একবার বাজে রকমের এক কাশির কবলে আমি পড়েছিলাম। এদেশে আমার মতো মাইগ্রেটেড বাঙালির কপালে কোল্ড এলার্জি বা শীতকালীন হাঁচি-কাশি বিড়ম্বনা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। তবে সেবার বিষয়টা সামান্য হাঁচি-কাশি ছাড়িয়ে গড়িয়েছিল বহুদূর। যদিও শীত ছিল জাঁকিয়ে তবুও সময়টা ঠিক শীতকাল ছিল না, এবং রোগটাও কোনোভাবেই কোল্ড এলার্জি না। সেবার পুরো শীতটা ঠিকঠাক কাটিয়ে, বিপত্তি বাঁধলো শীত শেষে বসন্তের আগমনে। এবং যা ছিলো কিনা অস্ট্রেলিয়
[প্রতিকৃতি: আকাশলীনা নিধি]
মোট চারবার তাঁকে ফিরতে হয়েছে এই বাংলায়। জীবিতকালে দুইবার, মৃত্যুর পর দুইবার!
আমি চাই আমার ভালো লাগুক
এই ভেঙে পড়া শহর, নুয়ে পড়া
মানুষ, এবড়ো থেবড়ো রাস্তায়
ম্লান নষ্ট আলোর মতো তরুণী;
স্যানিটারি ওপচানো ডাস্টবিন, নোংরায়
গেড়ে যাওয়া শিশুটিকে পিষে খাবার
খুঁজে নেয়া কুকুর, তার পাশে ভুস করে
চলে যাওয়া গাড়ি, পোস্টারে আন্দোলনের
ডাক ঢেকে দেয়া চিত্রনায়িকার স্তন্যময়
হাসি- আমি চাই অন্যদের মতো
আমারো ভালো লাগুক;
পচা পটল আর পোকা বেগুনের ধারে
পায়ে পায়ে থেঁতলানো মরা ছোট মাছ,
গতকাল সন্ধ্যা ঘন হলে
রাত্তির আনুমানিক আটটা নয়টা বাজে
অথবা দশটায়
মনে নাই ঠিক
আমায় ফোন করে বাল্যবন্ধু মুকুল (ছদ্মনাম,
বাস্তবে উহার নাম বকুল, কিন্তু কথা সেটা নয়)
উত্তেজিত কণ্ঠে বলে, দোস্ত কারেন গেছেগা।
শুনে আমি থমকাই দু'টি ক্ষণ, তারপরে শুধাই
বলি ও মুকুল (ও বকুল বলেছিনু, যেহেতু ওটাই
তার বাস্তবিক নাম, তবে কথা সেটা নয়)
কারেন গেছেগা তাতে কি হয়েছে, আইপিএস ছাড়।
জুলমত আলির মন ভালো নেই। মনের আর কী দোষ! আয়না বানুর পাল্লায় একবার যে পড়েছে তার কি কোন উপায় আছে!
পেয়ারা গাছের শক্তপোক্ত একটি ডালে পা ঝুলিয়ে বসে হাতের দড়িটার দিকে তাকালো জুলমত আলি। কী সুন্দর দেখতে! ভারি নরম, যেন কাঠবিড়ালির ফোলা ফোলা লেজ। চারিদিকে আজকাল নাইলনের ছড়াছড়ি, সে দড়িতে গিঁট দিতে গেলে হয় পিছলে যায়, নয়তো খুলে আসে হালকা টানেই। আর নাইলন জিনিসটা খুব বাড়াবাড়ি রকমের রুক্ষও, টান লাগলে চামড়ায় দাগ রেখে যায়।
একই সমস্যা নারকেলের ছোবড়া দিয়ে বানানো দড়িতে। অনেক খুঁজে পেতে শেষটায় রায়েরবাজারের গুড়পট্টির পেছনে যে ঘুপচি ঘুপচি দোকান গুলো রয়েছে তারই একটা থেকে মেলা টাকা খরচ করে কিনে এনেছে এই দড়িটা। পাটের দড়ি, পনেরো ষোল হাত হলেই চলতো, কিন্তু দোকানদার গোছা থেকে কেটে দিতে রাজি হয়নি। কত কষ্টের টাকা, আহারে!
শ্বাপদের পাল ঠেলে প্রতিদিন তুমি কাজে যাও,
তাদের লালার স্রোত বিস্মৃতির বর্মে ঠেকাও।
তোমার চলার পথে অক্ষমেরা বসে ঠোঁট চাটে
নিন্দার তুফান রোজ কড়া নাড়ে তোমার কপাটে।
কখনও চড়ালে গলা একশোটা পাল্টা গলা চড়ে
হায়েনা শেখায় এসে নিঃশব্দে কাঁদবে কী করে।
"অল্পে থাকো তুষ্ট আর গল্পে থাকো মায়াবতী হয়ে"
এ মন্ত্রে আকাশ ফাটে অশিক্ষিত-শিক্ষিত বলয়ে।
যুবক গোপনে পায় স্বস্তি সে যুবতী নয় বলে
স্থানঃ এলিফ্যান্ট রোডে "এরোপ্লেন মসজিদ"-এর পেছনে কোনো একটি বাড়ি। ঢাকা।
ক্ষণছবি - ১
কাঁচা-মিঠা আমের ডালে তারা দোল খাচ্ছিল।
-কাজটা কি ঠিক হলো?
-হ্যাঁ। তোমার কি এখন আফসোস হচ্ছে?
-না, আফসোস না। মানে...
-শোন, তুমি আমাকে ভালবাস?
-এখন জিজ্ঞাস করছো এ কথা? তুমি জানো না?
-জানি। আমিও তোমাকে ভালবাসি। এর উপরে আর কিছু হতে পারে না।
ভোরের আলো ফুটেছে। কাঁচা-মিঠা আমের ডালে পা দুলিয়ে তারা দোল খাচ্ছিল।
বিজ্ঞানী সফদর আলীর মহা মহা আবিষ্কার বইয়ে একটা গল্পের নাম জং বাহাদুর। সেই গল্পে বানর খুঁজে পাবার জন্য সফদর আলী একটা বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন পত্রিকায়। বিজ্ঞাপনের উত্তরে নানান চিঠিচাপাতির সাথে একটা পোস্টকার্ডও এসেছিল। পোস্টকার্ডে চার ছত্রের একটা ছড়াঃ “সফদর আলী মিয়া, সদরঘাটে গিয়া, বান্দরের গেঞ্জি কিনে চাইর টাকা দিয়া”।
এরকম আশ্চর্য কবিতা সুকুমার রায়ের বই ছাড়া পাওয়া মুশকিল।