০৫-০২-২০১৩
কিংকর্তব্যবিমূঢ়
হ্যাঁ, কালকে রাজাকার কসাই কাদের মোল্লার রায় শোনার পরে এটাই ছিল আমার মানসিক অবস্থা। কতক্ষণ এদিক ওদিক করলাম, ইন্টারনেট এ খবরগুলো একে একে দেখলাম, পরে বাসায় টিকতে না পেরে গেলাম বইমেলা। সেখানে একা একাই ঘুর ঘুর করছিলাম, দেখা হয়ে গেল সুহান এর সাথে। সেই একই আলোচনা, কি হলো এটা!! এরপরে রাতে হিমুদার থেকে সংগ্রহ করা রায়ের কপি পড়ে কাটলো। রায় দেখে, যুক্তি দেখে, কিছুক্ষণ চুপ করে বসে রইলাম।
সচলে ঢুকি কিছু লিখতে ইচ্ছা হয় কিন্তু ভাষা পাইনা। সবার প্রতিবাদের ভাষা একই, সবাই হতবিহ্বল এই রায়ে। ওদিকে শাহবাগ এ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঢল নেমেছে ছাত্র-জনতার। তাদের ছবি আর বক্তব্য দেখলাম। শেষে নেট বন্ধ করে বসে রইলাম। রাতটা বেশ অস্থিরতায় কাটলো।
০৬-০২-২০১৩
সাইকেলটা পড়ে ছিল বারান্দায়, চাকায় হাওয়া নেই। বিকেলে অনেক ঘুরে খুঁজে চাকায় হাওয়া দিতে হলো। বেরিয়ে পড়লাম শাহবাগ এর দিকে। পৌঁছে গেলাম জনস্রোতের মাঝে।
চারুকলা থেকে তখন মশাল মিছিল বের হচ্ছে। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত প্রাঙ্গন। দৃপ্ত পায়ে মিছিলটা বের হয়ে চলে গেল টি.এস.সি এর দিকে। যুবকেরা রাস্তায় এঁকে চলেছে নানা প্রতিবাদী চিত্র। জায়গায় জায়গায় প্রতিবাদী গানের জটলা। অজস্র মানুষের ভিড়ে আমি সবসময়ই দিশেহারা বোধ করি, কিন্তু আজকে অন্যরকম, ঘুরে বেড়াতেই বরং ভালো লাগছিল। এক জায়গায় হঠাৎ দেখলাম পিতা তার দু সন্তানকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন প্রতিবাদের মিছিলে শামিল হওয়ার জন্য। শ্রদ্ধা সেই মানুষটির জন্য।
ঘুরতে ঘুরতে যোগাযোগ করলাম তানিম ভাই এর সাথে। গ্রন্থাগার এর সামনে বসে ছিলেন জুনদা, সিমন ভাই, অমিত ভাই আরও অনেকেই। সচলের পরিচিত মুখেদের দেখে ভাল লাগলো। আলোচনা চললো। সবারই এক কথা, রায়ের কারণে তীব্র হতাশা। স্বতঃস্ফূর্ত জনতার এমন অংশগ্রহণ আমি আগে দেখেছি তবে এটা ভিন্ন, প্রতিবাদী গান আর স্লোগানের কম্পনে পুরো জায়গাটা কেঁপে কেঁপে উঠছে বারে বারে। পরে দেখা হয়েছে অনেকের সাথেই, সুহান, ওডিন, খেকশিয়াল, অকুতোভয় বিপ্লবী, মৃদুলদাসহ অনেকেই।
হাতে মশাল, কন্ঠে স্লোগান বড় কিংবা ছোট দলে চলেছে সবাই। কারো হাতে প্ল্যাকার্ড, কারো হাতে বানানো পোস্টার। সবার এক দাবি, "ফাঁসি চাই"। জনতার ঐক্য থেকে ধীরে ধীরে বিশ্বাস উঠে যাওয়া আমার মনে হলো, না, এখনও বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হতে জানে, দেশের জন্য দশের জন্য মিছিলে ময়দানে স্লোগানে কাঁপাতে পারে। আর তার জন্য নির্দিষ্ট রাজনীতির প্রয়োজন পড়েনা, জনতার দাবি রাজনীতির পরিসর থেকে বেরিয়ে প্রানের দাবি হয়ে উঠে, গণ-আন্দোলন হয়ে উঠে। ভাষার মাসে আরও এক গণ-আন্দোলন, ৫২ থেকে ২০১৩, ইতিহাস যেন বার বার ফিরে ফিরে আসে এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বুকে।
