিত্রী উপাখ্যান" এর কেন্দ্রিয় চরিত্র সাবিত্রী'র নামকরণ সেই দেবী কিংবা রাজকন্যার নামানুসারে হয়েছিল কিনা জানা নেই। তবে সূর্যের আলো কিংবা তথাকথিত সতীত্বের অহংকারের ঠিক বিপরীতে চরিত্রটির নির্জীব অবস্হান। এই অবস্হান নিয়তি নির্ধারিত ছিল না। কিছু পশুর অধম মানুষ আর বিকলাঙ্গ সমাজ সাবিত্রীর পরিণতির জন্য দায়ী। যে কারণে, পরবর্তীতে আলোহীনতার মাঝে সাবিত্রীর স্বস্তি খুঁজে ফেরা। বিকারগ্রস্হ হয়ে মৃতপ্রায় একটা কিশোরী জীবন টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া মর্মান্তিক বার্ধ্যকের দিকে(পঁচাশি বছর বেঁচে ছিলেন সাবিত্রী)।
(লিখতে লিখতে টের পাচ্ছি অনেক সম্পাদনার প্রয়োজন রয়েছে। আগে শেষ করি)