আমাদের বাড়িতে কখনও মুরগী ছাড়া অন্য কোনও হেভিওয়েট গবাদি পশু পালন হয় নাই। বাড়িতে এদের আগমন এবং অবস্থান বরাবর খুব ক্ষণস্থায়ী ছিল। ঈদের কদিন আগে একটা গরু ঢুকতো বাসায়। সাথে হয়তো কখনও সখনও একটা ছাগল (না খাশি, শিওর নই)। ফলশ্রুতিতে বেচারা নবাগত পশুকে বাড়িতে প্রবেশের পর থেকেই আমাদের আন্ডা বাচ্চাদের অপরিশোধিত কৌতুহলজনিত অত্যাচার খানিকটা করে সইতে হতো। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, কারো ছুঁড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার্থে সময় অসময়ে পশুর পিঠে উঠে ‘সুপারম্যানের সাথে আমার খানিক মিল আছে’ এইটা প্রমান করা। তারপর ‘আমি একবারও খাওয়াই নাই’ বলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খাইয়ে ছাগল বা গরুর দফা রফা করা। অবলা পশুও কেমনে জানি বুঝে যেতো! - জীবনের শেষ খাবার ধরে নিয়ে সমস্ত খাবার হালুম হুলুম করে খেয়ে ক্লান্ত হয়ে যেতো!
সেই সময়েই লক্ষ করেছি, ছাগল একবার যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে, সে আগাবে না, তাহলে তাকে নাড়ানোর যো ছিল না! সামনের দুটো পা মাটিতে গেঁথে দিয়ে সে একরকমের প্রতিরোধ গড়ে তুলতো যা লঙ্ঘন করার সামর্থ স্রেফ গুটিকতক কিশোরের ছিল। বড় হয়ে তাদের থেকেই আমরা টিফিন পিরিয়ডে খাবার লুকিয়ে রাখতাম!
ছাগলের এই আচরণের সাথে আমার একটা আচরণ খুব মিলতো ছোটবেলায় – নিউ মার্কেট বা এলিফ্যান্ট রোডের কোনও খেলনার দোকানের পাশ দিয়ে যাবার সময় এমন কোনও দিন ছিলো না যে, কোনও একটা খেলনা আমার মারাত্মক রকমের পছন্দ হয়ে যেতো না! আর পছন্দ হওয়া মাত্রই আমি সেটা ‘না কিনে সরবো না’ সূচক ভাব নিয়ে দোকানের সামনে শুয়ে পড়তাম। অন্যান্য যেকোনও অবস্থানের চেয়ে এইটাই যে বেশী কার্যকর এবং দ্রুত ফল প্রাপ্তিতে সহায়ক সেটা তদ্দিনে আমি জেনে গিয়েছিলাম। নিরুপায় হয়ে বাবা আমাকে টেনে নিয়ে চলতেন আর আমি ঐ ছাগলের মতোই সম্বল মাত্র দুখানা পা সামনে বাড়িয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতাম। সেই বাধা এড়াতে বাবা আমাকে একটু উঁচু করে ঝুলিয়ে নিয়ে দ্রুত সরে পরতেন। নইলে অল্প সময়েই দোকানদার ব্যাটা পৃথিবীর সবচাইতে দয়ালু লোকটির মতো নরম গলায় বাবাকে বোঝাতে শুরু করতো -- স্যার জিনিসটা নিতে পারেন। খুবই টেকসই জিনিস। অনেকদিন খেলতে পারবে! দামও কম! আমি অবাক হতাম – নিজের বাবা যেটা বোঝে না, সেটা এই অচেনা লোকটা কি সুন্দর বুঝে ফেলছে!
সেই সময় মাঝে মাঝে মায়ের রিকমেন্ডেশনে খেলনা কেনা হতো। বাড়িতে এসে পরের দিনই খেলনার ভেতরের কলকব্জা বাসার বিভিন্ন জায়গাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যেতো। আমি রান্না ঘরে গিয়ে মাকে আমার নতুন আবিষ্কৃত ফ্যানের বাতাস দিতে দিতে বলতাম,
: দেখছো আম্মু আমি ফ্যান বানাইছি!