আজকে জামাত-শিবির এর হরতাল ছিল, গত কয়েকটা হরতালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহবাগ এর আশেপাশের এলাকায় বেশ কিছু বিস্ফোরণ, গাড়ি পোড়ানো ইত্যাদি করে পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করেছে শিবির-ছাত্রদল। কিন্তু কালকে এবং আজকের চেহারা ছিল ভিন্ন, একটা বরাহছানাও এই পুরো এলাকার আশেপাশে ঘেষার সাহস পায়নি। দেখে হাসি পেল, ভাবতাম আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে এদের দমানো সম্ভব, কিন্তু নাহ, জামাত-শিবির এর একমাত্র ওষুধ পাবলিকের মাইর, একবার জনতা রাস্তায় নামলে এরা ঠিকই এদের পাকিবাপেদের গর্তে গিয়ে ঢুকবে। যত যাই হোক এরা নপুংসকের দল, এদের আস্ফালন শুধু অন্ধকারে, আলোতে না।
ব্যস্ত নাগরিক জীবনের থেকে কয়েক মুহূর্ত সময় বের করেও যারা ক্লান্ত শরীরে শাহবাগ এ এসেছেন, দাঁড়িয়েছেন, অন্তত একবার বলেছেন, "ফাঁসি চাই", তাদের স্যালুট। এভাবেই দাঁড়াতে হবে সবাইকে। যার যার অবস্থান থেকে, সরব হতে হবে প্রতিপদক্ষেপে। বোঝা উচিত, এই দেশ আমাদের, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমাদের প্রানের দাবি। কোন চক্রান্ত আমাদের এই দাবি আদায় থেকে পথভ্রষ্ট করতে পারেনা।
আমি আজকে বাবা-মায়ের হাত ধরে শিশুকে দেখেছি, তরুণ-তরুণীর স্লোগান মুখর রাজপথ দেখেছি, বৃদ্ধ মানুষকে আরও একবার তরুণ হতে দেখেছি, আর বুঝেছি, যত চেষ্টাই করুক, যত অর্থই ঢালুক, ইতিহাস বিকৃতির যত হীন চেষ্টাই করুক, ৭১ এর পরাজিত শক্তি কখনই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবেনা। ওরা আসবে, ত্রিশ লক্ষ শহীদ আসবে, চুপি চুপি, আর প্রানের প্রদীপ জ্বালিয়ে দিয়ে যাবে। আমি জানি শহীদের রক্তস্নাত মাটি কখনও বেইমানি করেনা।
[কিছু ভাবনা
অনেকেই দেখলাম কালকে থেকে শাহবাগ এর এই জনসমাগমকে মিশরের তাহরীর স্কয়ার এর সাথে তুলনা করছেন। এতে আমার আপত্তি আছে। হোক সেটা আরব বসন্ত, কিন্তু সেই আরব বসন্ত এখন ব্যর্থ। মিশরের গদিতে শোভা পাচ্ছে মৌলবাদী সরকার আর তার বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে আবার আন্দোলন। তাহরীর স্কয়ার এর আন্দোলন ছিল সরকার পতনের আন্দোলন, এটা ভিন্ন। আমাদের প্রানের দাবীর এই আন্দোলন, শাহবাগ এর এই জনসমাগমকে সেই স্কয়ার এর সাথে তুলনা করে দয়া করে অপমান করবেন না। এই আন্দোলন ব্যর্থ হবেনা, আর এই আন্দোলনের ইতিহাস অনেক পুরনো, আমাদের রক্তের প্রতিটি বিন্দুতে। এই আন্দোলন শাহবাগ এর নামেই পরিচিতি পাক, এর কোন তুলনার দরকার নেই।
অন্য সময়ের মতো এই জনসমাগমেও দেখলাম লাভের গুড় পাতে নিতে হাজির কিছু শকুন। তারা জ্বালাময়ী বক্তিমা দিচ্ছে, মানুষকে তাদের থিউরি শোনাচ্ছে। ফারুক গুয়েবাড়ার মতো মানুষ যখন এই আন্দোলনে নিজের ভোল পাল্টানোর চেষ্টা করে আর তাকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় জনপ্রিয় ব্লগার আর কলামিস্ট হিসেবে তখন আন্দোলনকারীদের উচিত এদের প্রতিহত করা। তাদের বহুরুপী চরিত্র সবার সামনে তুলে ধরে নাঙ্গা করে দেয়া। নয়তো এদের মতো বুদ্ধিবেশ্যারাই এই আন্দোলনকে নষ্ট করবে।
