স্মৃতির পাতায় নটরডেম

অরফিয়াস এর ছবি
লিখেছেন অরফিয়াস (তারিখ: বুধ, ১৮/০১/২০১২ - ১০:৩০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিশালদেহী মিজান স্যার ক্লাসে ঢুকতেই গ্রুপ-৪ এর সব ছাত্র একসাথে বলে উঠেছিলো "কাইফা হালুকা", স্যারও প্রতিউত্তর করেছিলেন সরস ভাবেই, প্রায় ৬ ফুটের উপরে লম্বা, বিশাল আলখাল্লা টাইপের পাঞ্জাবী, আর মুখভর্তি লম্বা দাড়ির মিজান স্যারকে কাইফা হালুকা বলে অভ্যর্থনা না জানানোটাই আসলে হয়তো রীতিবিরুদ্ধ হতো, স্যার পরিচিত ছিলেন তার বিখ্যাত "ছিলা-বাঁশ" এর জন্য, প্রথম দিনই বলেছিলেন, "আমরা তো আবার ছিলা-বাঁশ (সিলেবাস) আগে জানতে চাই"|

স্তন্যপায়ী প্রাণীর সংগা দিতে গিয়ে প্রথম বেঞ্চে বসা আমি উঠে দাড়িয়েছিলাম, সংগা ঠিকঠাক শেষও হয়েছিল, কিন্তু তার পরেই স্যার এর প্রশ্ন "তোমার কি স্তন আছে??" ক্লাস ভর্তি ছেলে, আর এই প্রশ্নে ভেবাচেকা খেয়ে আমি হাসবো না কি করবো বুঝতে পারছিলামনা, আমি আমতা আমতা করে কিছু বলতে যাওয়ার আগেই স্যার বললেন, "এত চিন্তা করো কে?? নারী-পুরুষ সবারই স্তন আছে, কিন্তু পুরুষের স্তনগ্রন্থি কাজ করেনা, এইটা কইতে লজ্জা লাগেনি??" এই ছিলেন মিজান স্যার, বেমক্কা সব প্রশ্ন করতেন, কিন্তু তাতে কি, বায়োলজি মজার বিষয় এটা হয়তো মিজান স্যার না থাকলে বুঝতামনা|

নটরডেম কলেজে ভর্তির ভাইবা দেওয়ার পরে আমি নিশ্চিত ছিলাম এত জ্ঞানী মানুষের ভিড়ে আমার স্থান নাই, কিন্তু কিভাবে কি আমি চান্সও পেলাম গ্রুপ-৪ এ, মিরাকল জাতীয় কিছু যে দুনিয়াতে হয় তা টের পেলাম| আর প্রথম দিন তো দেখতে দেখতে এমনিতেই চলে গেলো, এখনো মনে পড়ে ২১শে আগস্টের বোমা হামলার ঠিক পরের দিন ছিলো আমাদের প্রথম ক্লাস|

অঙ্কের ক্লাসে বরাবরই আমি অন্ধ এবং বধিরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হই, সেই অঙ্কের ক্লাসে প্রথম দিন এলেন জহরলাল স্যার, সেই বিখ্যাত উক্তি স্যারের, "কি লিখি, কেনো লিখি, জানতে চাই স্যারররর"| আসলেই, স্যার পরবর্তী ২ বছরে আমাদের মধ্যে সেই জানার প্রবল আগ্রহ তৈরী করে দিয়েছিলেন অসাধারণ ভাবে, "কোণের সংগা" দিয়ে যার শুরু হয়েছিল তার শেষ হয়েছিল অশ্রুসিক্ত এক বিদায়ের মধ্য দিয়ে| এই আমি শুধুমাত্র স্যারের ভয়ে অঙ্ক করতাম, তখনো আসলে জানিনা, এই ভয়টা কতোটা দরকার ছিলো জীবনে| বন্ধু ময়ূখের দিকে তাকিয়ে স্যার এর সেই " এই যে লাল গঞ্জি, আপনি দাড়ান, কি নাম স্যাররর??" থেকে শুরু করে আরও অজস্র বাক্য এখনো যেনো শুনতে পাই একটু কান পাতলেই|

ফাস্ট ইয়ারে বায়োলজি পড়াতেন আজমল স্যার|"বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা প্রথমবার যখন উড়ানো হয়েছিলো, জানো আমি তখন কই ছিলাম??" আমরা ভাবলাম স্যার বলবেন পতাকা হয়তো তার হাতেই ছিলো, ছাত্র-জনতার মাঝে আমরা বিপ্লবী স্যারকে দেখা শুরু করেছি মাত্র, উনি বললেন, "পতাকাটা যেই লাঠির মাথায় উড়ানো হয়েছিলো সেটা ধরেছিলাম আমি", হঠাৎ যেনো অনেক মানুষের ভিড়ে স্যার হারিয়ে গেলেন, আমরা বাস্তবে ফিরে এলাম, আর বুঝলাম কি অসাধারণ ভাবে গল্প শোনাতে হয়| একটা অদ্ভুত ঘটনা ছিলো তখন, স্যার নটরডেম এর বায়োলজি ক্লাস নিলেও, স্যার এর কাছে বেশি পড়তে যেত ভিকারুন্নেসার ছাত্রীরা| আর সেই গল্প স্যার করতেন ক্লাসে, আরও শোনাতেন কি ভীষণ সব কাহিনী, আর আমরা বুঝতাম "চাপা-মারা" নামে অলিম্পিকে কোনো ইভেন্ট থাকলে আর কেউ কিছু না জিতুক একটা স্বর্ণপদক তো নিশ্চিত ছিলো আমাদের|

আরও মজা হতো বোটানি ক্লাসে, রাশেদা ম্যাডাম আমরা কোনো প্রকার শয়তানি করলেই, উদ্ভিদবিদ্যার নিরস জগত ছেড়ে বেরিয়ে আসতেন সাম্রাজ্যবাদী আর পুঁজিবাদী জগতের ঘোর অনটনে| আর আমরাও অবাক হতাম নির্বোধ গাছ-পালাকেও পুঁজিবাদী দুনিয়া ছাড় দিচ্ছেনা দেখে..

বাংলা নিতেন আমাদের বিখ্যাত "সোহেল স্যার", ক্লাসে এসে প্রধান কাজ ছিলো চুল আচড়ানো, তবে চুলের ঘনত্বের ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন একেবারেই অমূলক| প্রায়ই পিছে থেকে ফিচেল ছাত্ররা কয়েন ফেলে যন্ত্রণা করতো, আর স্যার বলতেন, "এইইই পয়সা ফেলে কে?? পয়সা ফেলে কে?? কার বাপের এত পয়সা হয়েছে এইদিকে আয়"| দুহাত আদনান সামির "লিফট করা দে" স্টাইলে ধরে পেটের কাছ থেকে আস্তে আস্তে উপরে এনে এক অদ্ভুত ভঙ্গিতে বাক্য শুরু করার সেই রীতি এখনো মনে পড়ে| তবে কিছু বলেই, একহাত কপাল থেকে শুরু করে চকচকে টাকের পিছন পর্যন্ত টেনে নেওয়ার অভ্যাসটাই স্যার এর চুলের ঘনত্ব কম করার পেছনে দায়ী কিনা, কে জানে?

শুধু একদিন বাংলা ক্লাস নিতে এসেছিলেন মোখতার স্যার, তার আদিরসাত্মক পড়ানোর স্টাইলে পড়িয়েছিলেন কুবের-কপিলার প্রেম কাহিনী| আমরা অন্য ক্লাসের ছেলেদের কাছে শুনতাম স্যারের ইয়েতে আর্মির বন্দুকের বাঁটের গুঁতোর কথা, সুবর্ণা মোস্তফাকে করা প্রেমের প্রস্তাবের কথা আরও কত কি| আসলেই যে ছাত্র কলেজ জীবনে মোখতার স্যার এর কাছে "পদ্মা নদীর মাঝি" একদিনের জন্যও না পড়েছে, তার কলেজ জীবনে আফসোস থেকে যাবে| একজন বয়স্ক মানুষকে চেয়ারে বসে নাচতে সেই প্রথম দেখেছিলাম|

গুহ স্যারের কেমিস্ট্রি ক্লাস করেছিলাম টানা ২ বছর, স্যার তার টেবিলের উপর বসে পড়াতেন, তাকে কখনো চেয়ারে বসতে দেখিনি, আর প্রায়ই মনুষ্য-বর্জ নিয়ে রসিকতা করতেন, মাঝখানে স্যার এর বদলে এসেছিলেন ২ জন, নাদিয়া ম্যাডাম খুব অল্প সময়ের জন্য, তাকে ছাত্ররা যখন বলেছিলো "শোনা যায়না ম্যাডাম" তিনি বোর্ডে লিখে বলেছিলেন, "কি আশ্চর্য, আমি তোমাদের দু দু বার করে দেখালাম, তাও বুঝছনা কেনো??" আসলেই, প্রশ্নটা আমাদেরও ছিলো| তারপরে ছিলেন এলেন স্যার, কলেজের কেমিস্ট্রি বুঝতে হলে যে সব ছাত্রের মাস্টার্স করে আসা উচিত, সেটা স্যার এর পড়ানো দেখলেই বুঝতে পারতাম| তাই ছাত্রদের ইচ্ছায় আবার গুহ স্যার এর প্রত্যাবর্তন|

