মায়া ( শেষপর্ব)

আরিফ জেবতিক এর ছবি
লিখেছেন আরিফ জেবতিক (তারিখ: মঙ্গল, ১২/০৫/২০০৯ - ৬:৩১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আপনাদের মাঝে যাদের এখনও জাহাঙ্গীর সাহেবের সাথে পরিচয় হয়নি , তারা এখানে ক্লিক করে জেনে নিতে পারেন , তারপর সিদ্ধান্ত নেবেন এই গল্পের বাকীটা আপনারা পড়বেন কিনা । যারা পড়তে চান , তাদের জন্য আমরা এখন গল্পের মূল অংশে প্রবেশ করব ।

হুম , যা বলছিলাম । জাহাঙ্গীর সাহেব যখন বললেন ,‘বুঝলেন , তখন বয়েস অনেক কম ছিল , এই ধরেন আপনাদের বয়েসের কাছাকাছি ’,তখন আমি আরেকটা অশ্লীল কাহিনীর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করি । অফিস শেষ হতে আর বেশি দেরী নেই , তবে আমি চাইলে আগেও বের হয়ে যেতে পারি , এই ছাতার থানা সদরে আগে বেরিয়ে গিয়ে এই গরমে কিছুই করার নেই , তার চাইতে জাহাঙ্গীর সাহেবের সামনে বসে থাকাটাই ভালো ,যদিও বসে থাকতে থাকতে আমি তাকে মনে মনে গালি দেই , শালার শালা ইতর , ইতরের ইতর , খাচ্চরের খাচ্চর এ ধরনের বিভিন্ন গালি দিতে থাকি , তবু মুখে একটা উৎসুক ভাব ফুটিয়ে রাখি ।

জাহাঙ্গীর সাহেব তার বয়েসের গল্পটা বলতে গিয়ে হঠাৎই প্রসঙ্গ বদলে ফেলেন , এবার আমাকে সরাসরি , মানে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে চোখটিপে জিজ্ঞেস করেন , ‘ আচ্ছা , ঢাকায় এখন ঐ সব কোথায় ভালো হয় ?’ ‘ ঐসব শব্দটার উপর উনি এমনভাবে জোর দেন যে আমি বুঝতে পারি ঐসব বলতে তিনি যৌণ ব্যাপারস্যাপার বুঝাচ্ছেন , কিন্তু ওসব তো ঘরে ঘরেই হয় , ওসব তো আর প্রকাশ্য কোন ব্যাপার নয় যে স্টেডিয়ামের মাঠে অনুষ্ঠিত হবে বা শহরের কোন নির্দিষ্ট জায়গাতেই হবে , আমি তাই কিছুটা কনফিউজড হয়েই পাল্টা বলি , কেন , ওসব তো সবখানেই হয় ।

জাহাঙ্গীর সাহেব আমার অজ্ঞতায় মজা পান , বলেন- ধুর , আপনি কিছুই জানেন না , এখন ইংলিশ রোড নেই অবশ্য তবে ঐসব কয়েকটা জায়গাতেই হয় । আমি শুনেছি মগবাজারের হোটেলগুলোতে , সায়েদাবাদ আর মহাখালী টার্মিনালের হোটেলগুলোতে হয় । আমি এবার বুঝতে পারি উনি অর্থের বিনিময়ে আদিম আনন্দের কথা বলছেন , কিন্তু আসলেই সে ব্যাপারে আমার কোন জ্ঞান না থাকায় আমি তার কথার সত্যতা মিথ্যতা কোনটাই ধরতে পারি না এবং চুপ করে থাকি । আমি চুপ করে থাকায় তিনিও চুপ করে থাকেন এবং সম্ভবত: ভাবেন যে আমি উনার কথায় বিরক্ত হয়েছি , তাই আমাকে খানিকটা সান্তনা দেয়ার জন্যই বলেন- তা আপনি অবশ্য একদিক থেকে ঠিকই বলেছেন , ঐসব আজকাল সব জায়গাতেই হয় , আমি তো শুনেছি ভার্সিটিতে প্রেমট্রেমের নামে ওসব দেদার চলে , প্রেম হওয়ার কয়েকদিনের মাঝেই নাকি বিছানায় নিয়ে যায় , ওগুলোর আবার সিডি বের করে বিক্রী করে দেয় ।

