[ সুকুমার সমগ্রতে লিখেছে - 'সন্দেশ' পত্রিকার অন্যতম মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল সমসাময়িক ঘটনাবলী এবং যাবতীয় সাংস্কৃতিক বৈজ্ঞানিক সংবাদকে সহজবোধ্য ভাষায় উপস্থিত করা। প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক উপেন্দ্রকিশোর এ ধরনের রচনা লিখেছেন, পরবর্তীতে সম্পাদক সুকুমার রায় তৎকালে এবং তার আগে যে-সমস্ত বৈজ্ঞানিক ও ঐতিহাসিক আবিস্কার হয়েছে, আধুনিক সংস্কৃতির ক্ষেত্রে যেসব উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে - সেসব তথ্যবহুল সংবাদ 'সন্দেশ' পত্রিকায় নিয়মিতরূপে, অত্যন্ত সরসভাবে পরিবেষণ করতেন। বিজ্ঞানের তথ্য নিয়ে লেখার মুশকিল এই যে, এককালের প্রতিপাদ্য পরবর্তী কালে বদলে যায়; বিভিন্ন ইওরোপিয় গ্রন্থ বা পত্রপত্রিকা থেকেও এসব তথ্য আহুত হয়েছে। কিন্তু এই রচনার মূল্য অন্যত্রঃ সেটি হচ্ছে লেখকের বলবার ভঙ্গী এবং এই ভঙ্গী সুকুমারের সম্পূর্ন নিজস্ব। তাছাড়া, উনিশ শতাব্দের মধ্যভাগে আর বিশ শতাব্দের প্রথমাংশে পাশ্চাত্ত্য জগতে বিজ্ঞান ও সভ্যতার অগ্রগতি নিয়ে যে বিস্ময় ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল - এ দেশে শিক্ষিতজনের মধ্যেও তার আলোড়ন লেগেছিল। এই লেখাগুলিতে অন্তর্নিহিত রয়েছে সেই একই আগ্রহ ও উদ্দেপনাঃ সুকুমার কিশোর মনে তাকে সঞ্চারিত করতে চেয়েছিলেন। এই সমস্ত গদ্যরচনা কবি এবং কথাকোবিদ্ সুকুমার রায়ের অন্য পরিচয় উদঘাটন করবে।
এর মধ্যে থেকে একটি প্রিয় প্রবন্ধ বেছে নিয়ে সচল পাঠকের সামনে পরিবেশন করা হলো। ]
বাংলায় লেখা সর্বশ্রেষ্ঠ বইগুলোর একটি ‘ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না।‘ লেখক ১৯৮৫ সালে তাঁর বড় মেয়ে মৌলির উদ্দেশ্যে অপূর্ব মূর্ছনায় বাঙময় সুরে লিখেছিলেন নিজের শিশুকাল ও গ্রামের কাব্যগাথা, ৫৬ পাতার সেই কাব্যিক স্মৃতিকথা যেন এক পাহাড়ি ঝিরির মতো বয়ে চলা কবিতা, যার শুরুর দিকে তিনি বলেছেন,