বড়দের ঈশপের গল্প ৬: ফোনের অপর পার্শ্বের লোকটি

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি
লিখেছেন লুৎফুল আরেফীন (তারিখ: মঙ্গল, ১৬/০৪/২০১৩ - ১০:৪৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এক.

: হুজুর ঐ লোক আসছে।
: একজন মাত্র?
: জ্বী না হুজুর, চারজন আছে। দুই পরিবার। খুবই গরীব।
: আশেপাশের না তো? বুঝই তো।
: না না ... সেই একেবারে বর্ডার এলাকার লোক এরা। ওয়াজ শেষ হইবো, সাথে সাথে ট্রেনে তুলে দেব। পরের বেলাতেই শহরের বাইরে।
: ঠিক মতন সব বুঝাইছো তো ওনাদের? বিষয়টা সুন্দরভাবে বুঝানোর জরুরত আছে।
: জ্বী হুজুর। বুঝানো হইছে।
: আলহামদুলিল্লাহ! ... ... ... ... আচ্ছা ডাকো দেখি। দুইটা কথা বলি।

____________________________

: সবাই সালাম দেন হুজুরকে
: (আস্সালামু আলাইকুম হুজুর)
: ওয়ালাইকুম আস্সালাম। সবাই ভালো?
: (জ্বী ভালো)
: এই এদেরকে খাওয়া দাওয়া দিছো ঠিকমতন?
: হুজুর এনাদেরকে পেট ভরে খাওয়ানো হইছে।
: মাশ আল্লাহ!! পান দাও এদেরে। শুটকি খাইছেন তো ভাল কইরা? এই অঞ্চলের শুটকি হইল জগত সেরা।
: জ্বী হুজুর খাওয়া ভালো হইছে।
: মাশ আল্লাহ! সব আল্লা্হ পাক খাওয়ান। আমরা খাওয়াই না।
: হুজুর! আপনার বয়ান শুনে মনে বড় ভাল লাগে। মন কান্দে। পাপী মনে হয় নিজেরে।
: হুমমমম...পাপী তো আমরা সবাই রে বাবা। ভাই ভাই মারামারি কইরা দেশ ভাগ করলাম। জাহেলদের ভাই বানাইলাম। নাউজুবিল্লাহ! তাগুতের দেশে মুখ বুঝে থাকাটাই পাপ। এই পাপ কাউরে ছাড়বে না। তাগুতের প্রতিবাদ করা প্রত্যেক মুসলমানের উপরে ফরজ। আজকে আপনারা কি করবেন সেটা ঠিকমতন বুঝে নিছেন তো?
: (জ্বী হুজুর)
: মাশ আল্লাহ!! এই কাজ হচ্ছে ধর্মের জন্য। এটা কিন্তু ‘মিথ্যা’ না। যেই ‘মিথ্যা’য় ক্ষতি নাই সেটা মিথ্যা না। এগুলা সব আল্লাহ সোবহানাল্লাহ তায়ালা আপনাদের নামে ‘আমলে সালেহ’ হিসেবে লিখে রাখবেন। অতীত জীবনের গুনাহখাতা মাফ হবে ইনশাল্লাহ। আমি বলতেছি। আমার কথা বিশ্বাস হয় তো।
: কি যে বলেন হুজুর। আনার কথায় চোখে পানি আইসা পরে।
: উনি কে? আপনার পরিবার?
: জ্বী হুজুর। আমরা মোট দুই পরিবার আসছি।
: হুমম তাইলে চারজন, তাই তো? সন্তানাদি নাই?
: আছে। তারা কাজে আটকা। আসতে পারে নাই।
: ঠিক আছে। ইন্শাল্লাহ পরেরবার তাদেরে পাঠাবেন। তো আপনার নাম কি?
: আমার নাম হাই, আবদুল হাই .... ....
: এইইইই সারছে!!!!!! এই মিয়ারা কি শিখাইলা এনাদের?
: ওহ হুজুর! মাফ করবেন। আমি ভাবছি আসল নাম জিজ্ঞাসা করছেন।
:হুমমম। আসল নাম আজকের জন্য বাদ। আজকের শেখানো নাম বলেন।
: জ্বী নিতাই চন্দ্র সাহা
: আর আপনার স্ত্রীর?
: ফাল্গুনী দেবী
: ভালো, ভুইলেন না কিন্তু। মুসলমান নামটা পরে বলবেন .... মানে আমি বদলায়ে দেবার পরে। ঠিক আছে তো?
: জ্বী
: আপনার স্ত্রী বুঝে নিছেন তো?
: জ্বী
: আর আপনার নাম?
: জ্বী বিশ্বজিত কর্মকার আর আমার স্ত্রী সুভদ্রা কর্মকার।
: বাহ্ !! এই তো !! আর আসল নামটাও একবার শুনি।
: জ্বে, মন্তাজুল হক আর আমার পরিবার মমতাজ বেগম।
: এগুলা লিখে নিও মিয়ারা, আমার মনে থাকবে না।
: জ্বী হুজুর, সব লিখা আছে।
: মাশাল্লাহ! কলেমা তো আর শিখান লাগবে না। কিন্তু কলেমা গড়গড় কইরা বইলা ফালাবেন না। আমার সাথে সাথে পড়বেন ... ...
: হুজুর এগুলা শেখান হইছে। ভুল হবে না।
: আল্লাহ মালিক। সব তেনার ইচ্ছা। যাক! রাত হইছে। ঘুমায়ে রেস্ট নেন। হাতে সময় কম। ওয়াজের আগে এইখানেই থাকেন, বাইরে টাইরে যাবেন না। কেমন? পান সিগারেট যা যা দরকার সব এদের বলবেন। হাদিয়া কালকে ট্রেনে ওঠার আগে পাবেন ইনশাল্লাহ। যাতায়াতের খরচা গিয়াও অনেক থাকবে হাতে। মনে রাখবেন টাকাটা বড় জিনিস না। যেটা করতেছেন সেটার মূল্য টাকা দিয়ে মাপা সম্ভব না।