এই জেনারেশন সম্পর্কে জাহাঙ্গীর সাহেবের এমন মূল্যায়ন শুনে আমার একবার ইচ্ছা হয় তার প্রতিবাদ করার, আবার ভাবি এই প্রতিবাদ ট্রতিবাদ করে আসলে কোন লাভ নেই , এই ইতরটা ইতরই থাকবে , সে হয়তো মুখে আমার কথা মেনে নেবে যে ভার্সিটিতে যারা প্রেম করছে তারা পরের সপ্তাহেই শুয়ে পড়ে না , কিন্তু পরনে ভাবি ওসব বলে কোন লাভ নেই , কিন্তু সে বিশ্বাস করবে না । তার চেয়ে বরং এই ইতরটার সাথে আমি মাত্র কয়েকটা মাস আরো আছি , সেই সময়টা কাটিয়ে চলে যাই , এই ফালতু জায়গার ফালতু জাহাঙ্গীরের ধারনা পাল্টানোর নবুওত আমাকে কেউ দেয়নি এবং সেধে পড়ে সেই নবুওতি নেয়াটা আমার ঠিক হবে না ।
তবে আরো কয়েকটা কথা বললে হয়তো তার সাথে আমার তর্ক লেগেও যেতে পারতো , কিন্তু তিনি সেই পথে না হেটে গল্পে ফেরত যান ।

‘বুঝলেন , তখন বয়েস অনেক কম ছিল , এই ধরেন আপনাদের বয়েসের কাছাকাছি’ , বাক্যটা তিনি তৃতীয়বারে মতো উচ্চারন করেন , উচ্চারন করে আমার দিকে তাকান , দেখেন আমি কতোটা আগ্রহী হয়েছি , আমি মুখে একটা নিরাসক্ত ভাব ফুটিয়ে রাখি , এটা তোমার গল্প তুমি চাইলে বলতে পারো বা নাও বলতে পারো , আমার কোন ঠেকা নেই , এরকম একটা মুখভঙ্গি করে আমি বসে থাকি ।

তিনি উৎসাহ নিয়ে বলতে থাকেন , ‘ তো , আপনাদের বয়েসে , তখন আমার ভরা যৌবন কাল , একদিন এক বন্ধুর লগে ঐসব করতে গেলাম ।’
তার বাক্যটা শুনে আমি ভেবে দেখলাম যে এই বাক্যটা আসলে অনেকগুলো অর্থ তৈরী করে , এক হতে পারে যে জাহাঙ্গীর সাহেব আর উনার বন্ধু মিলে ঐসব করতে গিয়েছিলেন , সেক্ষেত্রে তার বন্ধুটা মেয়েও হতে পারে আবার ছেলেও হতে পারে , মেয়ে হলে অসুবিধা নেই , তবে ছেলে হলে আমার নিজেরও আশংকার কারন আছে কারন আমি উনার চেয়ে ২৪ বছরের ছোট দেখতে শুনতে ভালো এবং আমি উনার সাথে একই ঘরে অফিস করি ।
আবার এই বাক্যটার ভিন্নার্থও হতে পারে , মানে উনি আর উনার বন্ধু মিলে কোথাও গিয়েছেন তাদের কাম চরিতার্থ করতে এমনটাও হতে পারে ।
আমি এবার খানিক কৌতুহল বোধ করি ।

