ছোটবেলায় বাৎসরিক পিকনিকে গেলে দুইটা কাজ আমাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে করতে হত – এক, দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সর্বশেষ স্থান দখল করা এবং দুই, কর্কশ টিনের মাইকে মিহি গলায় সূরা এখলাস তেলাওয়াত করা। দ্বিতীয়টা কোন পরিকল্পিত ইভেন্ট না; বাবা আমার হাফেজি এলেম জাহির করতে মাইকের কাছে টেনে নিয়ে যেতেন। টেনশনের কারণে সূরা এখলাস মনে করতে না পারলে বাবা বলতেন ‘দুই লাইন আজান শুনায়ে দাও’।
পিকনিকের সাথে আজানের কি সম্পর্ক সেটা সেই বয়সে আমার না বোঝারই কথা; তবে বাবা কেন বুঝতেন না সেটা আজও পরিস্কার না। দৌড় প্রতিযোগিতায় মাঝে মাঝে ঠিক সামনের জনের সাথে আমার দূরত্ব এত বেড়ে যেত যে, আমি প্রতিযোগি না ভলান্টিয়ার সেটা আলাদা করা মুশকিল হয়ে পরতো। তা সত্বেও বাবা জোর করে এই কাজ দুইটা আমাকে দিয়ে করাতেন। আমি দুইটা ইভেন্ট নিয়েই এত বেশি টেনশনে থাকতাম যে, জানুয়ারি মাস আসলেই আমার গায়ে জ্বর চলে আসতো।
ইদানীং পিকনিকে তেমন একটা যাওয়া হয় না। তবে জানুয়ারি মাস এলেই বাণিজ্য মেলায় যাওয়া হয়। মাসব্যাপি ঢাকা শহরে ‘বাণিজ্য মেলা’ নামক হুলস্থুল ধরনের মেলা চলে। দৌড় বা ক্বেরাতের ইভেন্ট না থাকলেও এই মেলাতে প্রতি বছর’ই কিছু ‘ভিরমি’ ইভেন্ট থাকে – জিনিসটা কি সেটা ধীরে ধীরে বোঝানোর চেষ্টা করব।
এবারে বাণিজ্য মেলায় গিয়ে দেখি সবাই ইন্ডাকশন চুলা১ কিনছেন। কারণ ইন্ডাকশন চুলা পানির দামে(!) কিনলে সাথে আরও ১০ টি আইটেম ফ্রি পাওয়া যায়। এই ফ্রি আইটেমের মধ্যে টি-সেট, পানির ফিল্টার আর ইলেকট্রিক ওভেন অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যত দামই হোক ইন্ডাকশন চুলা না কেনার কোন কারণ নেই। আমি আর আমার স্ত্রী এরকম একটি দোকানে দাঁড়িয়ে বিরস মুখে সেলসম্যানের কাছে ইনডাকশন চুলার রচনা শুনছিলাম। এই দোকানের সমস্যা হচ্ছে কোন আইটেমের দিকেই এক নাগাড়ে দুই সেকেন্ডের বেশি তাকিয়ে থাকা যায় না। থাকলেই কেউ এসে হুড়মুড় করে জিনিসটার বর্ণনা দেওয়া শুরু করবে। চুলা’র বয়ানটাও ঐভাবেই শুরু হয়। বিপদের কথা হল, চুলার’টা শেষ হলে ১০টা ফ্রি আইটেমের উপরে বয়ান হবে। তার আগেই কিভাবে ভদ্রতা বজায় রেখে দোকান থেকে বেড়িয়ে আসতে পারি সেইটা ভাবছিলাম। হঠাৎ মনে হল কঠিন একটা প্রশ্ন করলে হয়ত লোকটা আটকে যাবে। বললাম, ‘রান্নার মাঝখানে কারেন্ট চলে গেলে কি হবে’!? প্রশ্নের উত্তরে লোকটা আমার দিকে এমনভাবে তাকাল যেন আমি ‘ওর পাছায় জন্মদাগ আছে কি না’ সেই প্রশ্ন করেছি। এতে অবশ্য তেমন ক্ষতি হল না, কারণ ‘২ পয়সাতে চা আর ৫ পয়সাতে ভাত রান্না’র খবরে আমি ভিরমি না খেলেও পার্শ্ববর্তি এক মহিলাকে দেখলাম কৌতূহল চাপতে না পেরে আমাদের ডিঙ্গিয়ে একেবারে সামনে গিয়ে দাঁড়াল।
সেলসম্যান এখন বেশিরভাগ কথা আমার দিকে তাকিয়ে শুরু করলেও ঐ মহিলার দিকে তাকিয়ে শেষ করছেন। একবার একটা সিনেমাতে দেখেছিলাম, শাবনূর শাকিবের বুকে হেলান দিয়ে ব্যাকস্ট্রোক সাঁতারের ভঙ্গীতে অনবরত হাত নাড়ছে আর আবেগ আপ্লুত কন্ঠে গাইছে, “জীবন ফুরিয়ে যাবে, ভালোবাসা ফুরাবে না মরণে, তুমি আরও আগে কেন আসো নাই এ জীবনে?“ শাকিবকে দেখে মনে হল, এই কঠিন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া তার পক্ষে অসম্ভব; সুতরাং সেই চেষ্টা না করে সে ‘শাবনূর যেন পরে না যায়’ সেই দিকে খেয়াল রাখছিল। এই মহিলার চেহারা দেখে মনে হল ইন্ডাকশন চুলা নিয়েও ওনার একই প্রশ্ন – আরও আগেই কেন এরকম দরকারি একটা জিনিস বাজারে এলো না সেইটা ভেবে উনি খুবই বিস্মিত! উপরন্ত, দোকানদার কিভাবে ঠিক ওনাদের অতি জরুরী ১০ টা জিনিস দিয়েই প্যাকেজটি সাজালেন সেইটা নিয়েও ওনার বিস্ময়ের শেষ নাই!
