উত্তর সাগর থেকে ভেসে আসা নোনা বাতাস শ্যাওলা ধরা জাহাজের কাঠের পাটাতনে মিশে এক ধরনের স্যাতসেতে ঘ্রান তৈরী করে। কাঠের জাহাজ কালের কাছে বিলীন হয়েছে। কিন্তু সমুদ্রচারী নীর্ভিক এক নাবিক জাতির জীবনসংগ্রামের এই ঘ্রান এখনও পাওয়া যায় সেই অঞ্চলে। এই ঘ্রান তারা জাহাজে করে বয়ে নিয়ে গিয়েছে আটলান্টিকের পশ্চিম প্রান্ত ধরে সোজা দক্ষিন দিকে। কাঠের জাহাজে ভেসে আরো পূব দিকের ভারত মহাসাগর ও এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয়
মাস ছয়েক হয় সিডনী এসেছি, মোটামুটি খুঁটি গেড়ে বসার পরিকল্পনা নিয়ে। একটা স্থায়ী ঠিকানা দরকার, ভাসমান জীবন আর কতদিন? নিজের দেশে স্থায়ী ঠিকানা বানানোর চেয়ে চাঁদে যাওয়া আমার কাছে সোজা, কাজেই সে চেষ্টা থেকে অব্যাহতি নিয়েছি বহু আগেই। ছাপোষা মানুষের বিদেশ বিভুঁইয়েই ভরসা, যদি দু’দণ্ড সুখ মেলে!
শুরু-
-----------------
গত বছর ডিসেম্বরে দেশে যাবার পরে একটা অচিন্ত্যনীয় ব্যাপার হলো।
সারা দেশে তখন নির্বাচন পূর্ববর্তী আন্দোলন আর অবরোধ, সেই সাথে লেগে আছে হরতাল, জ্বালাও-পোড়াও...। দেশে যাবার আগে আগে শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনেকেই বললেন এরকম পরিস্থিতিতে না যেতে, নির্বাচন শেষ হোক, পরিস্থিতি শান্ত হোক, তারপর যাওয়া যাবে।
আমি তেমন একটা গা করলাম না। নিজের দেশে যাচ্ছি, সেটার জন্যে আবার পরিস্থিতি বিবেচনা কী? অনেককেই দেখেছি দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে দেশে যাবার আগে ‘ওয়েদার’এর খোঁজ নেন, তা না হলে দেশে গিয়ে অসুখে পড়েন, আমার এখনও এরকম হয়নি। একবার শুধু অতিরিক্ত নিমন্ত্রণের চাপে পেটের বারোটা বেজে একেবারে শয্যাশায়ী হয়ে ছিলাম কদিন, এ ছাড়া আমার এতদিনকার চিরচেনা ‘ওয়েদার’ কখনোই আমাকে বিপদে ফেলেনি। আর এইসব হরতাল, অবরোধ এসব তো আমাদের নির্বাচনী কালচার, ডরাইলেই ডর, নইলে তেমন কিছু না।
১)
৭ মার্চের ভাষণের শেষে বঙ্গবন্ধু কী বলেছিলেন তা অডিও, ভিডিও, টেক্সট তিন ভার্সনেই সর্বত্র পাওয়া যায়। ইন্টারনেটে সহজলভ্য। সবখানেই ভাষণ শেষ হয়েছে 'জয় বাংলা' দিয়ে। কিন্তু তবু বছরের পর বছর ধরে একটা বিতর্ক চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। কেউ কেউ দাবী করছেন বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণের শেষে 'জয় বাংলা, জয় পাকিস্তান' বলেছিলেন আবার কেউ নাকি শুনেছেন ‘জয় বাংলা, জিয়ে পাকিস্তান’। কিন্তু আজ পর্যন্ত এর সপক্ষে কোনো প্রমাণ কেউ দেখাতে পারেননি। রূপকথার গল্পের চরিত্রের মতো যা কিছু মানুষের কল্পনায় ঘুরপাক খায় শুধু।
১
রফিক হা করে সাবেরের দিকে তাকিয়ে থাকল। লোকটা নিজেকে সাবের হাসান নামে পরিচয় দিয়েছে। পদবী নিউ এরাইভ্যাল এডমিনসট্রেটর। সাবের মৃদু হেসে বলল,
আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে না, না?
রফিক কি বলবে ভেবে পেল না। তার একবার মনে হয়েছিল এসব ভাওতাবাজি। কোথায় না কোথায় এসে পড়েছে। এরা তাকে ভোদাই বানিয়ে মজা নিচ্ছে। রফিক আমতা আমতা করে বলল,
না মানে...এ কি করে হয়? আমার বয়স কত বল্লেন?
