এক.
আরো ২২ রান দরকার। ওভার মাত্র একটি। নাহ্ আর কোনওভাবেই পারবে না ইংল্যান্ড। খেলাটা অনেক আগেই স্রেফ ফরম্যালিটিতে পরিণত হয়েছে। মনে মনে খুশী হয় সাব্বির। ডেরেক প্রিঙ্গেল আর ইলিংওয়র্থ ধূঁকে ধূঁকে ব্যাটিং করছে। শেষ ওভারটা ইমরান খান করছে।
- আজব সুইং করে এই ব্যাটা!
- হু তুখোড় বলিং শালার। চরিত্রে যদিও একটু সমস্যা আছে।
- থাক এইসব বইলো না এখন। খেলাটা জিততে দাও। মানুষের ব্যাক্তিগত বিষয় নিয়ে আমাদের কাজ নাই।
- হু তা ঠিক।
- দেখো, বল যতো পুরোনো ততো সুইং – ব্রিটিশরা কেমনে খেলবে এই বল!??
- সেটাই।
- আর রমজান মাস না? ওদের উপর আল্লাহর রহমত আছে।
বাড়ির সবাই অধীর। একটু আগেই ইফতারী করেছে। এখন হাতে চায়ের কাপ। চোখ টিভির পর্দায়। শেষ ওভারের খেলা। পাকিস্তান বলেই না এতো উত্তেজনা! গত একটা মাস ধরে চলেছে এই টেনশন। টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পরতে পরতে পাকিস্তানীদের এই নাটকীয় উথান। ৯২ এর বিশ্বকাপ ঘরে উঠাতে আর কিছুক্ষণের মাত্র অপেক্ষা!
ইমরানের ২য় বলটাতে ইলিংওয়র্থ রমিজ রাজার তালুতে বন্দী হলো। নন-স্ট্রাইকে ডেরেক হতাশায় মুখ নীচু করে ফেললো সেই দৃশ্য দেখে। অল আউট। বিশ্বকাপ জিতে নিলো পাকিস্তানের ছেলেরা। সাব্বির লাফ দিয়ে উঠলো।
- ইয়া-য়া-আ আ আ …. …. !! জিত্যা গেছি!!!
- ইয়েসসস!!
বড় ভাইয়া জমে থাকা নিঃশ্বাস ছাড়ে। এরপর উঠে গিয়ে টেলিফোনের ডায়াল ঘোড়াতে শুরু করে। বাজি জিতেছে সে।
আশপাশের বিল্ডিং থেকেও সমমানের আওয়াজ ভেসে আসে। মুহুর্তে চারপাশ একটা নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো!
শবে বরাতের রাতের মতোন পটকার আওয়াজও ভেসে এলো। সাব্বির দৌড়ে যায় বারান্দায়। আনন্দ মিছিল নেমেছে পথে। এলাকার শত শত ছেলেপেলে নেমে এসেছে পথে। চিৎকার করছে। পতাকা ওড়াচ্ছে। শ্লোগান দিচ্ছে।
“… … পাকিস্তান জিন্দাবাদ!!”
“পাকিস্তান জিন্দাবাদ… … !!”
- আব্বু এইদিকে আসো দেখে যাও।
সাব্বির বারান্দা থেকে চিৎকার দেয়, মিছিল হচ্ছে!! সবাই বারান্দায় হাজির হয়। গোটা রাস্তা সবুজ সাদা পতাকায় ছেয়ে গেছে। সাথে সেই শ্লোগান। রাতের নিস্তব্ধতা খান খান হয়ে যায় সেই মিছিলের শ্লোগানে। একটু পরে মিছিল দৃষ্টির বাইরে চলে যায়। সাব্বির ঘরে এসে প্লেটে পরে থাকা গোটা কতক চিপস তুলে নেয়। কচর মচর করতে করতে আবার যায় বারান্দায়।
দুই.