ক্রেতা-বিক্রেতার এরকম মণিকাঞ্চনযোগ হয়ে যাবার পরে বেড়িয়ে আসাটা সহজ হয়ে গেল। বেড়িয়ে দেখি অধিকাংশ দোকানেই এই চুলার ডেমোন্সট্রেশন চলছে। দোকানের সামনে ইনডাকশন চুলায় পানি টগবগ করে ফুটছে, কিন্তু চুলা বা পাত্র কোনটাই গরম হচ্ছে না! কিছু লোক দেখলাম এই বিষয়টাকে ‘বুজরুকি’ হিসেবে নিয়েছে। সেলসম্যানও কারিগরি দিক বাদ দিয়ে বিষয়টাকে ম্যাজিক হিসেবে উপস্থাপন করছেন। ভাবলাম, জাদুকর উলফত কবির২ সাহেবকে দিয়ে চুলার বিজ্ঞাপন করালে আরও ভাল হত! দোকানদার যদি অতি অল্প কারেন্টে এই চুলায় রান্না করতে পারে, তাহলে উলফত সাহেব নিশ্চয়ই প্লাগ খুলেও পারবেন। এই দেশের লোকজন সহজাতভাবে বুজরুকি প্রেমী। এরা রকেটে করে চাঁদে যাওয়া’কে যতটা সহজভাবে নেয়, কেউ ‘ঝারা হাত-পা উড়ে উড়ে চাঁদে গেছে’ শুনলে আরও স্বাভাবিকভাবে নেয়। এরা পানি দিয়ে গাড়ি চালানোর কথা কিংবা শিরিষপাতা দিয়ে মোবাইলের ব্যাটারি চার্জ করার কথা অকপটে বিশ্বাস করে। সুতরাং প্লাগ খুলে রান্না’র কথা বিশ্বাস না করার কারণ নাই। কেউ কেউ শুধু বিশ্বাস করেই থেমে থাকবে না, ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে ভাতের হোটেল দেবে। হোটেলের সাইনবোর্ডে লেখা থাকবে – “এইখানে ইনডাকশন চুলায় রান্না করা ডিজিটাল খাবার পরিবেশন করা হয়”।
বাণিজ্য মেলায় কেউ দরকারি জিনিস কিনতে যায় না। যায় অদরকারি জিনিস কিনতে। হঠাৎ দুই একটা দরকারি জিনিস চোখে পরে গেলে সেটা ভিন্ন কথা। ইউরোপে সুপার মার্কেট (সুপার শপ) গুলা চলে এই নীতিতে, মানুষ সুপার মার্কেটে যায় মূলাটা আর আলুটা কিনতে। অথচ বের হয় ব্যাগ বোঝাই করে আরও ১০টা অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে। সেটা জুসও হতে পারে, সস্ও হতে পারে আবার স্যাটেলাইট রিসিভারও হতে পারে। নির্ভর করবে ক্রেতার ভিরমি খাওয়ার ওপরে।
যেকোন অপ্রয়োজনীয় জিনিসকে অতি দরকারিভাবে উপস্থাপন করতে এদের জুড়ি নেই। উদাহরণ দেই। রান্নার সময় নাড়াচাড়া করার চামচটা আমরা সাধারনত সসপ্যানের হাতলের সাথে বা অন্য কিছুর সাথে ঠেস দিয়ে রাখি। এতে করে হাতলে বা চুলায় এক আধটু ঝোল গড়িয়ে পরে। খুবই নিরীহ ধরনের সমস্যা। হাঁড়ি পাতিল নোংরা করা ছাড়া এর আর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। সুপার শপে গিয়ে দেখলাম সেই চামচ রাখার জন্যেও একটা স্ট্যান্ড আছে। জিনিসটার সাথে আবার একটা কাঠের চামচ’ও ফ্রি। টয়লেট খালি না পাবার কারণে মলবন্দী অবস্থায় শৌচাগার ত্যাগ করা যেমন কঠিন, ঐ অবস্থায় জিনিসটা না কিনে দোকান ত্যাগ করাও তেমনই কঠিন বলে মনে হচ্ছিল।
বাসায় নেইল কাটার, টর্চলাইট, স্ক্রুড্রাইভার সবারই একটা করে থাকে। তারপরেও এইসব দোকানের নেইল কাটার বা টর্চলাইট দেখলে ‘ফ্লাইং সসার’ দেখার মতন ভিরমি খেয়ে বলতাম, ‘আরে! এইটা আবার কি?!’ এরকম চমকিত হয়ে একবার একটা স্ক্রু-ড্রাইভারের সেট কিনেছিলাম যেটা দিয়ে ৩২ রকমের স্ক্রু টাইট বা ঢিলে করা যায়। যন্ত্রকৌশলী হলেও আমি এ পর্যন্ত বত্রিশ ধরনের স্ক্রু দেখিনি। তারপরেও এই সেটটা ছাড়া নিজেকে অচল বলে মনে হচ্ছিল। বলা বাহুল্য, এ পর্যন্ত নির্দিষ্ট পাঁচটা পিস ঘুরেফিরে কাজে লেগেছে। বাকিদের অবস্থা বিমান বাহিনীর মিগ’২৯ এর মতন। দেখলেই বোঝা যায় - খুবই কাজের জিনিস, কিন্তু ব্যবহার করার সুযোগ নেই।
এইসব দোকানে নাক-, ভ্রু-, এবং কানের চুল ছাঁটাই করার যন্ত্রও পাওয়া যায়। এই জিনিসটাও যে অদরকারি তার প্রমান আমার ছোটমামা। মামাকে দেখেছি, অবসর সময়ে হাত দিয়েই নাকের চুল টেনে টেনে ছিঁড়তে। অতঃপর ঠিকমতন ছেঁড়া হল কি না বা কয়টা ছিঁড়ল সেটা দেখার জন্য চুল সমেত হাতটা চোখের সামনে এনে পরীক্ষা করতেন। পরীক্ষার ফলাফলে ওনাকে কখনই অতৃপ্ত বলে মনে হয় নাই। বলা বাহুল্য, মামার মতন স্বাবলম্বী লোকেরা এই যন্ত্র কোনওদিন কিনবে না। কিন্তু জার্মানিতে কিছু ‘হিপ-হপ’ পোলাপান আছে যারা এই সব যন্ত্র দিয়ে ভ্রু আর দাঁড়ি’র মধ্যে কুরুক্ষেত্র বানিয়ে ফেলত। কারু কারু দাঁড়ির ডিজাইন দেখলে মনে হত, এই লোক চিড়িয়াখানায় বেশি কাছ থেকে বাঘ দেখতে গিয়ে গালে খামচি খেয়ে এসেছে। সামান্য ক্ষুর দিয়ে যে এইরকম পিলে চমকানো দৃশ্যপট ফুটিয়ে তোলা সম্ভব, সেটা না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন।
যন্ত্রের এত ক্ষমতা দেখে আমিও নাকের চুল কাটার জন্য এক পিস কিনেছিলাম। ব্যাটারিতে চার্জ পুরাপুরি থাকলে এই যন্ত্র ওসমান গনি৩ সাহেবের চেয়েও সুন্দরভাবে নাকের বন উজাড় করে ফেলে। বিপত্তি হয় চার্জ কম থাকলে। তখন এই জিনিস নাকের চুলকে কাটার বদলে তেনা প্যাঁচানোর মতন প্যাঁচাতে থাকে; ব্যাথায় মনে হবে চুল তো বটেই, দুই-এক ছটাক মগজও নাক দিয়ে বেরিয়ে আসবে। এই সময়ে ভীত সন্ত্রস্ত না হয়ে করণীয় হচ্ছে, দ্রুত সুইচ বন্ধ করে যন্ত্রটাকে ছেড়ে দেওয়া। ফলে সেটা বিকল দেয়াল ঘড়ির পেন্ডুলামের মতন নাকের চুল ধরে খানিকখন এদিক ওদিক ঝুলবে। মচকানীর বিপরীত দিকে কয়েকটা পাকও খেতে পারে। তবে যাইই ঘটুক, ভয় না পাবার সংকল্পে অটুট থাকুন। অল্প সময়ের ভেতরে চোখ দিয়ে পানি এবং নাক দিয়ে হাঁচির আগমনি বার্তা পাবেন। আপনার নাকের চুল যদি আনারসের ঝোঁপের মতন শক্ত আর গোঁয়াড় না হয়, তাহলে হাঁচির সাথে সাথে যন্ত্রটা চুল থেকে খুলে আসার সম্ভাবনা প্রবল।