সেই শুরু থেকে আমাদের একটা গ্রুপ ছিলো, যারা ক্লাসের একদম বাম-দিকের দুটো সারিতে বসতাম, আমি, অনুপ, সজল, শুভ্র, মেহেদী (শুভ্র), ময়ূখ, আনন্দ, সৌরভ, ফয়সাল, তানজীর আরও কয়েকজন| এখনো মনে আছে সজলের ছোটবেলার প্রেয়সী যেদিন মারা যায়, আমাদের জড়িয়ে ধরে কি কান্নাই না কেঁদেছিলো, মনে পড়ে আনন্দ প্রথম প্রথম নাক উঁচু ভাব নিয়ে চললেও, সেই ছেলেটিই আস্তে আস্তে হয়ে উঠেছিলো আমাদের গ্রুপ এর অবিচ্ছেদ্দ্য অংশ| ময়ূখ প্রথম থেকেই ছিলো রকস্টার, হাতে মোটা মোটা রিস্টব্যান্ড আর সানগ্লাসে প্রথম থেকেই কুউউউল| বিতার্কিক সজলের লিঙ্কিন পার্ক এর গানে গলা ফাটিয়ে চিত্কার, মেধাবী অনুপের সদা-হাস্য মুখ, শুভ্রের হঠাৎ হঠাৎ রেগে যাওয়া, মোটা-সোটা সৌরভের জ্ঞানী জ্ঞানী উক্তি, এ সবই তো স্মৃতি, মেহেদী প্রথম আমাকে শিখিয়েছিলো কি করে কুউললল স্টাইল করতে হয়, কি করে কোমড়ের নিচে-অনেক নিচে প্যান্ট পড়তে হয়| আর মনে পড়ে সুদর্শন রাকিব কে, কদিন আগেই সড়ক দুর্ঘটনায় হারিয়ে যাওয়া বন্ধুটিকে, সব সময় হাসি লেগে থাকতো মুখে|

একটা ঘটনা এখনো মনে পড়ে, সোহেল স্যার ক্লাসে ঢুকেছেন আমরা সবাই দাড়ালাম, বসার একটু পড়ে স্যার দেখি আমাদের পেছনে কি দেখাতে চাচ্ছেন, আমরা না বুঝে এদিক ওদিক দেখছি, তারপর সবার চোখ গেলো ক্লাসের পেছনের খালি বেঞ্চগুলোতে, দেখলাম আমাদের সারির পেছনের এক খালি বেঞ্চে কেও একজন পায়ের উপরে পা তুলে শুয়ে আছে, বেশ কিছুক্ষণ ডাকাডাকির পরে লাফিয়ে উঠে বসলো আমাদের ময়ূখ| এখনো মনে পড়ে, সবার দম ফাটানো হাসির মধ্য দিয়ে চোখ ডলতে-ডলতে ময়ূখ নিজের বেঞ্চের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে|

মনে পড়ে আরও অনেক কিছুই, প্র্যাকটিকাল ক্লাসের প্র্যাকটিকাল জোকস, ফিজিক্স এর প্র্যাকটিকেল এ রিপিট খাওয়া, বায়োলজির প্র্যাকটিকাল ক্লাসে আরশোলা হাতে নিতে গিয়ে কারো কারো অজ্ঞান হবার দশা, ডিবেটিং ক্লাবের অনর্থক রাজনীতি, সাইন্স ফেয়ারে ঘুরাঘুরি, ভর দুপুরে ফুটবল-ক্রিকেট, ক্লাসের ফাঁকে আড্ডা, ক্লাসের শেষে মোড়ের দোকানের সিগারেট-পুরি, আরামবাগ কলোনিতে কাটানো অসস্র সময়... আরো অনেক কিছু| মনে পড়ে এইতো সেদিন যেনো ছিলো সব, কিন্তু পার হয়ে গেছে ৬টা বছর, ২০০৬ এ যেদিন রেজাল্ট নিয়ে বেড়িয়েছিলাম তার পড়ে আর কোনদিন কলেজের ভেতরে ঢুকিনি, হয়তো পালিয়ে থাকতে চেয়েছি স্মৃতিগুলো থেকে, হয়তো দূর থেকেই ভালবাসতে চেয়েছি জীবনের সব থেকে সেরা মুহূর্তগুলোকে|

আজ আনন্দ জাপানে, ময়ূখ চীনে, সজল সিলেটে, মেহেদী লন্ডনে, অনুপ চট্টগ্রামে, বাকিরা দেশের বিভিন্ন জায়গায়, কেউ কেউ দেশের বাইরে, অনেকের সাথেই যোগাযোগ নেই, হয়তো আর দেখাও হবেনা কোনদিন, কিন্তু এখনো সময় পেলেই পুরনো ডায়রিটা খুলে দেখি, তাতে পুরনো হয়ে যাওয়া লেখাগুলো, বিদায়বেলাতে লিখে যাওয়া সেই কথাগুলোই রয়ে গেছে, আর রয়ে গেছে স্মৃতিগুলো| খুব মনে পড়ে, অনেক প্ল্যান করি একবার আবার একবার কলেজের চত্বরে একসাথে আড্ডা দিতে, কখনই হয়ে উঠেনা, জানিনা হবে কিনা, তবে আর যাই হোক, এখনো আমার জীবনের সব থেকে প্রিয় স্মৃতি হিসেবে নটরডেম কলেজের দুই বছর চিরসবুজ হয়ে থাকবে| যেখানেই থাকিস সবাই, ভালো থাকিস|

হঠাৎ মনে পড়া স্মৃতির ভিড়ে একটা গান গুনগুন করে উঠি,

"দেখা হবে বন্ধু, কারণে আর অকারণে,

দেখা হবে বন্ধু, চাপা কোনো অভিমানে,

দেখা হবে বন্ধু, সাময়িক বৈরীতায়,...

দেখা হবে....."

[ব্যাচ ২০০৬, গ্রুপ-৪, নটরডেম কলেজ, ঢাকা, বাংলাদেশ]


মন্তব্য

কালো কাক এর ছবি

আজমল স্যার তো ভিকারুন্নিসাতেও পড়াতেন। অবশ্য ২০০৬এর খবর জানি না।

অরফিয়াস এর ছবি

হুমমম পড়াতেন, ওই আর কি আধিপত্যের জন্য লেখা .... দেঁতো হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

guest_writter এর ছবি

আপনার লেখাটা পড়ে নস্টালজিক হয়ে গেলাম। মজার লেখা।

দীপাবলি।

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, দীপাবলী... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সাজ্জাদ সাজিদ এর ছবি

স্মৃতিময় নটরডেম, অনন্য মিজান স্যার, সেই ইচ্ছে মত খেলার মাঠ, ক্লাস ফাঁকি দিয়ে টেবিল-টেনিস খেলার ক্যাফেটেরিয়া, সায়েন্স ফেয়ারের একেকটি দিন-- অসুস্থ শিক্ষাব্যবস্থার ভেতর যা কিছু ভালো নিঃসন্দেহে তার অনেকখানি এইসব দিয়ে ভরা।
ইয়ে, নাদিয়া ম্যাডামের গল্পটাও একটু, আদি না হোক রসাত্মকই মনে হলো। কি জানি ভুল বুঝছি হয়ত!
আর বোমা হামলাটা বোধহয় ২১ আগস্ট হয়েছিলো।

অরফিয়াস এর ছবি

হুমমম নাদিয়া ম্যাডাম এরটাও আদিরসাত্মক ছিলো বই কি... তারিখ ভুলের জন্য দুঃখিত, ঠিক করে দিলাম... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

কোন ময়ূখ? গল্পকার রিশাদ ময়ূখ?

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অরফিয়াস এর ছবি

না গল্পকার ময়ূখ নয়, এটা আমাদের ডাক্তার কাম রকস্টার ময়ূখ.... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সাত্যকি. এর ছবি

গল্পকার রিশাদ ময়ূখও (প্রায় ডাক্তার) নটরডেমের,গ্রুপ ১।
রিশাদ ময়ূখের রোল নাম্বার কত ছিল জানেন? জিরো জিরো ওয়ান।

অরফিয়াস এর ছবি

বাহ..... দেঁতো হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

আব্দুর রহমান এর ছবি

"রাহেলা ম্যাডাম আমরা কোনো প্রকার শয়তানি করলেই"

ম্যাডাম এর নাম রাহেলা নয় রাশেদা।

লেখা ভালো লাগলো।

------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল

অরফিয়াস এর ছবি

দুঃখিত, কিছু ভুল ছিলো, ম্যাডামের নামটা ঠিক করে দিলাম, পড়ার জন্য ধন্যবাদ|

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

যে অনুপের কথা বললনে, তার তো এখন ভয়াবহ অবস্থা, রোগীর চোখ দেখেই অসুখ বলে দিতে পারে। ডেঞ্জারাস স্টুডেন্ট। আমার পাশের রুমে থাকে। আমি গ্রুপ ওয়ানে ছিলাম। স্মৃতিচারণ বড় আপন লাগল। আপনি কী রোল ১২০?
নজু ভাই, ঐ ময়ূখ এখন চীনে পড়ে, আমি নই।

ব্যাচমেট জেনে ভালো লাগল

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

অরফিয়াস এর ছবি

জানি, অনুপ আমার সাথে বসতো, খুবই ভালো বন্ধু, এখনো যোগাযোগ আছে, আমি জানি ও ভয়ংকর ছাত্র, কলেজ থেকেই ছিলো, আমাকে প্রায় কানে ধরে পড়াতো মাঝে মাঝে, এই অমনোযোগী আমি অনুপ না থাকলে হয়তো কিছুই করতাম না, রোল ১২০ ছিলো হয়তো , ঠিক মনে নেই, ধন্যবাদ, ব্যাচমেট জেনে আমারও ভালো লাগছে, অনুপকে বলবেন আশা করছি...

