২০ মার্চ, ২০১২
(পোস্টের সাথে সংযুক্ত ভিডিও গুলো ছাড়া আমার আবজাব লেখার কিছুই বোঝা যাবে না। যারা আগ্রহ নিয়ে পড়বেন, তাদেরকে অনুরোধ করবো ভিডিওগুলো দেখতে।)
৮ম সেমিস্টারের অটোমোবিল (Automobile) ক্লাসের কথা মনে পড়ছে। আমরা সবাই বয়লার ল্যাবে বসে আছি আর সিরাজুল করিম চৌধুরী (SKC) ক্লাস নিচ্ছেন। ক্লাস রুমের তুলনায় ছোট খাট একটা ব্লাক বোর্ডে প্রাণান্তক চেষ্টা করছেন একটা ছবি আঁকার। ছবিটা হল ডিফারেন্সিয়াল গিয়ারের (Differential gear)। অনেক সময় নিয়ে তিনি ছবিটা আঁকা শেষ করলেন। এরপর অনেক কষ্ট করে ডিফারেন্সিয়াল গিয়ারের কার্যপদ্ধতি বোঝানোর চেষ্টা করলেন। ক্লাসে আর কে কি বুঝেছিল জানি না, তবে আমি কিছুই বুঝিনি।
পরে রুমে ফিরে এটা নিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ করলাম। পেলাম এই ভিডিও টা।
মানুষের সবচে দারুণ শত্রু হতে পারে তার নিকটতম জন। তার মানে কোনো মূর্খ যদি 'জানরে' 'পাখিরে' বলে কারো জন্য প্রাণোৎসর্গ করে তাহলে যাকে প্রাণোৎসর্গ করা হলো সেই সৌভাগ্যবান অথবা সৌভাগ্যবতী হতে পারে ওই অপদার্থটির সর্বনাশ করার জন্য সবচে উপযুক্ত প্রাণি। গরল উঠে আসে অমৃতের সন্ধানেই। প্রেম বিষয়ক লেখা লিখতে বসিনি অবশ্য। ও লোকে ঢের জানে। ঢের মানে, খায়। আমি প্রাণের নিকটতম বিষের কথা বলি। মার্চের বিষ আজকে। প্রাণ এবং প্রাণের ভেতরে থাকা বিষ নিয়ে কথোপকথনের এরচে চমৎকার উপলক্ষ্য আর হয়না!
২৬শে মার্চ ১৯৭১ স্বাধীনতার ঘোষণা বিষয়ে হঠাৎ পেয়ে যাওয়া একটা অজানা কাহিনী শেয়ার করার জন্যই লিখছি। একটু ভুমিকা দিতে হচ্ছে।
মারাঠা যন্ত্রণা কিছুটা কমে আসার পর আলিবর্দি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নানান ফ্যামেলি ঝামেলি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তার অতি আদরের ধন সিরাজ গদি পাবার জন্য লাফঝাঁপ আরম্ভ করে দেয়, ১৭৫০ সালে সে বিদ্রোহও করে বসে। তরুণ গর্দভটিকে আলিবর্দি ক্ষমা করে দেন, বৃদ্ধ নবাবের এই নাতিটির প্রতি অসীম ভালবাসা ছিল। সেই ভালবাসার সুযোগ নিয়ে সিরাজ ইচ্ছেমত পাইকারি বজ্জাতি চালিয়ে যেতে থাকে। স্থানীয় ঐতিহাসিক গুলাম হুসেন খানের মতে,
“ভালমন্দের বাছবিচার না করে, আদব লেহাজের ধার না ধেরে তিনি যখন যা খুশী তাই করতেন। ছোট বড় মেয়ে মদ্দ কারুরই ছাড় ছিলনা তার সামনে। অতি অল্প সময়ে মিশরের ফারাও এর মতই তিনি ঘৃণ্য হয়ে উঠলেন, আর তাকে দেখা মাত্র লোকে মনে মনে ভাবত ও আল্লা বাঁচাও ডরাইসি!”
…
বিদ্বত্ত্বঞ্চ নৃপত্বঞ্চ নৈব তুল্যং কদাচন।
স্বদেশে পূজ্যতে রাজা বিদ্বান্ সর্বত্র পূজ্যতে।। ০১।। (চাণক্য নীতিশাস্ত্র)।
অর্থাৎ : বিদ্যাবত্তা এবং রাজপদ কখনোই সমান হয় না। রাজা কেবলমাত্র নিজ রাজ্যেই সম্মান পান, বিদ্বান (স্বদেশ-বিদেশ) সর্বত্র সম্মান পান।
চাণক্য নীতিশাস্ত্রের প্রথম শ্লোক এটি। শ্লোকটির বহুল ব্যবহৃত দ্বিতীয় চরণটা আমাদের কাছে খুবই পরিচিত মনে হওয়ার কথা। কারণ, ‘স্বদেশে পূজিত রাজা, বিদ্বান সর্বত্র’- এরকম একটা ভাবসম্প্রসারণের বিষয় মাধ্যমিক ক্লাসের জন্য যথার্থই বলা চলে। এবং মজার বিষয় হলো, এরকম একটা বিষয় নিয়ে ভাবতে বসলে আমরা যে-যত বিদ্যাদিগ্গজই হয়ে উঠি না কেন, বিশেষ ব্যতিক্রম বাদ দিলে, আমাদের মাধ্যমিক পর্যায়ের জ্ঞানটাই খুব স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সক্রিয় হয়ে ওঠে।