: বাহ্! সুন্দর তো!
: হু। তোমার আর কিচেনে কাজ করার সময় গরম লাগবে না
: কিভাবে বানালি?
: একদম সোজা! মোটোরের সাথে মেলা থেকে আনা চড়কি লাগায়া দিছি, ২ টা ব্যাটারী খালি লাগে।
: মোটর কই পেলি?
: কালকে গাড়িটা কিনলাম না!? ঐটা থেকে … …
এই পর্যন্ত শোনার পরে মা বাকরুদ্ধ হয়ে আমার দিকে কটমট করে চেয়ে রইতেন আর আমি নিজের উদ্ভাবনী শক্তির দমকে নিজেই বিস্মিত ও আনন্দিত হয়ে অপেক্ষা করতাম কখন চাচা বা মামা গোত্রের কেউ বাড়িতে আসবে। বাবা কিংবা মা না বুঝলেও ওরা এই সমস্ত আবিষ্কারের মর্মটা বোঝে!
বাড়িতে চালানো আমার ছোট-বড় তান্ডবের জবাবে অতিষ্ট হয়ে কখনও সখনও মা হাতের কাছে সহজপ্রাপ্য জিনিসপত্র তুলেই ঘাড়ে-পিঠে বসিয়ে দিতেন ২/৪ ঘা। আর আমি ঠোট ফুলিয়ে অপেক্ষা করতাম কখন বাবা আসবে। বাবা আসামাত্র অভিযোগলিপি পেশ করা হতো। এতো ছোট বাচ্চার গায়ে হাত তোলা নিয়ে মাকে বাবা যখন তিরষ্কার করতেন, তখনই কেবল সমস্ত কষ্ট লোপ পেতো। এরপর আরেকটু বড় হয়ে যখন অক্ষর জ্ঞান আর আঁকিবুকি শিখে অধিকতর শিক্ষিত হলাম, তখন মায়ের বিপদ বৃদ্ধি পেলো! সারাদিন মা কিভাবে আমাকে আর আপুকে শাসন করেছে তার সচিত্র বর্ণনা এঁকে ক্যাপশন সমেত বাবার সামনে পেশ করা শুরু হলো। সচিত্র সেই সব প্রতিবেদনের ভয়াবহতা দেখে বাবা আরও ক্রুদ্ধ স্বরে মাকে শাসন করতেন। আমি আরো বেশি করে খুশি হতাম।
বড় হতে হতে এই ব্যাপারটা উল্টে যেতে লাগলো। বাবাকে ভয় পেতে শুরু করার পাশাপাশি মায়ের ওপর আস্থা বৃদ্ধি ঘটতে লাগলো। বাবা, মা দুজনেই বন্ধুর মতোই ছিলেন। সারাজীবন। তবে বাবার রাগের কারণে, অনেক কিছুই সরাসরি না বলে মায়ের মাধ্যেম জানাতে অভ্যস্ত হয়ে পরি ধীরে ধীরে। আর মা সেই ছোটবেলার খেলনা কেনার মতোন করেই বাবার কাছে আমাদের হয়ে রিকমেন্ডেশন করতেন।
মা কে নিয়ে অনেক লেখা আসছে। আসবে। আমি অনেক চেয়েও এই স্রোতে কখনোই গা ভাসাতে পারিনি। মা আমার কাছে একটা প্রিয় বিষয়। অথচ লিখতে গেলে কেমন চিন্তাশক্তি খর্ব হয়ে যায়। কি-বোর্ডের ওপর আঙ্গুলগুলো অসার হয়ে পরে। কি লিখবো কি লিখবো ভাব নিয়ে কখনও আমি কিছু লিখি না। নিজেকে লেখার জন্য খোঁচাই না। অপেক্ষা করি যতোক্ষন না লেখাটাই আমাকে খোঁচাতে শুরু করে।