আন্দোলন দুদিন ধরে চলছে। একাত্মতা ঘোষণা করেছেন অনেকেই। কিন্তু এই আন্দোলন সংঘবদ্ধভাবে একটি নির্দিষ্ট পথে এগিয়ে নেয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশে ইতিপূর্বে ঘটে যাওয়া অজস্র ব্যর্থ প্রতিবাদ কর্মসূচির মতো এই আন্দোলনও যাতে কোনভাবে ব্যর্থ না হয়।
কিছু প্রশ্নের সুরাহা হওয়া প্রয়োজন-
* বাংলাদেশ যদি নিরপেক্ষ ট্রাইবুন্যাল চালাতে সক্ষম হয় তাহলে রায় বিতর্কিত হলো কেন? ৩৪৪ জন মানুষের হত্যাকান্ডে দোষী প্রমাণিত এবং ৬টি অভিযোগের ৫টি প্রমাণিত হওয়ার পরেও যাবজ্জীবন কারাদন্ড এর রায় বিতর্কিত না তো কি? যদি ট্রাইবুন্যাল বিতর্কিত হয় তাহলে এই বিচার এর প্রতি আস্থা থাকবে কিভাবে? আর যদি ট্রাইবুন্যাল নিরপেক্ষ হয় তাহলে রায় নিরপেক্ষ ধরে নিলে এই আন্দোলনের যৌক্তিকতা কি?
* শাহবাগ এর আন্দোলনের মুখ্য উদ্দেশ্য কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে যে রায় হয়েছে তার প্রতিবাদ। কিন্তু এই প্রতিবাদ এখানেই শেষ না, প্রতিবাদকে কিভাবে বিচারের অনুকূলে নিয়ে আসা যায় সেটা দেখা প্রয়োজন। রাষ্ট্রপক্ষ কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে চতুর্থ যে অভিযোগে সে খালাস পেয়েছে তার বিরুদ্ধে আপিল করবে, রাষ্ট্রপক্ষ যদি আপিল করে তাহলে আবার বিচার কার্যক্রম শুরু হবে, সেই পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা কি করবেন?
* অনেকেই বলছেন যাতে পরের রায়গুলো এধরনের বিতর্কিত না হয় তার জন্য আন্দোলন চলবে, কিন্তু এই আন্দোলন যদি অন্যান্য রায়কে প্রভাবিত করে তাহলে আইনের দৃষ্টি থেকে আবার নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ। যদি আন্দোলন করেই সঠিক রায় বের করতে হয় তাহলে ট্রাইবুন্যাল এর কাজ কি?
বিচারব্যবস্থা স্বাধীন, ট্রাইবুন্যাল স্বাধীন কিন্তু যেই রায় হয়েছে তা অবশ্যই বিতর্কিত। ট্রাইবুন্যাল এবং সাধারণ জনগনের মতামতের এই সাংঘর্ষিক অবস্থান পারতপক্ষে বিচারব্যবস্থার প্রতিই অনাস্থা তুলে ধরে। এই ক্ষেত্রে এধরনের প্রশ্নগুলোর সমাধান হওয়া উচিত। মানুষ প্রতিবাদমুখর হয়ে রাস্তায় নেমেছে এটা বড় অর্জন কিন্তু এটাই শেষ না।
নয়তো হাত উচিয়ে বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে বেরিয়ে আসবে আপনার-আমার পিতা-মাতার হত্যাকারী, বোনের সম্ভ্রম লুণ্ঠনকারী, দেশকে রক্ত বন্যায় ভাসিয়ে দেয়ার পেছনের কারিগরেরা। ঘৃণা এখন আর যথেষ্ট নয়, এখনও দেশের বুক থেকে রক্ত শুকিয়ে যায়নি। তাই এদের ফাঁসি হতেই হবে।]
"কসাই কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই"
ছবিগুলো সহব্লগার জুনদার তোলা, তার জন্য কৃতজ্ঞতা।
মন্তব্য
এই ছবিটা পুরা জাতি'র মুখে জুতার বাড়ি মারার শামিল! দেখলেই মাথায় রক্ত উঠে!!
