শিলাদের বাসায় আজ সবার মুখে গুমোট অন্ধকার।
শিলার মা থমথমে মুখে কাজ করে যাচ্ছেন সেই বিকেল থেকে। শিলা বাসায় ফেরার পর থেকেই এ অবস্থা।
অফিস থেকে ওর বাবা এসেছেন একটু আগে। মা বাবার পিছু পিছু বেডরুমে গেলেন, ফিসফিসিয়ে কিছু বললেন। সেই থেকে গম্ভীর তিনিও।
শিলার ছোট ভাইটার বয়স ৮ কিংবা ৯। সবকিছু না বুঝলেও বুঝতে পারে সবার ভীষণ মন খারাপ কিছু একটা নিয়ে।
শিলা আসার পর থেকেই বালিশে মুখ গুঁজে বিছানায় উপুর হয়ে আছে। মা এসে ডেকে গেছেন ৩ বার। মাথায় হাত বুলিয়েছেন। সেই হাতের স্পর্শে শিলার প্রতিবারই ডুকরে উঠেছে। ও যে মুখ গুঁজে আসলে কাঁদছিল, সেটা তখনই বোঝা গেছে। মা ও নীরবে চোখের পানি মুছেছেন মেয়ের সাথে। কিছু বলেন নাই।
শিলার বাবার মুখটা গম্ভীর হয়েই থাকলো সারাক্ষণ।
অফিস থেকে ফিরে উনি প্রায়ই বারান্দায় বসে চা খান।
চা খাওয়াটা ওনার অভ্যেস নয়। তবু খান। না খেলে শিলার মা বলেন, এখনও গাঁয়ের লোকই রয়ে গেলে! একটু শহুরে হও। শহরের লোকেরা বিকেলে একটু চা খায়।
সেই থেকে নতুন অভ্যেস গড়ার চেষ্টা। আজ সেটা হলো না। চা অবশ্য দেওয়া হয়েছে। চেয়ারের পাশে ছোট্ট টেবিলে সেটা ঠান্ডা হচ্ছে। তার চেয়েও ঠান্ডা মন নিয়ে উনি পাশে বসা।
একবার দু’বার উঠে গিয়েছেন।
কিন্তু মেয়ের ঘরের দরজা পর্যন্ত। ওর বেশী আগাতে পারেন নাই। একটু সান্ত্বনা দিতে ইচ্ছে করে।
মেয়েটা খুব কাঁদছে। ও কখনই এরকম কাঁদে না।
শুধু দাদী মারা যাবার পরে এমন কেঁদেছিল মেয়েটা।
এম্নিতে সারাক্ষণ হাসি মুখ। সেই মেয়ে কি না আজ এভাবে কাঁদছে! কি বিচ্ছিরি ব্যাপার ঘটলো মেয়েটার সাথে! জাহান্নামে যাক কুলাঙ্গারগুলা!
শীলার মা সমস্ত কাজ গুছিয়ে এনেছেন। কিন্তু আজ অবেলায় মেয়ের কলেজের ড্রেসটা ধুতে হবে। সাবানে গুলানো পানিতে জামাটা ডুবিয়ে রেখেছিলেন অনেক আগেই। এবারে হাত দিয়ে কচলাতে লাগলেন তিনি।
ছেলেটা এসময় কাঁদতে কাঁদতে এসে পাশে দাঁড়ালো।
: কি হইছে? কাঁদিস ক্যান?
: বাবা থাপ্পর দিছে।
: ক্যানো?
: জানি না। আমি খালি পেপারটা দেখাতে গেছিলাম।
মহিলা ছেলের হাতের পেপারটার দিকে একবার তাকান।
: থাক তোমার এইসব দেখাতে হবে না। যাও ঘরে গিয়ে ঘুমাও। রাতে টিচার আসবে।
… “আইসিসি ট্রফি টাইগারদের! গোটা ঢাকা উৎসবের নগরে পরিণত।
জায়গায় জায়গায় বিজয় মিছিল। রঙের উৎসব”।
জামাটা অনেক ঘষেও কাজ হচ্ছে না। ঠিক বুকের জায়গাটায় লাল রঙের একটা হাতের ছাপ। রাক্ষসের থাবার মতোন জ্বলজ্বলে!
অনেক ঘষেও কি উঠবে এই দাগ?
মন্তব্য
- খারাপ লাগলো।
লেখাটা না, ঘটনাটা।
উৎসাহের আতিশয্যে কখনো আমরা ভেতরের বর্বরতাটাকে বের করে দিই। আমরা বৃটিশের হাত ধরে সেই কবে স্যুট-টাই পরতে শিখলেও কবে যে সৌজন্যতাটা আয়ত্ত করবো, সেটা বোধহয় কেউই জানি না।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঘটনাগুলো মনে দাগ কেটেছিল খুব। শেয়ার করলাম।
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
নির্দোষ আনন্দ আমার ধাতে সয়না । সেইদিন এরকম ঘটনা অনেকগুলো ঘটেছিল ।
----x----
...অথবা সময় ছিলো;আমারই অস্তিত্ব ছিলোনা
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
হুমমম!
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
সিরিজটার ভক্ত হয়ে উঠেছি আমি।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
নিঃস্বার্থ বন্ধুত্ব দেবো। কিন্তু কী পাবো তার বদলে?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
ধন্যবাদ
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
সেইদিন এরকম অনেক ঘটনা ঘটেছিল, ভয়াবহ সব ঘটনা ।
-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
কষ্টের গল্প! ভাল লাগলো। যদিও আমরা পচতিদিনই এসব কষ্টের শিকার হই।
**********************************
যাহা বলিব সত্য বলিব
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
@ খেকশিয়াল ও তীরু দা
ধন্যবাদ আপনাদের। কথা ঠিক। সেদিন এবং আজও এরকমের ঘটনা ঘটেই চলেছে।
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
মনুষ্যত্ব প্রমাণের চেয়ে আমাদের পশুত্ব প্রমানে এত আগ্রহ?
পশুত্ব নয়। সবটাই মনুষ্যত্ব। অন্ততঃ আমি সেরকমই বলি। শুধু শুধু পশুদের আমরা দোষারপ করি।
পশুদেরটা মানুষে করে না। করতে পারেও না। মানোষ যেটা করে সেটা তারটাই করে।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
অসাধারণ!
তবে আমার গল্পের মধ্যে ৩ কিংবা ৮ এর চেয়ে তিন কিংবা আট দেখতে বেশি আরাম লাগে।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
অলসতা আর কারে কয়!
ক্লাস নোট লেখা হাতে আজ এই সব গল্প লিখি, বুঝতেই পারেন!
এরপর থেকে মনে রাখবো।
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
থ্যাংকু টু দি পাওয়ার ইনফিনিটি!
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
sigh !
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
uufffFFF .....
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
লাইন দুটো পড়ে বুকে ধক করে উঠল। দুইবার পড়লাম। দুইবারই একই রকম...
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
আমার লিখতে গিয়ে ঐরকম হচ্ছিল! যাক, পাঠকের সাথে আবেগের একটা যোগসূত্র তৈরি করতে পারছি।
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
Shootti e ridoy k suye dey amon!
Tomar oi kothatar shathe amio ekmot, "poshutto noy, shobtai monushshtto, Amra ojothai poshu k galmondo kori",
Sorry , ami bangla type korte parina, so-------!
nice writing![restrict]
নতুন মন্তব্য করুন