জহিরুল ইসলাম নাদিম
বলতে গেলে একটা পাখির ডাকে ঘুম ভেঙেছে আজ।
যদিও প্রাত্যহিক অন্য সব শব্দ যথারীতি কর্ণকুহরে ঢুকে
অন্তঃকর্ণের বারোটা বাজানোর তালে ছিল
তবু কেন যেন কোথা থেকে পাখিটার ডাকেই
ঘুমটা প্রথম ভাঙল।
চোখ খুলে অবশ্য পাখিটাকে দেখলাম না।
জানালার ওপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে থাকা
পর্দার জন্যই দেখলাম না তা নয়।
কারণ পর্দা সরালেও চোখের চৌহদ্দিতে আলসারের মতো বেড়ে ওঠা
কুৎসিত ...
একটি কান্না সলাজে হাসতে দেখে তুমি ছোটাছুটি করো চিলেকোটায়, উঠোনে। দেখো আমি কেবল হাওয়ারূপে পাখিদের কন্ঠ শোনে চারপাশ ঘুরি; ঘুরে-ঘুরে স্মৃতিস্পর্শ অবলোকন করি, সগৌরবে খুঁজি দেহসুরসহ গোপনমোহ। মুখভর্তি নীরবতা মেখে একটি কবিতা লিখবো বলে কতশত ইশারা খুঁজছি চোখের গহব্বরে
কি করে যে দিনের রূপ ফেটে ওঠে রোদের ভেতর! সন্নিকটে চতুর আকাশ চমকাতে চমকাতে ছায়াভরে দাঁড়ালে ঝরো-ঝরো রোদ্দুর রহস্যভেদ ...
[মিঁয়াও সিরিজের গল্পগুলো পর্ব পর্ব করে লেখা হলেও একটার সাথে আরেকটার তেমন যোগ নেই, এ কথা মনে হয় জানিয়ে রাখা দরকার!
নতুন নতুন নাম দেয়ার ঝক্কি থেকে বাঁচার একটা বড় উপায় এমন সিরিজ করে ফেলা- এটা মোটামোটি পরীক্ষিত সত্য।
তবে মিঁয়াও-কে ভালো করে চিনে নিতে চাইলে এখানে দেখা যেতে পারে, আগ্রহী পাঠকেরা বাকি গল্পগুলোর লেজ ওখানেই খুঁজে পাবেন।
মা
গ্রেস পালে
একদিন এএম রেডিও শুনছি। সেখানে একটা গান শুনতে পাই: ‘ও, আই লং টু সি মাই মাদার ইন দা ডোরওয়ে।’ গানটা ভালোমতো বুঝতে পারি। মাকে আমিও দরজার কাছে দেখতে চাই। সত্যি বলতে – মা আমাকে নানা দরজায় বিভিন্ন দিক থেকে দেখেছে। একদিন গভীর রাতে সদর দরজায়। মার পেছনের প্যাসেজে অন্ধকার। বছর শুরুর দিন। মা মন খারাপ করে বলে, সতের বছর বয়সে তুই রাত চারটায় বাসায় ফিরিস, বিশ বছর বয়সে তুই কী করবি? মা ...
কার্টুনিস্ট আরিফের কথা মনে হলে নিজেদের অক্ষমতাটা প্রকটভাবে চোখের সামনে ভেসে ওঠে, যে অবিচারটা ওর সাথে হলো এবং এখনো হচ্ছে এর প্রতিকার করার সাধ্য যে আমাদের নেই সেটা প্রতিদিনই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আরিফের নামটা কোথাও দেখলেই নিজের ভিতর একটা ক্ষোভ অনুভব করি এবং নিজের অক্ষমতার জন্য অপরাধবোধ হয়। আরিফকে আমি চিনি না সত্যি, কিন্তু ওকে ভোলাটা প্রায় অসম্ভব।
'আরিফের মা অসুস্থ' , এমন খবর দেখে আবা ...
