আমি নারী বলেই আমার বাবা আমাকে আদর করে মা-মণি বলে ডাকে আর আমার সন্তানও মা বলে জড়িয়ে ধরে পরম মমতায় আর নির্ভরতায়।নারী বলেই আমি হতে পারি কারো ভালোবাসার প্রিয় মানুষ, কারো জীবন সঙ্গিনী ।নারী বলেই আমার রক্তে মাংসে ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে আমারই অংশ,আমার সন্তান আর আমি হই রতœগর্ভা ।আবার আমি নারী বলেই যৌতুকের দাবী মিটাতে না পেরে ভালোবাসার মানুষের হাতে আমাকে হতে হয় নির্যাতিত ।নারী বলেই আমার নিষ্পাপ মুখখানা ভালোবাসার ক্রোধের আগুনে ঝলসে যায় বারেবার আর আমি হই এসিডদগ্ধা ।নারী বলেই পথে ঘাটে লাঞ্ছনার স্বীকার হয়েও মাথা নীচু করে ঘরে ফিরতে হয় কোন প্রতিবাদ ছাড়াই ।নারী বলেই আমার নামের সাথে যোগ হয় বীরাঙ্গনা,নির্যাতিতা,ধর্ষিতা ।আর নারী বলেই আমাকে ব্রোথেলে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয় ।সভ্য সমাজের দেয়াল আমাকে আটকে রাখে ঐ নিষিদ্ধ চার দেয়ালে সমাজকে কলুষমুক্ত রাখতে ।আর একটা সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের স্বপ্ন আবদ্ধ চার দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হয়ে বাজে আমার কানে প্রতিনিয়ত ।
‘দ্বিতীয় বিপ্লব’!!
- তানিম এহসান
ঘোর কলিকাল - নষ্টামীর এই দারুন সময়ে আজ তুমি কি লিখো,
কি লিখে ক্রোধের জল - নিজেকে সামলাও কবি?
এখানে ধানের ছড়ার মতন উন্মুখ উনুনেও বিলাপ,
এখানে ভিন্ন রাগে প্রতিদিন কাঁদে মানবতা,
প্রতিরাতে কোন এক নতুন নারী সুবাস বিকিকিনির
হাটে নতমুখে হেটে যায়; ধর্ষিতাকে আবার ধর্ষন করে সমাজ আর রাষ্ট্রযন্ত্র;
কচুর লতিতে লতিতে নুন মাখা নুন যায় শেষ হয়ে,
সময়ের নোনা বাঁকে অনেক ভ্রমণ
হলো; এবার তো তোল মুখ― স্পষ্ট হোক
আপন উচ্চারণ!
আমি যখন ছোট ছিলাম, স্কুলে পড়ি, তখন একটা স্বপ্ন দেখেছিলাম, চোর ধরার স্বপ্ন। আমরা চিরকাল বেশ বড় বড় বাড়িতে বড় হয়েছি, গাছপালা বাগানআলা বাড়ি ছিল বেশিরভাগ সময়েই। তার মধ্যে যে বাড়িতে সবচেয়ে দীর্ঘদিন থেকেছি সেই বাড়িটা ছিল বিশাল, আর আশেপাশে তখন অন্যান্য বাড়িঘর কম ছিল, রাস্তাটা মেইন রোড হলেও ট্রাফিক অনেক কম ছিল, আর ছিল চোরের উপদ্রব। দেখা গেল পেছনের পাঁচিল টপকে ঢুকে বাগানে টাঙানো ধোয়া কাপড় টেনে নিয়ে সটান মেইন গেইট খুলে বের হয়ে গেল কেউ, মূহুর্তের মাঝে, “এই, এই, কে রে!” বলে তেড়ে যাবো কি, বুঝে উঠবার আগেই! সে এক অবস্থা!