গত বছর মার্চের দিকে দেশে যাই ৪ সপ্তাহের জন্য। যাওয়া এবং থাকার পুরো পরিকল্পনাটা সবার কাছেই আদ্যোপান্ত গোপন রাখি। সবাইকে সারপ্রাইজ দেবো বলে দেশের কাউকে জানাই না। এমনকি রওনা হবার আগের দিনেও ফোনে কথা হয়েছে দেশে বাবা মার সাথে। পরের দিন যখন দেশে ফিরে বেল বাজিয়ে বাড়ির দরোজাতে অপেক্ষা করছি তখন বুকের ভেতরটা ধকধক করছিল। গেট খুলে দেয় পুরোনো এবং সুপ্রিয় রাশিদা বুয়া। আমাদের দেখে জায়গাতে দাঁড়িয়েই চিৎকার করে খবরটা চাউর করে দিলো সে।
এরপরের দৃশ্যগুলো অনেকটা দুঃসময়ের সম্বলের মতোন। যখন মন খুব খারাপ থাকে তখন হয়তো ঐ দিনটির কথা স্মরণ করি। মন ভালো হয়ে যায়। একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে দেখে কতোটা আনন্দ পেতে পারে তার বর্ণনা সবচেয়ে ভালো দিতে পারবে কবি’রা। আমি সামান্য মূদ্রাক্ষরিক সেই বর্ণনায় যাবো না। শুধু মায়ের মুখটা মনে পরে। কথায় কথায় কেঁদে ফেলাটা আমার সমস্যা; যেটা আমি বাবার কাছ থেকে পেয়েছি। আমার মা সেরকম নন। উনি সহসা কাঁদেন না। আমার নানুর স্বভাবও খানিকটা ওরকম। নানুর থেকেই বোধ করি মা সেটা পেয়েছেন। মনে আছে ভারত সফরে গিয়ে তাজমহল দেখতে একদিনের জন্য আগ্রাতে গিয়েছিলাম। সপ্ত-আশ্চর্য প্রথমবার চোখের সামনে দেখে বাকরুদ্ধ আমি যখন গোপনে অশ্রু মুছছি, পাশ থেকে নানুকে তখন বলতে শুনলাম, ‘ও এইটাই তাজমহল। ভালোই তো। কি ঝামেলা করে না জানি এইসব বানাইছে লোকজন’!
সেই নানুর মেয়ে আমার মা। সুতরাং ধরেই নিয়েছিলাম মা অবাক হবেন। তবে কাঁদবেন না, আর বাবা কেঁদে কেটে একাকার করবেন। কিন্তু ঘটনা ঘটলো ঠিক উল্টো। মা ক্লান্ত শরীরে ঘুমিয়ে ছিলেন। বুয়ার চিৎকারে ছুটে আসলেন দরোজার দিকে। কিছু বলেছিলেন কি না স্পষ্ট মনে নেই, তবে বলার চেষ্টা করছিলেন অনেক কিছুই। আমাকে আর আমার স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কেঁদে ফেললেন। আমি নিজেও কাঁদলাম। ঠোটে ঠোট চেপে বা চোয়াল শক্ত করে – কোনও কৌশলেই চোখের বন্যাকে রুখতে পারলাম না!