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
"হোক সেটা আরব বসন্ত, কিন্তু সেই আরব বসন্ত এখন ব্যর্থ। মিশরের গদিতে শোভা পাচ্ছে মৌলবাদী সরকার...।"
"কিন্তু এই আন্দোলন সঙ্ঘবদ্ধভাবে একটি নির্দিষ্ট পথে এগিয়ে নেয়া প্রয়োজন।"
আমার ভয়টা কিন্তু এখানেই। মিশরের গদিতে মৌলবাদী সরকার বসেছে, কারণ গণআন্দোলনের ফসল ঘরে তোলার জন্য যে সংগঠন দরকার, সেটা ছিল একমাত্র মুসলিম ব্রাদারহুডের; যদিও তারা কিন্তু আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলো অনেক পরে, হোসনী মুবারকের পতন যখন ছিল মাত্র সময়ের ব্যাপার। Euphoria ক্ষণস্থায়ী; বাংলাদেশের স্বতঃস্ফূর্তভাবে সংগঠিত এই জনমতকে harness এবং sustain করার জন্য যে রাজনৈতিক সংগঠন দরকার, সেটা কোনখান থেকে আসবে বোঝা যাচ্ছেনা। আওয়ামী লীগের ওপর ভরসা করে লাভ নাই। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি নিষ্ক্রিয়।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
জমায়েতটা কোনভাবেই ব্যর্থ না। মেসেজটা তো ক্লিয়ার মানুষ এইরকম রায় মেনে নিবে না। কোনরকম আতাত হলে, ফল ভয়াবহ হবে।
এরকম রায় আরেকটা হলে, মানুষ জাস্ট আপিলের দাবি জানিয়ে শাহবাগ দাড়িয়ে থাকবেনা। চলা শুরু করবে সুতরা আমার কাছে আন্দোলনটা সফল।
আপনি আন্দোলনের সফলতা কিভাবে মাপতে চান?
আন্দোলন ব্যর্থ এটা বলা হয়নি। আন্দোলনের সফলতাও একদিনের কোন বিষয় না। এর আগেও দেশে অনেক আন্দোলন শেষ পর্যন্ত স্তিমিত হয়ে গেছে। তাই এই আশংকা অমূলক কিছু নয়, তাই সংঘবদ্ধভাবে থাকার আহ্বান। এই আন্দোলনকে ঘিরে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে, সাধারণ মানুষ রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কিন্তু এটাই শেষ না। এই রায় এর বিরুদ্ধে দু পক্ষ আপিল করবে তখন রায় বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসুত্রিতার মাঝে আটকা পড়বে। তাই শেষ পর্যন্ত একসাথে থাকতে হবে।
আন্দোলনের সফলতা কোন মাপকাঠি দিয়ে মাপা যায়না, দেখা হয় ফলাফলের দিক থেকে। এখনও ফলাফল হাতে আসে নাই। সেই কথা মাথায় রেখেই আন্দোলন চলুক।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
একটা অনুরোধ, আশা করি বিবেচনা করে দেখবেন।
আপনি বা অন্য কেউ এই বরাহটার 'ভি' দেখানো ছবি সচলের পাতায় দিয়েন না প্লিজ! এই ছবিতে 'মানুষ' আহত বা ঘা খেয়ে সচেতন হতে পারে বটে, কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা এই ছবি দেখে দেখে যে বাংলার 'মানুষ' আহত-অপমানিত-ক্ষুব্ধ্ব বোধ করছে - তা দেখে এই 'বরাহ' আর বরাহশাবকরা এক ধরণের ধর্ষকামী উল্লাস বা 'স্যাডিস্টিক কিক' পাবে বলে আমার সন্দেহ। এটাই স্যাডিস্টদের চরিত্র। আমি এই বরাহগুলিকে সেই সুযোগ দিতে চাই না। একই কারনে লেখায় ও কমেন্টে ভাষার ব্যাপারেও একটু সতর্ক থাকা উচিৎ - সেখানে প্রতিবাদ থাকুক, ক্রোধ থাকুক, ঘৃণা থাকুক, কিম্বা ক্ষোভ, কিন্তু কোনরকম 'অসহায়ত্ব' বোধ বা 'অক্ষম আক্রোশ'-বোধ যেন না থাকে।
লেখাটা পড়ার আগেই এবং শুধু ছবি দেখে ও বিভিন্ন জায়গায় কিছু কমেন্ট পড়েই একটা তাৎক্ষণিক ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়াটা দিয়ে ফেললাম। তবে আশা করি ভুল হয়নি।
