আমার ছোটছেলেটা (বয়স ৪ মাস) ক্লাবফুটেড (এর বাংলা জানিনা)। চিকিৎসা চলছে। প্রতি শুক্রবার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রীনরোডে নিয়ে যাই। সপ্তাহের অন্যান্য দিনের কথা জানি না, শুক্রবারের সকালে বোধহয় রাস্তাঘাট একটু ফাঁকা থাকে। সকাল ৯টা- সোয়া ৯টার দিকে রওনা দিলে মোটামুটি ৪৫ মিনিটে পৌঁছে যাই। গুলশান গোল চত্বর, সাতরাস্তা, সোনারগাঁও এর মোড় আর পান্থপথ-গ্রীনরোড মোড় ছাড়া জ্যাম পাই না সাধারনত:।
ক
একটা গোটা রাত জেগে থাকার ভারী অবসাদ আর সকালে তেল চুপচুপ পরোটা আর ভুনা গরুর মাংসের ভূরিভোজন-পরবর্তী ঝাঁঝালো ঢেকুর-এই দুইয়ের সাথে লেপ্টে রইল সকালবেলার আলস্য জড়ানো অথচ টান্ টান্ কামেচ্ছা-আমার সংক্ষিপ্ত বাস যাত্রাটা এই তিনের ঘোরে ঢুলুঢুলু কেটে যেতে পারত। কেটেছিলোও কিছুটা;বেশ আয়েশি একটা অবশতা। কিন্তু আচমকাই ছিঁড়ে গেল এই ত্রিকোন ঘোর। সামনে তাকিয়ে দেখি চলমান জেগে উঠতে থাকা শহরটাকে আগলে কে যেন বসে আছে। একটা মেয়ে। কাঁধের উপর ছড়িয়ে থাকা চুল থেকে উঠে আসছে একটা অভিজাত করপোরেট সুবাস;সদ্য স্নানের ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত পানির বিন্দু চারপাশে ছড়িয়ে দিয়েছে এক আবেশী মৌতাত। বুকের অনুমোদিত উপরি অঞ্চল-অবধি নগ্ন সুন্দরীর ছবি সাঁটা সাবানের ভুরভুরে গন্ধটাও পেলাম।সব মিলিয়ে একটা ঘন জমে থাকা মাদকতা যেন। এইসব চটকে ঘুম ঘুম আমেজটা ছিঁড়ে গেলেও বাইরের বাস্তবতা ঘাড়ে চেপে বসতে পারেনি তখনো।
কবিতা বেশি দিন টেকে বলেই কি কবিতায় পুরোনো কথা বেশি বলা হয়? নাকি অনেক কবিই বর্তমানকে মেনে নিতে পারেন না বলে অতীতের সোনালি দিনকেই করে তোলেন স্বাপ্নিক বর্তমান?
অনেক দিন ধরেই বাংলাদেশের অডিও জগতের জনপ্রিয় কিছু ব্যান্ড অ্যালবাম নিয়ে পোষ্ট দেব ভাবছিলাম। ভাবনা আর কাজে পরিণত করে ফেলার মধ্যে ফারাক অনেক। প্রায়ই আমার ভাবনাগুলো ভাবনাতেই স্বীমাবদ্ধ থেকে যায়। এই ভাবনাটাও তেমন-ই। তবে, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে প্রকাশিত মিউজিক অ্যালবামগুলো এবং এর বাজার কাটতি দেখে একসময়ের একনিষ্ঠ শ্রোতা-ভক্ত হিসেবে বুকে হাহাকারের মাতম জেগে উঠলো কেন যেন!
হে বঙ্গ! ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন/তা সবে (অবোধ আমি!) অবহেলা করি/পরধন-লোভে মত্ত, করিনু ভ্রমণ/পরদেশে, ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি …
ধুম করে বিয়ে করে ফেললাম আমরা - একদম ধুম করে! পরিবারের গুরুজনেরা বেঁকে বসার সুযোগ পেলেননা তেমন একটা ! বাবা-মা রাজি হতেই বিয়ের কাজ সারা ! 'না'- বলবার সুযোগ কোথায় ! তারপর দুজনই বাইরে চলে আসি- অজানা একটা নতুন জীবনে - উচ্চ শিক্ষার তীব্র ইচ্ছা আর নতুন একটা অজানা শহরের ডাক | ফুল-অন এডভেনচার যেন একটা ! সেই থেকে লণ্ডনে বসবাস শুরু - অর্ধ যুগ পার করছি এবছর !