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

সে কি, ব্যাচ মেটকে আপনি বললে চলে!!! দেঁতো হাসি


_____________________
Give Her Freedom!

অরফিয়াস এর ছবি

খাইছে ..... দেঁতো হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তুষার কাওসার এর ছবি

রোল নম্বর ভুললেন ক্যামনে?! চিন্তিত
আমি ১১০১০৯৭।

অরফিয়াস এর ছবি

রোল নম্বর ভুলে যাওয়াটা কি কোনো অপরাধ নাকি???? চিন্তিত

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

উচ্ছলা এর ছবি
অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ..... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

অনুপকে বলেছি। পড়েছে সে। খুশি হয়েছে

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

অরফিয়াস এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

manish এর ছবি

গ্রুপ-৭ এর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা হাসি

অরফিয়াস এর ছবি

আপনাকেও শুভেচ্ছা .... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

Suvasis এর ছবি

অনেক দিন পর কলেজের স্মৃতিচারন পড়ে নস্টালজিক হয়ে গেলাম। সত্যি, কি সুন্দর ছিল সেই দিনগুলো !!!
উল্লেখ্য,আমি 07 এর গ্রুপ 3 এর স্টুডেন্ট।

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, হাসি সত্যি সুন্দর ছিলো দিনগুলো ...

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তাপস শর্মা এর ছবি

ভালো লাগলো নাকি মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো তাই বুঝলাম না... আমার কলেজ লাইফ খুবই বোরিং ছিল, শুধু বোরিং নয়, ওরস্ট... বিশ্বাস হবেনা যে তিন বছরের কলেজ লাইফ এ আমার একজনও বন্ধু ছিলনা, তার সবচেয়ে বড় কারণ আমি তিন বছরই কলেজের হিট লিস্ট এ ছিলাম, মানে প্রথম সারির নন কলেজিয়েট স্টুডেন্ট ( ফাইন দিয়ে তারপর বৈতরণী পার !!) ... তবে ভার্সিটি লাইফ চরম ছিল... আর স্কুল... হাসি

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, এরকম হয়, যেরকম আমার এখন হচ্ছে, ভার্সিটি লাইফ একদমই বাজে যাচ্ছে, তুলনাই হয়না কলেজের সাথে...

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

কী মুশকিল, আমরা সেইম ব্যাচ জানতামই না!!! সোনালি দিনগুলো একেবারে কড়া নেড়ে গেলো যেনো!!! চলুক


_____________________
Give Her Freedom!

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, একই ব্যাচ জেনে আনন্দিত হলাম.... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

1001027
লেখাটা নস্টালজিক করে দেবার মতোই। যদিও আরেকটু পুরনো ব্যাচের কেউ লিখলে টেরেন্স পিনেরোর কথাই থাকতো বেশিরভাগ অংশ জুড়ে। অথচ দু:খজনকভাবে ব্যক্তিত্বহীন এবং দুর্নীতিবাজ সোহেল স্যারের কথা এসেছে একাধিকবার। যতদুর জানি শেষ পর্যন্ত উনাকে টাকা মারার দায়ে বহিষ্কার করা হয়েছিল। মুখতার স্যারের সাথে তারানা হালিমের প্রেম ছিল এটা জানি (শুনেছি, সবার মুখে মুখে ছিল ব্যাপারটা); সুবর্ণা মুস্তফার ব্যাপারটা কখনো শুনিনি। ডিবেটিং ক্লাবের অর্থহীন রাজনীতি......কত কথাই যে মনে করিয়ে দিল লাইনটা।

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, দুর্নীতিবাজ সোহেল স্যার এর কথা এসেছে তার কমিক চরিত্রের জন্য, তবে টাকা মারার ব্যাপারে যদি শুনে থাকেন তাহলে আরও কিছু ভেতরের খবরও শোনা উচিত ছিলো, উনি দুর্নীতির ফাঁদে পড়ে বহিষ্কার হলেও অনেকেই কিন্তু পার পেয়ে গেছে, আমি জানি তাই বলছি, আমি সক্রিয় ভাবে জড়িত ছিলাম তাই ব্যাপারগুলো জানি... নটরডেম এর বিতর্ক ক্লাবের রাজনীতি আমাদের সময় যথেষ্ট নোংরা ছিলো....

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

শামীম এর ছবি

চমৎকার লেখা। তবে কলেজের চেয়ে ইউনিভার্সিটির লাইফ বেশি মিস করি (২ বছর বনাম ১০ বছরের কাছাকাছি এবং অনাবাসিক বনাম আবাসিক)।

গুহ স্যারের চেয়ে বিদ্যাসাগর মল্লিক স্যারের পড়ানো ভালো লাগতো। তবে আপনারা সিনিয়র গুহ স্যারকে পেয়েছেন, আমরা পেয়েছিলাম তরুণ অবস্থায়। শখের বশে একবার ঢাকা কলেজে বন্ধুদের সাথে ক্লাস করতে গিয়েছিলাম। গ্যালারীর পেছনের সিটে শুয়ে কয়েকজন পোলাপানের বিড়ি ফুকা আর লেখালেখিতে ভরা রঙহীন বেঞ্চ দেখে মনে হয়েছিল, নাহ্ নটরডেম কলেজে পড়ে খারাপ কিছু করিনি।

(গ্রুপ-৭ / ৯২ ব্যাচ, বৃদ্ধ হয়ে গেলাম দেখি!)

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

সাই দ এর ছবি

লেখা ভাল হয়েছে। আমার বন্ধুদের বেশির ভাগ নটরডেম-এর

@ শামীম- আমার ক্ষেত্রে উল্টাটা হয়েছিল। নটরডেম ছেড়ে ঢাকা কলেজে গিয়েছিলাম

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, সত্যি বলতে কি অনেকের খারাপ হয়তো লাগতে পারে, কিন্তু ঢাকা কলেজের সাথে আসলে নটরডেম এর তুলনা হয়না, কারণ রাজনীতি ঢাকা কলেজকে ধংস করে দিয়েছে, সেখানে নটরডেম ছিলো রাজনীতি মুক্ত, এখন কতদূর আছে, বলতে পারবোনা, নটরডেম কলেজ আমাদের সময় পর্যন্ত অন্তত সেরা ছিলো এটা সবাই একবাক্যে মানতো ..

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সাই দ এর ছবি

@ লেখক : সম্পূর্ণ একমত। তবে গত ১৫-২০ বছর আগের ঘটনা একটু ভিন্ন ছিল। বর্তমান ঢাকা কলেজ একটি কঙ্কাল বই কিছুই নয়।