দুই.

: হ্যালো ...
: হু ....
: হুমম, জ্বী বলেন! অনেকখন ধরে ফোনের আমায় বসে ছিলাম।
: কি বলব? আমি তো বলতে ফোন করি না, শুনতে করি
: এইটা কি বললেন মাওলানা সাহেব!? হাহাহাহাহা....আপনার কথা গোটা দেশ শুনে আর আপনি বললেন ‘আমার কথা শুনতে’ ফোন দিছেন?!
: ধুর! খালি মজা করো। আমার কথা যারা শোনে তারা শোনে, তুমারে শুনতে হবে না। ঐগুলা হ’ল রাজনীতির কথা।
: উহু মানতে পারলাম না। আপনি তো ধর্মের কথা বলেন ... রাজনীতি কই?
: তুমি বুঝবা না জান। ঐগুলা আসলে রাজনীতি। আমরা তো তাগুতি রাজনীতি করি না। আল্লার দেখানো পথে করি ... যাইই করি।
: যা’ই করেন?স-ব আল্লাহর দেখানো পথে করেন!?
: হু ...এতে হাসির কি আছে...?
: ঠিক আছে হাসব না যান। খালাম্মা কেমন আছেন?
: এই যে দিলা মনটা বিলা কইরা!!
: কেন? ওনার কথা জিজ্ঞেস করব না?!!
: নাহ ... বলছি না আমি ফোন দিলে শুধু তোমার কথা বলবা। জীবনটা শ্যাষ কইরা দিল, ক্যাট ক্যাট ... ... ক্যাট ক্যাট সারাদিন।
: আচ্ছা যান আর বলব না
: হু
: হ্যা কি যেন বলতেছিলেন। আপনি বলা শুরু করেছিলেন। আমি খালি খালি আটকালাম। বলেন, আরও বলেন; আপনার কথা সারা দেশ শুনে। আমিও শুনব।
: উহু আমার বলার কিছু নাই, তুমি বল।
: না না তাগুতি টাগুতি কি সব বলতেছিলেন। আমাকে একটু বলেন না। আপনাদের রাজনীতির কথা।
: তুমি তো জান এইসব। জানো না? তোমার স্বামী তোমারে বলে না? সে তো সবই জানে
: আমার উনি ঐসব বলেন না। বলতে পারেনও না। থাকেন বিদেশে। ফোন দিলেই টাকা উঠে। তখন ঐসব কথা বলার টাইম আছে?
: ওনাকে বেশি বেশি দেশে আসার কথা বলবা না। মন দিয়ে দলের কাজ করুক।
: বলি না তো। কিন্তু আমি তো একা ফাঁপড়ে থাকি। না আছেন তিনি, না অন্য কেউ।
: হুমম বুঝি সোনা ...
: আমার তো যত দায়। পেটে খাইলে না পিঠে সয়। আমার তো সব’ই খালি।
: একটু সবুর করো। সব ভরপুর করে দেবার ব্যবস্থা করতেসি। সব কানায় কানায় পূর্ণ করে দিব।
: কবে?
: আমি তো এখন শহরে। জনসভা আছে। আগে-পরে সুযোগ পাইলে তোমারে একটু দেখে আসবো।
: সেটা তো জানি। জানবো না কেন? সবাই জানে। পোস্টারে ফেস্টুনে ভইরা গেছে শহর। আপনার নুরানি চেহারার পোস্টার।
: তাইলে আর চিন্তা করো ক্যান? সুযোগ একটা হবে
: আর হইছে। আচ্ছা পোস্টারে দেখলাম, আপনের দাড়িটা আগুন-লাল হয়ে গেছে। কি রঙ লাগান বলেন তো। এত্ত লাল হয় কিভাবে?
: আরে ঐসব বাদ দাও তো। ... .... কেমন আছ সেইটা বল
: যেমন রাখছেন, আপনি তো সারা দেশে ঘুরেন। দেশ লইয়া থাকেন। আপনার কি টাইম আছে আমার জন্য?
: উফফ!!! এইভাবে দিলে পেরেশানি দিও নাহ ... অনেকদিন পরে শহরে আসছি।
: মন ভাল থাকলে ভাল কথা আসে।
: হু সবই বুঝি
: আপনেরে দেখার আশা আর করি না .... সে আর হইছে!!
: কেন আগে বুঝি হয় নাই!
: সে তো ভুলেই গেছি
: দেখা করতে চাও না?
: আমি চাইলেই কি আর না চাইলেই কি ....?
