ধৈবত
প্রপঞ্চময় পঞ্চক (প্রথমাংশ)
নিম্নোক্ত গল্পের সমস্ত চরিত্র এবং ঘটনাই বাস্তব। কাল্পনিকতার সাথে এর সংলগ্নতা কল্পনা করা নিতান্তই অনভিপ্রেত অতিকল্পনা মাত্র
[justify]
বাবলুর মেজাজটা খারাপ। আব্বা এখানে এসে সেই কখন থেকে বসে আছে। নড়েও না চড়েও না। কথাও বলেনা। বাবলু একজায়গায় বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারেনা। তার হাত-পা কামড়ায়। সে অনেকক্ষণ গা মুড়ামুড়ি করেছে । তারপর বলেছে তাকে মশা কামড়াচ্ছে। সেকি একটু ঘুরে আসবে? কিন্তু আব্বার কোনো সাড়া নাই। তারপর ক্ষিদা লাগসে বলে সে শুরু করেছে ঘ্যানঘ্যান। তারও বেশ কিছুক্ষণ পরে আব্বা তার দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে বললো, বাবলু একটা কাজ করতে পারবি বাবা?
কি?
কাজটা আমরা দুইজন মিলা করবো, বুঝছিস?
কাজটা কি?
লোকজনের কাছে টাকা চাবো
কি বলবো?
বলবি, তোর মা হাসপাতালে, অপারেশনের জন্য টাকা দরকার। আমাদের সাহায্য করেন। পারবি না?
পদবি নৌকা চালক। প্রশিক্ষণ বন্দুক চালনায়। নাম রতন সরকার
[justify]অবারিত নীলাকাশ ছাপিয়ে নিস্পৃহ চেয়ে থাকা দীর্ঘশ্বাসকে ক্রমশ দীর্ঘায়িত করতে থাকে। আকাশের সব আলোতেই আমরা সন্তুষ্ট, অন্তত আমি। অথচ সূর্যের অনবরত দগ্ধ চেহারার বেদনাক্লিষ্ট রূপ একাকী ভেসে যায় একই পথে প্রতিদিন, কেউ তাতে ভুলে দেখলেও, কখনও সমবেদনা জানায় না। শুধুমাত্র জোছনা ধরে রাখে সেই দগ্ধ ইতিহাস, কালান্তরে। আর সেথায় জন্ম নিতে থাকে সহস্র কবিতা, যা আজও টিকিয়ে রেখেছে তথাকথিত পবিত্র ভালবাসাকে, মানুষের পিঞ্জরে। আঁধারের সাথে মিলিয়ে যাওয়া স্বপ্নহীন ঘুমে আমি নিজের পিঞ্জর খুজে বেড়াই। উপস্থিত সব শূণ্যতা আমায় সঙ্গ দিয়ে নিয়ে চলে রাত্রের নদীতীরে। হালকা শিরশিরে বাতাসে আমি ধূসর ঘ্রাণ নিতে থাকি
১
পাখি কখন জানি উড়ে যায়
একটা বদ হাওয়া লেগে খাঁচায় ...
একদিন যখন তুমি আশ্বস্ত হবে, জানবে, এই মৃত্যু চোখের পলকে তোমাকে ভ্রমণ করে যায়, তখন তুমি, প্রতিবার চোখ খুলে দেখবে, এই পৃথিবীতে বস্তুতপক্ষে নির্লিপ্ততাই মানুষের স্বভাবধর্ম।
২
সুতরাং ছেলের নাম নির্লিপ্ত নিরহংকার। মা বলছিল আরবি নাম রাখতে। সেই মা বাঙালির ইতিহাস কমবেশি ঠিকঠাক জানে। জানলেও, তার ছেলে ভাষানিরপেক্ষ হয়। ভাষা ইতিহাসনিরপেক্ষ না হউক।
[justify]মুখের ভেতরটা তেতো হয়েছিলো সকাল থেকেই। বর্তমান নিবাস থেকে পুরনো শহরে মায়ের কাছে যাবার সময় রাস্তায় লম্বা জ্যামে পড়তে হল। রাস্তা খুঁড়ে উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে। বিরক্ত হয়ে বাসে বসে থাকা ছাড়া গতি নেই। মায়ের বাসা থেকে সন্ধ্যায় বেরোবার সময়ও দেখি ভাগ্য সহায় নয় - গলির মোড়ে একটাও রিক্শা নেই। রিক্শা সব গেল কোথায়?