জাহাঙ্গীর সাহেব বলে যান ,
- তো , আমরা গেছি কড়ইতলা মহল্লায় , কড়ইতলা চিনেন ?
আমি মাথা নেড়ে অজ্ঞানতা প্রকাশ করি , তিনি আমাকে জানান যে এই কড়ইতলা হচ্ছে নওয়াবপুর রোডের পাশের একটা চিপা গলি , যেখানে একসময় ইংলিশ রোড নামে পতিতাপল্লী গড়ে উঠেছিল তাঁরই বাম পাশের গলিটা ।
এবং এই তথ্য আমাকে দেয়ার পরে তিনি বলে যেতে থাকেন ,
‘ তো , সেখানে গিয়ে বুঝছেন এক খালার কাছে গেলাম । সে আমাদেরকে ঘরে নিয়া গেল ?’
আমার আশংকা কেটে যায় , জাহাঙ্গীর সাহেব আসলে পতিতাপল্লীতে গিয়েছিলেন , এটা অবাক হওয়ার কিছু না , যে খাচ্চরের খাচ্চর সে ওসব জায়গায় যাবে এমনটা আমি এমনিতেই জানি । তবু গল্পটা আমাকে আগ্রহী করে তুলে , এসব বিষয়ে আমার কোন অভিজ্ঞতা নেই , অভিজ্ঞতা আছে এমন কোন পতিত পুরুষের সাথেও আমার পরিচয় নেই , বা থাকতেও পারে কেউ তো ওসব স্বীকার করবে না , সুতরাং আমি গল্পটা শুনতে থাকি ।

‌‌‍" আমার ঘরে যে মেয়েটিকে পাঠানো হলো , আহা , আহা , তার রূপটা কী বলব আপনাকে ! যেমন তার বুক তেমন তার পাছা ।
একটা লালরঙের শাড়ি পড়েছে , ভেতরে কাচুলি পরেছে , তখনকার যুগে বোম্বের নায়িকারা কাচুলি পরতো , এটা জানেন তো ?’
আমি আবার মাথা নেড়ে অজ্ঞতা প্রকাশ করি , তবে জাহাঙ্গীর সাহেব আমার উত্তরের জন্য অপো না করেই বলে যেতে থাকেন ,
‘ মেয়েটির নাকটা খুব খাড়া খাড়া , একেবারে আমার কাছ ঘেসে এসে বসল । বলতে পারেন আমার কোলেই উঠে যাচ্ছিল প্রায় ।
বুঝেনই তো আমার তখন কাঁচা বয়েস , আবার জীবনের প্রথমবার গেছি , একটু ভয় ভয় করছিল । একটু ভয় বলিই বা কেন , পুরো ভয় করছিল ,
ঘেমে যাচ্ছিলাম সেই শীতকালেই ।’
‘ তারপর ?’ আমি তাড়া লাগাই । এসব ঘামাঘামির অংশ শুনতে আমি তেমন আগ্রহ পাই না ।
‘ তারপর আর কী ! মেয়েটা আমার ভয়টা বুঝল , বলল- নতুন আইছ ? আমি বললাম- হ, নতুন ।
মেয়েটা বলল- মাল খাবা ? বিলাতী বোতল আছে , আনব ?
আপনাকে আর কী বলব , তখন তো ওসব জিনিষ কোনদিন ছুঁয়েও দেখিনি , তাছাড়া ওসব হারাম খাওয়া পাপ , এমন একটা ধারনা ছিল তখন ,
আমি তাই মাথা নেড়ে না করলাম ।
‘ আচ্ছা ?’ আমি ফোড়ন কেটে রাখি , যাতে গল্পটা আগায় । এই গল্পটা শুনতে আমি কিছুটা আগ্রহ পাই , কারন এটা জাহাঙ্গীরের কোন আত্মীয়ার গল্প নয় , এটা নিছকই কোন এক পতিতার গল্প , পতিতার গল্প শুনতে আমার রুচিতে সমস্যা হয় না , কারন এরা কিছুটা ফ্যান্টাসীরই জন্ম দেয় হয়তো বা ।
জাহাঙ্গীর সাহেব বলতে থাকেন ,
‘ তারপর মেয়েটা একটা অদ্ভুত কথা জিজ্ঞেস করল । বলল- তুমি কি লুডু খেলবা ?’
‘ লুডু ! ’ আমি নড়ে চড়ে বসি , কাহিনীতে মনে হচ্ছে একটা চমক আসছে , পতিতার ঘরে বসে লুডু খেলার কোন গল্প আমি কখনো শুনব , এমনটা ভাবিনি ।
‘ হু , লুডু । আপনি যেমন অবাক হয়েছিলেন আমিও তেমনি অবাক হয়েছিলাম । কী জানি মনে হলো , মনে হয় ভয় কাটাতেই , আমি বললাম- হ , খেলব । বুঝলেন তো ঐ সময় আজকালের মতো ব্যাপার ছিল না , এই আধঘন্টা একঘন্টার কোন মামলা ছিল না , কারো ঘরে গেলে সারারাতের জন্যই লোকজন যেত । ’
আমি মাথা নাড়িয়ে সায় দেই । যদিও আমি জানি না আজকাল কি সত্যি সত্যিই আধঘন্টার জন্য কেউ কারো ঘরে যায় কি না , তবে জাহাঙ্গীর সাহেব যখন বলছেন , তখন নিশ্চয়ই জেনেই বলছেন ।