: দেখা হবে ইনশাল্লাহ!এত্ত পেরেশান হইও না
: এবারে আসলে আপনার কাছ থেকে রাজনীতি শিখবো। আমিও রাজনীতি করতে চাই। ধর্মও শিখবো। আমার দুইটাই শেখা লাগবে।
: তোমার এত শিখে লাভ নাই, সমস্যা হবে
: কেন?
: না .... কিছু না। সমস্যাও না আবার সুবিধাও না। তুমি আছ কেমন?
: তাইলে শিখাবেন?
: কেন সোনা?
: তাইলে অন্তত আপনার কাছাকাছি থাকা যাবে ...
: ওহহহ!! এতক্ষণে বুঝলাম। অনেক কষ্টে আছ তাই না?
: না অনেক সুখে ভাসতেছি
: এই দ্যাখো, পাগলি কেমন কথা বলে!
: আপনার শুধু মুখে মধু, কাজে নাই।
: মধু পাই না তো। আশেপাশে খালি চিরতার রস।
: কেন? খালাম্মা?
: আবার তার কথা?!! দেখবা এইবার .... আচ্ছা একটা গান গাও না শুনি। তোমার কোকিল কন্ঠ অনেক দিন শুনি না।
: হুহ্ শখ কত। টেলিফোনে কোন গান নাই। গান শুনতে চাইলে সামনা সামনি।
: আমার মতন লোকের জন্য সেইটা কত কঠিন তাতো বোঝ, বোঝ না? তারপরেও আমি তো চেষ্টা করবই
: আমি আর কিছু বুঝতে চাই না; আচ্ছা সরকার ট্রাইবুনাল না কি সব করতেছে। খবরে পড়লাম।
: কুন পত্রিকা পড় তুমি?
: ক্যানো ইনকিলাব ...
: তুমি দেখি রাজনীতির কোন খবরই রাখো না। যাক, ঐটা আর পইড় না, এখন থেকে প্রথম আলো পড়বা।
: বলেন কি?! আপনেই না ... ...
: যুগান্তরও পড়তে পারো। জিনিস একই। তবে যুগান্তর পড়লে জাহেলরা তোমারে সন্দেহ করবে। প্রথম আলো’তে সেই ফিকির নাই।
: যাইই হোক খবর তো সত্য না কি?
: আরে ঐসব নিয়ে তুমি চিন্তা করো ক্যান বলতো?
: না আপনেরে নিয়ে টেনশন হয়। আপনের নাম দেখি তো।
: তোমারে বলছি না, এরা তাগুতি সরকার। আমরা ধর্মের পক্ষে জেহাদ করছি, আর এরা সেইটার গায়ে কলঙ্ক দিছে। তবে বিচার ফিচার কিছু না। সব ব্যালটের বিষয়। তুমি বুঝবা না।
: আমি তো তখন জন্মাই’ই নাই। বুঝবো কিভাবে? আপনে বুঝাইলেই পারেন।
: ধুর আমি কই কি, আমার সারিন্দায় কয় কি ... এইসবের জন্য এদ্দিন পর ফোন দিলাম না কি?
: আচ্ছা যান, অন্য কথা কই। আপনে যে এত ছোট্ট একটা মেয়ের সাথে প্রেম করেন সেইটা আপনের দলের লোকেরা জানে?
: এই কথা কেন বললা জান?
: না হঠাৎ মনে হইল, তাই বললাম। .... .... কেন? কষ্ট দিলাম?
: ... ... ... আমি বুড়া সেইটা স্মরণে আনলা আর কি ...
: আরে নাহ্ ... আপনি বুড়া কই। দেখতেই ঐরকম, দাড়ি টাড়ি আছে তো! আসলে তো ....
: কি? আসলে কি? ... ... কও না
: উহু ....
: আরে বলই না
: শের ... শের
: হা হা হা হা .... ...সত্যি বললা?
: নাহ মিথ্যা
: আর ভালো লাগতেছে না ... তোমারে দেখতে ইচ্ছা করতেছে
: দেখি আপনের ইচ্ছার জোড় দেখি এইবার
: শোন, ফোন রাখতে হবে, নামাজের সময় হয়ে গেছে .....
: আচ্ছা, ভাল থাইকেন, নিজের যত্ন নিয়েন, খালি দৌড়াদৌড়ি করে শরীর নষ্ট করবেন না।
: আচ্ছা সোনা, তোমার সব কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব ইনশাল্লাহ। রাখি কেমন?
: হু