[justify]পুষি
বিড়ালেরা মাও না বলে ম্যাও বলছে বলে চীনে গণহারে বিড়াল মারা শুরু হলে একটা বিড়াল চীন থেকে পালিয়ে আমার বাসায় চলে আসে। নাম দেই পুষি। দুবেলা চারবেলা খেতে দেই। পুষি দেখতে আদুরে। সাদা লোম আর একটু একটু বাদামি ছোপ। পুষি মাছের কাঁটা খায়, দুধ খায়, সোফায় বা বিছানায় উঠে পা উপরে তুলে শুয়ে থাকে। একদিন রাতের বেলা শুতে গেলে পুষির লেজে হাতের চাপ লাগে অনেক জোরে। পুষি ভয়ে ম্যাও না করে মাও করে ওঠে।
[=grey]আই কল মাই ডগ, ডগ
বিজ্ঞানীদের চেহারা কেমন হয়?
কালাতো ভাই হিমু গোয়েন্দা ঝাকানাকায় এক আপনভোলা বিজ্ঞানী চরিত্র আমদানি করেছে। বিজ্ঞানী মতিলাল কারওয়ানবাজারিয়া। দুনিয়া কাঁপানো সব আবিষ্কার করে ফেলেন তিরিশ মিনিটে। কিন্তু বাহ্যজ্ঞান বিশেষ নাই। আর্কিমিডিসের মতো তাই প্রায়ই বিনা তহবনে পথেঘাটে বেরিয়ে পড়েন। আর বেচারার বেশিরভাগ আবিষ্কারই লুট করে নিয়ে যায়, ঠিক ধরেছেন, বদের হাড্ডি বদরু খাঁ।
নইমারি, ডাংগুটি, দাড়িয়াবান্ধা সব খেলা ভুলে গত তিনটা দিন কেটেছে বজলু মামুর বাংলা ঘরে। এত্তো বড় বোম্বা ঘুড্ডি জীবনে দেখি নি। মাহাল বাঁশ দিয়া গুড্ডির কামানি বানাইছে টুক্কু ছৈয়াল। হাঁট থেকে বালি আর লাল-সবুজ কাগজ এনেছেন বজলু মামু নিজেই। কণককাইচের খাঁড়া কাঠিটা বাঁধা হয়েছে কাল সন্ধ্যায়। এখন গুড্ডিটা ছাওয়া হবে। বার্লির গাম দিয়ে ছাওয়ার কথা ছিল কিন্তু বার্লি তেইল্যা চোরায় খেয়ে ফেলে। টুক্কু ছৈয়ালের কথামতো ওড়িগাব দিয়ে ছাওয়া হবে গুড্ডি। লুঙ্গি গলায় ঝুলিয়ে দলবল নিয়ে বাড়ির উত্তর দিকে বড় ওড়ি গাব গাছটার সব কাঁচা-পাঁকা ওড়ি গাব বিদ্যুৎবেগে এনে হাজির করলাম বজলু মামুর সামনে।
ছলাৎ ছলাৎ মনটা তোমার
চরের সাথে আটকে গেলো।
উড়ু উড়ু পাখির স্বভাব
জালের ফাঁদে ধরা খেলো।
কবে তোমার সবুজ বনে
হলুদ রঙের আবাস হলো।
দৃষ্টি কাড়া নীল নয়নে
মেঘের পালে বৃষ্টি এলো।