১৯৮৪ ইং সালে আমি ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে সুযোগ পেয়ে ভর্তি হই।
পাঞ্জাবির পকেটের কাছে এক কোণা ছিঁড়ে যাওয়াতে কুদ্দুস মিয়া খুব দুঃখ পায় মনে। তার দু’টো শার্ট, একটা পাঞ্জাবি। কোনও বিশেষ উপলক্ষ থাকলেই সে পাঞ্জাবিটা পরে। আজকের এটাও একটা উপলক্ষ। তার গন্তব্য শরীফউদ্দীন ইমামের বাড়ি – ৬৪, মদীনাবাগ। অনেক কষ্ট করে সে এই ঠিকানাটা জোগাড় করেছে। শরীফউদ্দীন ইমাম তাদের গ্রামেরই মানুষ, ডগরীবাজার জামে মসজিদে ইমামতি করেছিলেন বহুদিন, কুদ্দুস মিয়া তাকে ছেলেবেলা থেকে দেখে এসেছে। বউ মরে যাওয়াতে আর ছেলের চাকরি হওয়াতে গ্রাম ছেড়ে শরীফউদ্দিন ইমাম ঢাকায় চলে এসেছিলেন।
সমুদ্রের নীলাভ লবণ, বিপুল ফেনীল ঢেউ
আর সূর্যকিরণ, যখন তোমার ওপর ঝাপটে পড়ে
ইসলানেগ্রায়, তখন আমি চেয়ে দেখি কর্মব্যস্ত বোলতাটিকে,
স্বকীয় পৃথিবীর মধুর কাছে ওর আত্মসমর্পণ।
দেখি ওর নিয়ত আসা-যাওয়া; নিয়ন্ত্রিত, সোনালী উড়ান।
যেন কোনো অদৃশ্য, সরল তারে ও পিছলে যায়,
দৃপ্ত নাচে, নিপুণ ভঙ্গিমায়। দেখি ওর পিয়াসী কোমর,
একটি একটি করে ওর সূক্ষ্ম সুঁচ নিঃশেষিত হওয়া।
একটি অনচ্ছ কমলা রংধনুর ভেতর
স্বামী পটলানন্দ ভরপেট খেয়ে ধ্যানে বসার পাঁয়তারা করছিলেন। শিষ্য গোবরানন্দ দৌড়ে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে তাকে থামাল।
- এইবার কতদিনের জন্য বসছেন স্বামী?
- দুই তিন মাস। বেশীও হতে পারে।
- ঝামেলাটার একটা সুরাহা করে যেতেন আগে।
স্বামী দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন,
- এইবার কি ঘটনা?
- আপনাকে নিয়ে ঘটিনন্দ গ্রুপের সাথে বাটিনন্দ গ্রুপের মারামারি হয়েছে।
গোবরানন্দ বলে যায়। স্বামী উদাস মুখে ঘটনা শুনতে থাকেন।