এই সব সুপার শপে আরও অনেক খুঁটিনাটি জিনিস আছে, শুধু ডিম পোঁচ করার জন্য এখানে ফ্রাইং প্যান পাওয়া যায় যেটা আকারে ঠিক একটা পোঁচ করা ডিমের মতন। জিনিসটা আসলে খুবই অপ্রয়োজনীয়, কিন্তু দেখামাত্র আপনার মনে হবে, বড় প্যানে ডিম ভেজে ভেজে এদ্দিন যে পরিমান তেলের শ্রাদ্ধ হয়েছে সেটা বাঁচাতে পারলে এখন তেল দিয়ে কুলি করতে পারতেন। মোট কথা, সুপার শপ জায়গাটার অলিতে গলিতে, প্রতিটি তাকে চেতনা নাশক এইসব জিনিসপত্র সাজানো থাকবে যার প্রভাবে আপনি স্বাভাবিক চিন্তা শক্তি হারিয়ে ফেলবেন, কথায় কথায় ভিরমি খাবেন এবং পকেটের মাপ ভুলে খরচা করতে শুরু করবেন।
ব্যবসা’তে জনগনকে ভিরমি খাওয়ানোটাই আসল। বাণিজ্য মেলায় ‘একটা কিনলে ১০ টা ফ্রি’র বিষয়টা দেখে গত বছর আমার মায়ের একটা অভিজ্ঞতার কথা মনে পরে গেল। সেবার মা বাণিজ্য মেলা থেকে মাত্র (!) ১৪ হাজার টাকায় নন-স্টিকি ফ্রাইং প্যানের একটা সেট কেনেন। বলা দরকার যে, আমাদের বাড়িতে হাড়ি পাতিল কখনই প্রয়োজন অনুসারে কেনা হয় না, দেখতে ভাল লাগলেই কেনা হয়। ফলে শো-পিসের যেমন হিসেব হয় না, এদেরও তেমন হিসেব নাই। এই ফ্রাইং প্যান কেনার কারণ অবশ্য ভাল লাগা না; এটা কিনলে সাথে আরও দশটা আইটেম পুরাপুরি ফ্রি! উপরন্ত এই ফ্রি আইটেমের মধ্যে একটা মাইক্রোওয়েভ ওভেনও ছিল। রীতিমতন ‘পাথর কিনলে উল্কা ফ্রি’ পাওয়ার মতন বিষয়!! নিয়মানুযায়ী এই ঘটনায় যে কারু ভিরমি খাওয়া উচিৎ। মা’ও ভিরমি খেলেন। মেলা থেকে ফিরে হাঁপাতে হাঁপাতে বললেন, “শুধু মাইক্রোওয়েভ’ই না, একটা কফি সেট, একটা পাইরেক্সের পায়েস-সেট, একটা সরবতের সেট, একটা হটপট, একটা কাটাকুটির সেট ইত্যাদি স-ব কিছু সসপ্যানের সাথে ফ্রি! কালকেই দোকানের লোক এসে হোম ডেলিভারি দিয়ে যাবে!” আমি বললাম, ‘বদনা, মগ আর পিকদানী’র সেটও নিশ্চয়ই আছে, তুমি খেয়াল করো নাই’। আমার ঠাট্টা শুনে মা বললেন, “একটা চাইনিজ ডিনার-সেটও মেলা শেষ হবার পরে Raffle Draw’তে পাওয়া যাবে”। আমি বললাম, Raffle Draw’তে কি পাবা সেটা ড্র’এর আগেই বলে দিল?!! মা বললেন, “এত কিছু জানি না। ওরা বলেছে Raffle Draw’তে জিতলেও ডিনার-সেট হারলেও ডিনার-সেট!! এটা শুনে অবশ্য আমার একটু ভয় লাগছে।“
মায়ের এই ভয় হচ্ছে ‘হরিষে বিষাদ’। সব আনন্দ বা বিনোদন নির্মল হয় না। তার সাথে একটু খানি ভয়ের মিশ্রণ থাকে। আমাদের দেশে মেহেরীন নামে একজন অতি গুণী শিল্পী আছেন। উনি একাধারে গান করেন, খবর পড়েন এবং রিয়েলিটি শো’তে বিচারকের গুরুদায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু উনি যখন গান পরিবেশন করেন তখন আনন্দ পাই কি না সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারি না, তবে পর্যাপ্ত ভয় পাই সেটা বলতে দ্বিধা নাই। উনি এই লেখা পড়বেন না, এইটাই ভরসা। এই আতঙ্কের কারণ সম্ভবত ওনার গায়কী। উনি গান করেন অথচ আমার মনে হয়, কবরের আযাব বিষয়ে গল্প করছেন। বিয়ের পরে জানলাম আমার স্ত্রীও ওনাকে ভয় পায়। মেহেরীন নিশ্চয়ই মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য গান করেন না। কিন্তু ওনার নাচের টিচার সম্ভবত আগে গোরস্তানে কাজ করতেন।
যাহোক, আমার মায়ের ‘উল্কা জয়ে’র ঘটনা নিয়ে বেশি ভাবতে হল না, সসপ্যান হাতে নিয়েই বুঝলাম, ওটার দাম ১৪০০০ হবার কোন কারণ নেই, দোকানে ওরকম একটা সেট তিন হাজারের বেশি হবে না। সুতরাং ফ্রি বললেও আসলে কোনটাই ফ্রি না। একটার নাম করে অনায়াসে আরও ১০টা আইটেম বিক্রীর একটা সোজা সাপ্টা রাস্তা বের করেছে এরা। চাইলেই এরা মাইক্রোওয়েভ’টা বিক্রী করে অন্যগুলাকে সাথে ফ্রি দিতে পারতো, কিন্তু সেটা করলে ‘ভিরমি’ খাওয়ার বিষয়টা ঘটে না। আর ভিরমি না খেলে কেউই ১৪০০০ টাকায় একসাথে এতগুলা অদরকারি জিনিস কিনবে না।
এইরকম ‘ভিরমি’ আবার খেলাম কলিকাতার একটা চ্যানেলে ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’ নামক একটা অনুষ্ঠান দেখে। নামেই বোঝা যায় শো’টা মহিলাদের জন্য - শো’তে উপস্থিত প্রতিযোগিনীদের নানান প্রশ্ন করা হয়, উত্তর দিতে পারলে হুলস্থুল পুরস্কারের ব্যবস্থা। আমি ভাবলাম হয়ত ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পাতি’ টাইপ অনুষ্ঠান। জাঁদরেল সব প্রশ্ন হবে, উত্তর দিতে পারলে ভুঁড়ি ভুঁড়ি টাকা। একটু পরেই বুঝলাম ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’এ নগদ টাকা নাই; তবে প্রতিযোগিদের ভাল ভাল জিনিসপত্র দেয়া হয়। ফ্রিজ, টেলিভিশন, ক্যামেরা, আইপড –এগুলান তো আছেই, সোনার নেকলেস, হিরের আংটিও বাদ যায় না! স্বভাবতই ধরে নিলাম এইসব পুরস্কারের জন্য যুতসই কঠিন প্রশ্নও করা হয়। কিন্তু ভিরমি’র জায়গাটা ঐখানেই। এই অনুষ্ঠানের দিদি’কে মনে হল অমিতাভের মতন বজ্জাত না, তিনি খামোখা কঠিন কঠিন প্রশ্ন করে লোকজনকে বিব্রত করেন না।
