৭
সাগোতো রাজদানের ডায়েরিটা আমার হাতে আসে ২০০৪ সালে, চাচা মারা যাওয়ার পর। ডায়েরিটা এমনিতেই কৌতূহলোদ্দীপক, আমার আকর্ষণ আরও বেড়ে যায় চাচার রেখে যাওয়া নোটটা পড়ে।
বছর ঘুরে আবারো আসছে বি-স্ক্যানের জন্মলগ্নের সেই দিনটি। ১৭ই জুলাই। সকলের ভালোবাসা-অনুপ্রেরণায় হাঁটি হাঁটি পা পা করে বি-স্ক্যান এগিয়ে চলেছে তৃতীয় বর্ষপূর্তীর দিকে। প্রতিবারের মতোন এবারও বি-স্ক্যান এই দিনটি উদযাপনের মাধ্যমে সর্বত্র সচেতনতার বীজ বপন করতে চায়। এবার ঠিক হয়েছে প্রতিবন্ধী তথা ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্যে পারিবারিক এবং সামাজিক সকল প্রতিবন্ধকতা দূরীকরনে নতুন প্রজন্মের মাঝে সচেতনতা সৃষ্ট
ভুমিকা :
গণস্বাস্থ্য বিভাগের বড় পেইন হচ্ছে নবজাতকের মৃত্যুর হার আর ব্লগ জগতের বড় পেইন হচ্ছে ধারাবাহিক ব্লগের মৃত্যুর হার। অনেক আয়োজন করে যখন 'আমি কী করিতে গিয়া কী করিয়াছিলাম' ব্লগ শুরু হয়, তখন শিরোনামের শেষে ১ লেখা দেখলেই বুঝবেন যে এটা আসলে একদিনের লেখা, এজন্য এক লেখা। আর লেখার পর 'চলবে' লেখা দেখলে বুঝতে হবে এটি পরের পর্বে চলবে বুঝাচ্ছে না, বরং লেখকের জরুরি কাজ পড়ায় ( সেটা বিড়ি খাওয়া টু টিভিতে খেলা দেখার মতো জরুরি কাজ হতে পারে, অথবা নিছকই প্রাকৃতিক ডাক হতে পারে) লেখাটি আপাতত ধামাচাপা দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। যাই হোক, আজকে পুরোনো এক বন্ধুর সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ হওয়ার সময় বাচ্চাকাচ্চাদের স্কুলে ভর্তির বিড়ম্বনা নিয়ে স্মৃতিচারণ হচ্ছিল। তখনই মনে পড়ল- এ বিষয়েও আমার একটি ধারাবাহিক লেখা শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু প্রথম পর্বের পরে বছর চলে গেল, দ্বিতীয় পর্ব আর আসার নামগন্ধ নেই। এমনিতে এসব ধারাবাহিকের অপমৃত্যুই ধরে নেয়া যায়। গুম হয়ে যাওয়া লোকের মতোই এরা আর ফিরে আসার নামগন্ধ করে না। কিন্তু আমার মনে হলো, এই কাণ্ডের অন্তত আরেকটি পর্ব লেখা উচিত। সেজন্যই এই দ্বিতীয় পর্ব। বলা বাহুল্য এই কাহিনী যেহেতু একবছর আগের, তাই সব কিছু দুর্বল স্মৃতি থেকে নিচ্ছি। এতে করে অবশ্য কোনো কিছু বাড়তি যোগ হওয়ার আশা নেই, বরং অনেক মূল্যবান কাহিনী বাদ পড়ে যেতে পারে। সেটা ক্ষমাঘেন্না করে নেবেন।
আমার ঘরটিকে আমি স্বার্থপরের মতো ভালোবাসতাম।