রাত আটটার সময় সবাই আবার টিভির সামনে। ইমরান খানের গর্বিত মুখটা নিশ্চই হেডলাইন হবে। হাতে থাকবে ক্রিস্টালের ট্রফি। ইনজামাম ছেলেটার ব্যাটিং ও একটু দেখাতে পারে। অতোটুকুন ছেলে। কি সাংঘাতিক ব্যাটিংটাই না করলো! সবাই আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করে। তখনও এদিক সেদিক থেকে আওয়াজ ভেসে আসে --
“… … পাকিস্তান জিন্দাবাদ
… … …”
খবরের ঐ অংশটুকু শুনে সবাই তড়িঘড়ি উঠে যায় আবার বারান্দায়। মিছিল দেখতে। ঢাকা শহরে আজ আনন্দের বান ডেকেছে। বড় ভাইয়া ফোনে কথা বলছে কার সাথে যেন। ড্রইং রুমের নিঃসঙ্গ টিভি থেকে তখনও হাল্কাভাবে খবরের শব্দ ভেসে আসে,
“আজ ভয়াল ২৫ শে মার্চ। ১৯৭১ সালের এই রাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী অতর্কীতে ঝাঁপিয়ে পরে নিরস্ত্র বাঙালীর ওপর … …
… নিরঙ্কুশ জয় সত্বেও পাকিস্তানী বাহিনী ক্ষমতা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে ….”
মন্তব্য
আপনার ঈশপ সিরিজটা বেশ জমে উঠেছে। চালিয়ে যান। অনেকই আছে পাকিস্তানী খেলোয়ারেদর খেলা পছন্দ করেন বলে পাকিস্তান সাপোর্ট করেন এবং সেটা করতেই পারেন। পাকিস্তান দলে অনেক ভালো ভালো ক্রিকেট প্রতিভা ছিলো ,এখনো আছে এবং তাদের প্রতি আমার পূর্ণ সম্মান রয়েছে। কিন্তু ধিক্ তাদের যারা পাকিস্তানকে ভালোবাসেন বলে তাদের ক্রিকেট সমর্থন করেন .. যারা পাকিস্তান জিতলে পাকিস্তান এর পতাকা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরি করেন .. যারা নিজ দেশে বসে Marry me Afridi! ব্যনার নিয়ে খেলা দেখতে যান।
এই অচল যুক্তি আর কতো শুনবো! খেলা ভালো লাগাই যদি সমর্থনের প্রধান কারণ হয়, তবে তো সবার আগে হতে হয় অস্ট্রেলিয়ার সাপোর্টার!
আসলে সমর্থন ব্যাপারটি আসে মনের ভেতর থেকে। আর তাই প্রিয় দল খারাপ খেললেও সমর্থন অটুট থাকে। গত এক দশকে পাকিরা কী এমন পারফর্ম করেছে? কিন্তু বঙ্গদেশে তো বেড়েই চলেছে তাদের ভক্তের সংখ্যা এবং উচ্চকণ্ঠ সমর্থন!
@ লুৎফুল আরেফীন
দুর্দান্ত এক লেখা। ২৫শে মার্চের রাতে "বাঙালিদের" এই পাকি-প্রশস্তি আমার মনে কাঁটা হয়ে বিঁধে আছে দীর্ঘদিন যাবত।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
ঈশপের গল্পের শেষে একটা করে শিক্ষামূলক পর্যবেক্ষণ থাকতো। আমি এখানেও সেরকম করতে গিয়ে করিনি। এই গল্পটার জন্য নির্ধারিত টিকাগুলো ছিল:
১. খেলাধূলা আর রাজনীতি এক করা ঠিক নয়।
২. ১৯৭১ আর ১৯৯২ এর ২৫ শে মার্চ এর মাঝে অনেক ফারাক।
৩. অতীতকে আঁকড়ে ধরে বাঁচা যায় না।
হা হা হা হা ... এই উপহাস আর কতোদিন?
আমি শুধু ভাবি, প্রতি ঘরে পাকিদের দ্বারা ধর্ষিত অন্তত ১জন করে মা অথবা বোন থাকা দরকার ছিল; হলে এতো দ্রুত হয়তো সব ভুলতাম না!!
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
মন্তব্যে (বিপ্লব)
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
পাকিস্তান যত ভাল করুক আমার থেকে কখনো এই জাতের প্রতি সাপোর্ট আসে না, একটা তীব্র ঘৃণায় আমার মুখ তেতো হয়ে যায় !
