১।
সাতসকালের ঘুমটা মাটি হতে মেজাজটাই খিঁচড়ে গেল ঝাকানাকার। একহাতে লুঙ্গি সামলে আরেক হাতে কান চুলকাতে চুলকাতে কোনমতে দরজা খুললেন গোয়েন্দাপ্রবর। দরজায় দারোগা কিংকর্তব্যবিমুঢ় চৌধারির হাসি হাসি মুখখানা দেখে খিঁচড়ানো মেজাজটা আরো এক ডিগ্রী উপরে উঠে গেল। এদের কি আক্কেল জ্ঞান নাই, পৌনে ছটা বাজে ঘড়িতে। কন্ঠে আধ পোয়া মেঘ আর এক ছটাক বৃষ্টি ঢেলে ঝাকানাকা বললেন – “আসুন”। সিঙ্গেল সোফায় বিশাল বপুটাকে কোনমতে আঁটিয়ে ইতি উতি চাইল কিঙ্কু। ভাবখানা বুঝে নিয়ে, কন্ঠে বৃষ্টি আরো এক ছটাক বাড়িয়ে উত্তর এল- “সামা খান ছুটিতে, ফাদার সিরিয়াস কাম শার্প অবস্থা একেবারে।” লাজুক হাসি দিয়ে বলল কিঙ্কু- “এই সাতসকালে... বুঝেনই তো স্যার... চলেন তারচেয়ে মোড়ের পরাটার দোকানে গিয়ে বসি।” “বসুন তবে, লুঙ্গিটা খুলে আসি”- ঝটপট উত্তর ঝাকানাকার।
ছোটবেলায় প্রথম যে বইটি পড়ে দুনিয়ায় টিঁকে থাকার রীতি-নীতি সম্পর্কে জানতে পারি সেটি ছিল ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর-এর করা ঈশপ-এর গল্পের অনুবাদ - ‘কথামালা’। আমার বাবার আমাকে প্রথম উপহার যা আমার মনে পড়ে। বইটি হারিয়ে গেছে। গল্পগুলি রয়ে গেছে মনের ভিতর। যত বড় হয়েছি, গল্পগুলি তত বেশী করে অনুভব করেছি। আবার কখনো কখনো সেগুলি থেকে অন্য রকমের মজা পেয়েছি। সম্প্রতি ইচ্ছে হচ্ছিল গল্পগুলি ফিরে পড়ার। ভাবলাম, আপনাদের-ও সঙ্গী করে নি-ই। ইংরেজী পাঠের অনুসারী বঙ্গানুবাদ করেছি, তবে আক্ষরিক নয়। সাথে ফাউ হিসেবে থাকছে আমার দু-এক কথা।
[গল্পসূত্রঃ স্থানীয় গ্রন্থাগার থেকে পাওয়া R. Worthington (DUKE Classics)-এর বই এবং আন্তর্জাল-এ লভ্য http://www.aesop-fable.com -এ ইংরেজী অনুবাদের ঈশপের গল্পগুলি।
গল্পক্রমঃ R. Worthington-এর বইয়ে যেমন আছে]