সাগর এর ছবি

শামীম ভাই, ঠিক বলেছেন। তরুণ গুহ স্যার একেবারেই মনে রাখার মত ছিলেন না। মল্লিক স্যার বেশ ভালো পড়াতেন, আমাদের খুব বেশী ক্লাস নিয়েছেন বলে মনে হয়না। কেমিস্ট্রি মূলত পড়াতেন এসি দাশ (প্রাইভেট পড়ানোর দিকেই ছিলো তার আসল মনোযোগ) তবে পিরিওডিক টেব্‍ল মুখস্থ করানোর কথা বেশ মনে আছে। আরেকজন ছিলেন নাকি গলায় কথা বলা মনোরন্জন ধর। মফস্বল থেকে আসা ছেলেরা পড়া না পারলেই তিনি নাকি গলায় জিগ্গেস করতেন, 'তোমাদের এলাকায় কী এখনো শিক্ষার আলো পৌছায় নাই?'
মনে পড়ে অন্কের নিমাই আর কার্তিক স্যার এর কথা (অত্যন্ত সজ্জন কার্তিক স্যার সম্ভবত: বাস অ্যাকসিডেন্টে মারা গিয়েছিলেন)। নিমাই স্যার ক্লাসে পড়ানোর সাথে সাথে জীবনযাপন, নৈতিকতা ইত্যাদি নিয়ে অনেক কথা বলতেন, যতদূর মনে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাষ্টার না হতে পারায় স্যারের খুব আক্ষেপ ছিলো। কলেজে এসেও স্কুলের মত ধরাবাঁধা জীবনে নিমাই স্যার (এবং আর অল্প কয়েকজন) এর কথায় চারদেয়ালের বাইরের বড়সড় পৃথিবীটার কিছুটা খোঁজ পেতাম।
শামীম ভাই, আমি সম্ভবত: বৃদ্ধতর। '৮৮ এর বিখ্যাত বন্যা ঢাকায় শুরু হওয়ার দিন ছপছপে পানি পেড়িয়ে আমাদের নবীন বরণ আর প্রথম ক্লাস। দুপুরে মিরপুর ফেরার সময় রাস্তায় হাঁটু পানি, হুড়মুড়িয়ে পানি বাড়া দেখে আব্বা বিকেলের আগেই কোমর পানির মধ্যে পলাশীতে খালার বাসায় পাঠিয়ে দিলেন কয়েকদিন পরের ঢাকা কলেজের ভর্তি পরীক্ষা যাতে মিস না করি। পানিবিচ্ছিন্ন মিরপুরে ফিরতে পেরেছিলাম দিন কুড়ি পর, সে অন্য গল্প। নটরডেম ছেড়েছি ৯০ এর উত্তাল দিনগুলোতে। আমি গ্রুপ ১, রোল ৯০১০___। নাহ বাকীটা কিছুতেই মনে পড়ছে না (__৭৬ কি, চিন্তিত )। চল্লিশ পেরুতে মাসখানেক বাকী থাকলেও চালশের পাল্লায় বেশ আগেই পড়েছি।
আপনার সাথে আরেকটা মিল পেলাম, ঢাকা কলেজ পড়ুয়া আমার এক বন্ধু দুই বছর ফিজিক্স ল্যাবের চৌকাঠ না মাড়িয়ে শেষ বেলায় আমাকে নিয়ে গিয়েছিলো যন্ত্রপাতির সাথে পরিচিত হতে। অন্ধকার, নোংড়া, অনাকর্ষণীয় ল্যাব দেখে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়েছিলো। সেবেলা বন্ধুর উপর মাতব্বরী ফলানোর পাশাপাশি আমার মাথার ঘাম পায়ে ফেলা knowledge (দু:খিত, বাংলায় কিভাবে লিখে?) কিছুটা বিতরণ করে এসেছিলাম।
আমার কলেজ জীবন খুব মিস করার মত না, তবুও নটরডেম এর কথা এলে ফাদার পিশোতো, টেরেন্স পিনেরো, প্রমীলা ম্যাডাম, অসিত স্যার (শামীম ভাই কি এনাকে পেয়েছিলেন?), মিজান স্যার দের কথা বেশ মনে হয়।
কিছুদিন আগে সচলে একজনের লেখায় (দু:খিত খুঁজে বের করতে পারলাম না) মিজান স্যার কে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন। আমার যতদূর মনে পড়ে দাড়ি-টুপী-পান্জাবী ওয়ালা মিজান স্যার মোটেই গোঁড়া ছিলেন না। বরং আমার খুব খটকা লাগতো দেখে যে, মিজান স্যার বিবর্তনবাদ মানতেন আর আজমল স্যার মানতেন না। আমি নটরডেম এ কোন ক্লাবেই ছিলাম না, শুধু নেচার স্টাডি ক্লাবের 'ফটোগ্রাফি কোর্স' করেছিলাম মিজান স্যারের কাছে। ফটোগ্রাফি না করলেও ভালোবাসাটুকু আমার এখনো আছে। অবশ্য আমাদের সময় বায়োলজি ল্যাব এর ডেমন্সট্রেটর খুব সম্ভবত: পরে লেকচারার ফিসেবে যোগ দিয়েছিলেন, ওনার নাম ও মনে হয় মিজান। সচলের ওই লেখায় এনার কথা বলে হয়েছে কিনা জানিনা।
সচলে টুকটাক মন্তব্য করলেও এত বড় মন্তব্য কখনো করা হয় নি।
ক্ষমা চাচ্ছি, তাছাড়া 'হাফাইয়া গেসি ভাই, বয়স তো কম হইলোনা' হাসি
@ অরফিয়াস- অনেক অনেক ধন্যবাদ।

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, অনেক ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে, মিজান স্যার গোড়া ছিলেননা এটা ঠিক, আজমল স্যার বিবর্তনের সরাসরি বিরোধিতা করতেন... অনেক স্মৃতি বিজড়িত এই কলেজ ..

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

বাংলা উচ্চারণ ক্লাসে সোহেল স্যারের সেই বিখ্যাত উক্তি মনে পড়ে, "আমি সুহেল আহমেদ, উচ্চারণে জুড় দেই", "তোর দাম্পত্য জীবন অসুখী হবে" অথবা "চড়িয়ে গাল লাল করে দেব"। মোক্তার স্যারের 'মুহূর্ত' বানান শেখাতে গিয়ে এক ছাত্রীর খাতার গল্প, যে বানান করতে গেলে নাকি রীতিমত (টুঁট) করতে হয়, কুবেরের লোমশ বুক আর শাল্কাঠের মত পায়ের আদিরসাত্নক বর্ণনা আর সাথে কপিলার জন্যে কিনে আনা, পাছাপাড় শাড়ির নামের নামকরণের সার্থকতা আলোচনা, ছোটবেলায় লেখা চিঠি জানালা দিয়ে ছুঁড়ে মারলে, কোন মেয়ের চুলে, মুখে, পিঠে, বুকে গিয়ে পড়ত তার প্রয়োজনীয় ডিটেইলস সহ বর্ণনা, আহা কী সব দিন!

তারপর এসি দাস স্যারের, "অ্যাঁহ, জঙ্গল থিকা উইঠা আইছ নি?", অথবা আজমল স্যারের ভিকিদের 'লালারস'এর গল্প। আর কত কি!

তাও কলেজ লাইফটা খুব ছোট। স্কুল আর ভার্সিটি লাইফের স্মৃতিই বেশি উঁকি দেয়।

আমি গ্রুপোয়ান, জিরোথ্রি ব্যাচ।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অরফিয়াস এর ছবি

দেঁতো হাসি সে আর বলতে, চরম দিন ছিলো সেগুলো, এখনো স্বপ্ন মনে হয়.... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ধুসর গোধূলি এর ছবি

জীবনে দুইটা কলেজে পড়ার খুব শখ আছিলো। আপসুস, একটা পূরণ হয় নাই! মন খারাপ

অরফিয়াস এর ছবি

মন খারাপ আপসুস ...

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আপসুস তো বটেই! সেই কলেজের কাহানি খালি আজমল স্যারের বয়ানীতেই শুনে যেতাম! মন খারাপ

স্বপ্নহারা এর ছবি

চলুক

আজমল স্যার নটরডেম-ভিকারুন্নেসা হলেও উনি ছাত্রী ছাড়া পারতপক্ষে পড়ান না...ব্যাপক রসিয়ে চাপা মারতে পারতেন। বেশ মজা পেতাম ক্লাস করে। একদিন একজনকে ধুম করে দাঁড় করিয়ে স্যার বললেন, "এই তুমি ছেলে না মেয়ে?" উত্তর আসতেই বললেন, "প্রমাণ কর!" স্যার বিবর্তনবাদ পড়াতেন কিন্তু নিজে তার বিরুদ্ধে অনেক উল্টাপাল্টা বলতেন ...ইভ্যোলুশনের ছবিটার শেষটা ছিল ডারউইন দিয়ে, উনি বলতেন শুধু ডারউইনই বানর থেকে আসছে...!! আরেকবার বলেছিলেন কেউ কেউ বাঙালি হয়ে মরতে চায়; আরে আজব! তোরে কী পোড়াবে নাকি কবর দিবে সেটা বল আগে! তবে স্যার জটিল নিতেন ইন্টারের এক্সটার্নাল হিসেবে...৫ মিনিটে ৩০ জনের ভাইভা শেষ...খাইছে

মিজান স্যারের নেচার স্টাডি ক্লাব খুব ভাল ছিল...উনিও বেশ চাপা মারতেন। দাঁড়ি রাখা নিয়ে একবার বলেছিলেন, "আরে তোমরা কী বুঝবা! আসলে বউয়ের চড় গালে লাগে না!" দেঁতো হাসি

আপনারা গ্রেট টেরেন্স পিনেরো কে পাননি...উনার পড়ানো ছিল অসাধারণ। কিন্তু উনার ক্লাসে প্যান্ট ভিজে যাওয়ার সিচুয়েশন তৈরি হত মাঝে মাঝে...

কেমিস্ট্রিতে সেরা স্যার (আমার জীবনের অন্যতম সেরা) বিদ্যাসাগর স্যার...গুহ স্যারকে তরুণ অবস্থায় পেয়েছি দুয়েকটা ক্লাস, ভাল লাগেনি। সাহা স্যার ভাল ছিলেন, কিন্তু ভাল পড়াতেন না।
সোহেল স্যারকেও অত ভাল লাগেনি। আমাদের ছিলেন প্রমীলা ম্যাডাম...অসাধারণ পড়াতেন, কিন্তু খুব সিরিয়াস আর বোরিং। আমাদের আদিরসাত্মক কৌতুক গুলো ছিল মারলিন ক্লারা পিনেরো ম্যাডামকে নিয়ে খাইছে গণিতে জহরলাল স্যারকে তেমন পাইনি, কিন্তু নিমাই স্যারকে অনেক বেশি উচুঁ লেভেলের মনে হত। জহরলাল স্যারের দুইটা ক্লাস করে মনে হয়েছে নিমাই স্যারের ক্লাসে জ্বলাতন কম! চোখ টিপি পরে ভার্সিটিতে গিয়ে নিমাই স্যারের মহিমা বুঝতে পারি! মুখতার স্যারের ক্লাসগুলো প্রথমে মজা লাগতো খুব, খুব হাসাতেন। পরে বিরক্ত ধরে যায়। বরঞ্চ বিদিশার বাবা (নামটা মনে পড়ছে না) পড়িয়েছিলেন...মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম উনার বিশ্লেষণে। ইংরেজিতে জাহাঙ্গীর স্যার ব্যাপক হাসির পাত্র ছিলেন, প্রায়ই বলতেন, "যে এবসেন্ট, সে দাঁড়াও!"