আমাদের ছোট্ট বাড়িটায় আরো চারটা কামরা ছিল। তবু আমার ঘরটিকেই আমি বিশেষভাবে ভালোবাসতাম। পূর্ব দক্ষিণ ঘরটা ছিল সর্বকাজের। সেখানে বসা, খাওয়া, বই-পত্রিকা পড়া, আড্ডা দেয়া, টিভি দেখা, হেন কাজ নেই হতো না। এই ঘরটির দুটো জানালা, একটা দক্ষিণে আরেকটা পূর্বদিকে। এই ঘরকে আমরা ডাকতাম 'ড্রইংরুম' বলে। আসবাবের মধ্যে ছিল একসেট কাঠের, আরেক সেট বেতের সোফা, অন্যপাশে বুকশেল্ফ, শোকেস, টিভি ইত্যাদি। এই দুয়ের মাঝে ছজন বসার মতো একটা ডাইনিং টেবিল ছিল যেটায় খাওয়া পড়া লেখা সবই চলতো। দক্ষিণের জানালা দিয়ে বাইরে তাকালে দুটো পেয়ারা গাছ, একটা আমগাছ দেখা যেত। তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কামিনী আর শিউলীর ঝোপটাও আংশিক দেখা যেত। আর দরোজায় দাঁড়ালে দেখা যেতো থোকা থোকা রসালো কামরাঙ্গা হাত বাড়ানোর জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।
জীবাণু বিস্ফোরণে আছি
আছি দুবেলা দুমুঠো কানামাছি খেলায়
সংসারে এমন অসংখ্য প্রাত্যহিক জীবাণু বেশ সুখে আছে
খাচ্ছে.. দাচ্ছে.. কেটে যাচ্ছে
অন্ধকারের বিপরীতে চেনাচেনা ছায়ার ফাঁকে
শহরের সমস্ত ঘনীভূত দীর্ঘশ্বাস ভর করে
মাতাল পূর্ণিমায়
রক্তিম উল্লাসে ফেটে পড়ে চাঁদ
ক্ষুদে বার্তার জন্য আঙুল চেপেচেপে
অক্ষরগুলো কেটে-ছেঁটে বারবার সাজাই।
শব্দের বনসাই
দেখে হয়তো অবাক হবেন তিনি
গানের মধ্যে গল্প খুঁজে পাই না আজকাল। সুর আছে, কথা আছে, যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি যন্ত্র আছে, কিন্তু গল্প নেই। কথায় সুর লেগে গান হওয়ার বদলে সুরের বেঁধে দেওয়া দৈর্ঘ্য-প্রস্থের সাথে খাপে খাপ মিলে কথাগুলো বসে থাকে যেন। মন থেকে কিছুটা আবেগ কর্জ করে গানের আবেদন পুরো করতে হয়।
উপলক্ষ্যটা খুব সিম্পল। আলিম আল রাজি ফার্স্ট প্রফ সাপ্লিমেন্টারিতে পাশ করেছে। সেলিব্রেট করা দরকার। সাপ্লিমেন্টারিতে পাশ করেছে এটা কোন উপলক্ষ্য হল?
শেষ বলে কিছু নেই
তাই বারবার দৃশ্য ভাঙি।
কখনো যদি ডাকে
ডুবে যাওয়া শহরতলি।
-যাবো,
ডাকলেই যাবো।
কোন কারণ ছাড়াই
হবো তাদের কথার সঙ্গী ।
প্রকাশ্যে লুকিয়ে থাকবো
মেঘশিমুলের গল্পগুলো
চেপে রেখে,
আঁকবো নৈঃশব্দের দৃশ্য-
হৃদয় নৈদাঘে!
সময় থমকে থাকে
এমন করে কাটে না দিন,
নিদ্রাহীনতার গানে
ভারি হতে থাকে রাত্রি।
পুষ্পের আড়াল থেকে
ফিরে গেছে সকাল
যাচ্ছে ফিরে আগামীকাল!
শীতের দুপুরজাগা কমলা রঙের রোদ্দুরের মধ্যে মিশে থাকা প্রিয় শব্দমালা, "হরেএএএক মাল পাঁচসিকা"র ফেরিওয়ালা, শিল-খোটাও ওয়ালা, টিন আর লোহা ওয়ালা। আরও ছিলো কাগজকুড়ানি মেয়ে, নিঃশব্দ, ছেঁড়াখোঁড়া রঙ জ্বলে যাওয়া ফ্রক পরা, রুখু চুল লালচেবাদামী হয়ে গেছে রোদে রোদে। কোথায় তারা আজকে?