সালেক খোকন
যুদ্ধে যাওয়ার ইচ্ছার কথা শুনে মা হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। ছেলেকে তিনি কিছুতেই ছাড়বেন না। যুদ্ধে গিয়ে কি কেউ জীবন নিয়ে ফিরবে! এই তার ভয়। মা আমাকে চোখে চোখে রাখলেন। যদি পালিয়ে যুদ্ধে চলে যাই। মাকে শান্ত করতে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেই। না, কখনোই মুক্তিযুদ্ধে যাব না।
আমরা ঢাকায় আসি ৮৪'র নভেম্বর এ, এসে উঠি রায়ের বাজার এ একটা ভাড়া বাড়িতে. রায়ের বাজার এ তখন অনেক মাটির কুমার বাড়ি, সেই সব মাটির বাড়ির দেয়ালে লেপা থাকত ঘুটে. এইতো সেদিন ও দেখেছি কুমার বাড়ির মাটির হাড়ি, কলস বাইরে রোদে দেয়া. আজকে যারা রায়ের বাজার এ থাকেন তাদের অনেকের কাছেই হয়ত এসব গল্পের মত মনে হতে পারে, আমিও যখন ভাবি তখন মনে হয় সবই হয়ত কোনো বহু বহু কাল আগে ঘটে যাওয়া ঘটনা.
সময়ের সাথে নাকি সবকিছু পাল্টায়—
কুমিরের ছানা বাড়ে ‘ঘোষকের’ খালটায়
কাঁঠাল-চাঁপার পাশে টেকা দায় গন্ধেই
কী করে পড়ায় কন কবি, আমি মন দেই!
...বীর এসে খুনিদের জীবনের দাম চায়
রাজাকার মুখ মোছে কাদেরের গামছায়!
মিলেমিশে একাকার ভীরু আর সৈনিক
পতিতের তালিকাটা বড় হয় দৈনিক!
বয়স বাড়লে যেন শুরু এই পর্বের—
মাটিতে মিশিয়ে দাও যা যা ছিল গর্বের
মুক্তিযুদ্ধ? সে তো আরো সোজা, সস্তাও
“শিল্পসৃষ্টির এক মাধ্যম হিসেবে চলচ্চিত্রের নাম যদি কোনওদিন হারিয়েও যায় তা হলেও চ্যাপলিনের নাম বেঁচে থাকবে। চ্যাপলিন অমর।”
— সত্যজিৎ রায়
এক
ঘটনাটি বছর বারো আগের অথচ এখনো মনে হয় কিছুদিন আগে ঘটেছে।
ক।
২০০০ সালে বড় আপার বিয়ের মাস খানেক পড়ে দুলাভাই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ট্রান্সফার হন। আপার শ্বশুর-শ্বাশুরী আমেরিকা থাকে। তাই, আপার শ্বশুর বাড়িতে থাকার চাপ ছিল না।
আমি ঠিক জানিনা আশ্রমের মেয়েটাকে এতটা অসাধারণ দেখায় কেন। রোজ সূর্যোদয়ের সময় তাকে দেখি এই বিশালাকার শতবর্ষী গাছটার নিচে এসে দোলনায় দুলতে দুলতে গুনগুন করে গান গাইতে। আমি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনি। একটু একটু সুর তুলতে চেষ্টাও করি মাঝেমধ্যে। কিন্তু বুঝি না, তার সুরের অর্থ, তার গানের কথার অন্তর্নিহিত ভাব। তার গানের সুরে মোহিত পল্লবেরা নেচে ওঠে। বাতাস এসে তাতে ঢেলে দেয় অনিঃশেষ মাধুর্য। আমি খুব বিরক্ত হ
বুয়েটে পড়ি। আমাদের ডিজিটাল মুখপাত্র পলাশীর আলুর সুবাদে ছাত্রলীগকে আমরা মামাবাহিনী হিসেবে চিনি। হলে থাকার কারণে মামাবাহিনীর দু-একজন মামার সাথে আমার অল্পস্বল্প খাতির আছে। তাদের সাথে পথে-ঘাটে-মাঠে মাঝে-সাজে দেখা হলে কুশল বিনিময় হয়।
আমাদের রাজনীতির জগত এই মুহুর্তে ঘটনাবহুল। মাত্র কিছুদিন আগে কালোবিড়াল-খ্যাত রেলমন্ত্রীর টাকার বস্তা সংক্রান্ত গল্প ফিরছিলো মানুষের মুখে মুখে। সেই গল্পের আমেজ এখনো পুরো ফুরায়নি। এরমধ্যেই পাড়ার চায়ের দোকান থেকে শুরু করে মায় টিভির টকশো তক চিবানোর মতো নতুন নতুন গল্প পাচ্ছি আমরা।
অপেক্ষায় আছি, বসন্তে
আমি অপেক্ষায় থাকি
বাতাসের দরজায় কড়া নাড়ে মেঘ
আমি নিস্পলক থাকি
একটা নক্ষত্র জন্ম নেবে শীঘ্রই
ঘুমে ঢুলু-ঢুলু একটা পাহাড় হঠাত চমকে ওঠে
আর আমি মগ্নতায় চেয়ে দেখি
পলাশের রক্তে লাল একটা ভোরের পাখি চৈত্র পাড়ি দ্যায়
অস্থির আমার ভেতরটা তরপায়
একটা ভোরের অপেক্ষায় থাকে কোটি কোটি চোখ
একটা গুবরে পোকা সারারাত পাহাড় বেয়ে ওঠে
একটা ঝিঁঝিঁ পোকা নৈ:শব্দের বনে ডাকে