মিনার মাহমুদের মতো একজন লড়াকু মানুষ আত্মহত্যা করবেন এটা মানতে এখনো কষ্ট হচ্ছে। তাঁর ব্যক্তিত্বের সঙ্গে ‘আত্মহত্যা’ ব্যাপারটা যায় না। কী বর্ণাঢ্য একটা জীবন ছিলো তাঁর! য়্যাডভেঞ্চারে পরিপূর্ণ এরকম বর্ণিল জীবন আমাদের প্রজন্মের আর কারো তো ছিলো না! বিশেষ কোনো একটি অভিধায় বিশেষায়িত করা যায় না তাঁকে। তাঁর চরিত্রের মধ্যে একই সঙ্গে দায়িত্বশীলতা এবং কাণ্ডজ্ঞানহীনতার অপূর্ব মিশেল ছিলো। যে কারণে মিনারকে আমার আনপ্রেডিক্টেবল মনে হতো সব সময়। আমাদের প্রজন্মে মিনার মাহমুদ ছিলেন কীর্তিমান এক রহস্যপুরুষ। যে রহস্যের সিংহভাগই চির অনুদ্ঘাটিতই থেকে গেল।
মানুষের মৃত্যু কতোবার হয়? কেউ কেউ বলেন, সাধারণ মানুষ একবার মরে, আর অসাধারণ মানুষ অমর হয়। অমরত্ব মানে কি বেঁচে থাকা মানুষের স্মৃতিতে লেপ্টে থাকা? নাকি বেঁচে থাকা মানুষের মনে কখনো কখনো জেগে ওঠা? সংবাদ শিরোনাম, টেলিভিশন কিংবা ছাপা কাগজে, নতুন হয় প্রতিদিন। থাকে কিছু চর্বিত চর্বন। সংবাদও কি মরে যায়?
মেঘে ঢাকা পড়ে যাওয়া তারাগুলো মেঘ সরে গিয়ে
হঠাৎ করে সারা আকাশে দৃশ্যমান হয়ে উঠলে আমি চমকে উঠি
কয়লার খনি খুঁড়তে খুঁড়তে হঠাৎ করে হীরার দ্যুতি ঝলক দিলে
ক্লান্ত শ্রমিকের লোভী চোখ যেভাবে চমকে উঠে ঠিক সেভাবেই।
আমার তখন মনে পড়ে যায় ঋত্বিকের ছবিটির কথা,
ঝিলের পাড়ে বসে হংসধ্বনির আলাপ গাইতে থাকা অনিল চ্যাটার্জি
কিংবা ছেঁড়া চটি জুতা নিয়ে হাঁটতে থাকা যে মেয়েটিকে খুকী ভেবে
১.
আমার অন্য সব গল্পের মত এটাও একটা বানোয়াট গল্প। বানোয়াট গল্প লিখতে বসার কিছু ঝামেলা আছে।কাহিনী কিছুদূর এগোনোর পরই দেখা যায়, আর আগামাথার ঠিকুজি রাখা যাচ্ছে না।বৈরাম খাঁ হয়ে যাচ্ছে হরতন বিবি, দস্যু বীরাপ্পণের গপ্প গিয়ে ঠেকছে রাজা হরিশ্চন্দ্রের শবযাত্রায়।
যেমন আজকের গল্পটা সম্পূর্ণ অবান্তরভাবে শুরু হবে নিখিল হাজরাকে নিয়ে। নিখিল হাজরা যদি বাস্তবের কোন চরিত্র হতো, তাহলে এতদিনে তার আমার মতই গলায় টাই ঝুলিয়ে রিয়েল এস্টেট কোম্পানির চাকরি করার কথা, বিবাহবার্ষিকীর দিন বউ নিয়ে পুরান ঢাকায় ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বেড়াবার কথা। ছেলেবেলায় আমাদের অবশ্য দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, নিখিল বড় হয়ে রবীন্দ্রনাথ হবে। রবীন্দ্রনাথের মত কবিতা লিখতো ও। বিশেষ করে ক্লাস সিক্সে ইদ্রিস স্যারের পেটের অসুখের কাহিনী নিয়ে তার লিখা কবিতাটাতো ছিল রীতিমত অসাধারণ।