ছোটবেলা ঘরের বেড়ায় এসে হাজির হতো শত শত প্রাণী আর মানুষ। জ্বর ঘন হয়ে চোখ ঝাপসা হয়ে উঠলে সেইসব প্রাণী আর মানুষদের কেউ লাফাতো; কেউ মিশে যেত একটার সাথে আরেকটা। আমাদের ঘরে বেড়াগুলো ছিল ইকড়ের তৈরি। ইকড় নল খাগড়ার মতো এক ধরনের তৃণ যা পাহাড়ে হয়। লম্বালম্বি ইকড় বিছিয়ে আড়াআড়ি বাঁশের পাত; যাকে আমরা বলতাম খাপ; বাঁশের বেত দিয়ে খাপের সাথে ইকড় আটকে তৈরি করা হতো বেড়া। ঘরের সাথে বেড়া দাঁড় করানোর পর এঁটেল মাটির সাথ
জামার খুঁট দিয়ে কপালটা মুছে সোজা হয়ে দাঁড়াল মতিলাল।ধু ধু রতনপুর মাঠে মধ্যদুপুরের চাঁদিফাটা গরম তাকে কাবু করতে পারেনি ঠিকই তবে একটু কাহিল লাগছে। সকালে রুটি খেয়ে বেরুনো উচিৎ ছিল। কোঁচড়ের ভেতর হাত ঢুকিয়ে একগাল মুড়ি চালান করে দিতে দিতে তীক্ষ্ণ চোখে মতিলাল খেয়াল করল কেউ আসছে।
বেশ বেশ।
---
ভারতীয় দর্শনে নাস্তিক দর্শন তিনটি হলো চার্বাক-দর্শন, জৈন-দর্শন ও বৌদ্ধ-দর্শন। একটু ভেবে দেখুন তো, পৃথিবীতে জনসংখ্যার আধিক্য বিবেচনায় প্রধান চারটি ধর্মাবলম্বীদের একটি হলো বৌদ্ধ। অথচ এই বৌদ্ধধর্ম ও জৈনধর্ম দাঁড়িয়ে আছে প্রতিষ্ঠিত দুটি নাস্তিক দর্শনের উপর ! কেন এমন হলো এটা একটা প্রশ্ন নয় কি ?
---
"Everything originates in water
Everything sustained by water"
- Johann Wolfgang von Goethe (1749-1832)
এই পোস্টের বিষয়বস্তু "হায়েনা"।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরের শিরোনাম এবং চুম্বক অংশে বলা হচ্ছে, "ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রধানমন্ত্রীকে ‘হায়েনা’ ডাকায় বুয়েটের প্রভাষককে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।"
এটুকু পড়ে আওয়ামী-/হাসিনা-বিদ্বেষীদের ক্ষিপ্ত হওয়ার কারণ আছে, বুয়েটের ছাত্র-শিক্ষকদেরও ক্ষিপ্ত হওয়ার কারণ আছে। এই ক্রোধের সাথে সহমর্মিতা রেখেই মুদ্রার অপর পিঠের দিকে তাকানোর অনুরোধ করছি। প্রথমে এ-পিঠ দেখি।
১।
ট্রেনটা আস্তে আস্তে গতি কমিয়ে আনছে, দরজার কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলো নীলা। কাঁধের ব্যাগটা কাঁধেই ঝোলানো আর পাশেই চাকা লাগানো ট্রাভেল ব্যাগ। এখানে ট্রেন বেশীক্ষণ থামে না, নীলা জেনেছে আসার আগেই। এখন ট্রেনটা থামতেই লাফ দিয়ে নেমে ককিয়ে উঠলো নীলা। পেটের সেই ব্যথাটা। ধুত্তেরি ছাই, মনেও থাকে না।
এ্যমনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাবেক প্রধান বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত আইরিন খান। শাহবাগের আন্দোলন ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের ব্যাপারে এ্যমনেস্টি ইন্টারন্যানশনালের মনোভাব বিষয়ে ইন্টারনেটে একটু খোঁজাখুঁজি করছিলাম দিন কয়েক আগে। এই সুত্রেই জানতে পারলাম যে ২০০৯ এর শেষে আইরিন খান কে এ্যমনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে প্রায় ৫ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টি ছিল গোয়ান্টানা মোবে তে যেসব মুসলিম বন্দী ছিল তাদের উপর অত্যাচারের ব্যাপারটি অতিরিক্ত একপেশে ভাবে বিশ্বের সামনে আনা যেখানে ওই টেরোরিস্ট বন্দীরা যে কি পরিমান নাশকতা ও নৃশংসতা ঘটিয়েছে সে বিষয়টি এ্যমনেস্টি অতটা সামনে আনেনি। অর্থাৎ আইরিন খান গোয়ান্টানা মোবে তে আটক থাকা বন্দীদের মানবাধিকার রক্ষায় যে পরিমান সোচ্চার ছিলেন তার কিয়দাংশও ছিলেন না ওই বন্দীরা যে সব মানবতা বিরোধী কাজ করেছে সেগুলোর প্রতিকার করা বা অন্তত সেগুলোকে বিশ্বের কাছে জানানোর ব্যাপারে। এই অভিযোগে আইরিন খান কে সরাসরি অভিযুক্ত করা না হলেও জঙ্গীবাদের উত্থান ও বিস্তারের প্রতি নমনীয় মনোভাবাপন্ন বলে মন্তব্য করে তাকে সরে যেতে বলা হয়। মনে করা হচ্ছিল যে জঙ্গীবাদের জন্যে "অতি" মানবতা দেখানো আইরিন খান সরে গেলে জঙ্গীবাদ নিয়ন্ত্রন সহজ হবে। আইরিন খান সরতে রাজি না থাকায় তাঁকে বিপুল অর্থের প্রস্তাব দেয়া হয় এবং আইরিন খান তাঁর বার্ষিক বেতনের চাইতে প্রায় পাঁচ গুন বেশী অর্থ নিয়ে নীরবে রফা করে সরে যান। এই বিপুল পরিমান অর্থ কেন আইরিন খান কে দেয়া হল এ নিয়ে এ্যমনেস্টির নিজেদের কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দেয়ার প্রেক্ষিতে বর্তমান প্রধান বলেন যে যেহেতু আইরিনের ভুমিকা প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছিল তাই অর্থের বিনিময়ে তাকে সরে যেতে বলা ছিল একটি আপোষ এবং একে "Least Worst Outcome" উল্ল্যেখ করে বলেন এব্যাপারে যেন এ্যমনেস্টি বা আইরিন কোন পক্ষই আর কথা না বলে তার জন্যেই এব্যাবস্থা।