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... (ফোন কেটে দেওয়ার শব্দ) ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...

: হ্যালো-ও-ও-ও
: চিনতে পারলা?
: জ্বী জনাব, এই গলা আমার চেয়ে বেশি আর কে চিনবে? এদ্দিন পরে যে? নাকি ফোনবুকের লিস্টি অনেক বড় হয়ে গেছে?
: কেমন আছো সোনা?
: যেমন রেখে গেছেন। অনেকখন ট্রাই করছিলাম। লাইন বিজি। আপনে যে শহরে সেটা জেনেই চেষ্টা করছিলাম
: রাজনীতি করি, ফোন তো বিজি থাকেই, বোঝ না?
: হু তো জনাবের কি এদিকে পদ-ধূলি পরবে .... ?
বাকি আলোচনা শোনা যায় না, বাইরে মিছিলের শব্দ ভেতরে চলে আসছে। আগামী কালের ওয়াজ মাহফিল সফল করার জন্য মিছিল।

তিন.

পরের দিন বিরাট ওয়াজ মাহফিলে হুজুরের বয়ান হল। চারপাশে আতরের গন্ধে বাতাস ভারি হয়ে আছে। টুপি আর জোব্বা পরিহিত লোকেদের পদচারণায় পুরো এলাকায় জ্যামের সৃষ্টি হয়েছে। সাধারন মানুষের এই নিয়ে কোন বিরক্তি নেই। কারু কারু থাকলেও সেটার বহিঃপ্রকাশ সচেতনভাবে নিয়ন্ত্রিত। কারণ ভক্তকূলের মুখে হুজুরের প্রশংসার খৈ ফুটছে। এত আবেগি বয়ান! যতবার শুনেন ততবার কাঁদেন। কাঁদবেন নাই বা কেন?! ওনার কথা শুনে শুধু তো মুসলমান না, হিন্দুরা পর্যন্ত চোখের পানি ধরে রাখতে পারেন না। আজকেও চারজন হিন্দু হুজুরের কাছে কলমা পড়ে মুসলমান হয়ে গেছে। কথাটা সবার মুখে মুখে পুরা এলাকাতে রাষ্ট্র হয়ে গেল। পত্রিকার লোকজনও না কি আসছিল। ছবি তুলেছে।

ওয়াজের শেষে হুজুর জামাতে আসরের নামাজ পড়ে গাড়িতে করে বিদায় নিলেন। একদল নওজোয়ান খুব কসরত করে গাড়িটা বের হতে সাহায্য করছে। তাও মনে হচ্ছিল গাড়ি বের হতে হতে মাগরিব হয়ে যাবে। অনেক ভীড়। হুজুরের মনে একটা উত্তেজনা। একটা তাড়া আছে। আবার এই জনস্রোত দেখে ভালো লাগাও আছে। আবদুল হাই আর মনতাজ মিয়া’রা এতক্ষণে সপরিবারে ষ্টেশনে পৌছে গেছে আশা করা যায়। খুব টেনশনে ছিলেন ওদেরকে নিয়ে। কিন্তু গরিবী এমন এক কুদরত! গরিবীর সামনে সব কাইত। যাক এখন মনটা হালকা লাগছে। চোরায় না শোনে ধর্মের কাহিনী। চোরাদের ধর্মের কাহিনী শুনাতে কত কি যে করতে হয়। আল্লাহু আকবার! হুজুরের চোখটা একটু বুজে আসে।