হায়রে আমার মা! তার সারাদিনের ব্যস্ততার বর্ণনাটা অহেতুক দেবো না। সবার মায়ের সাথে সেগুলোর অনেক মিল। পৌণঃপূণিক। ১৯৯৬ এর কথা। জাপানের মনোবুশো স্কলারশিপের লিখিত পরীক্ষায় শীর্ষ তিনজনের মধ্যে ঢুকে গেলাম। শুরু হলো চুরান্ত বাছাইয়ের জন্য অপেক্ষা। ৩ মাস পরে জানলাম আমি নেই সেখানে। ১ম দুজন যাচ্ছে জাপানে। মনটা খারাপ হয়েছিল খুব। বাসার সবারই হয়েছিল। শুধু মায়ের মুখে দেখলাম স্বস্তি। আমার এই ব্যর্থতা মাকে কেন স্বস্তি দিলো সেটা সেদিন বুঝিনি। তারও ৫ বছর পরে জার্মানীতে আবেদন করে মাকে বললাম, দোয়া করো। মা হাসে। বলে, আমার দোয়াতে হবে না। আমার দোয়ার জন্যই তোর জাপান যাওয়া হয় নাই! সেদিনও খুব অবাক হয়েছিলাম। রাগও করেছিলাম। ‘তোমার জন্যই যাওয়া হবে না আমার’ বলে বিরক্ত হয়ে রুমে চলে গিয়েছিলাম।
এখন বিদেশে ৬ বছর কাটানোর পরে বুঝি সেদিন আসলে অবাক হবার মতোন কিছু করেন নাই আমার মা। ‘নিজের শরীরের একটা অংশ ছাড়া এতোগুলো দিন থাকা যায় না’ - এই সহজ কথাটা কে না আঁচ করতে পারে?! শুধু আমি পারিনি। আর পারিনি বলেই পা বাড়িয়েছিলাম এই নিরুদ্দেশের পথে! আজ আফসোস করি, সেদিন কেন দোয়া করলে না মা, তাহলে তো তোমার কোল ছেড়ে এতো দূরে এসে পরে থাকতে হয় না আমাকে!
পূনশ্চঃ লেখাটি ক'বছর আগের লেখা। দিনক্ষণগুলো সেইমতে মিলিয়ে নিতে হবে।
মন্তব্য
আপ্ নার লেখা ্পরে আগে সুধু হাস্ তাম...।।এইটা কি লিখলেন আপ নি???মনিটর অসপসট,কি বোরড অসাড়.....
হাবিব.
হায়রে মা!
পৃথিবীর সকল মায়ের জন্য নতজানু শ্রদ্ধা!
আচনার লেখার প্রথম আর শেষাংশ পুরা উল্টাপুল্টা। একটায় আপনি চ্রম উদ্ভাবনীসম্পন্ন ফাজিল আর আরেকটায় চোখ ভেজানোর প্রচেষ্টায় লিপ্ত। তবে সবমিলিয়ে বেশ লাগল।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
অন্য আরেফীন।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
ঝাপসা দেখছি সবকিছু।
- ধুরো মিয়া, ঠিক করে রাখছিলাম এই জাতীয় লেখা গুলো পড়বো না! আজ, এই একটু আগেই মা'কে তাঁর নাতনী সহ দেখলাম, লাইভ। আমার মা জানেও না আজকে কী দিন, তাঁর জানার দরকারও বোধহয় নাই। কারণ এই মহিলা নিশ্চই জানে, অক্ষরে কখনো তাঁকে প্রকাশ না করা এই আমি মনের কোণে ঠিকই বিশাল এক উপন্যাস বানিয়ে চলেছি তাঁকে নিয়ে...
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
সচলায়তনের সব লেখা পড়ার সময় হয়ে উঠছে না। পরীক্ষা চলছে তো, খুব ব্যস্ত। কিন্তু আপনার লেখাটা আগ্রহ নিয়ে পড়লাম। ভাল লাগল।
লেখাটির সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য হচ্ছে এর সারল্য। আপনি আপনার মনের কথাগুলো লিখেছেন। কোন ভণিতা এবং অলংকার ব্যবহার করেননি। তাই ভাল লাগল।
অনীক_ইকবাল
আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। মা দিবসটি আপনাদের জন্য আনন্দের হোক!
ধুর মিয়া ভাবছিলাম হাসির কিছু দিবেন, এখন তো মনিটরের লেখা চোখে পড়তেছেনা
অনেক কিছু লিখবো ভাবছিলাম কিন্তু পরে শুধু পাঁচ তারা।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
লিখতে লিখতে নিজেও কানছেন আর এখন আমাগোরেও কান্দাইলেন। আমিতো একটা লেখা শুরু কইরা শ্যাষ ই করতে পারলাম না। কেমনে লিখি মায়ের জন্য যে আবেগ, ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার কথা...কেমনে?
@প্রকৃতি/তানবীরা/মামুন,
আপনাদের যাবতীয় অনুভূতির ভাগীদার আমিও; কষ্ট নিয়েই লিখেছি। এই কষ্টটুকুই মায়ের সান্ত্বনা!