যাহোক, প্রথম প্রশ্নটা এল। তথাকথিত ‘দিদি’ প্রতিযোগিদের সামনে রাখা চেয়ার, টেবিল, ফুলদানি এবং আরও এটা সেটা জিনিসের মাঝখান থেকে আঙ্গুল দিয়ে একটা চার পা বিশিষ্ট ‘টেবিল’ দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলেন ‘কে বলতে পারবে ঐটা কি’? আমি ভাবলাম, এটা নিশ্চয়ই নমুনা প্রশ্ন, মাইক্রোফোন টেস্ট করার জন্য। কিন্তু পরক্ষণেই দেখলাম, কোলকাতার আনাচ কানাচ থেকে আগত অপরিণামদর্শী স্বাস্থ্যবতীগণ তাদের গদার মতন হাত দিয়ে যার যার সিটের সামনে রাখা ঘন্টায় সজোরে আঘাত করলেন। কেউ কেউ ‘সেটা যথেষ্ট নাও হতে পারে’ ভেবে ঘন্টার ওপরে খানিকটা চড়ে বসলেন। ফলশ্রুতিতে যার ঘন্টা সবার আগে আর্তনাদ করে উঠল তাকেই উত্তর দেবার সুযোগ দেওয়া হল। এই মার মার কাট কাট দৃশ্য দেখে বুঝলাম – ঐটাই প্রশ্ন, অর্থাৎ ‘টেবিল’কে টেবিল বলতে পারলেই পুরস্কার পাওয়া যাবে! বিষয়টা বুঝলেও মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল। তবে ধৈর্য না হারিয়ে দেখতে থাকলাম। আমার জন্য আরও বিস্ময় অপেক্ষা করছিল।
সবার আগে ঘন্টার ‘বারোটা’ বাজানো মহিলাটি উত্তর দেবার সুযোগ পেয়ে দু’হাত উঁচু করে ‘ইয়াহু’ ভঙ্গী করলেন। ওনার বগল দৃশ্যমান হওয়ামাত্র চোখ বুঁজে খাস দিলে দোয়া করলাম, আর কিছু না হোক, এক বোতল ডিওডোরেন্ট যেন উনি অবশ্যই জিততে পারেন। যাহোক, গদা মারার পর্ব শেষ, এবারে উত্তর দেবার পালা। গদা পর্বে জয়ী মহিলা এবারে টেবিল’টার দিকে ভ্রু কুঁচকে খানিকখন তাকিয়ে রইলেন। ওনার চেহারা দেখে মনে হল, টেবিল বা কাছাকাছি ধরনের কিছু উনি বুদ্ধি হবার পরে কখনও দেখেননি। চেহারায় আনন্দ মুছে গিয়ে দ্রুত টেনশন ফুটে উঠল; দর্শক সারিতে বসা ওনার স্বামীর দিকেও একবার উদ্বিগ্ন চোখে তাকালেন। স্বামী বেচারা ততোধিক উদ্বিগ্ন; কারণ এইখান থেকে ফ্রিজ নিয়ে যেতে না পারলে ওনাকেই সেটা কিনে দিতে হবে। এক পর্যায়ে মহিলা দাঁত দিয়ে নখ খুটতে শুরু করলেন। চেহারা দেখে মনে হচ্ছিল যে ওনাকে আমেরিকার সপ্তম প্রেসিডেন্টের ভাইপুতের ডাকনাম জিজ্ঞেস করা হয়েছে।
তবে প্রশ্ন যাইই হোক, ওনার নখ খোঁটা দেখে আমিও দুশ্চিন্তায় পরে গেলাম। আবার ভাল করে তাকালাম টেবিলের দিকে। কিছু ছবি আছে, যেগুলা আপাতঃ দৃষ্টিতে দ্বিমাত্রিক মনে হলেও আসলে ত্রিমাত্রিক৪ ; চোখ ট্যারা করে তাকিয়ে থাকলে একসময় সেটা বোধগম্য হয়। ভাবলাম, টেবিলের মধ্যেও নিশ্চয়ই সেরকম কোন হেঁয়ালি আছে। এত সহজে ফ্রিজ দিয়ে দেবার লোক ‘দিদি’ নন। খানিকখন টেবিলের মধ্যে হাতি ঘোড়া ইত্যাদি খুঁজে হাল ছেড়ে দিলাম। ইতিমধ্যে গদা-দেবী অনেক ভেবে-টেবে বললেন, “......দিদি, মন তো বলচে ওটা টেবিল, কিন্তু মুকে আসচে নাকো।“ দিদি এই মন্তব্যের উত্তরে বললেন, “ভগবানের নাম করে একটা কিচু বলে দাও”। মহিলা বললেন, “ভগবান যে আজগে কি পরীক্ষায় ফেললেন ... আচ্ছা ঠিক আচে, টেবিল’ই সই”। বুঝলাম, মহিলা এত কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি এর আগে হন নাই। এদিকে ‘দিদি’ও টেনশন না করে বসে নেই। উত্তর পাবার পরে খানিকটা সময় গম্ভীরভাবে প্রতিযোগির দিকে তাকিয়ে থাকলেন। ব্যাকগ্রাউন্ডে ঘোরতর সাসপেন্সের মিউজিক বাজছে। তার সাথে ঘড়ির কাঁটার টিক টিক শব্দ। টেনশনে সবার অবস্থা কাহিল! কি জানি টেবিল’ই তো?! একটু পরেই ‘দিদি’ মুখ খুললেন, ‘তুমি শিওর যে ওটা টেবিল!?’ এই পাল্টা প্রশ্নে মহিলা আরও কুঁকড়ে গেলেন। একবার মনে হল উনি হয়ত মূর্ছা যেতে পারেন। সেটা বুঝতে পেরে দিদিও আর কথা বাড়ালেন না; কৃত্রিম গাম্ভীর্য ঝেড়ে চিৎকার করে উঠলেন, “... তোমার উত্তর .... ‘টেবিল’ ইজ এবসোল্যুটলি কারেক্ট এন্সার!!..” মুহুর্মুহু করতালিতে স্টুডিও ফেটে পরল!! বিজয়ী মহিলা দুই হাতে মুখ ঢাকলেন। মনে হল, একটু ফুঁপিয়েও উঠলেন। ওনার আকৃতির সাথে গাজী ট্যাঙ্কের এত বেশি মিল না থাকলে যে কেউ এই দৃশ্য দেখে ভাবত, খানিক আগেই এনাকে মিস ইউনিভার্স ঘোষণা করা হয়েছে। দুই এক মিনিটের মধ্যে বাপ্পি লাহিরী এসে মুকুট পরাবেন।
যাহোক, এইরকম ধীমান প্রতিযোগি পেয়ে দিদিও তার জায়গাতে দাঁড়িয়ে থাকতে পারলেন না। এগিয়ে এসে প্রতিযোগিকে জড়িয়ে ধরলেন এবং সামনে সাজিয়ে রাখা গাদা গাদা পুরস্কার থেকে যেকোন ২টা বেছে নিতে বললেন। সেলুকাস! আমি পুরো ঘটনা দেখে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলাম। আমার মা বা বোনকে দেখে মোটেই বিচলিত মনে হল না। বরং মনে হল আজকের পর্বটা অনেক ফাটাফাটি হচ্ছে!