সীটের ওপরে রাখা ফোনের স্ক্রীণটা জ্বলে ওঠে এই সময়। নাম্বার দেখে নিয়ে হুজুর হাতের তালু দিয়ে আড়াল করে ফোনটা ধরেন,
: হ্যালো
: আসবেন? একবার?
: দেখি। চেষ্টায় আছি।
: আমি অপেক্ষাতে থাকলাম।
: হুমম ... ঠিক আছে।
: কথা বলতে প্রবলেম?
: হ্যাঁ ....
: আসলে খুশি হব কিন্তু দেইখেন, আপনারে আবার কোরান শরিফের ক্বিরা দিতে বলবে না তো খালাম্মা?
: ঐইটাই তো আফসোসের কথা। সে কোরান পড়া শিখছে আমার কাছ থেকে। আর আমারেই বলে কোরানের কিরা দিতে, কি আর বলব বলেন ভাই।
: হাহাহাহহা...আমাকে ভাই বললেন??!!
: জ্বী ভাই। আমি আসছি তাহলে।
: আচ্ছা রাখি তাহলে। খোদাহাফেজ।
: ফি আমানিল্লাহ!

হুজুর এবারে ড্রাইভারকে একটা ঠিকানা বলেন। গাড়ি ঘুরে যায়। ছোট্ট একটা গোপন মিটিং আছে হুজুরের। কয়েকজন স্থানীয় নেতার সাথে। ড্রাইভারও সকালে বয়ান শুনছিল আর চোখ মুছছিল। হুজুরের গোপন মিটিং এর কথা কাউরে জানাতে বারণ। এর আগেও তিনি গোপন মিটিং করছেন। একবার বেগম সাহেবের কাছে মিটিং এর কথা বলে ফেলেছিল সে। হুজুর বিরক্ত হয়েছিলেন। ড্রাইভার বুঝেছে রাজনীতির সব কথা ঘরের লোকরেও বলা যায় না। দেশের কাজ। ধর্মের কাজ। সে খুশি যে হুজুর তার চাকরী খায় নাই। সেও আর বিশ্বাস ভঙ্গ করে নাই।

পাদটিকাঃ

১। এই গল্পের সকল চরিত্র কাল্পনিক। বাস্তব কারু সাথে কেউ মিল পেলে সেটা নিতান্ত তাদের গান্ধা চরিত্রের কারণে।
২। এই গল্পের শিরোনামটাতেও কোন গন্ধ নাই। সুতরাং সেখানেও সাক কুঁচকে ঘোঁৎ ঘোঁৎ করার দরকার নাই।


মন্তব্য

চরম উদাস এর ছবি

চলুক
আবার লেখালেখি শুরু করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো।

তানিম এহসান এর ছবি

আবার লেখালেখি শুরু করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। এই কথাটাই বলতে চাচ্ছিলাম।

চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

"এই গল্পের সকল চরিত্র কাল্পনিক। বাস্তব কারু সাথে কেউ মিল পেলে সেটা নিতান্ত তাদের গান্ধা চরিত্রের কারণে।" হো হো হো

- সুচিন্তিত ভুল

স্যাম এর ছবি

হ। হো হো হো

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

প্রিয় লেখকের লেখা অনেক দিন পর হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক সুন্দর।

- জোছনাময়ী

সত্যপীর এর ছবি

চমৎকার। অনেকদিন পরে লিখলেন।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

সব কাল্পনিক চরিত্র?! আমি তো ভাবলাম হুজুরটা সাইদীকে ভেবে লেখা। রু

বনজোছনা এর ছবি

হাততালি ' কল্পগল্প : দ্য রিয়েলিটি শো ' is excellent.

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

সবাইকে ধন্যবাদ।

বিদেশে গিয়ে চরিত্র নিয়ে বিপদে ছিলাম, চারিদিকে সুন্দরী মেয়ের নানান 'ইয়ে' কিন্তু এদিকে চরিত্র ভাল, কি বিপদ! .... .... আবার এখন দেশপ্রেম নিয়ে বিপদে আছি। আমি হাল্কা লেখার মানুষ। আর এদিকে দেশ হয়ে যাচ্ছে দিনকে দিন ভারি। ভারি লেখা আমার হয় না। কিন্তু ঐ যে বললাম বিপদ ... ...

আনু-আল হক এর ছবি

উত্তম জাঝা!

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

অনেকদিন পরে প্রিয় লেখকের লেখা ! হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুণ হাসি

আফজাল এর ছবি

আজব!! এত মজার জিনিস অনেক দিন পাইনা। হাততালি পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।