সবাইকে ধন্যবাদ।
লেখাটা পড়ে চোখ ভিজে গেল!
আপনার লেখা পড়ে হাসতে এসেছিলাম এখন মন, চোখ সব ভিজে গেল।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
আমি কিন্তু একটুও কাঁদিনি, চোখও ঝাপসা হয়নি , মনে হয় আমিও একটা হেভিওয়েট গবাদি পশু হয়ে যাচ্ছি। লেখাটা ছুঁয়ে গেলো খুব, হয়তো দীর্ঘদিন প্রবাসযাপন সিনড্রোম, আপনার মার মতো আমার মা'ও একসময় শুধু বলতেন ফিরে যাবার কথা, এখন বোধহয় হাল ছেড়ে দিয়েছেন।
হ্যাপি মাদারস ডে
.......................
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
অন্যরকম একটা লেখা। খুব মন ছুঁয়ে গেল।
বেদনায় এক ধরণের আনন্দ আছে । চরম বেদনার সাথে পরম আনন্দ এক হয়ে থাকে মিলেমিশে। যেমন মাতৃত্বের বেদনা। আমি পুরুষ মানুষ সে বেদনার আনন্দ আমার পক্ষে পাওয়া সম্ভব নয়। আমার পক্ষে যা সম্ভব তা ঐ মায়ের সাথে সন্তানের সম্পর্কের মহত্তকে ফুটিয়ে তুলে তার স্বাদ আস্বাদন করা। আর এই লেখাটিতে বোধ হয় সেই জিনিসটি ফুটে উঠেছে খুব স্পষ্ট ভাবে। আমার চোখ দিয়ে জল না এলেও কণ্ঠটি রোধ হয়ে এসেছিল লেখার শেষভাগে এসে। তখন আমার মনের বেদনাটি বেদনার রূপে আমার কাছে আসে নি, আনন্দের রূপ নিয়ে এসেছে। লেখাটি শেষ করে আমার মনে হয়েছে আমি পরিতৃপ্ত হয়েছি। আমি বোধ হয় বেদনার আনন্দ উপভোগ করতে পেরেছি।
সালাহউদদীন তপু
আপনার এই প্রচন্ড সুন্দর অনুভূতির বাহক হতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। অসম্ভব সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বলার ক্ষমতা রাখেন আপনি।
আপনার লেখা পড়েছি কি না মনে পরে না, এরপরে চোখে পরলে অবশ্যই পড়বো।
কেন যে পড়ি এসব লেখা
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
সেই।
কিন্তু, মর্মান্তিকভাবে আমরা সবাই মা থেকে কমবেশি দূরে থাকি!
কী খারাপ আর কী অভাগা আমরা!
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
খুব ছুঁয়ে গেল বস আপনার লেখাটা। কপাল্গুনে আমি মায়ের হাতে প্যাদানী খাবার পর প্রহর গুনতাম, বাবা আসার আগেই ঘুমিয়ে পড়তে পারব কিনা, কারন আম্মা আবার বাবা আসতেই উলটা বিচার দিত, তারপর ২য় রাউন্ডে প্যাদানী অথবা বকুনী খাওয়া লাগত।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
............
--------------------------------------------------
"সুন্দরের হাত থেকে ভিক্ষা নিতে বসেছে হৃদয়/
নদীতীরে, বৃক্ষমূলে, হেমন্তের পাতাঝরা ঘাসে..."
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
অদ্ভুত রকমের সুন্দর লেখা; আর কিছু বলার নেই!
:'(
মন খারাপ। ঃ(
কেউ সুজনভাইকে ধরেবেঁধে সচলায়তনে নিয়ে আসতে পারে না? এমন কত সব অসাধারণ সব লেখাই না জানি ওনার আস্তিনের ভাঁজে আটকে আছে। এই লেখাটাকে বিশেষণভূষিত করলাম না, বিশেষণখানাই লজ্জা পেয়ে যাবে...
ইস! চোখ দুটো বড়ই যন্ত্রণা দিচ্ছে আজকাল।
নতুন মন্তব্য করুন