যদ্দুর মনে পরে, মেলার শেষে RAFFLE DRAW বা চাইনিজ ডিনার সেট কোনোটারই কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। মা ক্ষিপ্ত হয়ে মেলার স্টলে ফোন করলেন। মাকে জানানো হল, মেলায় না কি আগুন লেগে হুলস্থুল ব্যাপার হয়েছে। ডিনার সেট পুড়ে মাজনের সেট হয়েছে! মেলায় আগুন লাগার বিষয়টা সত্যি, তবে সেটাতে ওদের দোকানের ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছিল সেটা যাচাই করা হয় নাই। ঘটনা শুনে মা খানিকটা দমে গেলেন! আমি বুঝিয়ে বললাম, আগুন না লাগলে ওরা ভূমিকম্প বা অন্যকিছুর ব্যবস্থা করত। ডিনারসেটের বিষয়টা একটা ধাপ্পা। সর্বসাকূল্যে ৮ বা ৯ হাজার টাকার পণ্য সামগ্রী ১৪০০০ টাকায় গছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এবারের বাণিজ্য মেলায় ফিরে আসি। মেলা থেকে আমার স্ত্রী কিনলো ‘একের ভিতরে দশ’ নামক সবজি কাটার যন্ত্র। বলে রাখি, এরকম যন্ত্র বাড়িতে আরও দুই তিনটা আছে। সব ক’টা জার্মানি থেকে কেনা। এদের একটা হল ‘একের ভেতরে ত্রিশ’। সমস্যা হচ্ছে, একের ভেতরে দশ বা বিশ যাইই হোক গৃহিনীদের কাছে মূলত যেকোন একটা কাজের জন্য যন্ত্রগুলা প্রিয় হয়ে ওঠে। বাকি নয়টি বা উনিশটি গুণাবলী আত্মীয় স্বজনদের কাছে গল্প করার সময় ছাড়া আর তেমন একটা কাজে লাগে না।
এইসব দোকানে মহিলাদের ভিরমি খাওয়ানোর জন্য একজন কুচিকুচি শিল্পীকে রাখা হয়। এই শিল্পীর কাজ হচ্ছে ফলমুল, শাক-সবজি ইত্যাদিকে অনবরত কুচিকুচি করা। নানান যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে সে নিষ্ঠার সাথে এই দায়িত্ব পালন করে। উদাহরণস্বরুপ, একটা গাজর কেটে গোলাপ ফুল বানানো, মূলা কেটে শাপলা ফুল বানানো বা আলু কেটে পদ্মফুল বানানো। এরা তরমুজকে কেটে দাঁতাল হাঙ্গরের চেহারা দিতে পারে। দেখলে মনে হবে, আপনি তরমুজ খাবেন কি; তরমুজ’ই আপনাকে খাবে। আরও আছে, একটা আনারসের শতকরা ৫০ ভাগ অপচয় করা সাপেক্ষে সহজে (?) ছিলে ফেলা কিংবা আপেলকে এক কোপে বিঁচিমুক্ত সমান ছয়ভাগে বিভক্ত করা ইত্যাদি। যাহোক, এই কাটাকুটি দেখানোর সময় দোকানীর চেহারাতে “আমার কোনও কৃতিত্ব নাই, সব ঐ যন্ত্রের কারসাজি“ মার্কা একটা হাসি ফুটে থাকে। আর ঐ হাসিটা দেখেই মহিলারা পাগলের মতন যন্ত্রপাতি কিনতে থাকেন। অথচ বিষয়টা সম্পূর্ণ উল্টো। আগেরবারের যন্ত্রগুলা কিনে এই শিক্ষাটা এদ্দিনে আমার হয়েছে। এবারেও বাড়ি এসে দেখলাম, এক চাপে আলু কেটে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই (কাঁচা) বানাবার যে যন্ত্রটা সেটের সাথে আছে সেটার ওপরে স্বামী-স্ত্রী দুইজনে একত্রে চড়ে না বসা পর্যন্ত আলুর গায়ে আঁচড়ও ফেলা যাচ্ছিল না। অথচ এই যন্ত্রটা দিয়েই দোকানী যখন দেখাচ্ছিল তখন মনে হয়েছে আলু না, বরং মাখন কাটা হচ্ছে!
আমার বরাবর মনে হয়েছে খাবার জিনিসের চেহারা যত শৈল্পিক হয় সেটা খেতে তত খারাপ হয়। সেদিন আমার চাচতো বোনের ‘গায়ে হলুদ’এর অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখি গাঁজর, তরমুজ, আঙ্গুর আর আনারস দিয়ে ফুলের তোড়া বানানো হয়েছে। জিনিসটা দেখে ফুলও মনে হচ্ছিল না ফলও মনে হচ্ছিল না। কষ্ট করে ‘কিছুই মনে হয় না’ এরকম একটা জিনিস বানানোর কি দরকার সেটা বোধগম্য হল না। খাবারের জিনিস এইভাবে নষ্ট করা শিখতে চাইলে নাকি কোচিং সেন্টারেরও ব্যবস্থা আছে।
ইন্ডাকশন চুলা বা যেকোন নতুন প্রযুক্তি, ‘একটা কিনলে দশটা ফ্রি’ বা ‘একের ভেতরে দশ’ কিংবা নাকের চুল কাটা-যন্ত্র ক্রেতা আর বিক্রেতার মাঝে একটা দায়বদ্ধতার সম্পর্ক গড়ে দেয়। অনেক বছর আগে বইমেলা’তে গিয়ে ‘খাবি না ক্যান খা’নামের একটা চটপটির দোকান দেখেছিলাম। এই ধরনের নামকরণও সেইসব দায়বদ্ধতা তৈরি করতে পারে। এই দায় কখনও ক্রেতার, কখনও বিক্রেতার। কিছু কিছু বিজ্ঞাপন নির্মাতা এই দায়বদ্ধতার জায়গাটা চোখে দেখেন না বা বিজ্ঞাপন নির্মানের সময় মাথার বদলে হাঁটু দিয়ে চিন্তা করেন।
টিভিতে ক্লোজ-আপ টুথপেস্টের একটা বিজ্ঞাপনে আজকাল চরম অসভ্য একটা লোককে দেখানো হয়। এই লোকের কাজ হচ্ছে সক্কাল বেলা অফিসে গিয়ে এক মহিলা কলিগের নাক বরাবর ‘হাহ্’ করে মুখের গন্ধ দেওয়া। এই সময় লোকটার মুখ থেকে একপ্রকারের সবুজ রঙের বাতাস বের হয়। সেই বাতাসের গন্ধে মহিলা কলিগ বিমোহিত হয়ে চোখ টোখ সব বুজে ফেলেন, যেন ঘরে উঁচুমানের পারফিউমের বোতল হাত থেকে পরে চুরমার হয়েছে। বিজ্ঞাপনের পরের অংশে এই অসম্ভব ফালতু লোকটা আবার দাঁত মেজে ডিস্কোতে যায়। সেখানে অফিসের ঐ মহিলাও উপস্থিত। যথারীতি দেখা হওয়া মাত্রই লোকটা আবার ‘হাহ্’ করে মেয়েটার দিকে মুখের গন্ধ ছুঁড়ে দেয়। মেয়ে এবারেও খুশীতে ভুসি! পারলে এই সুগন্ধি লোকটার কোলে চড়ে বসে। বিজ্ঞাপনের বক্তব্য হচ্ছে ক্লোজআপ টুথপেস্ট ব্যবহার করার কারণে দিনে ও রাতে ক্রমাগত এই লোকের আত্মবিশ্বাস বেড়ে চলেছে! অথচ আমি পুরা বিষয়টার মধ্যে অসভ্য এক লোকের সাথে ততোধিক অসভ্য কলিগের মাজন-কেলি ছাড়া আর কিছুই পেলাম না।
দ্রষ্টব্যঃ
লেখাটি নিম্নোক্ত কয়েকজনের জন্য উৎসর্গ করছি। এতে কারুই কিছু না আসুক, আমি নিজে আনন্দ এবং তৃপ্তি পাব!
