লিখতে আমার একটুও ভাল্লাগে না। তবে এইবার লিখতে হবে।
নানার কলম আছে একটা, খুব সুন্দর, পুরোটা কালো, ক্যাপটাও, গায়ে তিনটে পাতার একটা ছবি খোদাই করা, আঙ্গুলে ছুঁয়ে দিলে কেমন আরাম লাগে, নামটাও সুন্দর, নানা বলে বুঝিয়ে দিয়েছে- ‘রেড লীফ’ মানে হল ‘লাল পাতা’। ‘লাল পাতা’ যে কলমের নাম সেটা কাল কেন কে জানে!
নানার অবশ্য ‘লাল পাতা’র লাল কলমও আছে, সেটা পুরোপুরি লাল। কলমতো লাল হবেই, ক্যাপটাও লাল, খোদাই করা ছবিটা লাল, এমনকি কালিও লাল! দুপুর বেলায় টেবিলের পাশটা এতগুলো লেখা খাতা বের করে নানা, এরপর চশমাটা চোখে দিয়ে লেখাগুলার দিকে তাকিয়ে থাকে আর বড় বড় করে একপাশটায় এক দুই পাঁচ সাত লেখে, লাল রং দিয়ে। এর নাম নাকি খাতা দেখা।
খাতা দেখার সময় নানার কাছে থাকা যায় তবে কিছু বলা যায় না, কলমটা হাত থেকে নেয়া যায় না, চশমাটা কেমন করে কানের দুইপাশে ঠিক ঠিক লেগে থাকল সেটা দেখা যায় না, এমনকি নানার মত করে এক দুই তিন লিখতেও মানা- আম্মু আর নানু আর খালামনি সব কিছুতেই “না না” বলে, নানা অবশ্য বলে না কিছু। কেবল পাঞ্জাবীর পকেট থেকে “ওভালটিন চকলেট” দেয় একটা। আবার একটা। তার মানে দুইটা। মাঝে মাঝে বিস্কুটও দেয়, হরলিক্স বিস্কুট। এই জন্যই থাকতে হয়, নয়ত বসে থাকতে আমার ভাল লাগে না একটুও। নানার মত খাতা দেখতে মন চায়।
খাতা আমারও আছে, তবে লেখা খাতা নাই, এটাও সমস্যা। এক দুই তিন চার আমি লিখতে পারি, তবে সব কয়টা সমান হয় না, এটা আরেকটা সমস্যা। আর আমার লাল কলম নাই, সেটা সবচেয়ে বড় সমস্যা।
পালাজ্জো রেজ্জোর ভেতরে। অসংখ্য ফ্রেস্কো সমৃদ্ধ এই বিশালাকার ঘরে একটি দানবাকৃতির ঘোড়া অতীতকে জানান দিয়ে যাচ্ছে যেন।
অনেকদিন আগের কথা। তখনো বান্দরবনের নাম বান্দরবন হয়নি। শুধুই বন। আর কিছু মঙ্গোলয়েড বংশোদ্ভূত মানুষ। কিছু নগণ্য জানোয়ার। আর বিশাল ইগোওয়ালা এক বানর। এর ইগোর যন্ত্রণায় মানুষ তো মানুষ, গাছ পালা পর্যন্ত অতিষ্ঠ। ‘কেন ওইদিকে বাতাস হোল, কেন অমুক গাছের ডাল চিকন, কেন তমুক গাছের ফল তেতো,’... হ্যান ত্যান নানা তম্বি।
"দ্যাখেন আম্মু, এই লোকটার সাথে আমার অনেক মিল"... শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এর লেখা পার্থিব পড়তে পড়তে, বইটার একটা চরিত্র কৃষ্ণজীবনের ব্যাপারে আম্মুকে বললাম।
আম্মুর তেমন কোন আগ্রহ নেই বই-টইয়ের দিকে, তাও জিজ্ঞেস করলেন, "কেমন মিল?"
আমার বিশ বছর বয়সী ভাইপো পরশু সন্ধ্যারাতে সিলিং থেকে ফাঁসীতে ঝুলে হন্তারক হয়েছে নিজের। বছর খানেক আগে কলেজ থেকে ঘরে ফিরেছিল সে ছোট একটা মেয়েকে লাল শাড়ি, কপালে টকটকে লাল সিঁদুর আর হাতে সফেদ শাঁখা পরিয়ে। সেদিন এতটুকু ছেলের সাহস দেখে হতবাক হয়ে গেলেও আমি মনে মনে তার বেশ প্রশংসা করেছিলাম। আমি কোনদিন ওরকম সাহস করতে পারি নি। আমার ভাইপোটির বাবা মানে আমার ভাইটি তার পুত্রবধূর মুখ দেখার মাস দুয়েক পর একরাতে ছট
[justify]ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের সাথে আমার প্রথম পরিচয় যখন প্রথম কেবল টিভি বাংলাদেশে আসে। নিজেদের বাসায় ডিশ কেবলের সংযোগ ছিল না, তবু এর ওর বাসায় চ্যানেল পালটানো কম করা হয় নি। সেই বয়সে গুঁতাগুঁতি করে যা বুঝলাম তাতে ন্যাটজিও আর ডিসকভারি ছাড়া কোনো কাজের চ্যানেল পাই নাই। সব হিন্দি নাচা-গানায় ভরপুর চ্যানেলের ভিড়ে কিছুটা অন্য ধরনের মেজাজের এই চ্যানেলগুলো তখন ভালো লাগে। ডিসকভারিতে মানুষের দারুণ সব
[justify]বাড়িটা হঠাৎ করেই ফাঁকা হয়ে গেলো। বাচ্চাদের পরীক্ষা শেষ। গরমের ছুটি। বউগুলো ছানাপোনা নিয়ে তাই বাপের বাড়ি চলে গেলো। দাদাভাইও বাড়ি নেই। রাত ১০ টার পর ভাত খাবো কীনা জিজ্ঞেস করলেন আম্মা। বল্লাম একটু পরে খাবো। আম্মা ঠিকাছে বলে সাথে এও বল্লেন, ‘আজকে আমরা মা-পুত। একলগে খাই চলো!’ তখনই মনে পড়লো, এই শুনশান বাড়িটাতে, একা বাড়িটাতে আর কেউ নেই, আমি আর আম্মা শুধু!
সে অনেকদিন আগের কথা, সেই সময় মানুষ পৃথিবীতে খুব আনন্দে থাকতো, পরম সুখে জীবনযাপন করতো। সে এক চমৎকার অবস্থা। কারুর কোনো কাজ করতে হতো না, যার যা দরকার সব হাতের কাছে এসে হাজির হতো। একথালা পোলাও চাই, এসে গেল ফার্স্ট ক্লাস পোলাও। এক প্লেট বিরিয়ানি চাই, এসে গেল দারুণ চমৎকার বেহেশতী বিরিয়ানি। এক বাটি পায়েস চাই, এসে গেল মনোরম স্বর্গীয় স্বাদের পায়েস। মখমলের তাকিয়া চাই, এসে গেল তাকিয়া। হীরার দুল চাই, এসে গেল