সিক্রেট লাইফ অফ ওয়াল্টার মিটি মুভি দেখার পর থেকে আর ইনস্টাগ্রামে ছবি দেখে দেখে আর আইসল্যান্ড ভ্রমণ বালতিতে জেঁকে বসে আছে। আবার আমেরিকাপ্রবাসী বন্ধু বলে রাখসে অনেকদিন থেকে নেক্সট যেখানেই যাই ওকে যেন বলি, যেভাবেই হোক এসে পরবে। যথাযথ মোটিভেশনের যেন অভাব ছিল; সহকর্মী তার তিন মাস পরের আইসল্যান্ড বুকিং আর কি কি করবে সে নিয়ে কথা বলায় মনে হচ্ছিল, দ্যটস ইট!
১। পিপু ফিশো: আগামী ভাষার দুই অভিযাত্রীর গল্প
..................................................................
বাউলের গান শুনে মনে হলো ও পিপু ফিশোর কেউ হবে। গানটা আবার ভাল করে শুনি-
ও মানুষ ও মানুষ
তোমার দুটো চোখ
দুটা কান
দেখবা শুনবা
একটা মুখতো
কম কথা কবা।
ঠিকই ধরেছি। পিপু ফিশোরই কেউ হবে। পিপু ফিশোকেতো আমরা জানিই। সেই আলসে দুটো-
তুবা যেদিন বড় হবে
তৈরি থেকো, তোমরা সবাই
সবচে পাকা রূপকথাকার সঙ্গে নিয়ে, তোমরা যেন
গল্প ফাঁদতে ভুল কোরো না। সঙ্গে রেখো
কল্পকথা, সত্যজিতের একশ আঁকা
জবরখাকির মস্ত ব্লোআপ দেখিয়ে বোলো
আসছে দিনের সেই তুবাকে
ওটাই খেলো তোমার মাকে।
সেদিন যেন মিথ্যা-মিথে
খুবসে রাঙায় রিলের ফিতে
কম্পুছবির কৌশলে আর তুলির টানে সঠিক শোভায়
গুলিয়ে ছবি দেখিয়ে বোলো
তুবার মা-ই ভালেন্তিনা তেরেস্কোভা
[justify]শব্দ সম্পর্কে আমাদের সবার মনের দরজার ভেতরের কপাটে নিজস্ব (অনবশ্য স্বকীয়) একটা রায় পেরেক মারা আছে। যখন আমরা একটা অচেনা শব্দ (যেমন এর আগের বাক্যে অনবশ্য (= not necessarily, অনাবশ্যকের সাথে গুলিয়ে ফেললে চলবে না) পড়ি বা শুনি, মনের দরজা লাগিয়ে ঐ রায়টা আমরা একবার পড়ে নিই। প্রতিটি শব্দ আমাদের প্রতি জনের সে রায়ের জোরে বাঁচে, বন্দী থাকে, সমাহিত হয়, পুনর্জীবন পায়।
-আঁকারটুন
সিক্রেট
মুসাররাত জাহান শ্বেতা
১.