সুশান্ত স্যারের মত ভালমানুষ খুব কম দেখেছি। উনার ক্লাসে আমরা পেছনে কন্সার্ট করতাম...উনার মুদ্রাদোষগুলো মজা পেতাম। প্রথম বছর বেশ গুড বয় ছাত্র থাকার চেষ্টা করেছি, সামনে বসতে চাইতাম...১টা মাত্র ক্লাস মিস করেছিলাম-কুইজে লাড্ডা মারতাম। দ্বিতীয় বছর সারাক্ষণ মাঠে ক্রিকেট খেলতাম...ক্লাস ফাঁকি দিতাম বেশিরভাগ। এভারেজে ৮০ এর উপর
প্রেজেন্স ছিল...কুইজে ধুমায়া ছক্কা মারতাম চোখ টিপি অবশ্য আমাদের কার খাতা যে কার কাছে চলে যেত কুইজের সময়। চোখ টিপি

কলেজ আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে...পরীক্ষাকে ভয় না পাওয়া একটা, অবশ্য তাতে সমস্যা ছিলঃ ইন্টারকেও বেশি সহজভাবে নিয়ে নিয়েছিলাম হাসি নটরডেমের কথা বললে, কুইজের কথা বলতেই হবে...আর ক্লাবগুলোর চামচামি-পলিটিক্স মেজাজ খারাপ করে দিত...

নাহ, বয়স হয়ে গেল...আপনার লেখা পড়ে অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল...ধন্যবাদ। লেখা ভাল লেগেছে...হাসি

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, আপনিও অনেক কিছু মনে করিয়ে দিলেন, হা আজমল স্যার বিবর্তনের সরাসরি বিরোধিতা করতেন আমাদের সময়, আর তিনি একটু ধর্মান্ধ ছিলেন বলে আমার মনে হয়েছে, বিশেষ করে হুমায়ুন আজাদ কে নিয়ে তিনি অনেক কটূক্তি করতেন ক্লাসে অযথাই, মিজান স্যার ভালো ছিলেন, চাপা মারলেও তার পড়ানো ভালো লাগতো| আজমল স্যার ভাইবায় আমাকে একটাই প্রশ্ন করেছিলেন, "তুমি কি সিগারেট খাও, সত্যি বলবা"| ব্যাস ভাইবা শেষ আর কিছুনা|

বাংলায় অনেক শিক্ষক বদলেছিলো, তবে মজা হতো সোহেল এর ক্লাসেই, তার কমিক চরিত্রের জন্য অবশ্যই| আর জহরলাল স্যার কে আমরা আপন ভাবতাম কারণ তিনি নিজের ইচ্ছায় ক্লাস না বদলে ২ বছর আমাদের গ্রুপ-৪ কে পড়িয়েছিলেন| সুশান্ত স্যার কে আমরা পাইনি, ছিলেন তিতাস স্যার, উনিও কিছু বলতেননা|

কলেজ আসলেই অনেক কিছু শিখিয়েছে, যদি নটরডেম এ না পরতাম তাহলে হয়তো এখনের কষ্টকর দিনগুলো মোকাবেলা করতে পারতামনা, কলেজ আমাদেরকে জীবনযুদ্ধের জন্য তৈরী করে দিয়েছিলো...

বয়স আস্তে আস্তে আমাদেরও বাড়ছে, স্মৃতিগুলো চোখ ঝাপসা করে দেয়|

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তুষার কাওসার এর ছবি

বয়স আস্তে আস্তে আমাদেরও বাড়ছে, স্মৃতিগুলো চোখ ঝাপসা করে দেয়|

এত সুন্দর করে কীভাবে লিখেন?

অরফিয়াস এর ছবি

লইজ্জা লাগে

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সাগর এর ছবি

ওঁয়া ওঁয়া বিশাল একটা মন্তব্য এইমাত্র শেষ করে মডারেশন কিউতে দিয়া দেখলাম আপনি আমার প্রায় সব কথা বলে দিয়েছেন।
প্রমীলা ম্যাডাম মধুসূদন এর বীরবাহু বধ ( চিন্তিত ) দুর্দান্ত পড়িয়েছিলেন।
আমাদের বাংলা আরো পড়াতেন মিয়া মোহম্মদ আবদুল হামিদ (বা হাকিম!!), গরীব নেওয়াজ আর মুখতার স্যার। গরীব নেওয়াজ আর হাকিম স্যার দুইজনই খুব ভালো বিশ্লেষণ করতেন, বিশেষ করে গরীব নেওয়াজ স্যার। সাহিত্য কে যে এত নির্মোহ ভাবে বিশ্লেষণ করা যায় সেটা কল্পনার অতীত ছিলো।
পিনেরো আমাদের অল্প কিছু ক্লাস নিয়েছিলেন, কমার্স এ তে ওনার গিফ্ট অব ম্যাজাই ( চিন্তিত ) পড়ানোর গল্প শুনে মুগ্ধ হয়েছিলাম।
সুশান্ত স্যার আসলেই খুব ভালো ছিলেন। তবে আমি অসিত স্যারের (খুব অল্প কয়দিন নটরডেম এ ছিলেন) মত এমন নিপাট ভদ্রলোক এই জীবনে দেখিনি। ক্লাসে ছেলেরা গোলমাল করলে স‌্যার পড়ানো থামিয়ে চুপ করে থাকতেন সবাই ঠান্ডা হওয়ার জন্য। গোলমাল থামলে আবার শুরু করতেন। কখনো কাউকে বকা দিতে বা উচু গলায় কিছু বলতে শুনিনি। অসিত স্যার ফ্রেন্চ জানতেন (পিনেরো, অসিত স্যার আদমজী কলেজের সলিমুল্লা স্যার রা একসাথে আফ্রিকার কোন এক ইউনিভার্সিটিতে মাস্টারি করেছিলেন)। আমাদেরকে সমারসেট মম এর লান্চন খুব ভালো পড়িয়েছিলেন।
@স্বপ্নহারা- আপনি কি ৯০ এর আশেপাশে নটরডেম এ ছিলেন?
ধন্যবাদ।

পিয়াল এর ছবি

আমি বিদ্যাসাগর মল্লিক স্যারের ক্লাস এখনও মিস করি। জহরলাল আর সুশান্ত স্যারকেও ভালো লাগতো । ফাদার বকুল রোজারিও নামের একজন কিছুদিন বাংলা পড়িয়েছেন, জঘন্য । ২টা বছর পড়ার চাপে থাকলেও নিয়মানুবর্তিতা আর শৃঙ্খলা ভালো লাগত। একদিন দেখি ক্যান্টিনে হৈচৈ। ফার্স্ট ইয়ারের এক ছেলেকে এক রিকশাওালার কাছে মাফ চাওয়ানো হচ্ছে। রিকশা আস্তে চালানোর "অপরাধে" সেই ছেলে কলেজ গেটে রিকশাওয়ালাকে চড় মারে। আমাদের দেশে হয় "ক্যাডেট কলেজ" অথবা "ছাত্রলীগ" এই দুই মডেল ছাড়াও যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলতে পারে তার একটা বড় উদাহরণ নটরডেম।

(গ্রুপ-৭ / ৯৩ ব্যাচ)

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, হ্যাঁ, শুধু কলেজ হিসেবেই নয়, যেকোনো প্রতিষ্ঠানেরই আদর্শ হতে পারে নটরডেম, ফাদার বকুল রোজারিও ছিলেন আমার দেখা সব থেকে বিতর্কিত শিক্ষক..

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

কি লেখা দিলি রে ভাই, আমার পরীক্ষার প্রস্তুতি তো গাছে উঠলো মন খারাপ

সুহেল আমার দেখা সেরা কমেডি শিক্ষক। এমনটা নয় যে তিনি মুখতার স্যারের মতন কমেডি করবার চেষ্টা করছেন, বরং তার হাঁটাচলাকথাবার্তা সব কিছুতেই একটা অটো কমেডি চলে আসতো দেঁতো হাসি

রাশেদা ম্যাডামের 'সাগল' গালিটা এখনো ভুলিনি।

মিজান স্যার ক্যামন যেন। একবার উনি কেউ প্রশ্নের উত্তরে নীরব ছিলো বলে 'ভাব লও, না ??' বলে তারে খালপাড় করে দিয়েছিলেন, পরেরদিনই আবার আরেকজন উত্তর দেয়ায় 'বেয়াদপ, মুখের উপর কথা বলো !!' বলে তাকে ভরেছিলেন হাসি

গুহ স্যারের 'ত্রিপাঠি' আর আমাদের 'বাদশা' কানেকশন কখনোই ভোলার নয় !!

আর এদ্দম দরজার সামনের রো-তে আমরা যারা ছিলাম, তারা যে প্রতি ঘন্টার সাথে সাথে করিডোরে বেরিয়ে যে-ই আড্ডাটা জুড়তাম !! আহ, কী সেই সব দিন !!

জওহরলাল স্যারকে নিয়ে লেখলে কথা শেষ হবে না। স্যারকে নিয়ে লিখেছিলাম এইখানে

# ১০৬৪০১২

অরফিয়াস এর ছবি

সুহান কি করবো ভাই, স্মৃতিকাতরতায় ভুগছিলাম, হা মিজান স্যার একটু খামখেয়ালী ছিলেন, "বাদশা" তো ভোলার কথা নয়ই, জহরলাল স্যার নিয়ে লেখাটা পড়েছিলাম, আসলেই কত স্মৃতি জড়িত....