এতটা বয়স চলে গেলো, তবু কি আশ্চর্য, আজো কী জানলাম/ চড়ুইয়ের ঠোঁটে কেন এত তৃষ্ণা?/ খড়ের আত্মায় কেন এত অগ্নি, এতটা দহন?/ গোলাপ নিজেই কেন এত কীট, এত মলিনতা নিয়ে তবুও গোলাপ?
এতটা বয়স চলে গেলো, তবু কি আশ্চর্য, আজো কী জানলাম/একটি শিশুর কেন এত নিদ্রা, এত গাঢ় ঘুম আর/তখন আমরা কেন তার মতো ঘুমুতে পারি না?
(আদিজ্ঞান / আবুল হাসান)
জামাল হাবীবের ঠোঁটটা নড়ছে মৃদু। কিন্তু কোন শব্দ বেরুচ্ছে না। পাশেই অর ...
মানুষ, কিংবা
যখন বিরুত বৃক্ষ হবার পথ খুঁজছে,
চাইছে আকাশ কেবল তারই ওপর উপুড় হোক-
তার কাছে সহসা উন্মোচিত হয় সকল মানুষের মানব-মুখোশ।
বিবর্তনের শিখরে দন্ডায়মান সে প্রাণির মুখ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়ে
আর তারা এক এক করে হয়ে ওঠে প্রতি প্রজাতির প্রতিনিধি স্বরুপ।
বিরুত আশ্চর্য হয়, তাকিয়ে দেখে আকাশও অদ্ভূত।
সে দেখে, সময়ের ব্যবধানে স্নেহ-মমতার মূর্তিময় আকর
কি করে হয়ে ওঠে জ্বলজ্যান্ত মাক ...
চর্যাপদ, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন হয়ে দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বপ্রান্তের ইন্দো-আর্য ভাষা বাংলা এখন ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপি। বাংলাদেশ এর প্রথম এবং ভারতের দ্বিতীয় সর্বাধিক ব্যবহৃত এই ভাষাটি হাজার মাইল দূরে আফ্রিকার কোনো কোনো দেশেও পাচ্ছে অফিসিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ এর স্বীকৃতি। ব্যবহার এর দিক থেকে পৃথিবীর চতুর্থ (মতান্তরে সপ্তম) সর্বাধিক ব্যবহৃত এই ভাষাটি পিছিয়েও আছে নানাদিক থেকে, ম ...
-হান্নান সর্দার, ও হান্নান সর্দার!
-কী জিগাও বাপ আমার?
-তোমার হাতে এইডা কী?
-আমার হাতে রামদাও!
-রামদাও দিয়া কী করবা? তোমার রামদায়ে রক্ত লাইগা আছে ক্যা?
হান্নান সর্দার কোনো কথা বলল না। চুপ করে রইল।
-কইলা না রামদাও দিয়া কী করবা? নাকি কিছু করছ? আবার মানুষ মারছ নাকি?
হান্নান সর্দার কোনো কথা না বলে তাকিয়ে রইল সামনে। তার চোখের সামনে পাঁচটা লাশ প ...
বাচ্চাদের সাথে আমার কেন জানি কখনোই খাতির হয় না।কথাটা পুরোপুরি ঠিক না---বরং বলা ভাল, 'খাতির হত না'। অতীত কালে। আমি দেখতাম লোকজন কত অবলীলায় বাচ্চাদের সাথে বন্ধুত্ব করে ফেলে। মিনিটের মাঝে বাচ্চারা তাদের ফ্যান হয়ে যায়। দেখা হবার পাঁচ মিনিটের মাথায় বাচ্চারা তাদের কোলে-কাঁখে-ঘাড়ে চড়ে বসে। ঈর্ষায় আমার চোখ ছোট ছোট হয়ে আসত।উদাস ভঙ্গীতে জানালা দিয়ে বাইরে তাকাতে তাকাতে নিজেকে বলতাম--'দেখি ...বাচ্চাদের সাথে আ