- খেকশিয়াল
এই তেতো ভাবটা ধরে রাখুন পরের প্রজন্মের জন্য। যথেষ্ট তেতো কিছু হাতে থাকা ভালো। নইলে সব হারিয়ে যাবে আমাদের।
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
চমৎকার লিখেছেন। খুব ভালো লাগলো।
- শামীম হক
ধন্যবাদ শামীম।
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
আপনার ঈশপের গল্পগুলো দারুন। চালিয়ে যান।
৯২ তে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলা শুরু করেনি। কিন্তু শুরু করার পরেও আমি পরিচিত অনেকের মধ্যে দেখেছি বাংলাদেশের খেলার বদলে এখনো পাকিস্তানের খেলার প্রতি বেশি দরদ। বাংলাদেশের খেলা তাদের টানে না। তাদের জন্য আমার সত্যিই করুণা হয়।
---------------------------
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি।
____________________________
শেখ ফেরদৌস শামস ভাস্কর
"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি।"
আমি অনেককে দেখেছি বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের খেলা চলাকালীন খারাপ পারফরমেন্সের জন্য তাদেরকে "কুত্তার বাচ্চা" বলে গালি দিতে।
এটা কতোখানি আবেগের যন্ত্রণা সেটা নিজেও বুঝি যখন ওরা খারাপ খেলে। সহ্য হয় না।
আমি বলি, এই গালাগালগুলোই থাকুক। তসবীহ্র দানায় ঝড় উঠুক। সারা মুখে লাল-সবুজের আঁকিবুকি নির্নিমেষে চেহারা মুছে ফেলুক। রান্নাঘরে পুড়ে কয়লা হোক সব্জ্বি।
আরোও ১০টা টেস্ট ইনিঙস ব্যবধানে হারুক বাংলাদেশ।
তবু ... ...
এদেশ থেকে শেষ পাকি সমর্থকটিও তার মন বদলাক। এতোদিনের ভুল মুছে যাক। আরেকটা মার্চ মন ভার করে ফেরত না যাক!
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
অসাধারণ লিখছেন। আপনার লেখাটা পড়ে নিজের একটা দুর্বল লেখার কথা মনে পড়ল। এইখানে আছে।
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
কৃতজ্ঞতা।
আপনার লেখাটা পড়লাম। এসব গল্প তো আমার মনে হয় বঙ্গসন্তানদের আজীবন শোনাতে হবে। তাতেও কাজ হবে কি না ... ...
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
- পাকিস্তানকে দলগত সাপোর্ট দেয়ার ব্যাপারে একবার কোথায় যেনো আলোচনা হয়েছিলো বেশ। ভালো খেলে, মুসলিম দেশ, এশিয়ার প্রতিনিধি- এইসব খোঁড়া যুক্তিদেনেওয়ালারা বেশ শামিল হয়েছিলো ওখানে।
আমার কাছে মনে হয় ব্যাপারটা অন্য রকম। অন্তত ক্রিকেটে যারা পাকিস্তানকে সাপোর্ট করে তাদের ক্রিকেটীয় জ্ঞান নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ হয় (মানি ছোট মুখে বড় কথা হয়ে যায়, তথাপিও)। খেলার জন্য যদি কাউকে সাপোর্ট করতে হয় তাহলে সেটা পাবে দক্ষিন আফ্রিকা কিংবা কেনিয়া। একটা সময় (হোয়াটমোর আমলের) জিম্বাবুয়ে ছিলো সেই সাপোর্ট পাওয়ার মতো, কিন্তু আমার মনে হয় না খেলা বুঝে সাপোর্ট করা পাকিস্তান প্রেমিরা সেটা করেছে।
ক্রিকেট নিয়ে (সাপোর্টিঙের) কথা হলে সেটা ক্রিকেটেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিৎ। মুসলিম-এশিয়া এইসব সাবক্রাইটেরিয়া না টানাই ভালো। কারণ তখন লোকজন অন্য কথা বলে ফেলতে পারে!
সেইদিনটা যে ২৫ মার্চ ছিলো, আরেফীন কে ধন্যবাদ সেটা মনে করিয়ে দেবার জন্য।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এতো কথা তো বুঝি না; আমার মনে হয় যেসব বাঙালি আবেগ দিয়েই খেলা বিচার করেন তাদের পাকি-বিরোধি আবেগগুলো যথেষ্ট শক্তিশালী কেন নয় যে তা' দিয়ে একটা কৃকেট দলের প্রতি ঘৃণা জাগানো যায় না?!!