- চরম উদাস, এই লোক আমার চে' ভাল লেখে তারপরেও "লেখেন না কেন, লেখেন না কেন" বলে প্রচুর হাউকাউ করেন।
- নাশতারান, ফেইসবুকে এবং বইমেলায় সর্বত্রই আমার লেখার বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়ে আমাকে ঋণী করে তুলেছিল।
- ইকবাল বিন শহিদ, আমার স্কুল ও বুয়েট বন্ধু
- শাওন, মিস ক্যারেজ হইল না শেষ পর্যন্ত। লিখেই ফেললাম বন্ধু
মন্তব্য
আহ! জটিল লাগলো !!
উচ্চ মানের রম্য আজকাল যেন বিক্রেতাদের সততার মতই দুর্লভ হয়ে গেছে
হুমম
যথারীতি ফাডায়ালাইছেন। আপনার লগে ঘ্যানঘ্যান করা সার্থক।
কলকাতার বাণিজ্যমেলাতেও এইসব চলে, কিন্তু সে দেখতে তো আমরা মেলায় যাই না। আমরা ছেলেমানুষ, আমাদের হকের জিনিস কিনতে যাই। হকের জিনিস মানে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে হক কোম্পানির বিস্কুট আর প্রাণ কোম্পানির লিচু সরবত।
কিছু কিছু দোকানে সোন্দর সোন্দর মেয়ে থাকে ঐগুলান দেখতে যান না?
আপনার সেন্স অফ হিউমার অমানুষিক!
ইয়ে, শুধু একটাই অভিযোগ ছিল। এতো টাইপো!!!
কেনু কেনু কেনু?
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
একটা লিস্টি দেন, দেখি ঠিকঠাক করে দেওয়া যায় কি না।
ভীরমি > ভিরমি, প্রতিযোগী > প্রতিযোগিতায়, জানুয়ারী > জানুয়ারি, পরত > পরতো, বানিজ্য> বাণিজ্য, ফ্রী > ফ্রি, নিশ্চই > নিশ্চয়ই, জার্মানী > জার্মানি, হুরমুর > হুড়মুড়, দরকারী> দরকারি, খুটিনাটি> খুঁটিনাটি, ভ্রুঁ >ভ্রু, উলকা> উল্কা, মিশ্রন >মিশ্রণ, গাঁজর> গাজর, ফুলদানী> ফুলদানি,সীটের > সিটের, হাটু> হাঁটু, ডিনার সেট পুরে > পুড়ে, ছিঁলে > ছিলে, ফ্রেন্চ > ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, আঁচর > আঁচড়, ততধিক >ততোধিক, মাঁজন> মাজন।
এক ধাক্কায় এগুলো চোখে পড়ল।
ত্যক্ত করে থাকলে দুঃখিত।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
এঈ মাঈয়াটা এটো ডিস্টাপ কর্তে পাড়ে!!! আড় বুলার ণা!!
উপরের লাইনে আমার কোথায় কোথায় টাইপো আছে তিতিমনি? বের করে দাও তো দিকি!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
সবগুলো মেরামত করা হল। আরও থাকলে বইলেন। আমার পক্ষে এগুলা খুঁজে পাওয়া সম্ভব না। আশা করি আগামীতেও প্রচুর ভুল থাকবে। তবে চেষ্টা করব বেশিরভাগ দীর্ঘ ই'কারকে হ্রস্ব ই কার দ্বারা প্রতিস্থাপিত করতে। এইটা অনেক ভুল কমিয়ে দেবে মনে হচ্ছে।
ধন্যবাদ।
@তিথীডোর- আপনার কাছে একটা জিনিস জানতে চাইছি যদি কিছু মনে না করেন,
বাংলা ভাষায় ী-কার কি একবারেই উঠে গিয়েছে। যেমন-ধরুন , বাড়ী বানানটি কি শুদ্ধ হবে??
বাংলা বানান-- এখানে দেখতে পারেন।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
হইছে যথারীতি!!!
---------------------
আমার ফ্লিকার
হুমম
facebook
জিনিসটা কি? চকলেট?
আমার ঘ্যানঘ্যান করা সার্থক হইছে
আপনার সেন্স অফ হিউমার আসলেই অমানুষিক!
হুমম ... ঘ্যান ঘ্যান
একদম যা বলেছেন!
বানিজ্যমেলার চেতনা নাশক 'ফ্রি' কাহিনী আমাদের বাড়িতেও ঘটেছে।
উনি এরকম করে গান গায় ক্যান? জানেন?
মেহরীন কিন্তু এককালে র্যাম্প মডেলও ছিলো!
আমার প্রতিবেশী, আপনার নামে বিচার দিতেছি খাড়ান
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনার প্রিয় শিল্পী মনে হচ্ছে। বিচার দ্যান, অসুবিধা নাই। দেশে বিচার হয় না এইটা সবাই জানে।
আমি জীবনে একবার মাত্র বাণিজ্য মেলায় গেছিলাম, একজনের সাথে দেখা করতে, কাজ সেরেই চলে আসছি
প্রথম দিকে নূপুর বলতো টলতো, আমি মোটামুটি আজ কাল পরশু বলে দূর্ণীতিবাজদের মতো পাশ কাটাতাম। এখন আর বলেও না
লেখার কথা আর না বলি, তারচেয়ে বলি নতুন লেখা দেন জলদি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এইবারের মেলা থেকে আমি পক্স (গুটি বসন্ত) সহকারে ফিরেছি। সেইটা নিয়ে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছে আছে। জীবন দুর্বিষহ করতে পক্সের জুড়ি নাই। আর যাবো কি না সেইটা বুঝাতে এইটা বললাম।
আমার বাড়িতেও ঘটেছেরে- - -
আপনার লেখা দেখেই কমেন্ট করতে আসলাম!
এখম আরাম করে পড়িব!!!!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
আমার আসলে ভাগ্য ... এত লোকে পছন্দ করে! কি আর বলব..
আপনারে কেউ কিছু বলতে বলসে? চুপচাপ লিখতে থাকেন!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
খাসা!
এই লেখা পড়ে কমেন্ট না করলে পাপ হবে । রবিবার শেষ হয়ে গেল, কিন্ত আগামী এক হপ্তা মনে থাকবে। ভাইয়া অসাধারণ
হেফাচুতের সমাবেশে না গেলেও পাপ হবে, গেছিলেন?
"হেফাচুত"
..................................................................
#Banshibir.
ডুপ্লি ঘ্যাচাং..................................................................