এসএসসি পাশ করে কলেজে ভর্তি হতে গিয়েছিলাম ১৯৮৪ সালে। সরকারী সিটি কলেজ চট্টগ্রাম। সরকার বিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্র হিসেবে পুলিশের খাতায় এই কলেজের খুব বদনাম তখন। বদনাম হবার কারণ এখানে এসে কখনো আন্দোলন দমন করার সুযোগ পেতো না পুলিশ। ঢিল পাটকেল খেয়ে ভাগতে হতো। জাতীয় ছাত্রলীগের শক্ত ঘাঁটি ছিল। তখনো রাজনীতি বুঝি না। কিন্তু এরশাদ কী জিনিস তা ক্লাস টেনে উঠেই বুঝে গিয়েছিলাম যখন ছাত্রদের মিছিলে ট্রাক তুলে দেয়া হয়েছিল ঢাকায়। বাসা থেকে বেরুবার আগে মাকে বলে এসেছি আজকে ভর্তি শুধু। ক্লাস নেই। টাকাটা জমা করেই চলে আসবো এগারোটার মধ্যে।
কলেজে গিয়ে ভর্তির টাকা দেবার কাউন্টারে লাইন ধরলাম। সেদিন শেষদিন ছিল। অল্প কয়েকজন বাকী ছিল বলে ভিড় নেই বেশী। বিশ ত্রিশ জনের মতো আমরা। একজন একজন শেষ হচ্ছে। আমার পালা আসার আগেই বাইরে শুনি মিছিলের শব্দ। এই কলেজে মিছিল মিটিং নিয়মিত বিষয়, তাই গা করলাম না। মিছিল চলে গেল শ্লোগান দিতে দিতে। মিছিলের শব্দ ক্ষীণ হয়ে যাবার পর আমার ভর্তির কাজও শেষ। সাথে যে কয়েক বন্ধু ছিল, তাদের কাজ শেষ হতে আমরা দোতলা থেকে নীচে নামার জন্য করিডোরের দিকে গিয়েছি অমনি বাইরে বাঁশির শব্দ, হৈ হুল্লোড়। একটা ছোটাছুটি পড়ে গেল সমস্ত কলেজে। ধর ধর পালাও পালাও টাইপ অবস্থা।
আমি শোষকের বংশধর, তাই চিরকালই শোষকের পক্ষে। জাতিসংঘের কোন অধিকার সনদ আমার জন্য প্রযোজ্য নয় কেননা আমি জন্মসুত্রে অধিকার প্রাপ্ত রক্তশোষক। আমার চৌদ্দ পুরুষ এমনকি চৌদ্দ লক্ষ কোটি পুরুষও রক্তশোষকই ছিল। আমাদের জাতিগত নিয়ম হলো - যেখানে জন্মাইবে সেখানকার সম্ভাব্য সকল প্রাণীর রক্ত শোষণ করিয়া মৃত্যুবরণ করিবে। জন্মের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই আমাদেরকে সংক্ষিপ্ত শিক্ষা সফরে নিয়ে বুঝিয়ে দেয়া হয় আমাদের অধিকারের সীমান
একটি পুকুর। সুন্দর সবুজ পানিতে টলোমলো পুকুর। মৃদুমন্দ দখিনা বাতাসে ছোট ছোট ঢেউ খেলে যাওয়া পুকুর। সূর্যের সোনালী আলোয় ঝিলমিল ঝিলমিল স্বপ্নিল পরিবেশের এক পুকুর।
ভটভট শব্দ করতে করতে ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে আমাদের স্টীমার ওয়াইও নদীর বুক চিরে। কোন অত্যাধুনিক জলযান নয়, সেই ১৯শতকের শুরুর দিকে ব্যবহৃত স্টীমইঞ্জিন চালিত প্যাডল হুইলবিশিষ্ট স্টিমবোটেরই এক নব অনুরূপ । কিন্তু একি স্টেয়ারিং হুইল এ কার হাতে ছেড়ে দিয়েছেন ক্যাপ্টেন ? স্বয়ং এই নাদানের হাতে! নিজেকে ত পপাই দা সেইলরম্যান মনে হচ্ছে! শুধু মুখে পাইপ আর নাবিকদের টুপিটাই পড়া বাকি। কিন্তু সাথে স্পিনাচ না থাকায় সেই বিশাল কাঠের স্টিয়ারিংটাকে ফ্যানের মত ঘুরান্তি দিতে পারলাম না। সত্যি বলতে গেলে দুহাতে খুব জোর দিয়ে স্টিয়ারিং কিছুটা ঘুরিয়ে সামান্য ডানে-বায়ে করতে পারলাম স্টীমারটাকে। ঠিকমত এগিয়ে নিতে পারবো তো ?
ছবিঃ ব্লেনারহ্যাসেট ম্যানসন।