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
বাঙালি ? কাদের বলছেন বাঙালি ? কখনো না ! কোনদিন হবার চেষ্টা করবে কিনা জানি না।
- খেকশিয়াল
যারা পাকিস্তানি ক্রিকেট দলরে সাহায্য করে তাদের অনেক বড় একটা অংশ আসলে মনে প্রাণেই পাকিস্তানরে সাপোর্ট করে। বেশিরভাগকেই ধর্মের মিথ্যা দোহাই দিয়ে পাকিস্তানপন্থী করা হইছে।
আরেকদল আছে যার বেশিরভাগই কিশোরী বালিকা। পাকিস্তানি তরুণদের দেইখা যারা আকৃষ্ঠ হয়। শহীদ আফ্রিদীরে কয় মেরি মি আর আতিফ আসলামের গানে হুমড়ি খায়া পরে।
উফ... কেমনে যে পারে!!!
আল্লাহ্ এদেরে সুবুদ্ধি দেউক... আমিন।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমীন!
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
আতিফ আসলাম কোনাদম?
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
আমিও চিনতাম না বস... পরে শুনলাম যে তেনারে না চিইনা নাকি আমি পাপাইছি... উনি নাকি এই সময়ে সবচায়া জোশ গান গায়... পত্রিকাতে পড়লাম বিপাশা বসু নাকি তার গানের প্রেমেই পইরা গেছে... তারপর সিদ্ধান্ত নিছি আমি আতিফ আসলামের একটা গান শুনুম... কিন্তু এখনও কামিয়াব হইতে পারি নাই। উনি পাকিস্তানি গায়ক। জাল নামে সম্ভবত তার একটা ব্যান্ড আছে। হিন্দী সিনেমার হাল কালের জনপ্রিয় গায়ক।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
খাইছে! বিপাশাও পাঙ্খা! তাতে সমস্যা নাই। বিপাশারে আমার পছন্দ না।
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
গুরু, আপনে মিয়া আসলেই গুরু
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
পাকিস্তান নামটা শুনলেই কেন জানি আমার একটা বমি বমি ভাব হয়।
আমাদের আইইউটিতে আমাদের সাথে পাকিস্তানিরাও আছে। মাঝে মধ্যে কাউকে কাউকে দেখি পাকিস্তানি দোস্তদের সাথে হিন্দী/ উর্দুতে কথা বলার চেষ্টা করছে।
রাগে তখন আমার গা জ্বালা শুরু করে।
আপনাকে ধন্যবাদ- অসাধারণ একটা লেখার জন্য।
---------------------------------
চোখের পাতায় হাত রেখে ওরা আমাকে স্বপ্ন দেখার যন্ত্রণা দেয়।
কি আর বলবো ... ...
আপনাকেও ধন্যবাদ।
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
সঠিক সময়ে একটা অসাধারণ লেখা দিয়ে বাঙ্গালি কে খোচাঁ দিলেন!
দুর্দান্ত হয়েছে।
ধন্যবাদ।
লিখি নিজের ক্ষুধা মেটানোর জন্য।
কখোনও সেটা করতে গিয়েই খোঁচাখুঁচিটা হয়ে যায়।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
ইন্ডিয়ান মিউজিক চ্যানেলে আতিফ আসলামের গান দেখা ও শোনা যায়।
এই বান্দাকে অবশ্য আমিও চিনতাম না। যাহোক এবারে জানলাম।
বিদেশে পড়াশুনা করতে এসে আমিও অনেক পাকিস্তানীদের সাথে পরিচিত হয়েছি। তবে উর্দু বলার ব্যাপারে সর্বদা আমার অজ্ঞতা জোড়েসোড়ে জাহির করেছি। ওদের অনেকের ধারণা, আমরা জন্মগতভাবে ঐ ভাষায় কথা বলা শিখি।
এই ধারণা ইন্ডিয়ানদের আরোও বদ্ধমূল। এর অবশ্য কারণও আছে বলেই মনে হয়। আমরা (মূলতঃ মা বোনেরা ) যেভাবে ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোর প্রতি আসক্ত তাতে সেটা আর না ভাবার উপায় কৈ?!!
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
একবার এক পাকিস্তানী আমাদের সচলের এক ব্লগার (অধুনা অনিয়মিত) আরশাদ রহমানকে উর্দূতে কিছু একটা জিজ্ঞেস করেছিলো। অবশ্যই এই ধারণার বশবর্তী হয়ে যে আমরা উদূ তো জানবোই! প্রবল পাকি-বিদ্বেষী আরশাদের নির্বিকার মুখের উত্তর, I don't speak Spanish!
