চলতি পথে পাওয়া - ৪,৫,৬,৭ এর ভূমিকা তে লিখেছিলাম “ ‘চলতি পথে পাওয়া’ সিরিজ টা নিয়ে একটু বলি আগে। নাম শুনে মনে হতেই পারে যে এটা হয়ত পথ চলতে গিয়ে দেখা বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা। হুম, হতে পারে। তবে তার চেয়েও বেশি হচ্ছে চলার পথে বসে থাকার সময় কতক বিচ্ছিন্ন ঘটনা দেখে বা এমনিতেই মনের ভেতর বিভিন্ন এলোমেলো চিন্তা ঘুরপাক খায়, তাদের বর্ণনা। লেখার ধরণ সাইকোডেলিক, অ্যাবস্ট্রাকটিভ, ম্যাজিক রিয়ালিস্টিক, স্যুরিয়ালিস্টিক আবার খুব সাধারণ বর্ণনাও হতে পারে।”
আজকের এই পর্বগুলোতে থাকবে ঘটনার বর্ণনা এবং অবশ্যই ঘটনাগুলো চলতি পথেই পাওয়া। দুটি ঘটনাই দুঃখজনক হলেও বেশ চমকপ্রদ! বিশেষ করে যারা ঢাকা শহরে নিয়মিত বাসে বা লোকাল বাসে যাতায়াত করেন তাদের সচেতনতার জন্য জানা প্রয়োজন মনে হয়েছে আমার কাছে। তবে চলুন, এখন পথে নামি...
[আইজ্যাক আসিমভ আমার অন্যতম প্রিয় লেখক। তার 'হাঊ ডিড উই নো' সিরিজের 'যেভাবে আমরা জানলাম পৃথিবী গোলাকার' বইটি অনুবাদের একটি প্রচেষ্টা নিলাম। তিন পর্বে সমাপ্ত করার আশা রাখি]
পৃথিবী কি সমতল?
বহুকাল আগে, মানুষ ভাবত পৃথিবী বুঝি সমতল। কেননা তা দেখতে সমতল সমতলই লাগে।
মিসেস ডেকার আজকেই ফিরলেন হাইতি থেকে।
একাই গিয়েছিলেন মিসেস ডেকার। না গিয়ে উপায় কি! মি. এবং মিসেস ডেকারের বনিবনা হচ্ছে না দীর্ঘদিন ধরে। আর ইদানীং অশান্তি তো চরমে উঠেছে। তাদের পক্ষে আর একসাথে থাকা সম্ভব হচ্ছেনা। দুজন একে অপরকে রীতিমত ঘৃণা করতে শুরু করেছেন এখন!
" জাস্টিস ডিলেইড ইজ জাস্টিস ডিনাইড" বহু ব্যবহারে এত ক্লিশে করে ফেলেছি এই বাক্যটাকে!
[উগ্রভুদাই = যুক্তি ছাড়াই জায়গা-বেজায়গায় "উগ্র" শব্দ জুড়ে দিয়ে নিজেকে ভুদাই (বলদ) হিসেবে প্রমান করে যে ব্যক্তি।]
তারা বলতেন, প্রতিযোগিতাই হচ্ছে ব্যবসার প্রাণ।
খুব অল্প বয়সে আমি বিষয়টি বুঝে গিয়েছিলাম আমার দাদাকে দেখে। আমার গরীব দাদা এ প্রতিযোগিতার কারণেই ব্যবসা করতে গিয়ে উপূর্যপরি দু’বার ব্যর্থ হয়েছিলেন।
আজ হঠাৎ মতির কথা মনে পড়ল। ক্যাডেট কলেজে মতি আমাদের স্কুল জীবনের সহপাঠী ছিল। আমাদের সাথে মতির সহপাঠ কলেজের শেষ দিনটি পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হয় নি। গ্রাম্য প্রকৃতির মতির নিতান্ত গোবেচারা চেহারায় রূপোর টাকার মতো তেমন উজ্জ্বল কোন বৈশিষ্ট্য আমার চোখে পড়ে নি। আমরা ছিলাম ভিন্ন ভিন্ন হাউসের বাসিন্দা। আমার তিনতলার খোলা তলোয়ার হাউস, মতির নিচতলার বীরশ্রেষ্ট হাউস। মাঝখানে বাঁশের কেল্লা হাউসের গা বেয়ে নামা প্রশস্ত সিঁড়ির দু-দু'টি স্তর। সে বয়সে স্তর পেরুবোর ক্ষেত্রে ঘাম ঝরাবার কায়ক্লেশ হয়ত একেবারেই গা করতাম না, তবে খুব সূক্ষ্ম হলেও ভিন্ন হাউসে অবস্থানের একটা মানসিক বাধা ছিল। সেই বাধা পেরিয়ে জ্যোতিষ্কের সাহচর্য হয়ত কামনীয় হতে পারে, কিন্তু নিতান্তই সাধারণ একটি ছেলের সাথে বন্ধুতা ঘটবার তেমন আগ্রহ মনে জাগে না।
রানা প্লাজা দুর্ঘটনার অল্প ক'দিন পরের কথা, তখন আমি উত্তরা ক্রাইম ডিভিশনে কর্মরত। শুক্রবারে সাধারণত আমি অফিস করিনা,তবুও ওদিন গিয়েছিলাম আলিয়স ফ্রসেসে।ফ্রেঞ্চ স্পিকিং দেশগুলোতে ইউ এন মিশন করতে গেলে ফ্রেঞ্চ জানা বাধ্যতামূলক- এটা শুনে খোঁজ খবর করতেই যাওয়া। ফেরার পথে হঠাৎ শুনি আমার মোবাইল ফোনে কে জানি বার বার চেষ্টা করছে। কিঞ্চিৎ বিরক্ত হয়ে কয়েকবার রিসিভ করলাম, কথা ঠিকমত শোনা যাচ্ছিলন