জাহাঙ্গীর সাহেব বলতে থাকেন , ‘ তা লুডু খেললাম বেশ কয়েক গেম । আমি জিতলাম তিন গেম , ঐ মেয়েটা জিতল এক গেম ।’
তারপর অনেকন মেয়েটার সাথে গল্প হলো । মেয়েটার নাম আসলে মরিয়ম , তবে বাজারে এলে নতুন নাম নিতে হয় , তাই তার নাম ছিল রীতা ।’ জাহাঙ্গীর সাহেব জানান ।
‘ তারপর ?’ গেম পরবর্তী কাহিনী জানতে আমি আবার তাগাদা দেই ।
‘ তারপর মেয়েটা বলল , অনেক রাত হলো , আসো এখন মজা করি । বলেই একটানে তার শাড়িটা খুলে ফেলল ।’
আমি ঢোক গিলি । গল্পের এই অংশটা আমার শুনতে আগ্রহ হয় আবার হয় না , জাহাঙ্গীর সাহেবের মুখ খারাপ ,হয়তো বর্ণনাটা এমন হবে যে আমার গা গুলাবে ।
তিনি আমার মুখের পরিবর্তন খেয়াল করেন না , আপন মনে বলতে থাকেন ।
‘ শাড়ি খোলার পরে কী আর বলব ভাই , আপনি বয়েসে ছোট আপনার সামনে বলা উচিত না , আমার তো একেবারে বেরাছেরা অবস্থা ।
শাড়ি খোলার পরে সে তার কাচুলিটা খুললো । আরে ভাই , সেই জিনিষের কথা আমি আপনাকে বলতে পারব না , তবে সে কাচুলি খুলেই আমাকে জড়িয়ে ধরল ।’
‘ জড়িয়ে ধরল ?’ আমি মুখ ফসকে বলে বসি ।
‘হু , জড়িয়ে ধরলো । তারপর কী একটা হিন্দী গান গাইতে শুরু করলো গুনগুন করে , অনেক দিন আগের কথাতো , গানটা মনে করতে পারছি না ।’
‘ তারপর ?’ আমি ইচ্ছা করেই খোচাই , কেন কে জানে ।

জাহাঙ্গীর সাহেব আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকেন একমুহুর্ত , তারপর হেসে বলেন ,
‘ তার আর কোন পর নেই ।’
‘ওহ !’ আমি কিছুটা হতাশ হই বা স্বস্থিও পাই , কোন রগরগে বর্ণনা শুরু হলে আমার পে হজম করা মুশকিল হয়ে পড়ত ।

আমি সিগারেট ধরাতে ধরাতে ঘড়ির দিকে তাকাই । অফিস শেষ হতে আর বেশি সময় নেই । আঁকাশ কিছুটা অন্ধকার করছে , যদিও ভ্যাপসা গরমটা কাটছে না ।

‘ তা ঐ মেয়েটার কাছে আবার গিয়েছিলেন ?’ আমি গল্পটাকে কিছুটা দীর্ঘায়িত করতে চাই , যাতে করে অফিসের এই বাদবাকী সময়টুকু কাটিয়ে ফেলতে পারি । তাছাড়া গল্পটার আগামাথা আমি কিছুই বুঝিনি , আসলে জাহাঙ্গীর সাহেবের এই বয়ানে কোন গল্প নেই , গল্প যদি কিছু থেকে থাকে তাহলে সেটা হচ্ছে ঐ মেয়েটির সাথে লুডু খেলা , গল্পের এই অংশটুকু আমাকে আগ্রহী করেছে , নয়তো বাদবাকী পুরোটাই সাদাটামা গল্প ।