উর্দূ-হিন্দি আমি সামান্য বুঝি, যদিও বলতে পারি না। কিন্তু একটু যে বুঝি তা-ও সম্পূর্ণ অস্বীকার করে যাই ভারতীয় বা পাকিস্তানীদের কাছে। বিশেষ করে তাদের ওই ধারণাটির ইঙ্গিত পেলে যে আমরা তো তাদের ভাষা জানবোই! যদি এইটুকু জিজ্ঞেস করার সৌজন্য কেউ দেখায় যে তাদের ভাষা আমি বুঝি কি না, তাহলে অন্য কথা। অথচ ওই সৌজন্য দেখানোর মানুষ খুব বেশি পাইনি।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আরশাদ ভাইয়ের জবাবে (বিপ্লব)!
শিখে রাখলাম, এরপর থেকে এমন প্রশ্নের এমন জবাবই দেবো।
আপনাকে ধন্যবাদ জুবায়ের ভাই।
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
এই সিরিজটা ভূমিকম্প-জলোচ্ছ্বাস-ঘূর্ণিঝড়ের মুখেও নিয়মিত চালানোর তীব্র দাবি জানাচ্ছি।
সুজনভাই, কৃকেট বানানটা দেখলেই মনটার ভেতরে কী যেন ঘাই মারে ... মনে পড়ে যায় সাপ্তাহিক কচুবনের কথা, ক্রিকেট দেখলে একটু শান্তি শান্তি লাগে আবার :D।
হাঁটুপানির জলদস্যু
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। দাবী রক্ষা করার আপ্রান চেষ্টা করবো।
দুঃখিত হিমু। আসলেই লেখাটা ঠিক হয় নাই। কবে কে যেন বলেছিল এভাবে লেখা উচিৎ, সেই থেকে লেখার চেষ্টা।
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
লেখাটা দুর্দান্ত হয়েছে। তাও বাঙালি যদি কিছু শেখে!
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
সেই দিনটা ২৫ শে মার্চ ছিলো।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
অসম্ভব ভালো লাগলো লেখাটা। সেটা যে ২৫শে মার্চ ছিলো, তা হয়তো তখন বুঝতামও না।
তবে দেশের বাইরে এসে হিন্দি/উর্দু সমস্যায় অহরহই পড়তে হয়েছে। পাকিস্তানী কম হলেও এখানে প্রচুর ইন্ডিয়ান আছে। আর চেহারা, চুল ইত্যাদি দেখেই তারা শিওর হয়ে যায় যে আমিও ইন্ডিয়ান। শুরুতেই জিজ্ঞাসা করে হিন্দিতে 'কাহাসে হো' টাইপের প্রশ্ন, মানে আমি ইন্ডিয়ার কোন পার্ট থেকে! প্রশ্ন বুঝলেও বলি 'সরি?', তখন তারা ইংরেজীতে বলে ফ্রম হুইচ পার্ট ইউ আর?; তখনও তারা শিওর যে আমি ইন্ডিয়ান ই! আজব! আমার দেশের পরিচয় দেবার পর বলে 'you understand hindi na?'। আমার মুখের নির্বিকার NO শুনে তারা কিছুটা হতাশ ও অবাক হয়। যতদুর মনে পড়ে ফেসবুকেও একটা গ্রুপ আছে এই সংক্রান্ত। তাতে বেশ বুঝতে পারি যে এই সমস্যা বিশ্বজুড়েই, সব ইন্ডিয়ানই ধরে নেয় যে বাংলাদেশীরা হিন্দিতে কথা বলে বা বোঝে। বড়ই হতাশার কথা।
ধন্যবাদ আরেফীন ভাই, চমৎকার লেখার জন্য।
দিনটা যে ২৫শে মার্চ ছিল তা জানা ছিল না।
মনটা খারাপ হয়ে গেল।
________________________________
তবু ধুলোর সাথে মিশে যাওয়া মানা
ব্যাপক লজ্জা পাইলাম, নিজের উপরে ঘিন্নাও লাগল
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
আপনার পক্ষেই সম্ভব এইরকম লেখার।
অসাধারণ।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
'৯২ সালে ক্লাস টু তে পড়তাম। কোন কিছুই মনে নাই। কেন এরকম হলো?? .......... মানি না, মানি না!!!!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
নতুন মন্তব্য করুন