মুগ্ধ আকাশ, দুগ্ধ কপোত তোমার ব্যাকুল হাতে
ঋতুবতী মেঘ, পাখির প্রবাহ, শালিকের গ্রহলোক
পালক পুকুরে টলোমল করে তোমার গভীর চোখ
তোমাকে একাকী উড়তে দেখেছি নক্ষত্রের রাতে।
১২৮৪ সাল। মধ্যযুগের জার্মানির ছায়া ঘেরা, পাখি ডাকা, শান্তিময় ক্ষুদে এক পাহাড়ি শহর হ্যামিলনে দেখা দিল আচমকা মহা উপদ্রব- ইদুর! হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ সুবিশাল ইদুরের পাল, তাদের অত্যাচারে বেড়াল তো বেড়াল, মানুষের অস্তিত্ব টেকানোই দায় হয়ে পড়ল সেই পাহাড় ঘেরা উপত্যকায়। অবশেষে রূপকথার গল্পের মত দেখা দিলেন মহান ত্রাতা, নানা বর্ণের ডোরাকাটা রঙচঙে নকশাদার পোশাক পরা এক বাঁশিওয়ালা। নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে সে আশ্বাস দিল বিনাশ করে ছাড়বে ইদুরের দলকে।
প্রতিশ্রুতি মোতাবেক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ঝোলা থেকে এক অদ্ভুত বাঁশি বের করে অদ্ভুততর সুর সৃষ্টি করে চলল অবিরত, সেই মোহনীয় সুরেই মাতোয়ারা হয়ে দিকবিদিক ভুলে ইদুরের দল শুরু করল তার পিছু চলা। এক পর্যায়ে খরস্রোতা ভাইজার নদীর কিনারে এসে চতুর বাঁশিওয়ালার চালে সমস্ত ইদুরের পাল লাফিয়ে পড়তে লাগল সেই বহমান হিমশীতল জলে, খড়কুটোর মত ভেসে গেল তারা দূর কোন অঞ্চলে অথবা খরস্রোতা অথৈ জলের নিচে ঘটল সলিল সমাধি। হামিলন হল ইদুর মুক্ত।
ম্যাপ দেখে দিক ঠিক করে বিরতিহীন ক্লান্ত পায়ে এগিয়ে যাচ্ছি আইফেল টাওয়ারের দিকে। পৃথিবীর সবচাইতে বেশি পরিচিত স্থাপনা। কিছুদূর হাটবার পর দূর থেকেই চোখে পড়ল প্যারিসের আকাশে উদ্ধত এই ধাতব স্তম্ভ। এলোমেলো হেটে সঠিক রাস্তা রেখে আমরা পার্কের ভেতর দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। এক সময় পৌঁছলাম যখন সন্ধ্যা হবে হবে করছে। চাইলে লিফটে করে টাওয়ারের চুড়ায় যাওয়া যায়। তার জন্য বড়সড় একটি লাইন ধরতে হয় এবং কিছু ইউরো খরচা করতে হয়। অবশ্য অনলাইনে আগেই টিকেট কেটে আসলে লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
মিডিয়া তুঘলকের আক্রমণের শিকার পরিবেশবাদীরা
এম আব্দুল্লাহ
অতিবিখ্যাত রোমান্টিক ইংরেজ কবি 'পার্সি বিশ শেলি(১৭৯২-১৮২২)'র "Ode to the West Wind(১৮১৯)" ধ্রুপদি কবিতাটি অনুবাদের চেষ্টা করেছিলাম, প্রথম বাণীটি শেষে আজ দ্বিতীয় বাণী অনুবাদের চেষ্টা করেছি। এই অনন্য কবিতাটি 'তের্জা রিমা' আর 'ইয়াম্বিক পেন্টামেটার' নামের অসাধারণ সুরেলা ছন্দে রচিত। 'তের্জা রিমা' সম্পর্কে একটু আলোকপাত করছি, এটি অন্তঃমিল দেখে, ১৪ পঙ্ ক্তির প্রতিটির শেষে এই প্যাটার্ন (A-B-A, B-C-B, C-D-C, D-E-D, E-E) রাখতে হয়। আমি দ্বিতীয় বাণীটি অণুবাদের সময় (রে-তা-রে, তা-এর-তা, এর-কে-এর, কে-নো-কে, নো-নো) এই প্যাটার্নটি রেখেছি। তারপরও মূল কবিতা থেকে অর্থান্তর না করার আপ্রাণ চেষ্টা ছিল। কতটুকু সার্থক হয়েছি- তা আপনাদের বিচার্য ।
বুলডোজারের কথা ভুলে যান। জানালা দিয়ে ফেলে দিন এক্সক্যাভেটরকে। সাগরের নিচ দিয়ে টানেল খোঁড়ার ড্রিলটাকেও পুঁতে ফেলুন ডাস্টবিনে। আসুন তিনটি যন্ত্র নিয়ে ভাবি। তারপর রক-সিজর্স-পেপার অ্যালগরিদমে এগিয়ে দেখি, এদের মধ্যে আসলে কে সবচেয়ে তাকতধারী।
যন্ত্র নং ১: ষড়যন্ত্র
যন্ত্র নং ২: রাষ্ট্রযন্ত্র
যন্ত্র নং ৩: পরিমল জয়ধরের যন্ত্র