‘ নাহ , আর যাব কেন ? প্রথমদিন পালিয়ে আসার পরে আবার বুঝি কেউ ওমুখো হয় ?’ জাহাঙ্গীর সাহেব বলেন ।
আমি চমকিত হই , প্রথমদিন তিনি পলিয়ে এসেছিলেন , এমন কিছু তার গল্পে ছিল না ।
আমি চোখ মটকে বলি - ‘ পালিয়ে এসেছিলেন! কই , সেটা তো বললেন না । পালিয়েছিলেন কেন ? টাকা দেয়ার ভয়ে ?’
‘ আরে না , আমি তো কিছু করিইনি , টাকা দেয়ার প্রশ্ন এলো কোথা থেকে ?’
‘তাহলে ?’ আমার কৌতূহল চরমে ওঠে ।

জাহাঙ্গীর সাহেবকে খানিকটা অন্যমনষ্ক দেখায় । কিছুটা খাপছাড়া ভাবে বলেন
‘ ঐ যে , রেহানার কথা মনে পড়ে গেল । কেমন যেন নিজেকে দোষী দোষী লাগল ।’
‘ রেহানা ? রেহানাটা আবার কে ? আপনার প্রেমিকা ?’
‘ না , ঠিক প্রেমিকা নয় । মানে কলেজে পড়ত আরকি , আমার এক কাস জুনিয়ার ছিল ।’
‘ ঘনিষ্টতা ছিল আপনার সাথে ?’ আমি হালকা চালে জানতে চাই ।

জাহাঙ্গীর সাহেব আমার কথা ঠিক শুনেন কি না বুঝা যায় না ।
নিজের মনেই বলেন , ‘ বুঝলেন আনিস সাহেব , রেহানা মেয়েটা আমার এক কাস জুনিয়ার ছিল ।
ওর সাথে কোনদিন কথা হয়নি , চোখাচোখিও হয়নি , তবে এটা ঠিক একটা টান ছিল আর কি আমার ।’

‘ শুধু একারনে আপনি সেদিন পালিয়ে এলেন ?’
‘ হু , পালিয়ে এলাম । আমার কেন যেন মনে হলো রেহানারে আমি কোনদিন পেতে পারি ,তখন এইসব অসূচী কাজের কী জবাব দেব আমি ? আমার মনে তো খচখচ করতে থাকবে । এজন্যই আমি পালিয়ে এসেছিলাম সে দিন ।’

‘ তা , রেহানার সাথে আপনার পরে কিছু হয়েছিল ?’ আমি এবার সত্যি সত্যিই আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন করি ।

জাহাঙ্গীর সাহেব দেয়ালের দিকে আপনমনে তাকিয়ে থাকেন । সেই চোখে রাজ্যের শূন্যতা ।
আমার কথা যেন তিনি শুনতেই পান না আর ।

( শেষ । )


মন্তব্য

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

জাহাঙ্গীর সাহেব আসলেই অনেক আগের মানুষ।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

হ !

মূলত পাঠক এর ছবি

বাহ্ বাহ্
সুন্দর গল্প

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ধন্যবাদ ।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

সকল প্রতাপ হল প্রায় অবসিত…
জ্বালাহীন হৃদয়ের একান্ত নিভৃতে
কিছু মায়া রয়ে গেলো দিনান্তের
- শক্তি'র কবিতা।

গল্প নিয়ে কিছু বলার নেই। ধা' করে অন্য একটা বিষয় মনে পড়ে গেলো। আমাদের মফস্বল সিলেটের কলেজগুলো তখনো কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে। এসএসসি, এইচএসসি'র সনদ তুলতে সদ্য কৈশোরউত্তীর্ণদের যেতে হতো সেই শহরে। অনেকেরই জন্য সেটাই হতো প্রথম সিলেটত্যাগ। সস্তার হোটেলে রাতযাপন , এবং...

