২০০১ সালের ০১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করার মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল ধর্মান্ধ-বাংলাস্তানী ‘বিএনপি-জামাত’ জোট সরকার।
১.
অন্তু এখন ঘুমাতে হবে, এসো, হেনা ডাক দেয়।
আরেকটু কার্টুন দেখি আম্মু, অন্তু সোফায় নড়েচড়ে আয়েস করে বসে। ওর চোখ টিভির পর্দায়। সেখানে ছোট্ট এক ইঁদুরের দাপটে তাগড়া গোফওয়ালা বিড়াল কুপোকাত।
আর না বাবা, এখন সোজা বিছানায়, চোখ বন্ধ করে ঘুম, হেনা রিমোট টিপে টিভি বন্ধ করে দেয়।
তুমি একটা পচা আম্মু! অন্তু বিরক্তি দেখিয়ে সোফায় সটান শুয়ে পড়ে অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে রাখে।
আমরা অনেকেই হয়তো ভাবি, যা কিছু বহু মানুষের চোখের সামনে ঘটে গেছে, তা বিকৃতির স্পর্শ এড়িয়ে ভাবীকালের মানুষের জন্যে একটি বিবৃতি হয়ে টিকে থাকবে। যা কিছু চাক্ষুষ, যা কিছু স্পষ্ট, যা কিছু প্রত্যক্ষ, তা কীভাবে পাল্টাতে পারে? এক নিশ্চিন্ত বিশ্বাসে আমরা আমাদের দেখা সময়কে অর্পণ করে দিই কনিষ্ঠদের হাতে। তারা কি আমাদের চোখ দিয়েই সে সময়কে দেখতে পায়?
০১।
“সম্ভাবনা” একটা বিটকেল জিনিস। এ বস্তুর জন্ম হয়েছিল জুয়ো খেলায় হারজিতের আগাম হিসাব করতে। অথচ, কে ভেবেছিল- এ জিনিস একদিন পদার্থবিজ্ঞানের মতন ভাবগম্ভীর একটা বিষয়ের সবচেয়ে আকর্ষনীয় অংশের সঙ্গী হবে! দুনিয়া অদ্ভুদ! আগে পদার্থবিজ্ঞান যখন বড় বড় জিনিসের হিসেবপত্র করত তখন তার ভাষ্য ছিলঃ “হবেই হবে”। আর, পরমানুর এই এত্তটুকুন ফ্লাটবাড়িতে এসে তা পালটে হয়ে গেলঃ “হতে পারে”। কোয়ান্টাম মেকানিক্স যখন বিংশ শতকের প্রথম দিকে একটু একটু করে তৈরি হচ্ছিল, তখন তাঁর রথীমহারথী দের প্রায় সবার বয়স ছিল ২২ থেকে ২৫ বছর। যুগটাকে ঠাট্টা করে বলা হয় “বালকদের পদার্থবিজ্ঞান”। সেই সময়, আরভিন শ্রোয়ডিঙার নামে এক আধবুড়ো (তখন তাঁর বয়স প্রায় ৪০) অস্ট্রিয়ান, এই “হতে পারে” টাকে পদার্থবিজ্ঞানের উপযোগী করে একেবারে গনিতের খাঁচায় বেধে ফেললেন। সেই সঙ্গে তাঁর নামটাও বাঁধা হয়ে গেল কোয়ান্টাম মেকানিক্সে। এখনও স্নাতক পর্যায়ের পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র থেকে পরমাণু-পদার্থবিজ্ঞানী সবাইকে শ্রোয়ডিঙারের এই কীর্তি আয়ত্ব করে তবেই এগুতে হয়। খবর্দার, কোনও পদার্থবিদের সঙ্গে বাজী ধরতে যাবেন না যেন।
আমার মনে পড়ে, যখন অনেক ছোট ছিলাম তখন বিজয় দিবস আর স্বাধীনতা দিবসগুলো একেবারেই অন্যরকম ছিলো। অনেক বেশী আবেগ আর কষ্টের ছোঁয়া ছিলো যেন তখন। আমি নিজে স্বাধীনতা যুদ্ধ দেখিনি। ছোটবেলায় গল্প শুনেছি, গল্প পড়েছি, স্বাধীনতার গানগুলো শুনতাম রেডিও টিভিতে। এমন একটা অনুভূতি হতো বুকের ভিতর তখনি, ওই ছোট বয়সেই। জানিনা কতটুকু বুঝতাম স্বাধীনতা যুদ্ধের, জানিনা কতটুকু বুঝতাম যারা প্রাণ বাজি রেখে দেশের জন্য দেশের মানুষ
স্কুলে যাওয়ার পথে এক পাগলের সাথে প্রায়ই দেখা হত। নির্ঝঞ্ঝাট-নির্বিবাদী মানসিক ভারসাম্যহীন সিধা সাধা মানুষটা বিড়বিড় করতো আর বাতাসে আঙ্গুল নেড়ে কি জানি হিসাব করত। স্কুল ছাড়ার পরে আর কখনও তাকে দেখিনি। সে কিসের হিসাব মিলানোর চেষ্টা করতো কখনও জানা হয়ে উঠেনি। তবে তার চেহারায় একটা অদ্ভুত হাসি লেগে থাকতো সেটা এখনও মনে পড়ে।
কবে থেকে ওরা আমার পিছনে পড়ে আছে? পাঁচ-দশ-পনের, নাকি আরো বেশি সময়?
কারো ফাঁসির খবরে আনন্দিত হবার কিছু নেই। মানুষের মৃত্যুতে আনন্দ করার কিছু নেই। মৃত্যু এক অমোঘ পরিণতি যা সব বর্ণের সব রকমের মানুষকে এক করে দেয়। যতবড় আসামীই তার অধিকার আছে ন্যায় বিচার পাওয়ার। যতবড় অপরাধীই হোক না কেন, তার অধিকার আছে সম্মানজনক একটা শাস্তি পাওয়ার। অনেক সভ্য দেশ থেকেই মৃত্যুদণ্ডের মতো অমানবিক বিধান বাতিল করা হয়েছে। সারাবিশ্বে মানবতা আজ হুমকির মুখে। ঘৃণা, হিংসা, প্রতিশোধ আকাঙ্ক্ষা, চোখের
জয় বাংলা !
বাঙালিকে আঙুল দেখায়ো না।