সাবের বলল, পয়ত্রিশ বছর তিন মাস।
রফিক বলল, আমার জন্ম তারিখ ১৮-১০-১৯৭৭। ভাই, সে হিসাবে আমার বয়স চৌত্রিশ।
সাবের দৃঢ় গলায় বলল, আপনার বয়স পয়ত্রিশ বছর তিন মাস। আমাদের মেশিন যেভাবে ক্যালিব্রেট করা আছে তাতে ২/১ মাসের হেরফের হতে পারে, কিন্তু এক বছর অনেক বড় ব্যাবধান। এত বড় ভুল হবার কথা নয়।
রফিকের ধাই করে তখন একটা জিনিস মনে পড়ে গেল। তার সার্টিফিকেটের বয়স আর সত্যিকারের বয়স এক নয়। সরকারি চাকুরির বয়সসীমা থাকার কারণে অনেকেই এস এস সি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনের সময় বয়স কমিয়ে দেয়। তার বাবাও দিয়েছিল। সত্যিকারের বয়স হিসেব করলে তার বয়স দাঁড়ায় পয়ত্রিশ বছর তিন মাস। ব্যাপারটা বুঝতে পেরে তার হাত ঘেমে গেল।
খামারবাড়ির দেয়ালের উপর শরৎকালে সার বেঁধে কিছু পরিযায়ী পাখি বসে থাকত। যদিও তারা নিজেদের মধ্যে কিচিরমিচির করে নানারকম গল্পগুজব করত, কিন্তু সবসময় গ্রীষ্ম, দক্ষিণের দেশ, চলমান শরৎকাল আর উত্তুরে হাওয়া কবে শুরু হবে সেটাই ছিল তাদের মূল ভাবনার বিষয়। একদিন ঠিক ঠিক তারা উধাও হয়ে গেল এবং খামারের সব হাঁস-মুরগীরা এই সব পরিযায়ী পাখিদের নিয়ে আলোচনায় মেতে উঠল।
এসব দেখে একদিন খামারের একটি মুরগী ঘোষণা করল -“আগামী শীতে আমিও দক্ষিণের দেশে যাব।”
শীতের শুরু হয়েছে শরতের আগুন রূপকে হিমে মুড়ে। পাইন আর স্প্রুস বাদে বাকী সব গাছ ন্যাড়া হয়ে গেছে বেশ কসপ্তাহ আগে, তাদের পাতাহীন ডালে আলতো তুষার জমছে রাতের গভীরতা বাড়ার সাথে সাথে, কিন্তু মণ মণ বরফ এসে তখনও চাপেনি গাছের কাঁধে আর মাটির বুকে। গাড়ী নিয়ে চলেছি শীতের হেলসিংকিতে কাজের ফাঁকে। তখন আঁধারের রাজ্য, বরফশুভ্রতা এসে আলোকিত করার অনেক আগেই পাতালের আঁধার এসে কালিমালিপ্ত করে উত্তরের বিকাল, সন্ধ্যে, রাত,
এবারের গন্তব্য জ্যাকসনভিল। এটা ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের একটা শহর। মজার ব্যাপার হল জ্যাকসনভিল শহরটা ভূমির আকারের দিক থেকে ইউএসএর ৫ম বৃহত্তম শহর।
এয়ার ভাইস মার্শাল আব্দুল করিম খন্দকারের মিথ্যা কথা বলার পর সবাই কিছুটা বিরক্ত। কিন্তু এ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। এটা তো আর ১৯৭৫ না, এটা ২০১৪। দুনিয়া চাপাবাজদের জন্য এখন আরো কঠিন। ভাবলাম সে সময়ের কিছু নিউজ কাটিং দিয়ে এনাদের জীবন আরেকটু কঠিন করে দেই।
৭ই মার্চ, ১৯৭২
দৈনিক বাংলার শেষের পাতা
৭ই মার্চ, ১৯৭৩
গেলো শতাব্দীর আশির শতকের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে বাংলাদেশে পাকিস্তানী ক্রিকেটার ইমরান খান বড় ধরনের ক্রেজ ছিল। চৌকস খেলোয়াড়, সাথে আবার লম্বাচৌরা গড়ন, সুদর্শন, ভরাট ম্যানলি গলা। মেয়েরা তাকে চায়, ছেলেরা তার মত হতে চায়, আর আমার মত ছয়/সাত বছরের শিশুরা তাকে আইডল মানে। আমিও তার ব্যতিক্রম ছিলাম না।