#Banshibir.
এই বাংলায়। হয়ত ব্যস্ততায়, কিংবা অলসতায়।।
একটা বিষয় নিয়ে একটু টেনশনে ছিলাম। পুরাই টেনশন রিলিফ।
জটিল, ফাটাফাটি।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
গুড, ভেরি গুড
প্রথম যে কথাটা মনে এলো তা হলো, "কত্তোদিন পর!" ... 'রেক্সোনার বিজ্ঞাপন এবং প্রাসঙ্গিক বগল সমাচার'এর পরে অনেক লম্বা একটা বিরতি যেন এভাবে দাঁত বের করার।
গতবছরের মানে ২০১২-এর বাণিজ্য মেলায় গিয়েছিলাম স্রেফ আমার শখের তুর্কী ল্যাম্প কিনতে। পুরা মেলা এক চক্কর খেয়ে এসে প্রবেশপথের ডানে গিয়েছিলাম, আর দোকান খুঁজে পেলাম ঠিক বাম পাশে। দোকানীর সাথে খাতির করে, বললাম যে দেখো আমি প্রায় ২৫০ কিমি দূরের শহর থেকে শুধু এইটা কিনতে আসছি, দামটা কমায়ে দাও, তো দিয়েছিলো বটে আমার বয়সী তুর্কী ছোকরা হলে কী হবে, পুরা পেশাদার ব্যবসায়ী, তাও কমায়েছিলো দাম প্রায় হাজারখানেক টাকা। তবে এই ল্যাম্প এখন গুলশান-১ মার্কেট আর ২-এর কয়েকটা দোকানে পাওয়া যায় দেখলাম! কাজেই অত গরুখোঁজা খুঁজে বাণিজ্যমেলা হণ্টন না করলেও চলতো হয়তো।
পরদিন অবশ্য জনৈক বৈদেশী সচলের বাংলাদেশ আগমন উপলক্ষ্যে পুরান ঢাকা সফর আয়োজনে ঘণ্টাখানেকের জন্যে দেখা করতে গিয়ে অন্যান্য বেশ ক'জন সচল বন্ধুবান্ধবের সাথে দেখা হয়েছিলো।
আম্মাকে কিন্তু একটা ইন্ডাকশন কুকার ফ্রিজের সাথে ফ্রি দিয়েছে, তবে সেটা বাণিজ্য মেলায় না, এখানেই LG থেকে। কিন্তু পাত্র গরম হয় না তা তো না! পাত্র ভালোই গরম হয়, তবে সব মেটালের তৈরি পাত্র ওতে চাপানো যাবে না। আর এগুলো ভয়াবহ ইলেক্ট্রিসিটি খরচ করায়।
'দিদি নাম্বার ওয়ান'-এর অনুকরণে বাংলাদেশেও একটা শো শুরু হয়েছে। কালকে রাতে খেতে বসার সময়ে মুখ প্যাঁচার মতো করে বললাম টিভিতে বাংলাদেশের চ্যানেল দিলে হতো, তো তখন আবিষ্কার করলাম ঐটা বাংলাদেশেরই চ্যানেল! সেট-মেকাপ সবই প্রায় একইরকম করে ফেলেছে! এমনকি উপস্থাপিকা তানিয়াও ওঐ শো-এর উপস্থাপিকায় ভাবছিলাম আমি প্রথমে! শো-এর নাম 'অনন্যা' সম্ভবত, তবে বাংলাদেশের এতগুলা চ্যানেলের মাঝে সেটা কোন্ চ্যানেল ছিলো মনে নাই।
অট: আপনারা দেশে চলে এসেছেন? বাহ!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
কন কি? প্রশ্নের মান কিরাম?
ঐ এক ঝলকই দেখেছি, আর দেখার সাহস হয়নি।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
দ্য বস ইস ব্যাক ইন ফর্ম
ভাই,
আপনার লেখা এর আগে পড়ি নাই কখনো। ফেবু তে একজন এর শেয়ার করা লিঙ্ক থেকে পড়লাম। অসাধারণ! খুব সাধারণ বিষয়কে এত সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন...কি আর বলব! আসলেই চমৎকার।
তারাতারি বাকি গুলান পড়ে ফেলেন ...আপনার ও যে কাম কাজ নাই বুঝে গেলাম
একেবারে শুরু থেকে ৯০% খাপে খাপে মিলে গেল। ক্লাস ওয়ানে থাকাকালে জীবনের প্রথম দৌড় প্রতিযোগিতায় বিরাট ব্যবধানে শেষের দিক থেকে প্রথম হয়েছিলাম। সেই থেকে এরকম খেলাধুলা আর দৌড়-ঝাপের কথা শুনলেই বিশাল টেনশন কাজ করে। গেল দৌড়ের কথা, আমার বাপেও আমারে বিভিন্ন জায়গায় মিহি সুরে সুরা পড়ার পরীক্ষা দেওয়াইতো। একবার বহুত ছোটকালে কি জানি এক সুরা প্রতিযোগিতায় ভুল কইরা কিছুমিছু একটা প্রাইজ পাইছিলাম, সেই থেইকা সেইটা মোটামুটি অত্যাচারে রূপ নিল। এরপর থিকা আর কোন সুরা-আযান প্রতিযোগিতার ধারে কাছ দিয়া যাই নাই। মনে হয় তখন থিকাই নিধার্মিক হওয়ার হাতে খড়ি হইছে।
সুপারস্টোর আর বুকস্টোর একটা অভিশাপ। সুপারস্টোরে আলু কিনতে গিয়া আলুর সাথে ফ্রেঞ্চফ্রাই কিনা নিয়া আসি, আটা কিনতে গিয়ে পরোটা আর ডিম কিনতে গিয়ে মুরগী, মুরগী কিনতে গিয়া কেনা হয় মুরগি। আমি বাজারে যাই একটা ট্রাভেল ব্যাগ নিয়ে, তাতে রাস্তা দিয়ে হাটাহাটির সুবিধা হয়। একবার সুপারস্টরে এই ভিরমি রোগে পইড়া সেই ট্রাভেল ব্যাগেও বাজার আটে নাই, পরে ট্যাক্সি ডাইকা বাজার আনতে হইছে বাসায়।
অসাম সেন্স অব হিউমার আপনার। আমাদের বঞ্চিত কইরেন না। নিয়মিত লেখা দেন।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
তাইলে লেখেন, পড়ি
আপনার পুরনো লেখা পড়তে পড়তে মুখস্ত হয়ে গেছে। নতুন লেখা দেখে খুব খুব ভালো লাগলো
হায় হায়, আমি তো সংকলন বের করবো, মুখস্ত হয়ে গেলে তো আর কিনবেন না।
দারুন ভাই দারুন।।।।।।।
আপনি তো ইমো-ওয়র লাগায়ে দিছেন দেখছি!