****************************************
এই সচেতনতাটা আমাদের দরকার, কারণ সেটা নেই দেখেই ৪২ বছর পার হয়ে গেছে। যদিও ছবিটা সে কারণেই দেয়া, তবুও আপনার কথা বিবেচনায় এনে সেটা মুছে দিলাম।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
****************************************
সেটাই। জনতা কিছু বলে না, আইনশৃঙ্খলা কিছু বলে না দেখেই এদের এত বাড় বেড়েছে।
প্রশ্নগুলো দরকারি।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
আমরা আসলে চাইলেই পারি। আমাদের শুধু জানতে দেরী হয়েছে যে আমরা কী পারি! ৫২ দেখা হয় নি ৭১ দেখা হয় নি আমাদের তো কি হয়েছে? সেই সব প্রতিবাদী পূর্বপুরুষদের রক্তই তো আমাদের শরীরে তাহলে এই জনতা কেন দাবী আদায় করে নিতে পারবে না? আমরা এখন জানি আমরা পারি। আমরা পারব।
রাজাকারের জন্য ন্যায় বিচার একটাই ফাঁসি।
দুপুর থেকে থাকব রাজপথে সবার সাথে।
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
একটা কমন দিকনির্দেশনা দরকার সবার জন্য। উপস্থিত আন্দোলনকারীরা দ্রুত একটা এজেন্ডা গুছিয়ে উঠতে পারলে জনসমুদ্র কেবলই সামনে আগাবে। সামনে পরিষ্কার লক্ষ্য না থাকলে এই স্বতঃস্ফূর্ততা স্তিমিত হয়ে যাবে একসময়।
আন্দোলন সফল হোক। সকল চিহ্নিত রাজাকারের ফাঁসি চাই, অনতিবিলম্বে।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
একটাই দাবি এবং বিকল্প ছাড়া দাবি
কসাই কাদের সহ সকল মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই, ফাঁসি।
একাত্তরের হাতিয়ার গজের্জ উঠুক আর একবার।
তুহিন সরকার।
জনতার দাবি আস্তে আস্তে উঠে আসছে, এই গণজাগরণের দরকার ছিল।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
আন্দোলন চলছে এই রায়ের বিরুদ্ধে তা চলুক এবং তার গতিশীলতা যেন স্তিমিত হয়ে না পড়ে সেই কামনা করছি।
তবে এবার হরতালে পিকেটিং করতে দেখলাম বেশ কিছু অল্প বয়সী ছেলেদের। আমার মাথায় আসে না একজন তরুন হিসেবে এরা কি করে রগ কাটা শিবির করে। কোন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের পক্ষে তো স্বেচ্ছায় শকুনে পরিনত হওয়া সম্ভব না। ধিক্কার ওইসব শকুনদের যারা মানুষ হয়েও আজ শকুনে পরিনত।
শিবির তারাই করে যারা ব্রেনওয়াশড।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
বিকেলে শামিল হবার জন্যে বের হলাম নামতাকে নিয়ে। ইচ্ছে ছিল মেয়েকে নিয়েই শামিল হই। কিন্তু বাস-এ এত্ত ভীড় - যে ওকে নিয়ে ওঠা সম্ভব হলো না! কাল শামিল হবো একা পরিচিতজনদের নিয়ে।
এক দাবি -জানিয়ে যাই,
ফাঁসি চাই! ফাঁসি চাই ।।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
আজকের শাহবাগ সত্যিই একাত্তরকেই মনে করিয়ে দেয়। অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি, আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হলে কতৃত্ব, সংগঠিত কোন রাজনৈতিক দলের হাতে চলে যেতে পারে।
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় জেনেছি, বাংলাদেশের সব বড় অর্জনে মূল শক্তি ছিল ছাত্র-যুবসমাজ। এ প্রজন্মকে দেখে আমি বড়ই আশাবাদী।
লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।
জ্বলে পুড়ে ছারখার তবু মাথা নোয়াবার নয় ।
নূরুলদীনের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে - “জাগো বাহে কোনঠে সবাই...”
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
নতুন মন্তব্য করুন