গল্প তো জানা আছে তোর হাসি
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

পলাশ দত্ত এর ছবি

আমি তো জানি না।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আপনে তখনো ছোডু ছিলেন,ভালু ছিলেন ভাইটি দেঁতো হাসি
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ঐ কুমিল্লা যাওয়া টাওয়া তাদেরই প্রয়োজন পড়ত যারা বিদেশ পড়তে যেত । চোখ টিপি । ওখানে ওরা কি করেছে না করেছে আমি কিভাবে বলব , আমি তো বিদেশ পড়তে যাইনি বাপের জন্মেও । গড়াগড়ি দিয়া হাসি

মামুন হক এর ছবি

ভালো লাগলো এই মানুষের গল্প।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ধন্যবাদ ।

রণদীপম বসু এর ছবি

কী ব্যাপার ! গল্প কইবেন কইয়া বসাইলেন, গল্প কই !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ভালো করে খুঁজে দেখেন , আছে কোন চিপায় চাপায় ।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

গল্প তো মনে হইলো শেষ হয় নাই!

বেশ ভাল্লাগসে। আগের পর্ব পড়ে জাহাঙ্গীর সাহেব সম্পর্কে যেমনটা আন্দাজ করসিলাম, তেমনটা আর হয়নি শেষ পর্যন্ত। হাসি

আরিফ জেবতিক এর ছবি

গল্প শেষ হয়েছে ।
স্বয়ং রবিবাবু বলেছেন ছোটগল্পের বৈশিষ্ঠ হচ্ছে , " শেষ হইয়াও হইলো না শেষ ।"
আমি উনার কথার বাইরে কিভাবে কথা বলি ।

তানবীরা এর ছবি

আমিও ডরে ডরেই পড়লাম।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

আরিফ জেবতিক এর ছবি

চিত্ত যেথা ভয় শূন্য , উচ্চ যেথা শির !

জি.এম.তানিম এর ছবি

চমৎকার! চলুক

আমার মনে হল প্রথম খন্ডটি নিজেও একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ গল্প ছিল। আবার দুইটি মিলেও আরেকটা গল্প হল...
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ধন্যবাদ ।
প্রথম অংশের শেষ দিকে একটু বদলে দিলে ওটাও একটা স্বয়ংসম্পূর্ণ গল্প হয় বটে ।
এক শহুরে মধ্যবিত্ত তরুণ আটকে আছে একটা থানা সদরে ...গল্প হিসেবে খারাপ নয় ।

অনিকেত এর ছবি

খুব ভাল লাগল গল্পটা----
কী করে এমন সব গল্প লেখেন??

প্রথম পর্ব পড়ার পর মনে ঘুনাক্ষরেও আসে নি জাহাঙ্গীর সাহেবের এত অশ্লীলতার নীচে এরকম একটা মানবিক মন থাকতে পারে----তাকে দিয়ে যা যা খারাপ জিনিস আমরা চিন্তা করে নিতে চাই--সবই খুব স্বাভাবিক ভাবেই আসে। মনে হয়, এই ইতর তো 'ঐসব' করতেই পারে। যেটা মনে আসে না কখনো---যে এই আপাত ইতর-প্রান দূর্মুখ লোকটি শেষ পর্যন্ত আমার-আপনার মতই একজন সাধারন মানুষ। আমাদের মতই সে প্রেমে পড়ে আর আমাদের মতই তার কখনো মেয়েটিকে জানাতে পারেনা সে ভাললাগার কথা।আমাদের মতই সেও প্রবৃত্তির দাস---নানান সময়, নানান স্থানে সে একজন অবধারিত পতিত মানব। কেবল একদিন সে বিজয়ী হয়ে আসে---ঐ একদিনের জন্যে তার মানবিক দিকটা আর সবকিছুকে পেছনে ফেলে সামনে চলে আসে। যে মেয়েটিকে সে ভালবাসে--কিন্তু যাকে কখনোই বলা হয়নি সে কথা এবং কখনো বলা হবে বলে মনেও হয় না---সেই মানসকণ্যার মুখ চেয়ে, তার কথা ভেবে--পঙ্কিল পথ থেকে মুখ ঘুরিয়ে সে ফিরে আসে জীবনের কোলাহলে। এইখানটাতেই তার বিজয়। এইখানটাতেই তার সব দোষ আমি ক্ষমা করে দিই।

আবারো বলছি---চমৎকার একটা গল্প---!!

