জল গড়িয়ে চলে
পতনেই বুঝি জলের আজন্ম সুখ,
বাধা পেলে প্লাবন ডাকে,
ভাঙ্গনের স্রোত ভাসায় ফুল্লরার বুক।
ও মেয়ে,
তুমি কি গো জলকন্যা?
কেবলই আপন খেয়ালে চলো?
ডুবসাঁতারে সঙ্গে নিলে
কী'বা এমন ক্ষতি হতো বলো?
এই জনমে নাইবা হলো,
রইলো আরো হাজার জীবন....
তোমার সাথে স্নানে যাবো
জেনে নিয়ে জলের সমীকরণ।
ভাসাও, ভাঙ্গো কিংবা মারো করে আস্ত বরফ জমাট,
জলের তোড়েই খুলবো সেদিন তোমার সকল বদ্ধ কপাট।
০১।
তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর স্মরণে আয়োজিত ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে 'রানওয়ে' মুভিটি দেখার পর আমার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল এরকমঃ
[i]"বাস্তব ঘটনার উপর ভিত্তি করে ফিল্ম বানানো আম্রিকানদের ব্যাপার-সেপার। আমরা অতো কষ্ট করতে যাবো কেনো? আমরা বানাবো ফর্মুলা ফিল্ম।
০১।
মামাতো ভাই মফস্বল থেকে ঢাকা শহরে এসে কিছুদিন উদভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেরালো, তারপরই আমার অবৈতনিক পাঠশালাতে ভর্তি হয়ে গেলো। আসুন মনে করি ভাইয়ের নাম, পরিষ্কার। অত্যন্ত দুঃখের ব্যাপার হলো নামের সঙ্গে তার কাজের, অকাজের কোন মিল নেই। নিজের একমাত্র ছাত্রের এরকম লেজেগোবরে অবস্থা দেখে আমি আর দেরি না করে বইমেলার উদ্দেশে রওনা দিলাম।
উদ্দেশ্যঃ পাঠদান কর্মসূচীর জমজমাট উদ্বোধন।
১
সকাল থেকেই ঝর ঝর বৃষ্টি হচ্ছিল। এখন একটু কমেছে। উঠানের ওপাশে রান্নাঘরটা। মা ধোঁয়া উড়িয়েই যাচ্ছিলেন। একটা মোড়ায় বসেছিল রিফাত। পাশের উঠানটা একটু ঢালু। উঠানের মাঝখানে দাঁড়িয়ে তৃপ্তি। ওদের বারান্দায় বসে তন্ময়, টুলের উপর।
-এই মেয়ে ঘরে আয়।
[justify]
সে এক শহর আছে। মাঝরাতে সে আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে - জিজ্ঞেস করে “আমার কথা মনে আছে তো"?
আমি ঘুম জড়ানো গলায় তাকে তাড়াতে চাই। সে ফিরে আসে বারবার, দুষ্টু হাসি মুখে ঝুলিয়ে বলে - "আমার কথা মনে আছে তো?"
মাঝে মাঝে সাতসকালে আমি প্রাত্যহিকের ব্যস্ততা সামলাতে সামলাতেই সে হঠাৎই সামনে সেই পুরানো বেশ নিয়ে এসে দাঁড়ায়। একগাল হেসে বলে - "চলে এলাম”।
এইবেলা নদীর কথা না বললে আর শান্তি পাচ্ছি না। কিন্তু মুশকিল হলো কিভাবে বলবো? যতই বলি খুব সুন্দর, মনোমুগ্ধকর, অস্থির কিংবা অদ্ভুত- কিছুতেই তৃপ্তি হয় না। শুধু মনে হয়- হলো না! ঠিক করে বলতে পারলাম না। তাই ভাবলাম চুপ যাই। কিছু ফটুক তুলে দেই- তারপর ঐ বিশেষন গুলো না হয় আপনারাই ঠিক করে নিবেন।
[ধরলা-১]
জীবনে প্রথমবার বই কিনেছিলাম ঊনিশশো নব্বইয়ের ডিসেম্বরে -বড় আপার বার্ষিক পরীক্ষা শেষে। 'বর্ণ পরিচয়' নামের সে বইয়ের প্রথম বাক্যটায় আঙুল রেখে বড় আপা বলতো- "বল্। অ-তে অজগর। অজগরটি আসছে তেড়ে।" আমি বড় আপার আঙুল রাখা ছবিটায় তাকাতাম- দেখতাম, বিদঘুটে একটা সাপ অ-এর দিকে ছুটে যাচ্ছে। মনে হতো, সেই বিদঘুটে অজগর অ-এর গায়ে এক্ষুণি আঘাত করবে। অ-এর জন্য আমার মন কেমন করে উঠলে বড় আপাকে বলতাম, "আপা, এই সাপটা কি অ-কে খেয়ে ফেলবে?" বড় আপা হাসতো। বলতো, "অক্ষর কি কেউ খেতে পারে, বোকা ছেলে?
দেশ, খুঁটি, মাটি। খুব অদ্ভুত রকম শক্তিশালী এক ধারনা। দেশ ছেড়ে দূরে সরে যাওয়া যায়, দেশের সাথে সকল সংস্রব ত্যাগ করা যায়, শুধু যায় না দেশের সাথে জড়িয়ে থাকা অস্তিত্বটুকু অস্বীকার করা। যত দূর পথ হাঁটি না কেন, যত উচ্চতায় আরোহণ করি না কেন, শিকড় তো আমাদের ছোট্ট দেশেই পড়ে আছে। বিদেশে এসে এই বোধটুকু প্রায় সবার মাঝেই অনেক গভীর হয়। বিশেষ করে আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবজনক অধ্যায়গুলো এলে।