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

দিকভ্রান্ত এর ছবি

খুব ভাল লাগল, অনেক দিন পর অনেক মজার আর নিজের অনেক প্রিয় কিছু বন্ধুদের কথা মনে পড়ল, স্যারদের কথা...
ধন্যবাদ। হাসি

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, একই ব্যাচ নাকি???

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

শাব্দিক এর ছবি

চলুক
আজমল স্যারের একটা ডায়ালগ মনে পড়ছে, " আঠারো বছর ধরে মাস্টারি করি। বারে যাই আর ওয়াজ মাহফিলে যাই, আমার ছাত্র ছাত্রী থাকবেই"

সুশান্ত স্যারের, "কও তো দেখি"।

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, সব স্যার এর কিছু না কিছু ট্রেডমার্ক কথা তো থাকেই... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

শাব্দিক এর ছবি

এই দুজন স্যার শুধু কমোন পড়ল, দুটা কলেজেই ক্লাস নিত কিনা। হাসি

কালো কাক এর ছবি

সুশান্ত স্যারের "কও তো দেখি" গুনতাম আমরা, ৯২বার বলেছিলেন একদিন দেঁতো হাসি

আসিফ হাসান এর ছবি

৯৬ সালে পাশ করেছিলাম নটরডেম থেকে। কিন্তু লেখাটা পড়ে নিজের সেই সোনালী দিনগুলোর সংগে অনেক মিল পেলাম। একটা দশক ধরে নটরডেমের ছাত্ররা সেই একই ছাঁচে পড়ছে, হাসছে, আনন্দ পাচ্ছে এটা ভাবতেই ভাল লাগলো। আমি নেই কিন্তু আমার মত অসংখ্য ছেলে প্রতিদিন আমার মত করেই জীবনটাকে চিনে নিচ্ছে এই চিন্তাটা কেন জেন খুব ভাল লাগলো। তবে হ্যা টেরেন্স পিনেরোকে মিস করা একটা বিশাল ক্ষতি বটে। খারাপ ভাল মিশিয়ে একজন অনন্য মানুষ ছিলেন উনি। লেখায় জাঁঝা।

অফটপিক: শারমেন রডরিক্স নামে বোধহয় এক ইংরেজীর শিক্ষিকা ছিলেন। ওনার নামের সঠিক বানানটি এবং কোন খবরাখবর কেউ জানেন? লইজ্জা লাগে

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, শারমিন ম্যাডাম কে আমরা পেয়েছি কিনা ঠিক মনে করতে পারছিনা, তবে আর একজন ছিলেন, উনার নামটাও ঠিক মনে নেই, নাদিয়া সুলতানা অথবা নাহিদা এরকম কিছু ...

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

খালিদ এর ছবি

সেই পুরনো দিনগুলোতে ফিরে গেলাম আপনার লেখা পড়ে। আসলেই অনেক মজার ছিলো সেই দিনগুলো। স্যার/ম্যাডামদের অনেক নামও তো দিতাম আমরা চোখ টিপি, যেগুলো আবার বছরের পর বছর ধরে চলে আসতো।

সোহেল স্যারের সেই ডায়লগ এখনো কানে ভাসে, "আমার নাম সুহেল আহমেদ, আমি তুমাদের বাংলা পোড়াই!" তার ক্লাসে পোলাপাইন কথা বলত বলে মাঝে মাঝে তীব্র গরমের সময় তিনি ফ্যান অফ করে রাখতেন, যাতে কারা কথা বলছে, তা শুনে তিনি ধরতে পারেন। একবার এরকম পরিস্থিতিতে আমি শার্টের উপরের বোতামটা খুলে হাত-পা ছড়িয়ে বসে ছিলাম (আমার সিট ছিলো একদম পছনের সারির ঠিক আগের সারিতে, যেখানে স্যারদের চোখ বেশি পড়ে। আমি আবার বুঝে শুনে 'বাং' মারতাম, যাতে সিট সামনে না আগায়! খাইছে)। স্যারের চোখে পড়তেই তিনি দাঁড় করালেন।

তারপর তার স্বভাবসুলভ উচ্চারণে,
- এই! জামার বোতাম... লাগাও!
- স্যার, গরম লাগে হাসি
- বের হয়ে যাও!

আমি আর কিছু না বলে ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে গেলাম। আমার ক্লাস ছিলো গ্রুপ সেভেনে। গ্রুপ সেভেনের রুমের পাশেই একটা ছোট রুম ছিলো। আমি সেখানে গিয়ে দুটা হাইবেঞ্চ পাশাপাশি লাগালাম। তারপর তার উপর শুয়ে শুয়ে গল্পের বই পড়তে লাগলাম। একটু পর ক্লাস শেষ হলে স্যার যখন বেরিয়ে যাচ্ছেন, তখন দেখি আমার দিকে কড়া দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন! সেদিনের কথা মনে হলে এখনো হাসি পায়!

অনেকেই দেখলাম মুখতার স্যারের কুবের-কপিলার কথা বললেন। তিনি কিন্তু বিলাসী, হৈমন্তী, দিলীপ-হিরণ, কার্দী-জোহরা কাউকেই ছাড় দিতেন না! চোখ টিপি

তবে আমার দেখা সেরা টিচার ছিলেন স্ট্যাটিস্টক্সের খামোশ (খান মোহাম্মদ শরীফ) স্যার। যেমন পড়াতেন, তেমনি মজাও কম করতেন না। যাদের স্ট্যাট ছিলো না, তারা মিস করেছেন! খাইছে

গ্রুপ - ৭, ইন্টার - ২০০৪

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, আসলে সময় বদলায়, কাহিনী একই থাকে প্রায়, শুধু চরিত্রগুলো হয়তো বদলে যায়, নামগুলো বদলে যায়, খামোশ স্যার এর কথা শুনতাম, সোহেল তো কমিক চরিত্র, উনাকে স্টেজ এ স্ট্যান্ড আপ কমেডি করতে দিলে চলা-ফেরা দেখলেই লোকজন হাসতে থাকবে ....

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

পৃথ্বী এর ছবি

মাত্র দু'মাস আগে কলেজ ছেড়ে আসলাম, এইচএসসি দিলেই কলেজের সাথে সব সম্পর্ক অফিসিয়ালি শেষ। নটরডেমের সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি হল দেড় বছরের পাগল করা চাপে কলেজটাকে অনুভব করার মত সময় হয়ে ওঠে না। মাত্র দু'মাসের মাথায় কলেজ জীবনটাকে এখন স্বপ্নের মত মনে হয়, যেন বাস্তবে ঘটেইনি।

আমাদের গ্রুপে মিজান স্যার ছাড়া সিনিয়র শিক্ষক তেমন পাইনি, তবে জুনিয়রদের মাঝে দু'জনকে পেয়েছি যাঁরা ইতিমধ্যেই কলেজের অমূল্য সম্পদ হিসেবে স্থান করে নিয়েছেন।

আমি একটু বেরসিক দেখেই হয়ত মিজান স্যারের চাপাবাজি আর জীববিজ্ঞান ক্লাসে ইংরেজি পড়ানোর বদঅভ্যাসটা ভাল লাগত না। চাপাবাজির কারণে সিলেবাস শেষ করতে পারেননা, উলটো ছাত্রদের দোষারোপ করেন। উনার একটা চাপা একটু বেশিই বিরক্তিকর লেগেছিল- উনাকে নাকি ঢাকা মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় মৌখিকের সময় জিজ্ঞেস করা হয়েছিল ইনহেরিটেন্সের একক কি। উনি বলেছিলেন জিন, প্রশ্নকর্তা খেকিয়ে উঠে বলেছিলেন ইনহেরিটেন্সের একক ক্রোমজোম। উনি এরপর ঘাড় ত্যাড়ামি করায় উনাকে রিজেক্ট করা হয়। ডাক্তাররা জেনেটিক্সের এত ফান্ডামেন্টাল একটা তথ্য জানবে না, এটা কেমনে সম্ভব?

উনার আরেকটা আপত্তিকর দাবি ছিল যে জাফর ইকবাল নাকি পোলাপানকে সায়েন্স ফিকশন গিলিয়ে বিজ্ঞানবিমুখ করছেন। কিছু বলার নাই মন খারাপ

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

হ্যা মিজান স্যারের এরকম অদ্ভুত দাবী ছিল অনেক। একবার উনি বলেছিলেন, গেম খেলার সময় যখন যেখানে শুট করার কথা সেখানে শুট না করে উল্টাপাল্টা জায়গায় যদি গুলি লাগে বা রেসিং এর সময় যদি গাড়ি রাস্তা থেকে বের হয়ে যায় সেসব থেকে নাকি কম্পুতে ভাইরাস হয় দেঁতো হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অরফিয়াস এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি অসাধারণ দাবি ...