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ধন্যবাদ প্রিয় অনিকেত ।
আপনার দীর্ঘ মন্তব্য অনুপ্রাণিত করল ।

মুস্তাফিজ এর ছবি

জাহাঙ্গীর সাহেবের গল্পটা ভালো লাগলো

...........................
Every Picture Tells a Story

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ধন্যবাদ মুস্তাফিজ ভাই ।

মামুন হক এর ছবি

আবার পড়লাম, আবারো ভালো লাগল।
কবে যে এমন লেখার ধারে কাছে লিখতে শিখুম!

আরিফ জেবতিক এর ছবি

আবার ধন্যবাদ জানালাম ।
আবার অনুপ্রানিত হলাম ।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

আজ খুব খুশী খুশী লাগছে আমার । আমার ৩ বন্ধুর লেখা সচলের প্রথম পাতায় ! সেই সময়ের বন্ধু আমরা, ভুবন মাতিয়ে দেয়ার, ঘোরগ্রস্থ সে এক সময় ! তোর গল্প পড়লাম, মান্নার গল্প , মোরশেদের লেখা , অপুর ও একটা । মনে হচ্ছে আবার কোথাও ঘন হয়ে আসছে সকালের রোদ ... কি জানি ...

গল্প র কথা না-ই বলি ! অনেক প্রসংশাই তো শুনছিস । মোড় ঘুড়িয়ে দিয়ে গল্পের সমাপ্তি এনে দেয়ার এই রীতি বেশ প্রচল আর পুরাতন ও নিশ্চয়ই । কিন্তু তোর ভাষা ভঙ্গি এমনই, এই রীতির সঙ্গেই যায়, একটু বেশীই যায় আর সবার চেয়ে...কারণ তুই জাত গদ্যকার ।

ভালো লেগেছে ।

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

আরিফ জেবতিক এর ছবি

সেই দিন আর নাইরে নাতি ,
খাবলা খাবলা ছাতু খেতি ।

দিন বদলায় , আর এই নতুন দিনে এসে তোর , আমার কিংবা মোরশেদের মুখ দেখলে একেকটা কামলা ছাড়া আর কিছু মনে হয় না ।

গল্পের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার এই রীতি বহুল ব্যবহারে জীর্ণ তা মানছি , তবে এটাও সত্যি , এই ঘুরে যাওয়ার কারনেই মাঝে মাঝে গল্পগুলো গল্প হয়ে ওঠে ।

"জাত গদ্যকার" টার্মটাকে পুরষ্কার হিসেবে নিলাম ।

রানা মেহের এর ছবি

এভাবে দুম করে শেষ করে দিলে আরিফ ভাইয়া?
এরকম ফাকিবাজি করলে?
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

আরিফ জেবতিক এর ছবি

আমার সব গল্পই কিন্তু দুম করে শেষ হয় যায় ।

নির্মলেন্দু গুনের একটা কবিতা ছিল , লাইনগুলো মনে করতে পারছি না , তবে মূল ভাবটা হচ্ছে এমন যে , মদ খাবো যতোক্ষন ভাবতে থাকি ততোক্ষন আমার অনেক নেশা হয় , মদ খাওয়া শুরু হলেই নেশা শেষ ।

আমিও ঠিক তেমনি , গল্পটা বলার আগে অনেক সাবগল্প বলি , গল্প বলার পরে আর টানতে ইচ্ছা হয় না ।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

সুনীলের ও একটা কবিতা ছিল এরকম - কবিতা লেখার চেয়ে লিখছি লিখছি ভাবটাই ভালো লাগে, প্রেম করার চেয়ে করছি করছি ভাব- এরকম কিছু হাসি
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চা খায়া আইসা আরেকবার পইড়া দেখেন... নিদেনপক্ষে আরো এক পর্ব নামতে পারে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নিবিড় এর ছবি

ভাল লাগছে


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

এমুন একটা চটকানিই মারলেন শেষে!
আপ্নে বস জাহাঙ্গীরের চে'ও খ্রাপ!
মন খারাপ
তবুও আমার কাজ আমি কইরা যাই।
প্রাপ্য চলুক টা দিয়াই যাই।

___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।