সিরাম
ওয়ালাইকুম সিরাম
অনেকদিন পরে প্রাণ খুলে হাসলাম। প্রথমে একটু ভয় পাচ্ছিলাম, লেখার শেষে মন খারাপ করিয়ে দেবেন এই ভয়ে।
আপনি আসলেই অন্য কিছু। একটু নিয়মিত লিখলে কী হয় আপনার? তীর্থের কাকের মত অপেক্ষা করে থাকি আপনার লেখার।
কতদিন পরে আপনার ব্রান্ড নিউ লেখা পড়লাম ! (নতুন লেখা অভাবে পুরানো লেখা গুলাই ঘুরে ফিরে পড়ি।) মেহরীন যে গান করে এটাই প্রথমে তার প্রোগ্রাম দেখে বুঝিনাই ।
পুরানা লেখা বেশি পড়বেন না প্লিজ, আমার একটা বই বাইর করার খায়েস। জীবনে বই বাইর করি নাই। সব মুখস্ত হয়ে গেলে বই কেনার আগ্রহ কমে যাবে।
ব্যাপক মজা পাইলাম।
গতকাল দেশে ফোন করে জানলাম চুলা বাষ্ট হইছে। তাজ্জব হয়ে জিজ্ঞেস করলাম গ্যাসের চুলা আবার বাষ্ট মারে নাকি? উনারা উত্তর দিলেন সেই কবে থেকে ইলেকট্রিক চুলায় রান্না করছেন (মনেহয় ইন্ডাকশন চুলা)। অথচ উনারাই ইলেকট্রিসি নাই বলে রোজ ২৫ বার চিল্লায়।
ফ্রুলিংক্স
আমিও ব্যপক মজা পাইলাম। ফ্রুলিংক্স মানে জানেন?
Fruhling = বসন্ত (আপনি ভালোই জার্মান জানেন তাই হয়তো চোখে লাগছে)। যদিও বাংলা ক্স যুক্ত হয়ে গেছে। নামতো তাই আর বদলাতে ইচ্ছে হলো না।
দারুণ!
শেষ এরকম মজা পেয়েছিলাম, হুমায়ুন আহমেদের এলেবেলে পড়ে।
ম্যালাদিন পরে লিখলেন। থামবেন না যেন।
৪ নাম্বার পাদটিকায়, ওটা একটা ত্রিমাত্রিক জিজ্ঞাসা চিহ্ন- ?
এ ধরনের স্টেরিওগ্রামের একটা চমৎকার কালেকশন আছে এখানে http://www.eyetricks.com/3dstereo.htm
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
হু হইছে .... হাত তালি...
কোট করার অনেক কিছুই আছে, তবে এটা না করে পারলাম না ভাই! কিছুদিন আগে হঠাৎ ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খাওয়ার উৎসাহ প্রকাশ করতে না করতেই আম্মু লাফায় উঠে বললো, বানিজ্য মেলা থেকে একটা দারুণ জিনিস আনসি, দেখ, কী সুন্দর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই হবে! এরপর যা হইসে সেইটা তো আপনি জানেন এ! হাত লাল হয়ে ব্যাথায় কাতরাইতে কাতরাইতে আলু খাওয়া বাদ দিসিলাম।
যাইহোক, এতো দিন পরে লিখলেন, আশা করি এরপর আর গুটাটুতা দেওয়া লাগবে না, এম্নেই লিখতে থাকবেন। হাসি বন্টনেও আনন্দ- ধরে ধরে সবাইরে পড়তে দিসি এইটা। আম্মুও পড়লো। হাহাহা! দারুণ!!!!!!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
আমি খুঁজে খুঁজে একটা বের করেছি, গুলশান-১ নম্বর ডিসিসি মার্কেটে প্রায় গলাকাটা দামে। এইটা সত্যই আলু রেখে ঘ্যাচ করে কেটে দেয়। কিন্তু আম্মার বক্তব্য এইটা বেশি মোটা মোটা ফ্রেঞ্চ-ফ্রাই করছে, ঐ জিনিস নাকি সেদ্ধ হবে না ভাজলে। কাজেই আমার এখনো ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খাওয়া হয় নাই বুঝতেই পারছো।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমাদেরটা একেবারেই বজ্জাত। তবে কয়েকদিন হালকা ব্যায়াম (বুক ডন) ইত্যাদি করে নিলে হয়ত পারা যাবে।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
সাভারের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর থেকেই মন অনেক খারাপ। হেফাজতীদের তাণ্ডব এর পর মন আরও খারাপ।
আজকে আপনার লেখাটি পড়ে আনন্দ পেলাম। আমি রান্না করতে ভালবাসি বলে আমার বাড়ীতেও নানা ধরনের জিনিশ আছে, যা নাকি কিনি খুব শখ করে, কিন্তু বছরে একবার ব্যবহার হয় না। যেমন একটি ডিম ভাজা যায় ফ্রাই প্যান।
তবে আমার রান্না ঘরের একটি অতি প্রয়োজনীয় জিনিশটি কিন্তু দুবছর আগে দেশে গিয়ে বাণিজ্য মেলা থেকে কেনা। সেটি হল সব কিছু নানান ভাবে কাটার যন্ত্রটি।
আমিতো অসম্ভব সরুসরু করে কাটা আলু ভাজা, বাঁধা কপি ভাজা, পেঁয়াজের বেরেশ্তা, সাঙ্ঘাতিক পাতলা করে কাটা শশা ইত্যাদি নানান কিছু করে বন্ধুদের তাক লাগিয়ে দিচ্ছি।
খেতে গিয়ে প্রথমেই বলে, উহ ভাবী কি চিকন করে কাটতে পারে। আমি তখন জীবনে প্রথম বার বাণিজ্য মেলায় গিয়ে যে কি এক দারুন জিনিশ কিনেছি তার গপ্প করি।
তবে এটার সাথে ফ্রি ছিল পেঁয়াজ টুকরো করার একটা জিনিশ, সেটা আমার সমস্ত শক্তি দিয়ে চাপ দিলেও পেঁয়াজ কাটে না।
প্লিজ আপনার লেখা থেকে আমাদের বেশীদিন বঞ্চিত রাখবেন না। এখন আমি আপনার পুরানো লেখা গুলো পড়বো।
আমি এবং আমার স্ত্রী ঐ একটা কাজেই জার্মানীর যন্ত্রটা ব্যবহার করি।
দেশের বাইরে WMF ব্রান্ডের কাটলারি পাওয়া গেলে কিনে ফেলবেন। ছুড়ি চাকু খোন্তা - সবকিছুতেই এরা সেরা। কেটে আরাম পাবেন। কুচি কুচি করেও আরাম পাবেন। এদের শো-রুমে গেলে পকেটে এটিএম আর ক্রেডিট কার্ড সবকিছু বাইন্ধা নেবেন সাথে করে।
হাসতে হাসতে কমেন্ট লিখতে পারছি না।
পাখির নীড়ের মত চোখ তুলে নাটোরের বনলতা আপায় যা কইছিল সেইটাই কইলাম।
..................................................................
#Banshibir.
মার্ভেলাস!
থ্যাঙ্কস
অনেকদিন পর প্রিয় রম্য লেখক! ভাল লাগল আপনার লেখা, শুভেচ্ছা নেবেন; পাথকদের বঞ্চিত করা ঘোরতর
অন্যায়!
তিনদিন আগে পড়ে হাসতেইছিলাম। হাসি থামলো বলে মন্তব্য করে গেলাম।
না লিখে লিখে ওইটাই অভ্যেস হয়ে গেছে। লেখাও ভুলে গেছি। দেখি অভ্যেসটা বদলান যায় কি না।
ভাই ভাল লিখেছেন আপনি।
নতুন মন্তব্য করুন