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

পৃথ্বী এর ছবি

আমাদেরকে উনি এক ক্লাসে ইউনিক্স সম্পর্কে জ্ঞান দিচ্ছিলেন, ঘুমিয়ে পড়াতে অবশ্য কি বলেছিলেন তা মনে নাই। পৃথিবীতে মিজানুর রহমান ভূইয়াই মনে হয় একমাত্র ব্যক্তি যিনি একই সাথে ব্ল্যাক বেল্ট, প্রাণীবিজ্ঞানী, ক্রিকেটার ও একজন অভিজ্ঞ প্রোগ্রামার(এই প্রত্যেকটা পদবীর পেছনে কাহিনী আছে, বাড়িয়ে বলছি না)। দেড় বছরে উনার কাছে জগতের বিবিধ বিষয়ে(জীববিজ্ঞান ছাড়া) অনেক জ্ঞান লাভ করেছি।

তবে উনাকে একটা বিষয়ে ক্রেডিট দিতে হয়। উনি ক্লাসে অল্প যে কয়েকবার বিবর্তন সম্পর্কে কথা বলেছেন, কোনবারই ধর্মের দোহাই দিয়ে আউল-ফাউল কথা বলেন নাই। পদার্থবিজ্ঞানের বদরুল স্যার প্রায়ই ক্লাসে কোরানে পদার্থবিজ্ঞান খুজে পেয়ে আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ করতে করতে ভক্তিতে গদগদ হয়ে যেতেন। জোব্বা-টুপি পড়ে থাকা মিজান স্যারের এদিক দিয়ে ইন্টিগ্রিটি ছিল।

অরফিয়াস এর ছবি

পারদর্শী মিজান স্যার..... দেঁতো হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সাগর এর ছবি

হা হা হা, বদরুল স্যার জয়েন করেছিলেন আমাদের সময়, খুবই লাজুক। গলা দিয়া প্রায় আওয়াজই বাইর হইতোনা। পরে তো মনে হয় ভালোই উন্নতি হয়েছে খাইছে । শুকুর আলহামদুলিল্লাহ।

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, আসলে ভালো-মন্দ মিশিয়েই মানুষ, তবে স্যাররা আমাদের জীবনে স্থান করে নিয়েছেন যেভাবেই হোক, কলেজ জীবনটা ছোট্ট পরিসরের কিন্তু এর প্রভাব দীর্ঘ...

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

আশালতা এর ছবি

চমৎকার নস্টালজিক লেখা। আরও অনেক গল্প আছে নিশ্চয় ? পর্ব করে করে দিতে পারেন কিন্তু। হাসি

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, কথা তো ফুরোবেনা একবার বলতে শুরু করলে, অজস্র স্মৃতি জড়িয়ে আছে .... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

রসমালাই এর ছবি

নস্টালজিক হয়ে পরলাম লেখাটা পড়ে. আমি ২০০৪ নটরডেম থেকে এইচ এস সি দেই.
আমাদের ইংরেজি নিতেন JK স্যার. প্রতিদিন করতালির মাধ্যমে তাকে আমরা অভ্যর্থনা জানতাম খাইছে মুখতার স্যার এর ক্লাস কিছুদিন পেয়েছিলাম. কিন্তু মার্লিন ম্যাডাম নিজ উদ্যোগে মুখতার স্যার কে বাদ দিয়ে প্রায় দের বছর আমদের ক্লাস নিয়েছেন. মনে পড়ে বিদ্যাসাগর স্যার এর উক্তি "এইটা বুঝাইলেও বুঝবানা, বুঝলেও পড়বানা , পড়লেও পরীক্ষায় আসবেনা, পরীক্ষায় আসলেও লিখতে পারবানা , পারলেও নাম্বার পাবা না ":D সুশান্ত স্যার এর ক্লাস বেশ ভালো লাগতো. একবার একজনকে উনি শাস্তি হিসেবে তাপগতিবিদ্যার প্রথম সুত্র পুরো চাপ্টার লিখতে দিয়েছিলেন. ভদ্র স্যার, জহরলাল স্যার,মিজান স্যার সবার কথা মনে পড়ে গেল.
জীবনের খুব সুন্দর কিছু সময় কাটিয়েছি নটরডেম কলেজ এ .কখনো ভুলবার নয় হাসি

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, JK স্যার কে নিয়ে অনেক মজার ঘটনাই ছিলো, মার্লিন ম্যাডাম মজার ছিলেন, দু-একদিন ক্লাস পেয়েছিলাম, বাকি স্যারদেরও ভোলার নয়, নটরডেম জীবনের স্মৃতি অনেক আলাদা... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তারেক অণু এর ছবি

"দেখা হবে বন্ধু, কারণে আর অকারণে,
দেখা হবে বন্ধু, চাপা কোনো অভিমানে,
দেখা হবে বন্ধু, সাময়িক বৈরীতায়,...
দেখা হবে....."

অরফিয়াস এর ছবি

হাসি ..... দেখা হবে.... [আগে করা মন্তব্যগুলো এখনো আপডেট হচ্ছেনা কেনো?? কি জানি চিন্তিত ]

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তানিম এহসান এর ছবি

কলেজ জীবনটা কেমন হুড়মুড় করে শেষ হয়ে যায়! সব মনে পড়ে গেলো। টেরেন্স স্যর এর কথা মনে পড়ছে, বাঘ এর মত ভয় পেত সবাই, অথচ স্যরের সাথে অনেক পরে রাস্তায় দেখা হলে দেখেছি একদম অন্যরকম মানুষ। স্যর এর আত্মা প্রশান্তিতে থাকুক।

৯২৩০৫২ - আজীবন বয়ে বেড়াবো এই সংখ্যাবাচক কিন্তু গর্বিত পরিচিতি। ধন্যবাদ আপনাকে।

অরফিয়াস এর ছবি

হুমম খুব দ্রুত চলে যাওয়া ২টা বছর জীবনের সেরা স্মৃতি হয়ে থাকে... আমার ছিলো ১০৬৪১১৯ মনে পড়লো এখন ... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

Muntasim Munim Mishu এর ছবি

নস্টালজিক হয়ে গেলাম আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অরফিয়াস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

nusaer_nitol এর ছবি

কি যে অশাধারন চাপ আর মজা করে নটরডেম এর দিন গুলা পার করেছি, বলে শেষ করা যাবেনা।
নবিন-বরন এর দিন ই কুইজ এর সিলেবাস ধরায়ে দিলো, তাও নটরডেম এর ইতিহাস এর উপর। প্রথম দিন ক্লাস এ গিয়ে কুইজ দিলাম।
ম্যাথ নিতেন বিদ্যুৎ স্যার আর সেকেন্ড ইয়ার এ বিশ্বজিৎ স্যার। বাংলায় পেয়েছিলাম মোক্তার স্যার, ফাদার বকুল, মারলিন ক্লারা পিনেরো ম্যাডাম কে। আর ইংরেজি তে সেই বিখ্যাত J.K. স্যার কে। স্যার এর ক্লাস এ পয়সা ফেলার বুদ্ধি ছিল আমার। এক বড় ভাই এর কাস থেকে শুনা। কিন্তু ঐদিন ই স্যার শেষ পর্যন্ত কেঁদে ক্লাস থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন। পরে আবার আমিই গিয়ে স্যার কে বললাম, স্যার যারা যারা এই কাজ করেছে, তাদের কে খুঁজে বের করে আমিই ঝাড়ি দিয়ে দিব স্যার। সবার পক্ষ থেকে আমিই শেষ পর্যন্ত মাফ চাইলাম।
J.K স্যার একদিন যারা বই আনে নাই তাদের কে রুম থেকে বের হয়ে যেতে বললেন। ভালো কথা। আমরা মাত্র ৫০ জন ছাত্র বের হয়ে চলে আসলাম।

আর ক্লাস ফাকি দিয়ে মোড়ের চাচার দোকান থেকে সিগারেট নিয়ে পাশের দোকান থেকে চা নিয়ে খাওয়া তো প্রতিদিন এর ব্যাপার ছিল। আর ফলসরূপ অবধারিত জেল ক্লাস, তাও ১৭ দিনের। প্রথম দিন সব ঠিক, দ্বিতীয় দিন থেকে জেল ক্লাস এ বসে তাস খেলা শুরু। আহ, কি সেই পড়ালেখা...!!!!

ফিজিক্স practical class এর রিপিট খেয়ে মনে হত স্যার দের মাথা ভাঙ্গি... কিন্তু লাভ টা যে কি হয়েছিলো, সেটা এখন বুঝি...

আরও আরও কত কি......!! সব লেখতে গেলে ৩ দিন ধরে লিখেও শেষ হবেনা...

সবাই ভালো থাকবেন।

নিটোল ( '০৭, গ্রুপ ৮, রোল- ১০৭৮১২৬)

অরফিয়াস এর ছবি

আসলেই তাই, লিখে শেষ করা যাবেনা এত স্মৃতি আছে, যাই হোক ভালো লাগলো আপনার কথা শুনে, আমার ছিল ১০৬৪১১৯...

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ehsan এর ছবি

সকালে ঘুম থেকে উঠেই খুব নস্টালজিক হয়ে পড়লাম। আমার কলেজ জীবনে একটা ডায়েরী ছিল। সেটা এখন আর পড়ার সময় হয় না। অনেকদিন পর নটরডেমকে মনে করিয়ে দিলেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
ভালো থাকিস বন্ধুরা।

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকেও ... ভালো থাকুন... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কিষান এর ছবি

গ্রুপ সেভেনে ছিলাম, ব্যাচ ০৭। তবে আপনি যাদের কথা বললেন সবার ক্লাস পেয়েছি.....

ধন্যবাদ চোখ দুইটা একটু ভিজিয়ে দেবার জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ.... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

আমি কেউ নই! এর ছবি

অনেক কথা মনে পরে গেলো!! আহা কি সুন্দর দিনগুলাই না ছিলো!! JK কে বহুত ডিষ্টার্ব করছি আমরা!! দেঁতো হাসি :D

@অরফিয়াস ভাই-- আনন্দ মানে কি সায়েন্স ক্লাবের আনন্দ ভাই?

সাব্বির(1078061)

অরফিয়াস এর ছবি

আনন্দ সাইন্স ক্লাবের আনন্দ কিনা তাতো বলতে পারছিনা, হতে পারে, কিন্তু ও এখন জাপানে... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

riyad এর ছবি

"একুশে অগাস্ট এর বোমা হামলার ঠিক পরের দিন ছিল আমাদের ক্লাস..." পড়েই চমকে উঠলাম। আমিও সেদিন আমার প্রথম ক্লাস করে এসেছিলাম NDC থেকে। group-8 ছিল আমাদের গ্রুপ। নস্তালজিক হয়ে পরলাম লেখাটি পড়ে। ধন্যবাদ।

অরফিয়াস এর ছবি

একই ব্যাচ তাহলে... হাসি ধন্যবাদ আপনাকেও ...

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

Marvin Anik এর ছবি

অসাধারণ লিখেছেন ভাইয়া, পুরাই নসটালজিক হয়ে গেলাম- অনিক(1097104)..... হাসি

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সাফি এর ছবি

স্মৃতি কাতর হয়ে গেলাম মন খারাপ

শাহীন এর ছবি

যাহা কিছু আনন্দের ছিল ........................যাহা আমাকে নূতনভাবে নিজেকে চিনিয়েছিল তার সবটুকুই নটরডেম .....................।। অনেক কিছু নাড়া দিয়ে গেল !!!!.........।।

অরফিয়াস এর ছবি

এটা ঠিক জীবনকে নতুন আঙ্গিকে দেখিয়েছিলো নটরডেম ..

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অরফিয়াস এর ছবি

স্মৃতিকাতরতা থেকেই লেখা... এখন তো আর সবার সাথে দেখাও হয়না... মন খারাপ

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কোর আই সেভেন এর ছবি

এই তোর রোল কত রে????

অরফিয়াস এর ছবি

ওই আমার রোল ১০৬৪১১৯, তোর কতো রে ??? চিন্তিত

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সাব্বির আলম এর ছবি

আমার নটরডেম, আমাদের নটরডেম......স্মৃতিতে হোক আর জীবনের অসাধারণ কিছু মূল্যায়নের কারণে হোক.........কিছুতেই ভোলার নয়। আজও মন খারাপ লাগলে কলেজের সামনে দিয়ে ঘুরে আসি। এত্তো মানুষ আমাদের আছে সচলে দেখে খুব ভালো লাগছে (সত্যি বলতে খুবই গর্ব হচ্ছে)।

নটরডেম এর কারণে আমরা একই পরিবারের মানুষ। (১০৭৮০৫৯)

যাদের কথা মনে পড়ছে,

মিজান স্যার
অমল কৃষ্ণ বণিক স্যার
আজমল স্যার
জওহরলাল স্যার
বিদ্যুৎ স্যার
বিদ্যাসাগর স্যার
সুশান্ত স্যার
তিতাস স্যার
মুখতার স্যার
জাহাংগীর স্যার

হাসি

অরফিয়াস এর ছবি

নটরডেম এর কারণে আমরা একই পরিবারের মানুষ।

ঠিক কথা... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

Abul kasnat Rupak এর ছবি

আমি আবুল হাসনাত রুপক (#১০৬৪১৫০),

আমি প্রায় লিখি নটর ডেম সম্পর্কে, "best achievement". জানি না কেন? কিন্তু আজও আমার স্টুডেন্ট (Tution) দের বলি, " কি লিখি, কেনো লিখি? জানতে চাই" ।
জহরলাল স্যার বা গুহ স্যার , মিজান স্যার কে কখনো ভুলতে পারবো না... ভুলা জায় না। এলেন স্যার কি পরাতেন আমি আজও বুঝি না। কিন্তু গুহ স্যার কে বুলতে পারি না।

অনেক দিন পর কলেজ এর কথা মনে পরলো, মন টা ভারী হয়ে গাছে...।।
অনেকের কথা মনে, দুই মাহাবুব ছিলো আমার পাশে, বাদন আর পান্থ ছিলো পিছনে, পুরো দুই বছর।

আমাকে পাওয়া যাবে,
+৮৮০১৭১৭৪৮০৫৩৮

facebook.com/ahrupak

অরফিয়াস এর ছবি

শুনে ভালো লাগলো, ভালো থাকিস ... হাসি তোর খোমাখাতার লিঙ্কটা আমাকে বার্তায় পাঠাস...

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

আসিফ এর ছবি

খারাপ মন টা আর খারাপ করে দিলেন তো ভাই......দুই বছর কি ভাবে যে কেটে গেল!!!!!!!

অরফিয়াস এর ছবি

মন খারাপ

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

এলমুন নাহার পপি এর ছবি

আমার ছেলে 'উৎস' এ বছর নটর ডেম থেকে এইচ এস সি দেবে ! লেখাটা পড়ে বারবার আমার চোখ ভিজে যাচ্চিল-গলা ব্যাথা করছিল ! আমার ছেলেটা আমারই মত আবেগ প্রবন ! খুব ইচ্ছে করছিল লেখাটা ওকে দেখাই,কিন্তু এটা পড়ার পর আজ রাতে আর কিছুই পড়া হবে না ওর, তাই দেখাতে পারলাম না ! সবার জন্য ভালোবাসা থাকল !

পৃথ্বী এর ছবি

নামটা চেনা চেনা লাগছে, কোন গ্রুপের বলবেন কি?

অরফিয়াস এর ছবি

উৎস- এর জন্য শুভকামনা.... আপনাকে ধন্যবাদ... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

amio achi এর ছবি

ভাই ফিরে গেলাম সেই দিন গুলোতে............আমিও একজন '০৬ নটরডেমিয়ান।

jahir emam এর ছবি

ভাই ফিরে গেলাম সেই দিন গুলোতে............আমিও একজন '০৬ নটরডেমিয়ান......... মিজান স্যার... আমার অতি প্রিয় একজন মানুষ...

অরফিয়াস এর ছবি

ভালো লাগলো আমারও.... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

পৃথ্বী এর ছবি

এই কলেজটার সবচেয়ে বড় গুণ হল এর বৈচিত্র্যময় স্টুডেন্ট বডি। একই টেবিলে একজন বড়লোকের ছেলে লুকিয়ে লুকিয়ে তার দামী মোবাইলে গেম খেলছে, তার পাশের জন আবার রীতিমত সংগ্রাম করে পড়াশুনা করছে। এই কলেজে স্যারদের লেকচার থেকে যা শিখেছি, তার থেকে অনেক বেশি শিখেছি বিভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা ছেলেদের সাথে মেলামেশা করে।

অনিক এর ছবি

ভাইয়া আপনার লিখা টা পরে খুবই আবেগ প্রবন হয়ে পরলাম... হয়তো আবেগি মানুষ বলে । কি দিন গুলোই না ছিল।কিন্তু মজার বেপার হচ্ছে আপনার প্রথম এ যে দুই লিখে স্যার এর কথা লিখছেন ( জহরলাল স্যার আর আজমল স্যার ) quiz এর সময় দুই জন এর হাতেই ছড় খাইছি... লুল লুল লুল লুল লুল লুল..................

অরফিয়াস এর ছবি

হা হা হা হা ...... গড়াগড়ি দিয়া হাসি লুল লুল .....

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

renesa এর ছবি

আমি ০৮ এর গ্রুপ ২
JK স্যার এর ক্লাসে খুব ডিস্টার্ব করসি।।
একবার স্যার আমারে ৩ percentage কাতসে ।।উফ কি সব দিন অনিক আমি আর জগ !!!

অরফিয়াস এর ছবি

দেঁতো হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অন্ত আফ্রাদ   এর ছবি

নস্টালজিক বানায় দিলেন বস !!! মোক্তার স্যার কে নিয়ে আরও অনেকটুকু আশা করেছিলাম লেখাটির শিরোনামটি দেখে...
সত্যিই ভালো লাগলো লেখাটি পড়ে... হাসি

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, মোক্তার স্যার আমাদের ছিলেননা, শুধু একদিন এসেছিলেন, তাতেই এতো.... দেঁতো হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি  এর ছবি

জীবনের কিছু স্মৃতি সত্যি খুব আনন্দের ..............সহজভাবে টুকরো টুকরো বিষয় নিয়ে ভালো লিখেছেন .....

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তার-ছেড়া-কাউয়া এর ছবি

লেখা ভালো হয়েছে। উর্ধপানে দন্ডায়মান বৃদ্ধাঙ্গুলী। এই পোস্টে দেখি আমার বড় ভাইয়েরও কমেন্ট আছে। উনিও গ্রুপ-৭ এ ছিলেন। আমিও ছিলাম গ্রুপ-৭ এ। আমার সিট ছিলো মাঝখানের কলামের শেষের থেকে দুইনম্বর সারিতে। ক্লাস মিস দিতাম না। শালার সামনের কামিনাগুলাও ক্লাস মিস দিতো না। সিট আর আগায় না। তবে লাস্টের দুই মাস একদম সামনের বেঞ্চে বসে ক্লাস করতাম। চরম পেইন। বিশেষ করে, মোক্তার স্যারের বস্তাপচা অশ্লীল গল্পের রিপিটেশনে জান অস্থির হয়ে গিয়েছিলো। হা হা হা।

অরফিয়াস এর ছবি

হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।